কাদম্বরী দেবী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের নতুনদার স্ত্রী।
নতুনদা হলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর।জোড়সাকোর বাড়ির এই পুরুষ ছিল এক তেজস্বী পুরুষ,অসাধারণ জ্ঞানী পুরুষ।তার জ্ঞানে ইংরেজ লালমুখী সাহেবেরা তাক লেগে যেত,নাট্যকার হিসেবে তার জুড়ি মেলা ভার ছিল।
সে ছিল তারুন্যের প্রতীক,ব্যবসা করত,নাটক লিখত,অসাধারণ সঙ্গীতজ্ঞ ও ছিলেন।
শুধু তার সময় ছিল না তার সহধর্মিণীর জন্য।
কাদম্বিরী দেবী হয়ে পড়লেন নিঃসঙ্গ,রবীন্দ্রনাথ ও ছিলেন নিঃসঙ্গ।
রবীন্দ্রনাথকে আমরা রবিদা বলেই ডাকব।রবীদার বয়স যখন ২১ তখন সে ব্যারিস্টার পড়ার জন্য বিলাত যান তার প্রায় সমবয়সী দাদা(বড় বোন সোদামিনির ছেলে)সত্যপ্রসাদ এর সাথে।বিধির লিখন ছিল তার পড়া লেখার বিরুদ্ধে।তাই সোদামিনির ছেলের জন্য তার আর বিলেত যাওয়া হল না।
বাঙালি একটু সাপ জাতের,সুযোগ পেলেই তার বিষ দন্ত বের হয়ে আসে,দংশন করতে চাই সবাঙ্গে।
তাই রবীদ্রনাথকে সুযোগ পেলেই আত্মীয়-স্বজন,বন্ধুবান্ধব বলে"কিরে রবি,পালিয়ে এলে ত,আরে বাবা সবাই ত আর ময়ূর হতে পারে না,ময়ূর এর লেজ লাগালেই কেউ ময়ূর হয়ে যায় না।"
তাই কলকাতায় মন টিকল না রবিদার,চলে গেল চন্দননগর,নতুনদাদার কাছে,
কাদম্বরীকে রবী বলত নতুন বোঠান, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর সবার কাছে নতুন বলে পরিচিত,তাই রবী তাই কাদম্বরীকে নতুন বোঠান বলে ডাকত।
চন্দনগর ছিল রবীন্দ্রনাথের নবজন্ম,কাদম্বরী দেবী ছিলেন সেই নবজন্মের প্রভাবক,
রবীন্দ্রনাথ লিখত,কাদম্বরী তার সমালোচনা করত,রবীদা একটার পর একটা লিখে যেত কবিতা,উপন্যাস,গল্প।প্রথম উপন্যাস বউঠাকুররাণীর হাট চন্দন নগরে লিখল।
কাদম্বরী দেবী দিত রবীদাকে উসকে,বিভিন্ন কবিদের প্রসঙ্গ টেনে এনে রবীদাকে ভালো লেখার জন্য উত্তেজিত করত,করত সেইসব কবিদের প্রশংসা।
রবিদা দিনদিন আর ভাল লেখার চেস্টা চালাতে লাগল।
কাদম্বরী দেবী তার নিঃসঙ্গ সময় কাটাত তার এই ঠাকুরপোর সাথে,সাহিত্যে নিয়ে সারাক্ষন তর্ক চলত চন্দননগরের বাড়িতে।
কাদম্বরী দেবী আর রবীদা তাদের শ্রেষ্ঠ সময় কাটাল চন্দননগরে।