মাইয়া পিচ্চিগুলার তুলনায় পোলা পিচ্চি পটানোটা বেশি দুস্কর। পোলাগুলারে পটানোর ইনিশিয়াল পর্যায়ে বেয়াদবগুলা এমন একটা ভাব নিবো যেন সে খুব ওয়েটফুল একজন মানুষ। পটাপটিতো দূরের কথা, কারো সাথে কথা কইতে গেলেও সে স্বর্ণকারের দাড়িপাল্লা দিয়া মাইপা হিসাব কইরা কথা কয়।
এই টাইপের অবহেলা সহ্য কইরা যদিওবা তারে পটানোর চেষ্টা করি তাইলে অনেক কাঠখর পুড়াইতে হয়। সামান্য কোলে নেয়ার জন্যে চকলেটের অফার দিতে হইবো, তাও আবার সস্তাগুলা না, টিভিতে যেগুলার বিজ্ঞাপন দেয় সেইগুলা( এই বয়সেই ঘুষের প্রবৃত্তি)। যদি কপাল ভাল থাকে তাইলে ঘুষ দেওয়ার পরে সে কোলে আসতে সম্মত হইবো। আর যদি খারাপ হয় তাইলে ঘুষের মাত্রা বাড়াইতে হইবো।
এরপর সেকেন্ড ফেইস। পিচ্চি কাছে আসতে রাজি হইলে তারপর শুরু হইবো তার নানাবিধ শাররিক নির্যাতনী আবদার। এই যেমন তারে গাড়িতে চড়াইয়া ঠেলতে হইবো, তার সাথে ক্রিকেট খেলেতে হইবো এইসব। ক্রিকেটেও আবার শর্ত আছে। শর্ত হইতাছে এক. সে আগে ব্যাট করবো আর দুই. তার আউট নাই। যদি রাজি না হই তাইলে ওয়াজ শুরু হইয়া যাইবো।
কাপঝাপ কইরা পেরেসান হইয়া যখন মনে হইবো, ’ মাফ চাই, আমার পটানোর দরকার নাই’, ঠিক তখনই শুরু হইবো আসল খেলা। চরম ওয়েটফুল সেই মানুষটা বিবর্তনবাদের প্রাথমিক অবস্থায় ফিরা যাইবো। অর্থাৎ, বানরের রুপ ধারন করবো। পিচ্চি তখন ঘাঢ়ে উইঠা নানারকম খেলা দেখাইতে শুরু করবো। বিভিন্ন সুপারহিরোরা কে কেমনে মাইর দেয় তা মাইরা মাইরা দেখাই আর এইগুলা বিনা প্রতিবাদে হজম করতে হইবো। মনডা চাইবো, 'HULK' কেমনে মাইর দেয় সেইডা দেখাইয়া দেই। কিন্তু কিছুই করার নাই।
পক্ষান্তরে মাইয়া পিচ্চিগুলা কম্পারেটিভলি ফ্লেক্সিবল। এইগুলা প্রাথমিক পর্যায়ে অতটা ভাব না নিলেও একটু রক্ষণশীল। এরে পটাইতে হইলে প্রথমদিকে যা করার করতে হইবো দূর থিকা। চোখ নাচানি, ভেট্কি টাইপ কিছু অঙ্গভঙ্গি করতে হইবো। কেইস যত জটিলই হোক, একটু সময় নিলেও কাজ হবে। সো লাইগা থাকতে হইবো।
যেইমাত্র পিচ্চি হাসি দিছে, মানে গ্রিন সিগ্নাল। এইবার কাছে যাওয়া যাইতে পারে। আরো কিছুক্ষণ ভেট্কা-ভেট্কি খেইলা তারে কোলে নেয়া যাইতে পারে। কোলে নেয়ার পর দুই-তিনটা ঝাকি দিলেই হাসির সাথে আওয়াজও বাইর হইবো( খিলখিল হাসি)। আর আওয়াজ বাইর হওয়া মানেই পরিস্থিতি পুরাপুরি নিয়ন্ত্রনে।
চকলেট-ফকলেট কিছু অফার করলে আরো কিছু এ্যাডভান্টেজ পাওয়া যাইবো তবে পিচ্চির পক্ষ থিকা সেরকম ডিমান্ড নাই। আরো কিছুক্ষন তার লগে পোংটামি কইরা খালি তারে বুঝাইতে পারলেই হইছে ’আমি তার পক্ষের লোক’, প্রজেক্ট সাক্সেসফুল। এইবার তার লগে যা খুশি তাই করা যাইতে পারে, সবকিছুতেই তার স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন।
মাইয়া পিচ্চিগুলা ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় এ্যাডভান্টেজ যেইটা তা হইতাছে এগো শয়তানি বন্ধ করার সুইচ আছে যা পোলগুলার ক্ষেত্রে নাই। আমি যখন খুশি অবসর নিতে পারি, যা পোলাগো ক্ষেত্রে হাশরের আগে সম্ভব না। মাইয়া পিচ্চি পটানোর ইফেক্ট লাস্টিংও করে বেশিদিন ( মানে পিচ্চি মেলাদিন পটিত থাকে) কিন্তু পুলাগুলারে পরের দিনই নতুন কইরা শুরু থিকা পটাইতে হয়। ইবলিশের ছাও একেকটা।
সো, পিচ্চি পটানোর ক্ষেত্রে পোলা পিচ্চির থিকা মাইয়া পিচ্চি বেটার। অল্প শ্রমে অধিক লাভ।
উদ্ধৃত বক্তব্য শুধুমাত্র পাঁচ বছর বা তার কম বয়সি পিচ্চিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেউ পাঁচ উর্ধ্ব পোলাপাইনের সাথে বক্তব্যের মিল খুঁজতে চাইলে নিজ দায়িত্বে খুঁজবেন।