প্রত্যেক মহান বিজ্ঞানীই নিজের জীবনে ধর্মের সাধনা করে গিয়েছেন। এমনটাই আমার বিশ্বাস ছিলো। কিন্তু, বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন মনে হয় তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য। এই মহান বিজ্ঞানী জীবদ্দশায় বিভিন্ন পাণ্ডুলিপিতে প্রায় ১ কোটি শব্দ লিখে গিয়েছেন। শুনলে অবাক হবেন যে, এই ১ কোটি শব্দের মধ্যে প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ ৫০ লক্ষ শব্দই ছিলো ধর্ম নিয়ে তাঁর চর্চার ফলাফল।
বিজ্ঞানী নিউটন ট্রিনিটিতে বিশ্বাস করতেন না। অর্থাৎ, তিনি যিশু খ্রিষ্ট (আঃ)-কে আল্লাহর সমান শক্তিশালী বলে মনে করতেন না। যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের কিংস কলেজে রক্ষিত তাঁর কিছু লেখা থেকে আমি যা পাঠোদ্ধার করতে পেরেছি, তা থেকে বুঝেছি যে, এই বিজ্ঞানী একেশ্বরবাদী ছিলেন। নিউটন নিজের স্রষ্টার ধারণা সম্পর্কে যা লিখেছেন, তার বাংলা অনুবাদ হুবুহু এই রকম -
ঈশ্বর এই বিশ্বকে অদৃশ্যভাবে শাসন করেন এবং আমাদেরকে সম্মান করতে এবং তাঁর উপাসনা করতে এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কোন ঈশ্বরের উপাসনা করতে, এবং কোনও মূর্তি দ্বারা তাঁর প্রতিনিধিত্ব না করতে, বা অলসভাবে এবং শ্রদ্ধা ছাড়াই তাঁর নাম না রাখতে এবং আমাদের পিতামাতার প্রভুদের সম্মান করতে আদেশ করেছেন। এবং গভর্নররা এবং আমাদের প্রতিবেশীদেরকে আমাদের নিজেদের মতো ভালবাসুন, এবং নাতিশীতোষ্ণ, বিনয়ী, নম্র, ন্যায়পরায়ণ এবং শান্তিপ্রিয় হতে হবে এবং পশুদের জন্যও করুণাময় হতে হবে।
আইজ্যাক নিউটন হযরত ঈসা (আঃ)-কে একজন প্রেরিতপুরুষ হিসেবেই মেনে নিয়েছিলেন। কিছু কাটা-ছেড়া করা একটি লেখায় নিউটন লিখেছেন-
যীশু খ্রীষ্ট একজন সত্যিকারের পুরুষ একজন নারীর থেকে জন্মগ্রহণ করেন এবংছিল/ তাদেরকে সত্য শেখানোর জন্য ইহুদিদের দ্বারা ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল,{অবৈধ}|এবং| একই শক্তিতে ঈশ্বর জীবন দিয়েছেন প্রথমে/ প্রতিটি প্রজাতির প্রাণীকে, পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে, তিনি তাঁর শিষ্যদের কাছে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং তাদের কাছে মূসা এবং নিজের সম্পর্কে নবীদের ব্যাখ্যা করেছিলেন, যেমন তিনি ছিলেন ধার্ম্মিকতার সূর্য, মালাকি দ্বারা বলা হয়েছিল, মানবপুত্র এবং মশীহ যা ড্যানিয়েল দ্বারা বলা হয়েছিল, ☉ < নীচ থেকে সন্নিবেশ f 1r >☉ ঈশ্বরের দাস ডেভিড ইজেকিয়েলের দ্বারা বলা হয়েছে, প্রভু আমাদের ধার্মিকতার কথা বলেছেন ইরেমি, ইস্রায়েলের শাসক মীখার দ্বারা বলা হয়েছে, < উচ্চতর থেকে পাঠ্য f 1r পুনরায় শুরু হয় >ঈশ্বরের দাস এবং ঈশ্বরের মেষশাবক এবং মুক্তিদাতার কথা ইশাইয়া, ঈশ্বরের পুত্র এবং ডেভিডের দ্বারা বলা পবিত্র ব্যক্তি, মহিলার বংশ এবং নবী এবং শিলোর কথা মোজেস এবং সি দ্বারা বলা হয়েছে। এবং তারপরে তিনি তাঁর শিষ্যদেরকে যা শিখিয়েছিলেন তা অন্যদের শেখানোর জন্য পাঠিয়েছিলেন, এবং একটি রাজ্য গ্রহণ করতে এবং আমাদের জন্য একটি জায়গা প্রস্তুত করতে স্বর্গে চলে গেছেন, এবং রহস্যময়ভাবে ঈশ্বরের ডানদিকে বসতে বলা হয়,, মর্যাদায় তাঁর পাশে থাকা, এবং ঈশ্বরের মেষশাবক হিসাবে উপাসনা ও মহিমান্বিত, এবং তাঁর অনুপস্থিতিতে আমাদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য পবিত্র আত্মা পাঠিয়েছেন, এবং দীর্ঘ সময়ে ফিরে আসবেন এবং রাজত্ব করবেন|উপরে| মধ্যে{উপরে} বায়ু (মরণশীলদের কাছে অদৃশ্য) যতক্ষণ না তিনি সমস্ত মৃতকে জীবিত ও বিচার করেন (প্রথম হাজার বছরের সাধু এবং পরবর্তীতে) ☉এবং দুষ্টদের তাদের যোগ্যতার উপযোগী জায়গায় পাঠিয়েছে/ এবং তারপরতিনি/ এই রাজ্যটি পিতার হাতে তুলে দেবেন, ② এবং আশীর্বাদকে (যাকে তিনি তাঁর মৃত্যুর দ্বারা যোগ্য করেছেন এবং তাঁর রক্ত দিয়ে উদ্ধার করেছেন) জায়গায় নিয়ে যাবেনবা প্রাসাদ/ তিনি এখন তাদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ①এবং বাকি পাঠানদুষ্ট/ অন্যান্য জায়গায় যা তিনি তাদের যোগ্যতার জন্য উপযুক্ত। ⑨ ঈশ্বরের গৃহে (যা মহাবিশ্ব) অনেক অট্টালিকা আছে......
যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজে রক্ষিত আরেকটি লেখায় তিনি ধর্ম ও দর্শন আলাদা, তা বুঝাতে গিয়ে এভাবে লিখেছেন -
ধর্ম ও দর্শনকে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা দর্শনশাস্ত্রে ঐশ্বরিক বিষয় ঢুকাতে চাই না, তেমনি বা ধর্মে দার্শনিক মতামত প্রবর্তন করতে চাই না।
ধর্ম ও রাজনীতি আলাদা করে তিনি লিখেছেন,
যে ধর্ম এবং রাজনীতি ( ঈশ্বরের আইন এবং মানুষের আইন) আলাদা রাখতে হবে। আমরা মানুষের আদেশকে ঈশ্বরের আইনের অংশ করি না।
বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটনের এই লেখাগুলো আমার ধারণা বদ্ধমূল করেছে যে - একজন মহান বিজ্ঞানী কখনোই ধর্মের বাইরে গিয়ে কিছু বলবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:২৫