somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বালক

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখন রোহনের মনে হচ্ছে, বাসে গেলে ভালো হতো। মা টাকা দিয়েছিলো সেই হিসেবে – যাওয়ার সময় বাসে, আর ট্রেনে ফেরা। সে জানে, মা প্রতিবার একই কথা বলবে, শুনে শুনে মুখস্থ হয়ে গেছে। প্রথমবার একা গিয়েছিলো, তখন তার ক্লাস এইটের অ্যানুয়াল পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তারপর দুই বছরে আরো চার-পাঁচবার। প্রথমবারের কথা স্পষ্ট মনে আছে। বাবা বললো, তোর বুলি ফুপু আসতে চায়। একা পারবে না, আমারও সময় হচ্ছে না, তুই যেতে পারবি?রোহন রাজি, পারবে না কেন? কেউ সঙ্গে যাবে না, সে একা বড়োদের মতো যাবে! মা অবশ্য আপত্তি তুলেছিলো, এই ভ্যাবলা ছেলে একা কোথায় যেতে কোথায় যাবে ঠিক আছে?খুবই অপমানের কথা। মা তাকে কী ভাবে? এখনো ছোটো আছে সে? মাত্র পাঁচটা স্টেশন দূরের শান্তাহার থেকে ফুপুকে সঙ্গে নিয়ে আসা কী এমন কঠিন কাজ? সকালে গিয়ে বিকেলের মধ্যে ফিরে আসা, এই তো। সে একা একা সাইকেল নিয়ে সারা শহর ঘুরছে না? ওদিকে দত্তবাড়ি-শিববাটী-কালিতলা, এদিকে জলেশ্বরীতলা-মালতীনগর। করতোয়ার পাড়ে শ্মশানঘাটে কেউ দিনদুপুরেও যেতে চায় না, ভয় পায়। অথচ সে কতোদিন বিকেলে একা বসে থেকেছে সেখানে। নির্জন বলে। মা জানে?বাবার মধ্যস্থতায় সেই প্রথম একা শান্তাহার যাওয়া। বিরাট জংশন, অনেক মানুষের ভিড়, ব্যস্ততা। কিন্তু অচেনা নয় একটুও। ছোটোবেলা থেকেই বছরে কয়েকবার বাবা-মায়ের সঙ্গে এখানে যাতায়াত। দাদাবাড়ি যাও তো শান্তাহার। নানাবাড়ি যাও, তা-ও শান্তাহার হয়ে। স্টেশন থেকে কলসা পাঁচ মিনিটের হাঁটাপথ। বুলবুলি ফুপুর নাম কী করে যেন বুলি হয়ে গেছে। বুলবুলি নামটা কী সুন্দর! ভালো জিনিসকে কেটেছেঁটে মানুষের যে কী আনন্দ, রোহনের মাথায় আসে না। কলেজে পড়া বুলি ফুপু রোহনের চেয়ে বছর চারেকের বড়ো। ছুটিছাটায় ভাইয়ের বাড়িতে আসার জন্যে ব্যস্ত হয়ে যায়। কিন্তু দাদা কিছুতেই তাকে একা আসতে দেবে না, চাচারাও না। কাউকে গিয়ে আনতে হবে। অথবা ও বাড়িতে কারো সময় হলে ফুপুকে পৌঁছে দিয়ে যাবে।আজ মায়ের হাত থেকে টাকা নিচ্ছে, মনে মনে রোহন তখনই জানে সে ট্রেনে যাবে। বাসে গাদাগাদি করে কে যায়! থামে যেখানে-সেখানে, জায়গা না থাকলেও যাত্রী তোলে। অথচ দুপুরের লোকাল ট্রেনে ভিড় বেশি থাকে না, মাঝেমধ্যে একেবারে ফাঁকা কামরা পাওয়াও অসম্ভব নয়। ফেরার পথে বরাবর ট্রেনে ফেরা হয়, বুলি ফুপু বাসে একদম উঠতে চায় না, তার বমি পায়।বয়সে বড়ো হলেও বুলি ফুপুর সঙ্গে রোহনের জমে খুব। শ্যামলা ছোটাখাটো দেখতে বুলি ফুপু কী সুন্দর! হাসলে তার চোখ দুটোও হেসে ওঠে, গালে টোল পড়ে, আরো সুন্দর লাগে। গল্পের বইয়ে পড়া হাসিতে মুক্তা ঝরা তখন চোখের সামনে। ট্রেনে বসে অনেক গল্প করে ফুপু। কোন বান্ধবীর বিয়ে হলো, বর কেমন, কলেজে কোন স্যারের ক্লাসে যেতে ইচ্ছে করে না স্যার কেমন করে তাকায় বলে – এইসব নানা কথা। রোহনও তার গল্পের ঝুলি খুলে দেয়। বড়োদের মধ্যে এক বুলি ফুপু ছাড়া এতো মনোযোগ দিয়ে তার কথা আর কেউ শোনে না।আরেকটা খুব গোপন কথা আছে, কাউকে বলা যাবে না। সে নিজেই ঠিক বোঝে না, বলবে কী! ট্রেন থেকে নেমে বাসায় ফেরার জন্যে রিকশা নেওয়া হয়। পাশাপাশি বসে বুলি ফুপুর গায়ের স্পর্শে কীরকম যেন একটা অনুভূতি হয়, শরীরে কিছু একটা শিহরণের মতো বোধ। আড়চোখে বুলি ফুপুর মুখের দিকে তাকায় রোহন, সেখানে কোনোকিছু লেখা নেই।আজ টিকেট কেটে স্টেশনে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ট্রেন প্ল্যাটফরমে এসে থামলে রোহন দ্রুত পায়ে হেঁটে একবার টহল দেয়। পেছনের দিকে একেবারে ফাঁকা একটা কামরা। সে অপেক্ষা করে, অন্য কোনো যাত্রী উঠে পড়তে পারে। কেউ আসে না। গার্ডের বাঁশি বাজার পর ট্রেনটা চলন্ত হওয়ার আভাস দিলে রোহন ফাঁকা কামরার একমাত্র যাত্রী হিসেবে উঠে পড়ে। আঃ, কী আনন্দ! প্রথম দুটো স্টেশন নিজের মতো করে সে একা। পুরো রাজ্যের একচ্ছত্র দখল, ভাগ বসানোর কেউ নেই। স্টেশন ছেড়ে যেতেই একবার এই সীটে বসে, উঠে গিয়ে আবার ওই সীটে। জানালার পাশে বসে মাথা বাইরে ঠেলে দিলে হু হু বাতাসে চুল ওড়ে। উদ্দাম বাতাস পারলে চোখ বুজিয়ে দেয়। আশেপাশে কেউ না থাকলে গলা ছেড়ে গান গাইতে কোনো অসুবিধা নেই। চলন্ত ট্রেনের শব্দের তলায় নিজের গলা যে কোনো বিখ্যাত গায়কের মতো হয়ে যায় – অর্ণব বা হাবিব, অঞ্জন অথবা নচিকেতা। গানগুলো ঠিকমতো সুরে খেলে, তখন গানগুলো তার নিজের। খোলা চোখেও মনে মনে রোহন দেখে, মঞ্চে উঠে একটার পর একটা গান করছে সে, একেকটা গানের শেষে শ্রোতাদের হাততালি ও উল্লাস।আলতাফনগরে ট্রেন থামলে চারজন লোক এই কামরার নতুন যাত্রী হয়ে উঠে এলো। তাদের পরণে ছোপ-ছোপ জলপাই সবুজ পোশাক। পোশাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিহ্ন আঁকা, বুকের বাঁ দিকে নাম লেখা ট্যাগ। পায়ে বুট, হাতে রাইফেল।কাঁধে ঝোলানো ব্যাকপ্যাক নামিয়ে লোকগুলো রোহনকে দেখে। চার জোড়া চোখ একত্রে। রোহনের অস্বস্তি হয়, চোখ নামিয়ে ফেলে সে। মুখ ঘুরিয়ে জানালার বাইরে চোখ ফেলার আগে আড়চোখে দেখে, সৈনিকরা তখনো তাকে দেখছে। কী এমন দর্শনীয় বস্তু হয়ে গেলো সে? এতো কাছে থেকে কোনো সৈনিককে কখনো দেখেনি রোহন। অবশ্য আলাদা করে দেখার কী আছে তা-ও বোঝে না। লোকগুলোর পোশাক-আশাক আলাদা, চুল খুব ছোটো ছোটো করে ছাঁটা – এই তো। অন্যসব মানুষের চেয়ে আর কিছুতে আলাদা লাগে না। তবু ঠিক যেন একরকমও নয়। কোথাও তারা অন্যরকম। সামনাসামনি না দেখলেও শোনা কথা কম নেই। রোহনের জন্মেরও অনেক বছর আগে এ দেশে যুদ্ধ হয়েছিলো, পাকিস্তানী সৈন্যদের নিষ্ঠুরতার গল্প সে শুনেছে বাবার কাছে। অকারণে তারা পাখি মারার মতো মানুষ মারতো, দুধের শিশুকে শূন্যে ছুঁড়ে দিয়ে বেয়োনেটের ডগায় গেঁথে ফেলার গল্প শুনে রোহনের অসহ্য লেগেছিলো। সে জানে, তারা ছিলো অন্য দেশের সৈন্য। রোহন নিজেকে ভাগ্যবান মনে করে, ওদের সঙ্গে তার কখনো দেখা হয়নি। কেমন ছিলো দেখতে তারা? এই লোকগুলোর মতোই? না অন্যরকম? বাবা আজও মিলিটারি একদম সহ্য করতে পারে না।রোহনের মনে হয়, এই চারজন আমাদের দেশের সৈনিক। তারা নিশ্চয়ই পাকিস্তানীদের থেকে আলাদা। অতো নিষ্ঠুর হওয়া এদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবু স্বস্তি পাওয়া যায় না। বাবাকে বলতে শুনেছে, বছরখানেক ধরে সৈনিকরাই আড়ালে থেকে দেশ চালাচ্ছে। সেনানায়কের চেহারা সেজন্যেই আজকাল এতো ঘন ঘন টিভিতে দেখা যায়। অন্য হোমরা-চোমরা যাদের দেখা যায়, তারা তারই হুকুমে ওঠে-বসে, যা বলে তাই শোনে। তারাও এক হিসেবে সৈনিকদের হুকুমের দাস সৈনিক হয়ে গেছে, শুধু সাজপোশাকে তারা আলাদা। কয়েকবার এরকম নাকি হয়েছে এ দেশে, তখনো রোহনের জন্ম হয়নি। এতোকিছু তার বোঝার কথা নয, তবে বাবা ভুল কিছু বলেনি সেনানায়ককে যে খুব আজকাল টিভিতে দেখা যায় তা সে লক্ষ্য করেছে। কিছুদিন আগেও এরকম ছিলো না, তা-ও বেশ মনে আছে। সামনে বসা লোকগুলো সেই ক্ষমতাবানের প্রতিনিধি বলেই এরকম অস্বস্তি? সে নিতান্ত এক নিরীহ স্কুলছাত্র, তাকে ভালো ছেলে বলে সবাই জানে। তার ভয় কীসে? তবু বলা যায় কিছু? তারা যা খুশি করতে পারে শোনা যায়। ঢাকায় ছাত্রদের সঙ্গে তাদের গোলমালের কথা খবরের কাগজেই পড়েছে। শিক্ষকদের ধরে জেলে আটকে রাখা হলো কতোদিন! কোনো দোষ না করেও নিজেকে খুব নিরাপদ ভাবা চলে কি না, কে জানে!ট্রেন এখন ছুটছে শস্যভরা উন্মুক্ত মাঠের বুক চিরে। ক্ষেতে কর্মব্যস্ত কৃষক। রেললাইন বরাবর সরু অগভীর জলাশয়, টেলিগ্রাফের তারে বসা নানা জাতের পাখি। হঠাৎ রোহনের চোখে পড়ে, আকাশে ছোটো একখণ্ড কালো মেঘ মাঠের এক জায়গায় ধূসর ছায়া ফেলেছে। তার চারপাশ সূর্যের উজ্জ্বল আলোয় আলোময়। ধূসর ছায়াটা স্থির হয়ে নেই, বাতাসে মেঘ সরে সরে যায়, সঙ্গে ধূসর ছায়া। ‘শরতের মিছা মেঘ’ কথাটা কোথাও লেখা দেখেছিলো, এখন মনে আসে। এই মেঘ শুধুই মেঘ, বৃষ্টি ঝরানোর ক্ষমতাও নেই।বাইরে থেকে চোখ ফিরিয়ে এনে রোহন সৈনিকদের দিকে তাকায়। চারজন পাশাপাশি বসা। এতোক্ষণ নিজেদের মধ্যে কিছু বলাবলি করছিলো, রোহনের মুখ ফেরানো যেন সবাই একসঙ্গে টের পেয়ে এখন আবার তাকে নজর করে দেখছে। কী দেখে তারা? কেন?ঘন গোঁফওয়ালা সৈনিক, চারজনের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে বেঁটে, হঠাৎ রোহনের দিকে তাকায়। তার ঠোঁটটা কি একটু নড়ে উঠলো? লোকটা মুচকি হাসি হাসলো? হয়তো দেখার ভুল। গোঁফওয়ালার পাশের জন রোহনের দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে থাকে। লোকটার চোখগুলো কী তীব্র, যেন ভেতরটা ভেদ করে সব দেখতে পাচ্ছে। রোহনের বুকে ধুকপুক যে একটু বেশি জোরে হচ্ছে, লোকটা কি টের পেয়ে গেলো? চোখ সরিয়ে না নিয়ে তার উপায় কী! সে বুঝতে দেবে কেন? নিজেকে বোঝায়, সে একটুও ঘাবড়ায়নি। তবে কিছু একটা আছে, তাকে নিশ্চিন্ত থাকতে দিচ্ছে না। ভেতরটা আপনা থেকেই টানটান হয়ে আছে।লোকগুলো নিজেদের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে কথায় ব্যস্ত হয়ে গেছে। সবই কানে আসছে, অথচ ভেতরের উৎকণ্ঠায় রোহন কিছুই শুনতে পায় না। তাদের সম্মিলিত উচ্চকণ্ঠ হাসি শোনা যায় এবার। রোহন ফিরে তাকায় সৈনিকদের দিকে। চার জোড়া চোখ তাকে দেখছে। মানুষের হাসির শব্দ যে এতো বিরক্তিকর ও অনাকাঙ্ক্ষার বিষয় হতে পারে, তার জানা ছিলো না। তার চেয়ে বড়ো কথা, তাদের চাউনি রোহনের ভেতরের অস্থিরতা ও উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দিচ্ছে। পরের স্টেশনে ট্রেন থামলে নেমে যাবে স্থির করে সে, অন্য কোনো কামরায় উঠে পড়লেই হলো, তারপরে একটা তো মোটে স্টেশন। এখন তার আক্ষেপ হয়, মায়ের কথা মান্য করে বাসে গেলেই ভালো হতো। ছেলে, তুমি কই যাইতেছো?প্রশ্নটা তাকেই করা হয়েছে বুঝতে সময় লাগে রোহনের। দাড়িগোঁফে আচ্ছন্ন মুখের সৈনিক প্রশ্নকর্তা। তার ওপরে নিবদ্ধ চার জোড়া চোখকে তার হঠাৎ ক্ষুধাকাতর বাঘের চোখের মতো লাগে। খুব আড়ষ্ট বোধ করে সে। ভেতরে ভেতরে কেঁপে ওঠে, শরৎকালের রোদ ঝলমল দিনেও তার শীত শীত করে।তার অনিশ্চিত কণ্ঠস্বর থেকে একটিমাত্র শব্দ নিঃসৃত হয়, শান্তাহার।একলা ক্যান? বাড়ি পলাইছো?রোহন না-সূচকভাবে দুইদিকে মাথা নাড়ে। তারপর মুখ ফিরিয়ে নিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। তার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না, চোখগুলোকে আর তার সহ্য হচ্ছে না। এই ভয়ের অনুভূতি আর বহন করা যাচ্ছে না।ট্রেনের গতি কমে এসেছে, আদমদীঘি স্টেশন এসে পড়লো। এবার নেমে যাওয়া দরকার। উঠে দাঁড়াবে ভাবছে, তখন তার হাত-পা স্থির হয়ে যায়। একটা কথা মনে পড়ে গেছে। একটু আগে সে শান্তাহার যাবে বলেছে, এখন আদমদীঘিতে নেমে যায় কী করে? ওদের অনুমান, সে বাড়ি থেকে পালিয়েছে। এখানে নামতে চাইলে ওদের সন্দেহ আরো মজবুত হবে। নিজের ওপর মনে মনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সে, কী দরকার ছিলো শান্তাহার বলার? এই তো যাচ্ছি আর কী – এই ধরনের একটা অনির্দিষ্ট উত্তরও তো দেওয়া যেতো। এখন থাকো বসে!প্রায়-দুপুর রোদে আদমদীঘি স্টেশনের প্ল্যাটফরমে লোকজনের ভিড় বেশি নেই। মুখ বাড়িয়ে রোহন যাত্রীদের ওঠানামা দেখে। একবার ভাবে, ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে এক দৌড়ে নেমে গেলে কেমন হয়? ওরা তখন আর তার পিছু নেবে না নিশ্চয়ই। কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অন্য কামরায় উঠে পড়া যদি না যায়? তখন আদমদীঘিতে বসে থাকতে হবে, পরের ট্রেন যে কখন তা-ও জানা নেই। বুকভরা অস্বস্তি-উৎকণ্ঠা, ভয়-দুঃখ-ক্রোধ মিলিয়ে রোহনের এখন কাঁদতে ইচ্ছে করছে। অথচ মনে হচ্ছে, তার ভয় করবে কেন? এই ভয়ের কোনো মানে নেই। পান-বিড়ি-সিগারেট হেঁকে যাওয়া হকারকে হাত তুলে ডাকে রোহন। এক শলা সিগারেট আর একটা দেশলাই কেনে। এখন ধরাবে। এক মুহূর্ত আগেও ভাবেনি, এখনো স্পষ্ট জানে না সে কেন কিনলো। ধরিয়ে টানা পরের কথা, সিগারেট জীবনে কখনো সে ছুঁয়েই দেখেনি। বয়স্ক কারো সামনে সিগারেট খাওয়াও চলে না। অথচ কামরার উল্টোদিকে বসা চারজনকে সে এখন সম্পূর্ণ অস্বীকার ও অবজ্ঞা করতে ইচ্ছুক। যেন তারা একেবারে নেই।একবার মনে হয়, জীবনে কখনো সিগারেট না-ধরা হাতে দেশলাই-সিগারেট সামলাতে পারবে তো? পারবে, অন্যদের ধরাতে দেখেছে। সিগারেটটা দুই ঠোঁটের ফাঁকে রেখে দেশলাইয়ে কাঠি ঠুকে দেয় রোহন। এই তো আগুন জ্বলেছে। জ্বলন্ত দেশলাই-কাঠির দিকে চোখ স্থির করে সে।
ট্রেন চলতে শুরু করেছে। চার সৈনিকের দিকে একবারও ফিরে তাকায় না রোহন। এখন তার কোনো উৎকণ্ঠা নেই, একটুও ভয় করছে না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×