রাস্তার পাশে দাঁড়ানো ফেরিওয়ালার ডাকে শরবত পান করা নাকি খাওয়া যায় এই প্রশ্নের ধার না ধেরে মানুষ দেদারসে কিনে যাচ্ছেন লেবু দিয়ে বানানো পানিয়টি। তার ডাকে মন না গললেও একটি প্রশ্ন উদয় হলো। আচ্ছা, এই লোকগুলো ব্যবসায়ের মূলধন পায় কোথা থেকে? কি করেই বা চলে তাদের সীমিত আয়ের এ জীবন? কেন জানি, হঠাৎ করেই একজন ফেরিওয়ালার জীবনের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে।
আরেকটি প্রশ্ন না করলেই নয়- একজন ভালো সেলসম্যান হতে হলে ভালো 'সেলস পিচ' তৈরী করা জরুরী। যত কম শব্দ ব্যবহার করে আকর্ষণীয় সেলস পিচ তৈরী করা যায় ততই ভোক্তার বা কাস্টমারের মন জয় করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই পিচ কিভাবে দিতে হয় তা রাস্তার পাশের ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে শেখার আছে অনেক কিছু। সে দাঁতের মাজন বিক্রেতাই হোক কি 'খালি ১০০ টাকা' কিংবা 'হেইয়ো, হেইয়ো' রব তোলা ফুটপাতের কাপড়ের ব্যবসায়ী, কি নিদারুণ বুদ্ধিমত্তার সাথেই না তাঁরা পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া মানুষদের নিজ ভোক্তা বানিয়ে নিচ্ছে কখনো লক্ষ্য করেছেন কি?
শরবতের কথা উঠতেই মনে পড়ে গেলো ইংল্যান্ডের তিন বন্ধুর গল্প। ক্যামব্রিজ থেকে পাস করা এই তিন বন্ধু একদিন চাকরী ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তাঁরা ব্যবসা করবেন বলে ঠিক করলেন। কি ব্যবসা করবেন? অনেক চিন্তা করে ঠিক করলেন- শরবত বেচার ব্যবসা করবেন। যেই ভাবা, সেই কাজ! একদিন তিন বন্ধু কিছু শরবত কয়েকটা বোতলে ভরে একটি খেলার মাঠে চলে গেলেন। লোকজন যারা সেই ফ্রি শরবত নিলো, তাদেরকে অনূরোধ করলেন, যদি ভালো লাগে তারা যেন 'হ্যাঁ' লেখা বালতিতে খালি বোতল ফেলে, আর, ভালো না লাগলে 'না' লেখা বালতিতে।
দিন শেষে দেখা গেলো, মাত্র দুটি বোতল 'না' লেখা বালতিতে পড়ে আছে। এর পরের দিনই তিন বন্ধু চাকরী ছেড়ে ব্যবসায় নেমে গেলেন। শরবতের সেই ব্যবসা পরে একটি বড় কোম্পানী কিনে নেয়। আর, তিন বন্ধু এখন একেকজন একেকটি দ্বীপের মালিক!
দোলনা হতে কবর পর্যন্ত সবার জন্যে শিক্ষা, আমার জন্যে তো বটেই!