কিছুদিন যাবত আফিফা মারজানা নামক জনৈক ব্লগার এই ব্লগে ক্রমান্বয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। ওনার বিশেষ টার্গেট হল জামায়াত, শিবির এবং আবুল আ'লা মওদূদী। উদাহরণ স্বরূপ দেখুন। এই পোষ্টে উনি উল্লেখ করেছেন :
"যদি কোনো ব্যক্তি সুবহেসাদিক দেখা
দেয়ার পরও তাড়াহুড়া করে কিছু খায়
তবে তার রোজার ক্ষতি হবেনা-মওদুদী
তাফহীমুল কোরআন ১ম খন্ড ।
অথচ সুরা বাকারায় স্পস্টভাবে বলে
দেয়া আছে সুবহে সাদিক দেখা দেয়ার
পর খাওয়া যাবেনা । "
এখানে দেখুন
১৮৭ নাম্বার আয়াতের ১৯৪ নাম্বার টিকায় বলা হয়েছে,
"রাত পর্যন্ত রোযা পূর্ণ করার অর্থ হচ্ছে, যেখানে রাতের সীমানা শুরু হচ্ছে সেখানে তোমাদের রোযার সীমানা শেষ হয়ে যাচ্ছে৷ সবাই জানেন, রাতের সীমানা শুরু হয় সূর্যাস্ত থেকে৷ কাজেই সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ইফতার করা উচিত৷ সেহরী ও ইফতারের সঠিক আলামত হচ্ছে, রাতের শেষ ভাগের যখন পূর্ব দিগন্তে প্রভাতের শুভ্রতার সরু রেখা ভেসে উঠে ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তখন সেহরীর সময় শেষ হয়ে যায়৷ আবার যখন দিনের শেষ ভাগে পূর্ব দিগন্ত থেকে রাতের আঁধার ওপরের দিকে উঠতে থাকে তখন ইফতারের সময় হয়৷ আজকাল লোকেরা সেহরী ও ইফতারে উভয় ব্যাপারে অত্যধিক সতর্কতার কারণে কিছু অযথা কড়াকড়ি শুরু করেছে৷ কিন্তু শরীয়াত ঐ দু'টি সময়ের এমন কোন সীমানা নির্ধারণ করে দেয়নি যে তা থেকে কয়েক সেকেণ্ড বা কয়েক মিনিট একদিক ওদিক হয়ে গেলে রোযা নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ প্রভাত কালে রাত্রির কালো বুক চিরে প্রভাতের সাদা রেখা ফুটে ওঠার মধ্যে যথেষ্ট সময়ের অবকাশ রয়েছে৷ ঠিক প্রভাতের উদয় মুহূর্তে যদি কোন ব্যক্তির ঘুম ভেঙে যায় তাহলে সংগতভাবেই সে তাড়াতাড়ি উঠে কিছু পানাহার করে নিতে পারে৷ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যদি তোমাদের কেউ সেহরী খাচ্ছে এমন সময় আযানের আওয়াজ কানে এসে গিয়ে থাকে তাহলে সংগে সংগেই সে যেন আহার সে যেন আহার ছেড়ে না দেয় বরং পেট ভরে পানাহার করে নেয়৷ অনুরূপভাবে ইফতারের সময়ও সূর্য অস্ত যাওয়ার পর অযথা দিনের আলো মিলিয়ে যাওয়ার প্রতীক্ষায় বসে থাকার কোন প্রয়োজন নেই৷ নবী আল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য ডোবার সাথে সাথেই বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ডেকে বলতেন, আমার শরবত আনো৷ বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, হে আল্লাহর রসূল! এখনো তো দিনের আলো ফুটে আছে৷ তিনি জবাব দিতেন, যখন রাতের আঁধার পূর্বাকাশ থেকে উঠতে শুরু করে তখনই রোযার সময় শেষ হয়ে যায়৷ "
অর্থাৎ, কারো যদি দেরিতে ঘুম ভাঙ্গে তাহলে তার করণীয় কি সে ব্যাপারে বলা হয়েছে ( রেগুলার কেসে না ) এবং একটি হাদীসের রেফারেন্স ও দেয়া হয়েছে. কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে হাদীসের রেফারেন্স উনি দেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন নি এবং ওনার ব্লগে সেটা উল্লেখ ও করেন নি. ওনার যে কাজ বিভ্রান্তি ছড়ানো সে কাজটুকু করে দায় সেরেছেন ( আবুল আ'লার বিরুদ্ধে যারা বিভ্রান্তি ছড়ান তারা আংশিক রেফারেন্স টেকনিক ফলো করেন ) . কাজেই আমার এই লেখার মাধ্যমে সকল ব্লগার কে আহ্বান জানাবো যে ওনার যে কোনো অভিযোগ পূর্ণ রেফারেন্স ছাড়া গ্রহণ করবেন না. আর মিসেস আফিফা কেও বলব ব্লগে ইসলাম নিয়ে অনেক ইতিবাচক কাজ করার আছে. নেতিবাচক কাজ করে নিজের ক্ষতি ছাড়া আর কিছু পাবেন না. কাজেই নেতিবাচিক কাজ ছেড়ে ইতিবাচক কাজে মন দিন. আল্লাহ আপনার পেমেন্ট অবশ্যই দিবেন। ইতিবাচক হলেও নেতিবাচক হলেও।