'ইহুদিনী মারিয়া', খ্রিষ্টীয় ১ম থেকে ৩য় শতকের কোন এক বছরে মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ায় জন্ম নেন। অনেকে ইহুদিনী মারিয়ার সাথে মুসা ও হারুন নবীদ্বয়ের বোন মরিয়মের সাথে মিলিয়ে ফেলেন। ধর্মীয় গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, ফেরাউন যখন ইহুদী শিশুদের বলি দিতো, তখন মরিয়মের দেওয়া বুদ্ধিতেই তাঁদের মা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন মুসাকে। মরিয়মের চোখের সামনেই ফেরাউনের স্ত্রী শিশু মুসা নবীকে পানি থেকে তুলে নিজ গৃহে স্থান দিয়েছিলেন। যাহোক, আলকেমিস্ট মারিয়ার কথায় ফিরে যাই। বলা হয়ে থাকে, মারিয়া ধাতুকে সোনায় রূপান্তর করতে পারতেন।
সোনা-রুপা-হিরা-জহরত নিয়ে আমার খুব একটা আগ্রহ নেই। আমি বরাবরই মনে করি, এসব মেয়েলী ব্যাপার-স্যাপার। ব্যাপারটা 'আঙ্গুর ফল টক' জাতীয় ব্যাপার নয়। আমি ইচ্ছা করলেই, এসব কিনতে পারি। কিন্তু, তারপরও, এসবয়ে আমার আগ্রহ ছিলো না। কিন্তু, যেদিন থেকে জানতে পারলাম যে, মানুষের পক্ষেও সোনা বানানো সম্ভব, সেদিন থেকেই, আমি স্বর্ণ সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উঠলাম। এখানে, 'ইহুদিনী মারিয়া'-এর কোন হাত নাই।
আমার কাহিনীঃ
আমার নানী, ছোটবেলায় একবার একটি গল্প শুনিয়েছিলেন। তাঁর চাচা ছিলেন একজন সৈয়দজাদা। কোন কাজ-কর্ম করতেন না। সারাক্ষণ শুধু ধর্ম-কর্মে মশগুল থাকতেন। একদিন তাঁর আত্মীয়-স্বজনেরা খোরপোষের দাবীতে তাঁর কাছে গেলে, তিনি খুব চিন্ত্রিত হলেন। তারপরে, তিনি টয়লেটে গেলেন। এরপরে এসে বললেন - যাও, বাথরুমে অনেক সোনা আছে, সেখান থেকে যত ইচ্ছা তুলে নাও।
যেদিন থেকে জানতে পারলাম যে, প্রাচীন আলকেমিস্টরা ধাতু থেকে স্বর্ণ বানাতে পারতেন, সেদিন থেকেই আমার মনে জোর সন্দেহ, আমার নানীর চাচা লুকিয়ে আলকেমির চর্চা করতেন। মনে হয়, ইমাম জাফর সাদিকের একজন বংশধর হিসেবে তাঁর শিক্ষাগুলো বংশ পরম্পরায় রক্ষা করে গিয়েছেন।
ইহুদী মারিয়াঃ
আগেই বলেছি, ইহিদী মারিয়া আলকেমির চর্চা করতেন, সোনা বানাতে পারতেন। তিনি মনে করতেন যে, খোদার প্রকৃত অনুসরণের ফলেই সৃষ্টিকর্তা তাঁকে এই জ্ঞান দিয়েছিলেন। ইহুদিনী মারিয়াকে 'আলকেমির মা' ডাকা হতো। তিনি আলকেমি বিষয়ে অনেক কিছু লিখেছিলেন। কিন্তু, কালক্রমে তাঁর সব লেখাই কালের গর্ভে হারিয়ে যায়। পরবর্তীকালে, জসিমস নামের আরেক নামকরা গ্রীক-মিসরিয় আলকেমিস্ট তাঁর লেখাগুলোতে মারিয়ার কথা মনে করিয়ে দেন।
মারিয়া'র আবিষ্কারঃ
মারিয়ার আবিষ্কারের মাঝে সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় ছিলো - ধাতুর লিঙ্গ-বিচ্ছেদ, অর্থাৎ, তিনি ধাতুকে 'পুরুষ ধাতু' ও 'নারী ধাতু' রূপে উল্লেখ করেন। অনেকেই মনে করেন যে, হাইড্রোক্লোরিক এসিডের আবিস্কারক হচ্ছেন মারিয়া।
মারিয়া বলেছেন - একজন থেকে দুই হয়, দুই থেকে হয় তিন, এবং তৃতীয়টির মধ্যেই চতুর্থ থাকে। সুতরাং, দুইয়ের মধ্যেই একের আবাস।
তাই, আজ শ্রদ্ধা ভরে এই বিদুষী নারীকে স্মরণ করছি এই গানের মাঝে-
সূত্রঃ
১) https://jwa.org
২) https://www.thoughtco.com/
৩) http://scihi.org/
৪) Click This Link
৫) এবং ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬