somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেষ পর্যন্ত পদ্মাসেতুতে ঋণ দিচ্ছে না বিশ্বব্যাংক!

২৭ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের ঋণ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। এ বিষয়ে এখন অনেকাংশেই নিশ্চিত হয়েছে সরকার। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র বাংলানিউজকে জানিয়েছে, বিশ্বব্যাংক তার ঋণ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করছে না।

আর এর পেছনে গ্রামীণব্যাংকের সাবেক এমডি ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত রয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

বিষয়টি এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিতও করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সূত্র জানায়, রোববার দুপুরে অর্থমন্ত্রী মুহিত ও প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি তাকে জানিয়ে আসেন। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে অর্থমন্ত্রী ও অর্থ উপদেষ্টাকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় কাটান অর্থমন্ত্রী ও অর্থ উপদেষ্টা। এর পরপরই মসিউর রহমানকে নিয়ে মিন্টো রোডে নিজ বাসভবনে যান অর্থমন্ত্রী।

সূত্র জানায় সেখানেও তারা বিষয়টি নিয়ে একান্তে আলাপ করেন।

তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে ড, মসিউর রহমান তার পদত্যাগের বিষয়ে যেসব কথা বলেছেন তা কেবলই মিডিয়ার প্রশ্নের জবাবে বলা এমনটিই জানায় সূত্র।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আরেকটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, ড. ইউনূস সক্রিয় থাকার কারণেই বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন শর্ত দিয়েও ইনিয়ে বিনিয়ে পদ্মাসেতুর অর্থায়নে তাদের নেতিবাচক অবস্থানকেই ধরে রেখেছে।

অর্থমন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রও বাংলানিউজকে জানিয়েছে, তারাও একইভাবে বিষয়টি আঁচ করতে পারছেন।

তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো যোগাযোগ বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে করা হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুতে অর্থ দিতে নারাজ শুধু তাই নয় অন্য বিভিন্ন প্রকল্পে দেওয়া অর্থের ব্যাপারেও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী দেখাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্রটি জানায়, যেসব প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ সরকারের আগামী দুই বছর মেয়াদ কালের মধ্যে খরচ করা সম্ভব হবে না সেগুলো ব্যবহারের জন্য সময় বর্ধিত করতে বিশ্বব্যাংকের কাছে অনুরোধ জানিয়েও সরকার এ পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া পায়নি।

উল্লেখ্য এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুতে তার ঋণ প্রতিশ্রুতি ফিরিয়ে নেয়। পরে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাংলাদেশ সরকারকে তিনটি শর্ত দেয়। সরকার সেগুলো মেনে নেওয়ারও চেষ্টা করে। প্রথম শর্ত ছিলো সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও পরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী আবুল হোসেনের মন্ত্রিসভা থেকে সরে যাওয়া, সেটি সরকার যথাযথভাবে সম্পন্ন করে গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে।

দ্বিতীয় শর্তটি ছিলো প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সরে যাওয়া অথবা তাকে ছুটিতে পাঠানো। আর তৃতীয় শর্ত দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত প্রক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংকের একটি প্যানেলের প্রবেশাধিকার রেখে একটি টার্মস অব রেফারেন্স চূড়ান্ত করা।

এসব শর্ত মেনেই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলোচনা নতুন করে শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকই নেতিবাচক মনোভাব দেখাতে শুরু করে।

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে পদ্মাসেতু নির্মাণে ১২০ কোটি ডলার ঋণসহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতি দেয় বিশ্বব্যাংক। কিন্তু জুনে এসে এ নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। অভিযোগ ওঠে, সেতু নির্মাণের জন্য কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে অবৈধ অর্থ লেনদেনের প্রস্তাব রয়েছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংক তার অর্থায়নের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়। বিশ্বব্যাংকের পর প্রতিশ্রুত অর্থ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে এডিবি ও জাইকাও রাঙাচোখ দেখায়। এর পর থেকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সরকার বিষয়টিতে অস্বস্তির সময় কাটাচ্ছে।

এর মধ্যে অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেদের অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণেরও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মালয়েশিয়া থেকে অর্থ নিয়ে সেতু করা হবে সে ব্যাপারেও চলে তোরজোর। তবে অর্থমন্ত্রী গোড়া থেকেই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বিষয়টি সমঝোতার একটি স্থানে নিয়ে যেতে সচেষ্ট ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের প্রথমে ওই পদ ছেড়ে দেওয়া এবং পরে মন্ত্রিসভা থেকেই সরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য, ৬.১৫ কি.মি. দীর্ঘ পদ্মাসেতুটি নির্মাণে ২৯০ কোটি ডলার ব্যয় ধরা হয়েছিল। তার মধ্যে ১২০ কোটি ডলার বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছাড়াও এডিবি ৬১টি কোটি, জাইকা ৪০ কোটি এবং ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক ১৪ কোটি ডলার ঋণ দেয়ায় সম্মত হয়েছিল।


Click This Link
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×