সময় বিকেল ৫.১২ মিনিট। অনিক বসে আছে “আপন কফি হাউস” এ , প্রতি সপ্তাহে এই দিনটাই শুধু অনিক এখানে আসে। আজ প্রায় ১৫ বছর যাবত আসছে।
কফি এর নাম,মালিক, কর্মচারিদের পরিবর্তনও হয়েছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু অনিকের এই ১৫বছরে ১ শনিবারের জন্য ও আসা মিস হয়নি। প্রতি সপ্তাহে শনিবার বিকেলে আসে ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে এর পর উঠে চলে যায়। আর অনিক প্রতিশনিবারেই কাপ্পাচিনো খায়, যদিও এক সময় অনেক অপছন্দের ছিল জিনিসটা অনিকের। প্রতি শনিবারের মত অনিক আজো বসে আছে, ঠিক ১৫বছর আগে কেউ একজন অনিক কে অপেক্ষা করতে বলেছিল তাই অনিক এখনো অপেক্ষা করে। অনিক এখনো বিশ্বাস করে সে আসবে একদিন না একদিন আসবে। অনিকের দিকে অনিকের বয়সী একটা লোক করমর্দন এর জন্য হাত এগিয়ে দিল বলল আপনি অনিক সাহেব? আমি মিঃ রফিক। অনিক বলল হ্যাঁ আমিই অনিক। আগুন্তক ব্যক্তি টি বলল আমি সাদিয়ার হাসবেন্ড। ...... অনিক কিছুক্ষণ থমকে থাকলো। মি রফিক একনাগাড়ে বলতে থাকলো । আপনি যে ১৫বছর ধরে প্রতিশনিবারে আপন কফি শপ এ আসেন সাদিয়া এটা জানে। সাদিয়া ও আসতো সামনের ক্যাফেটেরিয়া থেকে দেখতো আপনাকে, কিন্তু দেখা দিতনা আপনাকে চলে যেত আপনি যাওয়ার পরপরই।
১৫বছর আগে অপেক্ষা করতে বলে আসতে পারেনাই, তাই কোন মুখে আপনার সামনে আসবে? ও সেলফিশ হতে পারেনাই। পারেনাই পারিবারিক ও নাভীর সম্পর্ক চিন্ন করতে। তাই তো তার আর আশা হয়নাই।
মিঃ রফিক অনিকের দিকে একটা ডাইরি এগিয়ে দিয়ে বলল আমিও জানতাম না বিষয়টা । ওর লিখা ডাইরি টা গতকালকেই আমার হাতে আসে।। আপনার সম্পর্কে বিস্তারিত লিখা আছে তাই চিন্তেও অসুবিধা হয়নি আমার। ওর ভালোবাসার চিহ্ন হিসেবে রেখে গেসে এই নোটবুক...... গত পরশু দিন সাদিয়া মারা যায়।
ও আগেই জানা হয়ে গেছিলো ওর সময় ফুরিয়ে এসেছে তাইতো আপনার জন্য রেখে যাওয়া শেষ উপহার টা আপনার কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ও লিখে গেছে.........