somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রশিবিরের প্রতিক্রিয়াশীল সমালোচনা আর ঘৃনা দিয়ে সত্যি কি কিছু হবে?

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামাত শিবির চরম বিতর্কিত একটি দল।আমদের স্বাধীনতা যুদ্ধের রাজনৈতিক বিরোধিতা, পাকিস্তানী হানাদারদের কোলাবরেট করা এবং হত্যা, খুন, ধর্ষন সহ বিভিন্ন যুদ্ধাপরাধে প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে যুক্তথাকায় সীমাহীন ঘৃনা আর লাঞ্ছনা জোটে এই দলটির কপালে।ব্লগে এই ঘৃনাবোধ আমাদের গড়পড়তা সমাজের চাইতে অনেক বেশি।এর বহিপ্রকাশও অনেকটা প্রচলিত রুচিবোধের সীমানার বাইরে।
জামাতশিবিরের ব্যাপারে অনেকেরই অবস্থান তাদেরকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং রাজনীতি করার অধিকার না দেয়ার পক্ষে।মানুষ হিশাবেও স্বীকার করতে আপত্তি আছে অনেকের।ব্লগার জোকার৬৬৬ এর ভাষায় এর কারন ‘আমার পক্ষে দেনা পরিশোধ সম্ভব না, কারন আমি একজন ডিষ্টার্বিং এলিমেনট । আমার পক্ষে তাদের বাক স্বাধিনতা দেয়া সম্ভব না যারা মানবতার বিরোধী, যাদের হাত রক্তে রন্জিত। আমি আমার বোনের ধর্ষনকারীর সাথে একই টেবিলে বসে কেক খেতে পারিনা। আমি সেই সুশীল হতে চাইনা যে ধর্মের নামে মানুষ খুন করার সার্টিফেকেট দেয়।‘
খুনী, ধর্ষক আর রুক্তে রঞ্জিত মানবতা বিরোধীদের প্রতি এই ঘৃনাবোধ ঠিক আছে। কিন্তু এই ঘৃনাবোধ কি অবজেক্টিভ, নাকি সাব্জেক্টিভ? যদি অবজেক্টিভ না হয় তাহলে শেষ পর্যন্ত কি এই ঘৃনাবোধ যৌক্তিক?
আমরা কি সব খুনী, ধর্ষক আর রুক্তে রঞ্জিত মানবতা বিরোধীদের প্রতিই একই ঘৃনাবোধ পোষন করি নাকি আমার পছন্দের খুনী, ধর্ষক আর অপছন্দের খুনী, ধর্ষকদের মধ্যে পার্থক্য করি?আমরা কি পার্থক্য করি আওয়ামীলিগের যুদ্ধপরাধী, বিএনপির আর জামাতের যুদ্ধপরাধীদের মধ্যে?
নিজের বোনের ধর্ষনকারীর সাথে একই টেবিলে বসে কেক খেতে যদি সত্যিই আমার আপত্তি থাকেই তাহলে সেঞ্চুরিয়ান মানিকের ছাত্রলীগের সাথে কেক খেতে আমার আপত্তি নাই কেন? যে ছাত্রলীগের কর্মী ধর্ষন করে সিডি বাজারজাত করে সেই ছাত্রলীগকে কেন শুয়োরের বাচ্চা বলে গালি দেয় না মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অবিচল বিশ্বস্ত মানুষগুলো?
মানুষ খুনকে যদি ঘৃনাই করি তাহলে রাজনীতির নামে মানুষ খুনকে কেন ঘৃনা করি না? হরতালের নামে যখন পরিকল্পিত ভাবে বাসে আগুন দেয় যুবলীগ , তখন চেতনা কেন ধর্মের নামে মানুষ খুন আর মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবাদী দলের ক্ষমতার জন্য মানুষ খুনকে সমান পরিমান ঘৃনা করে উঠতে পারে না?
যুদ্ধপরাধীদের গাড়িতে পতাকা উঠলে আমাদের শরীরের প্রতিকনা রক্তবিন্দু বিদ্রোহ করে উঠে।এরশাদের সময় রাজাকার মান্নানের গাড়ীতে পতাকা উঠেছিল, হাসিনার সময়ে দালাল আইনে সাজা খাটা ফাইজুল হকের গাড়ীতে পতাকা উঠেছিল, সেই এরশাদ এখন মহাজোটের অংশীদার, হাসিনা এখন ক্ষমতায় আর চেতনা অপেক্ষায় থাকে শুধু জামাতী যুদ্ধপরাধীদের ।যুদ্ধপরাধীরা জামাতী না হলে আমাদের চেতনায় আগুন জ্বলে না!
চাকমা রাজার রাজাকারীর জন্য আমরা সব চাকমাকে ঘৃনা করতে শিখি নাই, চীনাপন্থি বামদের যুদ্ধপরাধের জন্য তাদের নিশিদ্ধ করার দাবী করতে শিখি নাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধিতার জন্য রবীন্দ্রনাথকে ঘৃনা করতে শিখি নাই, বংগভংগের বিরোধীতাকারীদের সাম্প্রদায়িক বলতে শিখি নাই, শুধু নিজামী মুজাহিদের অপরাধের জন্য শিবিরকে ঘৃনা করতে শিখেছি, তাদের সমর্থনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা আল মাহমুদকে ঘৃনা করতে শিখেছি, এক প্রজন্ম থেকে আর এক প্রজন্ম পর্যন্ত ঘৃনার চাষাবাদকে প্রসারিত করতে শিখেছি মাত্র। স্বাধীনতার ৩৮ বছরে এইটুকুই আমাদের অর্জন।তরুন প্রজন্মের একটা অংশ আজো চেতনায় রাজাকার।
আমরা যুদ্ধপরাধী ভুট্টোকে দাওয়াত করে এনে লাল গালীচা সংবর্ধনা দিতে পারি, রাজনীতির কথা বলে পাকিস্তানী সেনাবাহীনীর যুদ্ধপরাধীদের ক্ষমা করে দিতে পারি, আমাদের স্বাধীনতার বিরোধী আমেরিকার সাথে দহরম মহরম করতে পারি,সীমান্তে মানুষ খুন করা আর পানি আটকে বাংলাদেশকে কারবালার ময়দান বানানো ভারতকে বন্দর আর ট্রানজিট দিতে পারি,মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইজারা দিতে পারি বিজ্ঞাপনের ব্যবসায়র জন্য,যুদ্ধপরাধীদের নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়ে এম পি বানাতে পারি সব দল থেকে, শুধু রাজনীতি নির্বিশেষে সত্যিকারের যুদ্ধপরাধীদের বিচার করে বাকিদের ক্ষমা করে দিয়ে একটি বিভক্তিহীন জাতিসত্বা তৈরি করে ঘৃনার চাষাবাদ বন্ধ করতে পারি না।এই প্রতিক্রিয়াশীল ঘৃনা দিয়ে সত্যি কি কিছু হবে?
২৬টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×