somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিরোধের কবিতা- ফাদওয়া তওকান

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ফিলিস্তিনের প্রোপটে আধুনিক কালে প্রতিরোধ ও স্বাধীনতার প্রশ্নে পথিকৃত কবি হিশাবে পরিচিত কবি ইব্রাহীম ত্বওকনের সহোদরা কবি ফাদওয়া ত্বওক্বনের জন্ম
১৯১৭ সালে নাবলুসের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মতা সম্পন্ন এক অভিজাত পরিবারে ।
ত্রিশ ও ১৯৩৫,’৩৬’র গণঅভ্যুত্থানসহ চল্লিশের এবং পঞ্চাশের দশকগুলোতে কবিতায় ফাদওয়ার উপস্থিতি ছিলো অসাধারণ প্রতিরোধ মুখর। ১৯৬০ সালে লন্ডন সফর এবং সেখানে দুবছরের অবস্থান তার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসে কবিতার ফর্মসহ সামগ্রিক চিন্তার ক্ষেত্রে। আধুনিক হয়েও ঐতিহ্যবাদী ও মুক্ত চিন্তার এই নারী দেশ, রাষ্ট্র, স্বাধীনতা ও জনগণের প্রশ্নে ছিলেন আপোাশহীন। ফদওয়া ত্বওক্বনকে আরবী কবিতা ও নন্দনকলার ঐতিহ্যের সেই সব ণজন্মা নারীদের অন্যতম হিশাবে বিবেচনা করা হয় যারা আরবী প্রাচীন কাসীদার ক্যাসিক কাব্যনৈপুণ্যরীতি থেকে বেরিয়ে এসে একইসংগে প্রাচীন সংগীতিয় ছন্দ-মাত্রা এবং আধুনিক কালের দেশীয় পরিমন্ডলের অন্তর্গত সুরের বিন্যাসে নতুন কাব্য ভাষা নির্মাণে নিবেদিত ছিলেন। প্রতিরোধের কবিতা ছাড়াও সূফীবাদী, প্রকৃতিবাদী ও রোমান্টিকধারার প্রচুর কবিতা লিখেছেন ফাদওয়া। ফিলিস্তিনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারসহ বহু আরব দেশ থেকে বিপুল সম্মাননা অর্জন করেন তিনি।



যায়নবাদীদের দখলের দিনে


আমি মৃত্যুকে দেখেছি একদা, দেখেছি বিশ্বাসঘাতকরা
গতির মুখে বারবার ফিরে আসছে
তারা আকাশের জানালাগুলো রুদ্ধ করে দিয়েছে
তারা তরঙ্গের পরাজয়ের দিনে
নগরীর শ্বাস-প্রশ্বাস টেনে ধরেছে
আর আমাদের আশারা ছাই হয়ে যায়
যখন বিকৃত মুখে তারা আলোর সামনে এসে
নিজেদের চেহারা তুলে ধরলো
এরপর বিপদের গলগ্রহে আটকে লুকিয়ে থাকলো
আমার দু:খ ভারাক্রান্ত নগরী।

শিশুরা লুকিয়ে গেছে, লুকিয়ে গেছে সংগীত
কোনো ছায়া নেই। কোনো শব্দ নেই।
শুধু আমার নগরির ভেতর দু:খরা উলঙ্গ হয়ে
উর্বর পদেক্ষেপের কাছে হামাগুড়ি খায়।
এখন আমার নগরীর ভেতর নীরবতা
নীরবতা পাহাড়ের মতো নিস্তব্ধ। উপুড়।
নিস্তব্ধতা রাতের মতো অস্পষ্ট।
নিস্তব্ধতা মৃত্যু আর পরাজয়ের গ্লানি বহন করা এক ট্রাজেডী।
হায় শোকাতুর নিস্তব্ধ নগরী
বুঝি এমনি ফসল তোলার দিনে
ফলফলাদি-শস্যরা পুড়ে যায় ?
হায় শেষ চক্র!
হায় শেষ চক্র!



তুফান এবং বৃক্ষ

অভিশপ্ত ঝড়ের দিন চরম তান্ডব লীলা খেলে গেছে
ব্যাপক বিস্তৃত হয়ে গেছে ঘোর কালো টর্নেডোর দিন।
বর্বর উপকূলেরা সবুজ সুষম এই মাটির বুকে
ছুঁড়েছে উন্মাতাল তুফান।

তারা বাকুম বাকুম চিৎকার করলো, আর অমনি পশ্চিমের জগত অতিক্রম করে
মানবময় ধ্বনিত হলো অনেক অনেক খবর!!
বৃক্ষরা ভেঙ্গে গেছে!!
পর্বতকঠিন ডালপালা, কড়িকাঠি সবকিছু চূর্ণ হয়ে গেছে
আর কিচ্ছু নেই
নেই আর এতোটুকু বৃষ্টি
যেখানে আবার জেগে উঠবে বৃক্ষ!

বৃরা ভেঙ্গে গেছে
মুছে গেছে আমাদের রক্তলাল নদীনালা
মুছে গেছে গতিমান আশক্ত শিকড়রাজি
যেখানে শরাবের বিকল্পে অসংখ্য লাশের টুকরোরা বইয়ে দিয়েছে রক্তের স্রোত
মুছে গেছে আরব বেদুঈনের কঠিন শিকড়
পাথরের মতো শক্ত হয়ে যা গভীরে প্রবেশ করতো
অনেক অনেক দূর বিস্তৃত হতো বিপুল গভীরে।

দেখো তবু বৃরা আবার তৎপর হয়ে উঠবে
শীঘ্রই সোজা দাঁড়িয়ে যাবে বৃ এবং সমস্ত ডালপালা।
অচিরেই সূর্যের আলোর মুখে
অংকুরিত হবে বৃরে যাবতীয় হাসি।
এবং দেখো সেখানে অচিরেই পাখিরা আসবে
নিশ্চয়ই পাখিরা আসবে
পাখিরা আসবে অবশ্যম্ভাবি

নিশ্চিত পাখিরা আসবে
অবশ্যই পাখিরা আসবে
খুবই দ্রুত পাখিরা আসবে।




অস্তিত্ত্ব

আমি ছিলাম পৃথিবীর পর
ঝুলন্ত অন্ধকারে তাড়িত এক প্রশ্ন।
জবাব থাকে গোপনে আড়ালে।
অথচ আমিই আমার জন্য
অজানা অন্ধকারের
এক নতুন আলোর উদ্ভাস।
নিয়তি তাকে ব্যক্ত করে
তাকে ঘিরেই
জগত ঘোরে
তাকেই ঘিরেই
জগত ঘোরে বারবার সারাণ।
এমনকি তার এক-অদ্বিতীয় আলোর বিকিরণে মিলে
নিঃশেষ হয়ে যায়।
নিকষ ঘন অন্ধকার লুপ্ত হয়ে যায়।
এবং দুটি ইন্তিফাদার ভেতর এখন
আমি আমার হাতে পেয়ে যাই
হারানো জবাব।
হে তুমি, তুমি হে সুদূর
হে নৈকট্য
স্মরণ করো না ডুবে যাওয়া। স্মরণ করোনা অস্ত যাওয়া।
তোমার আত্মা জগতের আকার ধারণ করে
আমার জন্য, তোমার জন্য,
আমাদের জন্য, কবিদের জন্য।
তবু অস্তিত্ত্ব সমস্ত দূরের সীমানা
মিলিয়ে দেয়!!

* "চিন্তা"র সৌজন্যে
http://www.chintaa.com/index.php/chinta/showArchive2/28/bangla
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×