somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সরকারের দিনবদলের শ্লোগান

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৩:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমরা জানি মহাজোট সরকার দিনবদলের শ্লোগান দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। যদিও ডিজিটাল বাংলাদেশ মারাত্মক ভাইরাসে আক্রান্ত। জনগনকে ধোকা দিয়ে বোকা বানানোর কাজটি তাদের দীর্ঘ দিনের রপ্ত। দিনবদলের কাজটি আসলেই কঠিন এবং চ্যালেঞ্জের বিষয়ও বটে। একা একা এ কাজ করা যায় না। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কিংবা প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করেও দিনবদল সম্ভব নয়। দিনবদলে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্যের, প্রয়োজন জাতীয় জাগরণের। কিন্তু গত এক বছরে দিনবদলের অঙ্গীকারকারী সরকার জাতীয় ঐক্য কিংবা জাতীয় জাগরণের পথে পা বাড়ায়নি। বরং দলীয় জাগরণে সরকার এবং সরকারের মন্ত্রী বাহাদুররা এতটাই বেসামাল হয়ে পড়েছেন যে, জাতীয় দায়িত্বের বিষয়গুলো তাদের কাছে গৌণ হয়ে পড়েছে।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিকাশ ছাড়া দেশের সমৃদ্ধি সম্ভব নয়। আর এ ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বই প্রধান। আর এই দায়িত্ব পালন করতে গেলে সংসদকে কার্যকর রাখতে হয়, প্রশাসনকে রাখতে হয় নিরপেক্ষ এবং আদালতের ভাবমর্যাদাও রাখতে হয় সমুন্নত। কিন্তু এই তিন ক্ষেত্রেই ত্রুটিপূর্ণ নানা পদক্ষেপের কারণে সরকার পড়ে গেছে আস্থার সংকটে। জনগণ এখন আর বিশ্বাস করতে পারছে না যে, এই সরকারের মাধ্যমে দিনবদল সম্ভব। সরকার একেএকে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের সব রাজনৈতিক মামলা খারিজের ব্যবস্থা করছে, আর বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বেলায় ফাইল নড়ে না। বরং নতুন-নতুন মামলার ব্যবস্থা হচ্ছে। বিরোধী দলীয় নেতাদের আদালতে ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে। বিচারপ্রার্থী হওয়ায় তাদের ওপর হামলাও করা হচ্ছে।যা গতকাল সাকা চৌধুরীর বেলায় হয়েছে।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপও সরকারী দলের নেতা-কর্মীরা কুণ্ঠিত নয়। সম্প্রতি আমার দেশ পত্রিকার সাংবাদিকের ওপর হামলা এবং পত্রিকাটির সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার মিছিল তার বড় প্রমাণ।
সরকার খুব জোরেসোরেই বলছে যে, আমরা একদলীয় ব্যবস্থায় নয় বরং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। কিন্তু সরকার যেভাবে রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, প্রতিষ্ঠান, এমনকি বিমানবন্দরের নামকরণে একদলীয় দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচয় দিচ্ছে তাতে কি এ কথা মনে করা যায় যে, এ সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী? সরকার এখন প্রতিপক্ষের নাম উৎখাতের তৎপরতায়ও মগ্ন। নইলে জিয়া এয়ারপোর্টের নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিতে যাবে কেন? প্রেসিডেন্ট জিয়া শুধু মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডারই ছিলেন না, তিনি দেশের একটি প্রধান দলের প্রতিষ্ঠাতা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক। এমন একজন ব্যক্তির নামও সহ্য করতে প্রস্তুত নয় বর্তমান সরকার। কিন্তু সরকারকে কে একথা বোঝাতে সক্ষম হবেন যে, এয়ারপোর্ট থেকে জিয়ার নাম মোছা সম্ভব হলেও জনগণের হৃদয় থেকে তার নাম মোছা সম্ভব নয়। বরং এ কাজ করতে গিয়ে শুধু যে সরকারের জনসমর্থনই হ্রাস পাবে তা নয়, সরকার যে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী নয় তাও প্রমাণিত হবে।
দিন বদলাতে হলে রাজনৈতিক গুনগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে, সাংঘর্ষিক রাজনীতির অবসান ঘটাতে হবে। কিন্তু বাস্তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির গুণগত পরিবর্তনতো দূরের কথা; বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কীভাবে নির্মূল করা যায়, কীভাবে অপদস্থ করা যায় তার সর্ববিধ আয়োজন তারা করছেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ব্যবহারের মাধ্যমে। সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, ব্যবসা-বাণিজ্যে, টেন্ডারে, হাটেঘাটে নিজেদের দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার পর এখন ব্যক্তিস্বার্থে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায় এসব খবর মুদ্রিত হচ্ছে।
বর্তমানে সংঘর্ষের রাজনীতির অবসান তো দূরের কথা, বরং তার মাত্রা আরও বাড়ছে। কিন্তু এসব কেন, কার স্বার্থে? এ সবের জন্যতো কোন জাতীয় রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন হয় না, প্রয়োজন হয় না কোন উচ্চতর আদর্শ কিংবা গণতন্ত্রের! তারপরও প্রিয় স্বদেশে বড়-বড় আদর্শের নামে, দেশ- জনগণ ও গণতন্ত্রের নামে অনাকাঙ্ক্ষিত এ সব ঘটনা ঘটছে। আসলে আমাদের রাজনীতিতে ছলনা আছে, কূটচাল আছে, আছে কথা ও কাজের গরমিল। গত এক বছরে সরকার যে পথে হেঁটেছে তা দিনবদলের পথ নয়। সরকার যদি আসলেই দিনবদল চায় তাহলে পথ পরিবর্তন করতে হব!
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×