somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জ্যোৎস্না ধরার কাহিনি(লেখাটা পড়ুন)

২২ শে জুন, ২০১০ সকাল ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তখন আমার বয়স কম।বাবার সাথে বাউল গানের আসরে যেতাম ।বর্ষাকাল
হলে বেশি মজা হত।বাড়ির চারদিকে থৈথৈ পানি।মাইলের পর মাইল জলজফসলের মাঠ।অনেকদূরের গ্রাম।একটা কথা জানিয়ে রাখি-আমাদের বর্ষাকাল দুইমাসের না।কমকরে হলেও চার মাসের।এই চার মাস বাড়ির চারদিকে পানি থাকে।অনেক গ্রামের মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়াতে নৌকা ছাড়া বর্ষাকালে প্রায় অচল।একবাড়ি থেকে আরেক বাড়ি যাবেন তো নৌকা,হাটে যাবেন তাও নৌকা।এক একটা বাড়ি যেন এক একটা দ্বীপ।আর এই সময়টাকে আমরা বলতাম বর্ষাকাল।বর্ষাকাল শেষ হলে বাকি সময়টাকে বলতাম সুদিন।আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন বর্ষাকালটা আমাদের জন্য কত কষ্টের ছিল?আর বন্যা বলতাম তখনই যখন
বাড়ি পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যেত,ঘরে পানি উঠত।মাচা পেতে রাতে শুতে হত।এর আগে বর্ষাকাল।তো আমি বাবার সাথে বাউল গানের আসরে যেতাম।আমাদের নৌকাতে করে।একজন লোক নৌকা বেয়ে নিয়ে যেত।
বাকিরা মিলে নৌকাতে গানের জজবা তুলতেন।কয়েকজন থাকতেন বাদক,কয়েকজন গায়ক।গান গাইতে গাইতে দূর গ্রামের কোন একপীরের বাড়িতে বাউল গান,আধ্যাত্বিক,দেহতত্বের গান শুনতে যেতাম।আমার কাছে পীরের বাড়িতে যে গান শুনতাম তার চেয়ে আমরা নৌকায় যে গান গাইতাম তা বেশি ভালোলাগতো।চারদিকে জল।জলের মাঠ।এই জলের মাঠ পেরিয়ে আমাদের গানের সুর ছড়িয়ে যেত।সে সুর হয়ত দূর গাঁয়ের কোন এক গৃহ বঁধুর হৃদয়ে নাড়া দিত।চারদিকে মাঝেমাঝে জ্যোৎস্না হত।দারুণ পাগল করা জ্যোৎস্না।হায়রে জ্যোৎস্না।নদীর ছোট ঢেউয়ের মাঝে যেন এক একটা চাঁদ ভেসে বেড়াত।আমাদের নৌকার যে বাঁশরিয়া থাকতো আমি সবসময় তার কাছাকাছি বসতে চাইতাম।গানের মাঝেমাঝে বাঁশরীর সুর জ্যোৎস্নাকে যেন আরো আরো কাছে নিয়ে আসতো,নামিয়ে দিত ।এভাবে গানের সুরে গন্তব্যে ।গন্তব্যে শুরু হত আরেক মজার গান।একের পর এক বিখ্যাত সব বাউল শিল্পী গান গেয়ে যেতেন।
এই বয়সে এসে দুই একটা গান শুধু মনে করতে পারছি
যেমন-বাঁশি বাজাও বংশীওয়ালা ,ঐ মধুর সুরে।
কিংবা -মা'লো মা ঝিলো ঝি করলাম কি সে রঙ্গে ভাঙ্গা নৌকা বাইতে আইলাম গাঙ্গে।এমন অনেক গান ছিল।গানের আসর শেষ হলে পীর (যদিও পীর লোকটাকে আমার পছন্দ হতোনা)বাবাজীর আশীর্বাদ নিয়ে ফিরে আসতাম।ফেরার পথে আবার সেই গান।গানে গানে গন্তব্য থেকে ফেরা।

আমার জ্যোৎস্না ধরার লেখা চলতেই থাকবে।যদিও সবলেখা জ্যোৎস্না বিষয়ক হবেনা।স্মৃতিগুলো আমার কাছে জ্যোৎস্নার মতই সুন্দর,জ্যোৎস্নার মতই পাগল করে টানে।
লেখার কোন ধারাবাহিকতা থাকবেনা।যখন যেটা মনে আসবে সেটাই লিখব ভাবছি।
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×