somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অক্সিজেন - কেরালা মডেল

২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভারতে প্রতিদিন ভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর বিশ্ব রেকর্ড হচ্ছে। দেশটিতে যে অক্সিজেনের তীব্র সংকট চলছে, সেটাও এখন আন্তর্জাতিক বড় খবর।

ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে কেবল কেরালায় কোনো অক্সিজেন সংকট নেই। শুধু তাই না, এই মুহূর্তে তাদের অক্সিজেন মজুত আছে ৫-৬ শ টন। বাকি ভারত যখন অক্সিজেনের জন্য হাহাকার করছে তখন শুধু কেরালায় কেন অক্সিজেন সংকট নেই, ভবিষ্যতের স্বার্থেই সেটা জানাটা জরুরি। বাংলাদেশের জন্যও ‘কেরালা মডেল’কে বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ।

মাত্র দুই বছর আগেও পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। পাশের রাজ্যগুলো থেকে তখন অক্সিজেন আনতে হতো। করোনা সংকট এ অবস্থা পাল্টে দিয়েছে।

অনেক দেশের চেয়ে কেরালায় অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র বেশি
আয়তনের দিক থেকে কেরালা ভারতের ২২তম রাজ্য। এখানে থাকে ভারতের জনসংখ্যার মাত্র ৩ ভাগ। কিন্তু নাগরিক নিরাপত্তার জন্য যা কিছু জরুরি, তার অনেক কিছুতেই বরাবর এগিয়ে এই ছোট রাজ্য। গত এক দশক ধরে পুরো ভারত যখন তথাকথিত ‘গুজরাট অর্থনৈতিক মডেল’-এ মাতোয়ারা, তখন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি খাতে প্রকৃত অগ্রগতি ঘটিয়ে চলেছে কেরালা। তারই বড় নজির এই অক্সিজেন উদ্বৃত্ত থাকার ঘটনা। এই রাজ্যে এখন গড়ে দিনে অক্সিজেন লাগছে ৮০ থেকে ১০০ মেট্রিক টন। তাদের উৎপাদন সক্ষমতা আছে ২০০ মেট্রিক টনের বেশি। ভারতের ছোট এই রাজ্যে অক্সিজেন উৎপাদনের পাঁচটি কেন্দ্র রয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের সামর্থ্যের চেয়েও যা বেশি।সামান্য কিছু প্রশাসনিক পদক্ষেপ তাদের আজকের নিরাপদ অবস্থা নিশ্চিত করেছে। গত বছর মার্চে যখন মহামারির শুরু হয়, তখন থেকেই এ রাজ্যে অক্সিজেনের সম্ভাব্য চাহিদা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত নজরদারি ছিল। মহামারির পরের ঢেউগুলোতে সংকটের চেহারা কেমন হবে, সেটা আগেই জরিপ করে রেখেছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ। কেন্দ্রনিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করেই কেরালার স্বাস্থ্য বিভাগ নজরদারির এই কাজটি করে। শুধু ওই সব সংস্থায় স্থানীয়ভাবে বাছাই করা কিছু জনবল বসিয়ে দিয়েছিল তারা।

গত বছরের মার্চ থেকেই কেরালা অক্সিজেন উৎপাদন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ করে। কোনো একটা উৎপাদন কেন্দ্রে সমস্যা হলেও যাতে বিকল্প থাকে এবং কোনো ধরনের ‘মনোপলি’ তৈরি না হয়, তার জন্যই এ ব্যবস্থা। পাশাপাশি শিল্পখাতের অক্সিজেনের বদলে হাসপাতালের অক্সিজেন উৎপাদনে বিশেষ মনোযোগ দেয়। কোভিডের সময় কেরালা প্রশাসনের চিন্তা কেবল শিল্প ও অর্থনীতিকে ঘিরে ছিল না। সরকারের মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল স্বাস্থ্যখাত।

মনোপলি ঠেকাতে নতুন উৎপাদন কেন্দ্র
কমিউনিস্টশাসিত রাজ্য কেরালা। কিন্তু সেখানে বেসরকারি খাতে দিব্যি বিপুল অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে। রাজ্য সরকার শুধু চাহিদা, উৎপাদন ও সরবরাহে কঠোর নজরদারি করছে। মনোপলি কমিয়ে আনতে অক্টোবরে রাজ্যে নতুন আরেকটা অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। ফল হয়েছে এই যে, গত এপ্রিলেও যেখানে অক্সিজেন উৎপাদন হতো ৯৯ মেট্রিক টন, সেখানে চলতি এপ্রিলে হচ্ছে ২১৯ মেট্রিক টন।


কেরালা যেহেতু অ-বিজেপিশাসিত রাজ্য, তাই তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল বরাদ্দেও রক্ষণশীলতা আছে। এই অবস্থা সামলাতে রাজ্যসরকার কিছু কিছু হাসপাতালকে জনতার কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে মেডিকেল বেডগুলোর সঙ্গে অক্সিজেন পাইপলাইন সংযোগ করে নিতে বলে। কিছু হাসপাতাল কাজটি করতে পেরেছিল। এতে অক্সিজেন পরিবহন ঝামেলা অনেক কমে যায়। এ রকম নানা পদক্ষেপের সূত্রেই এখন নিজের চাহিদা মিটিয়েও অন্তত তিনটি রাজ্যকে নিয়মিত অক্সিজেন দিচ্ছে কেরালা।
#আলতাফ পারভেজ গবেষক / প্র আ

লেখক একটি বিষয় উল্লেখ করেননি তা হচ্ছে পৃথিবীর সবচে উচ্চ ভাস্কর্য গুজরাটে , ৩৫ হাজার কোটি রুপি ব্যায়ে । কেরালা টাকা ও তাগাদা পেলেও সেদিকে ঝোকেনি । তারা তিনটি অক্সিজেন প্লান্ট আমদানি করেছিল ওই টাকায়। রাষ্ট্র পরিচালনার এটাই মেকানিজম # আনন্দবাজার
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৫৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×