বাংলাদেশে যেসকল নাটক দেখা যায় সেগুলোতে মেয়ে, নারিরা অল্প জামা কাপড়, বেপর্দা ও অশ্লীল নাজায়েয কথা বার্তা বলে মানুষ, শিশু কিশোর ও যুবকদের হারাম কাজ করতে সুযোগ করে। নাজায়েয প্রেম-ভালবাসা শিখায় যা ইসলামে নিষিদ্ধ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “কোন বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া চোখের যেনা, অশ্লীল কথাবার্তা বলা জিহ্বার যেনা, অবৈধভাবে কাউকে স্পর্শ করা হাতের ... যেনার কল্পণা করা ও আকাংখা করা মনের যেনা । অতঃপর লজ্জাস্থান একে পূর্ণতা দেয় অথবা অসম্পূর্ণ রেখে দেয়”।
নাটক যেনা করতে উদ্বুদ্ধ করায়। যেমনঃ
১. যেনার উপসর্গ যেমন, প্রেমালাপ, গোপন যোগাযোগ, গায়র মাহরামের সাথে নির্জন বাস, পর্দা লংঘন ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকা।
২. যেনার কারণে জাহান্নামের যে কঠিন শাস্তি হবে তা স্মরণ করা।
৩. একথা স্মরণ করা যে, আল্লাহ সব কিছুই দেখেন, আমার এ অবস্থাও তিনি দেখবেন এবং কোন মানুষ এখন না দেখলেও কিয়ামতের ময়দানে সকলের সামনে এটা প্রকাশ করে দেয়া হবে। তখন শরমের আন্ত থাকবে না।
৪. বিবাহ না করে থাকলে বিবাহ করা, না পারলে রোযা রাখা। আর স্ত্রী থাকার পরও কোন নারীর প্রতি খাহেশ হলে এ চিন্ত করা যে, তার যা আছে আমার স্ত্রীরও তো তা আছে, তাহলে অহেতুক কেন তার প্রতি ঝুকতে হবে?
৫. যে নারীর সাথে যেনার কামনা জাগে বা যে পরিবেশে যেনার সুযোগ সৃষ্টি হয় সেখান থেকে দূরে সরে যাওয়া।
৬. যে বুযুর্গে প্রতি ভক্তি আছে তার সম্পর্কে নির্জনে কিছুক্ষণ বসে এই কল্পনা করবে যে, তিনি আমার অন্তরের মধ্যে বসে আমার অন্তর থেকে সব জঞ্জাল ধরে ধরে বাইরে নিক্ষেপ করছেন।
৭. যে সব কথা শুনলে, যেখানে গেলে বা যা দেখলে কিংবা যা পড়লে অথবা যা চিন্তা করলে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি হয় বা যেনার মনোভাব জাগ্রত হয় তা থেকে বিরত থাকা।
(দেখুনঃ আহকামে যিন্দেগী)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন;
“কোন ব্যভিচার ব্যভিচারের সময়ে মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না। কোন চোর চুরির সময় মুমিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন মদখোর মদ খাওয়ার সময় মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না, কোন লুন্ঠনকারী লুন্ঠন করার সময় মুমিন অবস্থায় লুন্ঠন করে না”। [বুখারি,মুসলিম ও আবু দাউদ]
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“কোন ব্যক্তি যখন ব্যভিচার করে তখন তার ভেতর থেকে ঈমান বেরিয়ে যায়, এরপর তা তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করতে থাকে। এরপর সে যখন তা থেকে তওবা করে তখন তার ঈমান পুনরায় তার কাছে ফিরে আসে”। [আবু দাউদ]
হযরত আবু হুরায়রা বর্ণিত অন্য এক হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন,
“যে ব্যক্তি ব্যভিচার করে অথবা মদ পান করে, আল্লাহ তার কাছ থেকে ঈমান ঠিক এমনভাবে কেড়ে নেন, যেমন কোন মানুষ তার মাথার উপর দিয়ে জামা খুলে থাকে”।
রাসুল ﷺ
বলেছেনঃ “আমি স্বপ্নে একটি চুলা দেখতে পেলাম
যার উপরের অংশ ছিল চাপা আর নিচের
অংশ ছিল প্রশস্ত আর সেখানে আগুন
উত্তপ্ত হচ্ছিল,
ভিতরে নারী পুরুষরা চিল্লাচিল্লি করছিল
। আগুনের
শিখা উপরে আসলে তারা উপরে উঠছে,
আবার আগুন স্তিমিত
হলে তারা নিচে যাচ্ছিল, সর্বদা তাদের
এ অবস্থা চলছিল, আমি জিবরাইল
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস
করলামঃ এরা কারা ? জিবরাইল
আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললঃ তারা হল, অবৈধ
যৌনচারকারী নারী ও পুরুষ । ( সহীহ
আল-বুখারী )
বুখারি শরীফে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্বপ্নের বিবরণ সম্বলিত যে হাদীসটি হযরত সামুরা বিন জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে উল্লেখ রয়েছে এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন;
“জিবরাঈল ও মীকাঈল (আলাইহি সালাম) তাঁর কাছে এলেন এবং আমি তাঁদের সাথে পথ চলতে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে আমরা বড় একটা চুল্লির কাছে এসে পৌঁছলাম। সে চুল্লির উপরি অংশ সংকীর্ণ ও নিম্নভাগ প্রশস্ত। ভেতরে বিরাট চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল। আমরা চুল্লিটার ভেতরে দেখতে পেলাম উলংগ নারী ও পুরুষদেরকে। তাদের নিচ থেকে কিছুক্ষণ পর পর এক একটা আগুনের হলকা আসছিল আর তার সাথে সাথে আগুনের তীব্র দহনে তারা প্রচন্ডভাবে চিৎকার করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম; হে জিবরাঈল! এরা কারা ? তখন তিনি বললেনঃ এরা ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ”।