somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডা. জাকির নায়েকের বিরোধিতার জওয়াব

২৮ শে জুন, ২০১১ রাত ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ডা. জাকির নায়েক একজন দায়ী। অমুসলিম ও মুসলিমদের মাঝে দাওয়াত দানে তিনি রত রয়েছেন। তাঁর এই মহতি কর্মে অনেকেই তাঁর প্রশংসা করলেও কিছু জ্ঞানপাপী তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নিয়োজিত রয়েছেন এবং তারা তার নামে অনেক কুটসা রটাচ্ছেন। তবে এরা পিছনেই কুটসা রটেই ব্যস্ত কোনরুপ নির্দিস্ট অভিযোগ করছেন না। যেগুলো করছেন তার কোন প্রমাণও দিতে পারছেন না। তাদের অভিযোগ ও কুটসা রটানোর কারণগুলো হলো তাদের মতের বিরোধী হওয়া। তাদের মতের বিরুদ্ধে কথা যেতেই পারে এজন্য তাদের প্রমাণ করার উচিত যে তাদের মত সঠিক । কিন্তু তারা তাও করতে পারছে না। কারন কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসারে তাদের মত দেখতে গেলে তাদের মত ভ্রান্ত প্রমাণিত হবে।
আমি এ ব্যাপারে কিছু কথা লিখবো ইনশাআল্লাহ।
প্রথমই আমি জানাবো যে, তারা কেন ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে লেগেছে।
প্রথমত. ঈর্ষা । তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তায় তারা ঈর্ষান্বিত হয়েছেন তাই তাদের এই কুটসা রটানো।
দ্বিতীয়ত. কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসরণ:
তিনি তো বিভিন্ন মত অনুসরণ করছেন না, বরং কুরআন ও সহীহ হাদীসের কথা বলছেন তাই তারা তাঁর পিছনে লেগেছে। কারণ কুরআন ও হাদীসের কথা বললে ঠিক আছে কিন্তু সহীহ হাদীস ? তাহলে তো আমাদের গোমর ফাঁস হয়ে যাবে। আমাদের মতের অধিকাংশই জাল যইফ হাদীস অনুযায়ী। তাহলে তো আমাদের বাপ-দাদাদের পথ ত্যাগ করতে হবে।
তৃতীয়ত. শিরক বিদআতের কথা বলা
তিনি তেমন জোরালোভাবে শিরক বিদআতের কথা না বললেও কবর পুজা ও আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও কাছে চাওয়া যাবে না বলাত কবর পুজারী ও বিদআতীরা তাঁর বিপক্ষে লেগেছে।
চতুর্থত.সুনির্দিষ্ট কোন মাযহাব না মানা
সম্ভবত এটাই সর্বাধিক গুরুতর অভিযোগ । এটাই এদের বিরোধিতা মূল কারণ। কারণ তিনি কোন একটি মাযহাবের মতের উপর থাকেন নি । বরং সকল মাযহাবের বর মাযহাব নাবী কারীম সা: এর মাযহাব অনুসরণ করেছেন এবং তাই করতে বলেছেন। এটা তো মহা অপরাধ! অথচ তিনি ঈমামদের ব্যাপারে কোন নেতিবাচক কথা বলেন নি। যেহেতু আমাদের উপমহাদেশে আলেমরা যতটা না কুরআন ও সহীহ হাদীস জানে তার চেয়ে বেশী জানে বিভিন্ন মাযহাবের কিতাব। তাই তাদের এই মাযহাবী ব্যবসায় বাধা হওয়ায় এ বিরোধিতা ও কোন ইমাম অনুসরণ না করার অভিযোগ। কে বলল, তিনি ইমাম অনুসরণ করেন না। তিনি সকল ঈমামের ইমাম মুহাম্মাদ (সা) এর অনুসরন করেন। আর প্রত্যেক ইমামই বলেছেন যখন সহীহ হাদীস পাবে সেটাই আমার মাযহাব (মত)।
দলাদলী বিহীন ইসলাম প্রচার:
তিনি ইসলামে দলাদলি না করে এক তাওহীদের উপর দাড়ানোর আহবান জানিয়েছিন। তিনি মুসলিমকে শিয়া, সুন্নী, হানাফী, শাফেয়ী, হাম্মলী প্রভৃতি নয়, বরং মুসলিম হতে বলেছেন, মুসলিমের পরিচয় এটাই। এটা বলাও তাঁর একটি অপরাধ ! কারণ উপমহাদেশে একশ্রেণীর নামধারী আলেম আছেন যারা দলাদলী করতে খুব মজা পায় । এটাকেই ইসলাম বলে।
ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয় সেগুলো উল্লেখ পূর্বক জওয়াব নিচে দেওয়া হলো:
প্রশ্ন ১. তিনি কোন ইমামের অনুসারী? সোজা বাংলায় কোন মাযহাবের অনুসারী?
উত্তর: তিনি সকল মাযহাবের অনুসারী। কারণ সকল ইমামরাই একমত যে যখনই সহীহ হাদীস পাবে সেটাই আমার মাযহাব। অতএব তিনি সকল মাযহাবের অনুসারী।
প্রশ্ন ২. তিনি কেন টাই পড়েন ? এটা তো পড়া হারাম?
উত্তর: ইসলামে পোশাকের মূলনীতি দেয়া আছে। আমি তার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করছি।
১. নারীদের সারা অঙ্গ ঢাকতে হবে। কিন্তু পুরুষের সতর নাভী থেকে হাটু পর্যন্ত। এবং সলাত আদায় করার সময় কাঁধে কাপড় না থাকলে সলাত আদায় হবে না।
২. নারীরা গিরার নিচেও কাপড় পরিধার করতে পারবে কিন্তু পুরুষদের জন্য এটা নিষেধ।
৩. নারীরা রেশমী কাপড় ও সোনার তৈরী গহনা পড়তে পারবে কিন্তু পুরুষদের জন্য তা হারাম।
৪. পোশাক ঢিলেঢালা হতে হবে।
৫. পোশাক এমন হতে পারবে না যেটি বিপরীত লিঙ্গের পোশাক।
৬. পোশাক এমন হতে পারবে না যাতে শরীরের ভিতরের অংশ দেখা যায়।
৬. অবিশ্বাসীদের বিশেষ কোন চিহ্ন বুঝায় এমন পোশাক বা লেবেল পরিধান করা যাবে না। যেমন, ক্রুশ, কপালে ওম লিখা, মাথার টিকা প্রভৃতি।
এবার আসি টাই নিয়ে । তিনি কেন টাই পড়েন কেন? অনেক মুসলিম আছে তাদের ধারণা টাই হলো ক্রসের প্রতীক ।কিন্তু খ্রিস্টানদের কোন ধর্মগ্রন্থেই বলা নেই যে, টাই ক্রসের প্রতীক। বরং বিশেষজ্ঞদের মতে ঠান্ডা আবহাওয়ার দেশের লোকেরা টাই পড়ে কাপড় বেধে রাখতো। তাই টাই পড়া হারাম নয়। তবে গলায় ক্রম যেটা যোগ চিহ্নের মতো সেটো পড়া হারাম।
প্রশ্ন ৩.
তিনি কেন ইয়াযিদ এর নাম নিতে গিয়ে peace be upon him. পড়েন ?
এটা একটি বড় বিষয় । এ বিষয়ে চুম্বক ধারণা দিচ্ছি ইনশআল্লাহ এই সপ্তাহেই এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখবো । তা হচ্ছে এটাই কুরআন ও সুন্নাহ পন্থীদের মত। শিয়াদের অপপ্রচারে আমরা এমন কিছু জানি যা ঠিক না । তা পরের পোস্টে আসছে। ইমাম বুখারী, ইমাম আলবানী, ইমাম ইবনে কাসীর, ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম, ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ সহ আহলে সুন্নাতপন্থীরা তাঁকে তাবেয়ী বলেছেন। আর আমাদের এটা জেনে রাখা উচিত যে, তাবেয়ীরা শরীয়াতের মানদন্ড নয়। রাসূল (সা)ই আমাদের মানদন্ড। তিনি যদি কাফের হয়, তবে আমি শুধু এতটুকু জানতে চাই সেই কাফেরের অধিনে অন্যান্য সাহাবীরা কেনো তার হাতে বাইয়াত করেছিলো ? যদি তিনি মদখোর, কাফের, হন, তাহলে অন্যান্য সাহাবীরা কি করে একজন কাফেরের নিকট বাইয়াত করলেন? আর ইসলামের ওই যুগে যেসব যুদ্ধ বা মতবিরোধ হয়েছে সে ব্যাপারে আমাদের চুপ থাকাই উত্তম । কারণ মুসলিম নামধারী ইয়াহুদীদের চক্রান্তে এমনভাবে ছড়িয়ে পরেছিলো যে, সাহাবীরাও এ চক্রান্ত হতে রেহাই পায় নি। আর সাহাবীরা এ যুদ্ধগুলো পরষ্পরকে কাফের ভেবে যুদ্ধ করেন নি। বরং এগুলো বুঝার ভুল ও সর্বোপরী ইয়াহুদীর চক্রান্ত ও তথ্য আদান প্রদানের ভুল।
প্রশ্ন ৪. তিনি কেন কথায় কথায় অন্য ধর্ম গ্রন্থ হতে উদ্ধৃতি দেন?
উত্তর : যারা এটা বলে থাকেন তাদের বলছি এটাও বুঝার ভুল। তিনি সেগুলো থেকেই উদ্ধৃতি দেন যেগুলোতে কুরআনের বিপরীত নেই। আর কুরআনেই তো আছে আসুন আমরা কথা বলি যা আমাদের ও তোমাদের মাঝে মিল রয়েছে।
এরকম অনেক প্রশ্ন আছে। যেগুলো করা হয়। সেগুলোর অধিকাংশ অবান্তর। আপনাদের কারও মনে প্রশ্ন জাগলে আমাকে ইমেইল করুন। অযথা অপপ্রচারে কান না দিয়ে প্রশ্ন করুন । ইনশাআল্লাহ দলীল প্রমাণ ভিত্তিক জওয়াব দেয়া হবে ।তবে জওয়াব পেতে দেরী হতে পারে কারণ প্রমাণ সহকারে জওয়াব দেয়া একটু সময় সাপেক্ষ। আর আপনি তার উদ্ধৃতি গুলো কোন লেকচারে পেয়েছেন, কোন বইয়ে পড়েছেন, তার লিংক এবং প্রকাশনীর নাম প্রকাশ করবেন।
আমার ইমেইল ঠিকানা

[email protected]
এর পরের পর্বে আসছে
ডা. জাকির নায়েক ও আমার অভিজ্ঞতা

৫০টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

সততা হলে প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে

লিখেছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম নাদিম, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ক্রেতাদের মনে যে প্রশ্নগুলো থাকা উচিত:

(১) ওজন মাপার যন্ত্র কী ঠিক আছে?
(২) মিষ্টির মান কেমন?
(৩) মিষ্টি পূর্বের দামের সাথে এখনের দামের পার্থক্য কত?
(৪) এই দোকানে এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×