
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী,
আমার সালাম জানবেন। আমি একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে আজ এই খোলা চিঠি লিখছি।
মহিলাটিকে দেখে মনে হয় বেশ বয়স হয়েছে। আমার আম্মার বয়সের সাথে তুলনা করে বুঝেছি, লালমাটিয়ার জাকির হোসেন রোডের পাশে রোজ পথে বসে থাকা মহিলাটির বয়স ৭০-৮০ হবে। তিনি কানে একটু কম শোনেন।
জীর্ণ শাড়ি পড়া বয়স্ক মহিলাটিকে আজ থেকে ৩ সপ্তাহ আগে প্রথম দেখি। এরপর ৩ দিন ছাড়া বাকি দিনগুলোতে আমি তাঁর কাছে দুপুরের খাবার পৌঁছে দিয়েছি। প্রতিবার খাবার দেওয়ার আগে একবার বুড়ি মহিলাকে দেখে যাই, এই আশায় যে, গিয়ে দেখবো কেউ একজন হয়তো আজকের খাবার দিয়ে গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু, প্রতিবার সেই আশায় গুড়েবালি। মহিলাটিকে একটি মুদি দোকানের সামনে কিংবা একটি ফার্মেসী'র নিচে প্রতি দিনই খালি হাতে দেখতে পাই!
আমি গত ৩ বছর ধরে হোম অফিস করছি। ২/৩ মাসে একবার পান্থপথের মূল অফিসে যাই, তাও কয়েক ঘণ্টার জন্যে। বাসার একটি রুমে স্থায়ী অফিস বসিয়েছি। বিদ্রোহী ভৃগু ভাই সেই অফিসে একবার এসেছিলেন।
আমাকে রোজ দুপুরে একবার বেরিয়ে যেতে হয় - বুড়ো মহিলাটিকে খাবার দেওয়ার জন্যে। স্ত্রী আজ আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন- রোজ রোজ একই সময়ে কই যাও? আমি নামাজ পড়ি না অনেক দিন হয়ে গেলো। তাই, মসজিদে যাচ্ছি না সেটা বলে দেওয়া লাগে না। বুড়ো মহিলাটিকে দুপুরের খাবার দিতে যাচ্ছি, আমার এলাকায় এমন একজন ভূমিহীন, বাসস্থানহীন মহিলা আছেন, এই কথা স্ত্রীকে বলতে আমার লজ্জা লাগে, মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী।
আমি একবার ভূমিহীনদের জন্যে আমার এলাকায় তাঁবু বিছিয়ে থাকার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম। আরেকবার এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে গৃহহীনদের আবাসের ব্যবস্থা করেছিলাম। আমাদের এলাকার পুলিশ ও কমিশনারের কাছে অনুমতির জন্যে যাওয়ার পরে তাঁরা আমাকে নিয়ে হেসেছিলেন। আজ অনেক দিন পরে মনে হলো, আপনাকে এই ব্যাপারটি জানাই, শ্রদ্ধেয়া প্রধানমন্ত্রী।
আমি জানি না, আপনার কাছে এই চিঠি পৌঁছাবে কি না, তবু ব্লগে চিঠিটি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। শুনেছি, সামহ্যোয়ারে ইন ব্লগের উপর চোখ রাখেন প্রশাসনের মানুষজন। তাঁরা হয়তো আপনার কাছে চিঠিটি পৌঁছে দিবেন।
আমার জন্যে দোয়া করবেন, মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী।
শ্রদ্ধা সহকারে,
শাইয়্যান
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



