somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোন পথে গনতন্ত্র থুক্কু বিএনপি তন্ত্র?

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ বলে জানি ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর থেকে। কতটা স্বাধীন তা কি আমরা বলতে পারি? ১৯৭১ সালটা মনে পরে যারা সেই বছরটি বেঁচে ছিল এক অপরিনামদর্শী ঘটনা-র্দূঘটনা দেখার জন্য। এক উত্তেজনা টান টান করছে প্রতিটি শরীরের স্পন্দনে। শহরে চলছিল মিছিল মিটিং আর গ্রাম গঞ্জে আলোচনা। নির্যাতন নিপিরণ এর মাঝে বেঁচে থাকা পূর্ব পাকিস্তানিরা বোধ হয় এক হবে এই ভেবে দিশেহারা পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকেরা।
যুদ্ধ শেষ আজ থেকে ৩৯ বছর আগে কিন্তু আজও আমাদের স্বাধীনতা মিলেনি কোথাও শুধু ভুখন্ড মিলেছে। যুদ্ধের আগে শাসন করেছে পকিস্তানিরা শাসকেরা আর আজ যুদ্ধের পর শাসন করছে গুটিকয়েক রাজনৈতিক বিদ ছাড়া একদল পাকিস্তান কর্তৃক প্রদত্ত উৎসৃষ্ট পতিতা যারা তীলে তিলে আমাদের রক্ত চুষে খাচ্চে সেই ৭৫’এর পর থেকে। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি একে একে ধ্বংস করে যাচ্ছে স্বাধীনতার অদমনীয় প্রাচীরকে।
শুরুতেই আঘাত হানল ৭৫’ এর ১৫ই আগষ্ট।। এক নির্মম রাত ।স্ব-পরিবারে হত্যা করা হল জাতির পিতাকে। শুরু হলো অপপ্রচার। রেডিওতে অনেকেই শুনতে পেলো বঙ্গবন্ধুখুনির জোরালো কন্ঠে – “ কুখ্যাত মুজিব আর নেই ”। এমনি দুর্ভাগা আমরা এ দেশের আপামর জনগন যে এটাও দেখতে হলো বিএনপি পিতা জিয়া আমাদের প্রিয় নেতা জাতির পিতার এই সব খুনিদের সূর্য সন্তান বানিয়ে তাদের পুরুস্কৃত করলেন।

এমনিতেই বাংলার জনগনকে শোষণ-বঞ্চনা সহ্য করতে হয়েছিল ৭১’এর আগে দীর্ঘ ২৩ বছর। যার জন্য যুদ্ধ। যেখানকার খন্ড চিত্র ছিল এ রকম –
পশ্চিম পাকিস্তান —- পূর্ব পাকিস্তান(বাংলাদেশ)
সামরিক জেনারেল পদ:১৬ ১
জনসংখ্যা : ৫ কোটি ৫০ লক্ষ ৭ কোটি ৫০ লক্ষ
নৌবাহিনী(টেকনিক্যাল):৮১% ১৯%
চিকিৎসক: ১২,৪০০ ৭,৬০০
নৌবাহিনী(নন-টেকনিক্যাল):৯১% ৯%
হাসপাতালের বেড: ২৬,০০০ ৬,০০০
বিমান বাহিনীতে বৈমানিক:৮৯% ১১%
গ্রামীন চিকিৎসা কেন্দ্র: ৩২৫ ৮৮
সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা:৫,০০,০০০ ২০,০০০
কেন্দ্রীয় সিভিল সাভির্স: ৮৪% ১৬%
পাক এয়ার লাইন্স এর সদস্য:৭,০০০ ২৮০
পররাষ্ট্র বিভাগে চাকুরী:৮৫% ১৫%
পিআই এর ডাইরেক্টর: ৯ ১
বিদেশী দূতাবাসে: ৬০% ৯%
পিআই এর এরিয়া ম্যানেজার:৫ ০
সেনাবাহিনী: ৯৫% ৫%
রেলওয়ে বোর্ডের ডাইরেক্টর:৭ ১

এই শোষন ব্যাবস্থা থেকে মুক্ত করে বাংলার জনগনের সার্বিক উন্নায়ন কল্পে বঙ্গবন্ধু, সোরওয়ার্দি, ভাসানী সহ হাজার ছাত্র নেতা সহ আপামর জনগন সোচ্চার হয়েছিল এই অন্যায় অবিচার রুখে দাড়ানোর জন্য। রোলার দিয়ে যাতা মেরে আন্দোলন স্থিমিত করার সর্বাত্নোক প্রচেষ্টা শেষ করে দিয়েও স্বাধীনতার ঘোষনা ঠেকাতে পারেনি ইয়াহিয়া-ভুট্টোর পশ্চিম পাকিস্তান। এক অপরিনামদর্শী ৯ মাস হত্যা-ধর্ষন-নির্যাতন-লুন্ঠণ সহ আগুনে ঘর-বাড়ি, মানুষ সহ গৃহপালিত পশু পুড়িয়ে তছনস করে দিয়েছিল পাক-রাজাকার-আলসামস-আলবদর-শান্তি বাহিনীর দলেরা।
সময় ফুরিয়ে গেলে পিছু হটে আত্নসমর্পণ করতে বাধ্য হয় পাক বাহিনীর দল। আবার শুরু হল বিতর্ক ১৬ই ডিসেম্বরে কেন ওসমানী আত্নসমর্পণ অনুষ্ঠানে ছিলেন না? এই প্রশ্নটি অনেকেই করেছে কটাক্ষ করে বলে “ভারতের কাছে নাকি ৭১ই দেশ বিকিয়ে দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর দল?” বর্তমানে বিএনপির বিজ্ঞ আইনবিদও বলে বসেন ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধ নাকি সংঘটিত হয়েছিল পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে। বরাবরই প্রশ্নটি একেবারেই অবান্তর। কারন এর পিছনে প্রধান কারন হল ভারতের জেনারেল মানেকশ এর নিকট জেনারেল ইয়াহিয়া একটি আবেদন করেন যে, পাকিস্তানী আত্ন সমর্পনে প্রস্তুত তবে তাদের শুধু একটি প্রার্থনা যে আত্নসমর্পন গ্রহন করবে ভারতীয় সেনানায়কদের কাছে। কারন ভারত জেনেভা কনভেনশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু বাংলাদেশ যেহেতু জেনেভা কনভেনশনে তখনও সই করেনি তাই বাংলাদেশের জেনারেলের কাছে করা সম্ভব নয়। কারণ, মুক্তিবাহিনী যদি প্রতিশোধমূলক হত্যা চালায় তবে আর্ন্তজাতিক আইন বা জেনেভা কনভেনশন তাদের রক্ষা করতে পারবেনা। আর তাই ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোরওয়ার্দি উদ্যানে) আত্নসমর্পন করেছিল পাক-বাহিণীরা। আত্নসমর্পন অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মানেকশ এর পক্ষে ঢাকায় ভারতীয় যৌথকমান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় লে: জেনারেল জগজিৎ সিং আরোরা আর বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওসমানী এর পক্ষে মুক্তিবাহিনীর উপপ্রধান গ্রুপ ক্যাপ্টেন (এয়ার ভাইস মার্শাল) এ কে খোন্দকার এবং ২নং সেক্টর (ঢাকা) কমান্ডার এটিএম হায়দার উপস্থিত ছিলেন আর পাকিস্তানের পক্ষে লে: জেনারেল আমির আব্দুল্লা খান নিয়াজি প্রতিনিধিত্ব করেন।
শুরু হলো দেশ গড়া যুদ্ধ বিধ্বস্থ একটি জতি-দেশ যা বিগত ২৩বছর ধরে শোষিত হচ্ছিল তা নতুন স্বপ্ন নতুন উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করে উৎরানো এত সহজ ছিল না।
বর্তমান সরকার ৭১’ এ মানবতাবিরোধী কর্মকান্ডের সাথে জরিতদের বিচার প্রকৃয়া শুরু করেছে। আমার মত সারা বাংলার জনগন মানসিক ভাবে সান্তনা পাচ্ছে যে সেই পাপীদের দীর্ঘ ৩৯বছর পর তাদের পাপের হিসাবের হালখাতা খোলা হলো। এখানে বিশেষ ভাবে বলতে হয় ৭১’ এ মানবতাবিরোধী গনহত্যার মত নেক্কারজনক কাজে লিপ্ত ছিল রাজাকার-আলসামস-আলবদর-বাহিনীর সদস্যরা। মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রামে গণহত্যার নায়ক, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের খুন, নির্যাতনকারী ও লুটপাটের অন্যতম হোতা আলবদর বাহিনীর কমান্ডার মীর কাসেম আলী এখন জামায়াতে ইসলামীর প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতা। একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগী জামায়াতে ইসলামীকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী করার জন্য মীর কাসেম আলী মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। রোহিঙ্গা জঙ্গীসহ বাংলাদেশে আরও কয়েকটি জঙ্গী সংগঠনের অর্থনৈতিক মদদ দাতা বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ‘৭১ সালে মীর কাসেম আলীর নির্দেশে পরিচালিত নির্যাতনের স্মৃতি স্মরণ করে আজও শিউরে ওঠেন চট্টগ্রামের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার। এ মীর কাসেম আলী রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৯৭১ সালের প্রথম দিকে মীর কাসেম আলী ছিল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি। পরে ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদকের পদ লাভ করেন। ইসলামী ছাত্রসংঘই মুক্তিযুদ্ধের সময় আলবদর বাহিনীতে পরিণত হয়। তখন আলবদর বাহিনীর কেন্দ্রীয় প্রধান নেতা ছিলেন বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর আমির কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী। মূলত এ আলবদর বাহিনীই ‘৭১-এর ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে খুন করে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করেছিল। চট্টগ্রাম শহরের নন্দনকানন টিএ্যান্ডটি অফিসের পেছনের সড়ক যা টেলিগ্রাফ রোড বলে পরিচিত ছিল, সেখানে এক হিন্দু পরিবারের মালিকানাধীন মহামায়া ভবনটিকে মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বাধীন আলবদর বাহিনী কেড়ে নিয়ে তার নাম দেয় ডালিম হোটেল। আর দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যনত্ম এ ডালিম হোটেলই আলবদর, রাজাকারদের অন্যতম নির্যাতন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল চট্টগ্রামবাসীর কাছে। এ বন্দীশিবির ও নির্যাতন কেন্দ্রে আলবদর বাহিনী চট্টগ্রামের প্রধান মীর কাসেম আলীর পরিকল্পনা ও নির্দেশে খুন হয়েছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন স্বাধীনতাকামী বাঙালীরা। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পরদিন ঐ নির্যাতন ক্যাম্প থেকে সবাই ছাড়া পায়। ততক্ষণে অবশ্য আলবদর রাজাকাররা পালিয়ে গেছে। ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি তৎকালীন দৈনিক পূর্বদেশে প্রকাশিত ‘হানাদারদের নির্যাতন ক’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন লেখা হয়েছে। এতে বলা হয়, এ বন্দী শিবিরে যাদের আটক রাখা হতো তাদের প্রথম তিন দিন কিছুই খেতে দেয়া হতো না। এ সময় যারা পানি চাইত তাদের মুখে প্রস্রাব করে দিত আলবদররা। অনেক সময় নারকেলের খোলে প্রস্রাব করে তা খেতে বাধ্য করা হতো বন্দীদের। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকাতে পশ্চিম মাদারবাড়ির আবুল আলম পেশকারের ১৮ বছরের ছেলে যুবক নজমুল আহসান সিদ্দিকী (বাবুল) তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে এসব কথা বলেছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, মুক্ত হওয়ার পর তিনি দেখেছেন হোটেলের একটি রূম খালি ছিল এবং সে রূমের দেয়ালে ও মেঝেতে বহু রক্তের ছাপ রয়েছে। সম্ভবত এ রূমে পর্যায়ক্রমে লোকদের এনে গুলি করে হত্যা করে তারপর অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হতো। ১৯৭১ সালের ২ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে ইসলামী ছাত্রসংঘের উদ্যোগে মুসলিম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সমাবেশে সভাপতির ভাষণে মীর কাসেম আলী বলে, গ্রামগঞ্জের প্রত্যেকটি এলাকায় খুঁজে খুঁজে শত্রুর শেষচিহ্ন মুছে ফেলতে হবে। “একাত্তরের ঘাতক ও দালালেরা কে কোথায়” বইতে লেখা হয়েছে ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর তারিখে পূর্ব পাকিস্তানে ছাত্রসংঘের শীর্ষ নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং সাধারণ সম্পাদক মীর কাসেম আলী এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের গতকালের বেতার ভাষণকে অভিনন্দন জানিয়ে আমরাও ঘোষণা করছি যে, এ দেশের ছাত্র-জনতা ‘৬৫ সালের মতন ইস্পাতকঠিন শপথ নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করে যাবে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই তিনি পালিয়ে যান সৌদি আরব। দেশে ফিরে আসেন ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পরে। তারপর জিয়াউর রহমান সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের পরিবর্তিত রূপ পায় ইসলামী ছাত্রশিবির। জামায়াতের এ ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রথম কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন মীর কাসেম আলী। পরে মহানগর জামায়াতের আমির পদ লাভ করেন। ধীরে ধীরে সৌদি ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর অর্থনৈতিক সাহায্যপুষ্ট রাবেতা আল ইসলামী নামে একটি এনজিও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর পদ লাভ করেন কাসেম আলী। কক্সবাজারে এ রাবেতার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আসে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের সাহায্যের নামে আনা এ টাকায় রাবেতা হাসপাতালও করা হয়েছে। যেখানে ইসলামী জঙ্গীসহ রোহিঙ্গা ইসলামী জঙ্গীদের প্রশিণ দেয়া হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। রোহিঙ্গা জঙ্গীদের দেশে প্রশিক্ষণ ও বিদেশে পাঠিয়েও প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে মীর কাসেম আলী সহায়তা করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত বলে জানিয়েছে। আর এ রাবেতার মাধ্যমে আসা কোটি কোটি টাকা দিয়ে জঙ্গীবাদে অর্থ সহায়তা এবং জামায়াতে ইসলামীকে অর্থনৈতিকভাবে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানোর জন্য মীর কাসেম আলী মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে এমন তথ্য রয়েছে দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও।
অনকেই রাজাকার-আলবদর-আলসামস বাহিনীকে এক করে বলে ফেলেন। সবাই এক না । ৭১’এ রাজাকাররা ছিল দুর্ধ্বস। ৭১’এ যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দা (আইএসআই) এদের নিয়োগ দিয়েছেন। আর এর সংখ্যা ছিল ২২০০০ হাজারেরও বেশি (নিউউয়র্ক টাইমস্ জুলাই ৩০,১৯৭১)। এদের প্রধান কাজ হল গ্রাম্য এলাকায় পাকিস্তানি সন্যদের কাছে মুক্তিবাহিনীদের ধরিয়ে দেওয়া সহ তথ্য প্রদানে সহযোগিতা করা। আর এই সব রাজাকারের মধ্যে প্রধান ও অন্যতম ছিলেন গোলাম আজম, নিজামী, সাঈদি, মান্নান এবং সাকা চৌধুরী।

আমার খুব হাসি পায় যখন সম্প্রতি টেলিভিশনের পর্দায় এই কুখ্যাত সাকা চৌধুরীকে বিএনপি সমর্থনে ম্যাডামের বাড়ি সমস্যা এবং হরতাল প্রসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনের এক প্রশ্নাত্তরে তিনি বলেন—“ শিশু যদি কোলে প্রেসাব করে দেয় তবে আমি জামাটি বদলিয়ে ফেলব শিশুটিকে নয় ” বড়ই হাস্যকর চোরের মুখে নীতিবাক্য।
নতুন প্রযন্মের অনেকেই জানেন না এই সাকা চৌধুরী এবং তার বাবা ফকা চৌধুরী সহ এই সকল স্বধীনতার বিরোধী চক্রের ৭১’এর কু-কীর্তি।
আজ দেশের বেহাল অবস্থা কাকে দায়ী করবে বাংলার জনগন? এই প্রশ্নটি আমি যাকেই করি সেই আমাকে খুব সুন্দর ভাবে বলে ফেলে বিএনপি-আওয়ামীলীগকে !! খুব সীমিত সংখ্যককেই পেয়েছি যারা কিছুটা সঠিক বলেছেন। আমি অবাক হয়ে যাই। আমাকে ভাবায়। বাংলাদেশে কি কোন বিজ্ঞজন নেই যারা এই সব অবচেতন জনগনের চেতনা ফেরাতে পারে নাকি সবাই ৭১’এ হতভাগা বুদ্ধিজীবিদের তালিকায় নাম লিখেছেন। বর্তমানের তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের নবপ্রজন্ম কি বলবে তা আপনারাই চিন্তা করুন, এ প্রশ্ন আপনাদের জন্যই?
৭৫’এ জিয়া আর রাজনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসাবে পাকিস্তান ফেরত বাঙ্গালীদের সরকারের উচ্চ প্রশাসণিক পদে, অসামরিক-সামরিক বাহিনীতে পুর্নবাসন করে রাষ্ট্র যন্ত্রের এক আমুল পরিবর্তন আনেন। শুধু তাই নয় একই বছরে জিয়া “প্রশাসন পূর্নগঠন কমিটি” গঠিত করেন স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ন পদে পুর্নবাসন করা। উক্ত কমিটির আহাব্বায়ক করা হয় কাজী আনোয়ারুল হককে (মরহুম জিয়ার ব্যক্তিগত উপদেষ্টা)। কমিটির সকল সদস্যরা ছিলেন অতি পরিচিত পাকিস্তান পন্থি বেসামরিক-সামরিক সহ উচ্চ পদস্ত সরকারী র্কমকর্তা যেমন কমোডর এমএইচ খান, এআর ভাইস মার্শাল এমজি তোয়াব, ড: এমএন হুদা এবং জিয়া নিজেই। প্রফেসর এমাজ উদ্দিন আহমেদ তীব্রভাবে সমালোচনা করেন জিয়ার ৩১ জন উপদেষ্টা/মন্ত্রিদের মধ্যে ১৯ জনেই ঘোর বাংলাদেশ বিরোধী। এ শুরু হল র্দুনীতির পথ যাত্রা। প্রতিটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে ঘুষ এখন আর টেবিলের তলদেশ থেকে আদান-প্রদান হয় না। বরং সবার সামনেই দিনদুপরে ঘটে চলছে সরকারের চরিত্র হরন। এরাই স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তুললো পাকিস্তানী মডেল।
শুধু তাই নয় ১৯৭৬ এর মে মাসের মধ্যেই বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া যুদ্ধাপরাধীদেরকে বাংলাদেশের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ গ্রহন ও ভোট প্রদানের সাংবিধানিক অধিকার প্রদান করেন। সাথে যুদ্ধাপরাধীদেরকে মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্ত গ্রহনের সুযোগ করে দেন তিনি। গনতন্ত্র ও আপামর জনগনের অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠার লক্ষে যে বন্ধু-বঙ্গবন্ধু স্ব-পরিবারে রক্তের বন্যা বয়ে দিলেন আর যারা এর জন্য পাপীষ্ট তাদের পুরুস্কৃত সহ বিভিন্ন দেশে কুটনৈতি পদে সম্মানিত করেছেন এই জিয়াই। আমাদের দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের (১৯৫২-১৯৭১) সমগ্র ইতিহাস বিকৃত করার দু:সাহসীক সুত্রপাত করেছেন ১৯৭৭ সালে তৎকালীন রাষ্টপতি জেনারেল জিয়ায়ুর রহমান কর্তৃক এফডিসির আর্কাইভ থেকে সমস্ত ডকুমেন্ট ধ্বংসের অর্ডারের মাধ্যমে। তাইতো আজ নব প্রজন্ম কিছুই জানে না; এরই সুবাধে বিএনপির মহাসচিব খন্দোকার দেলোয়ার হোসেনের মুখে নানা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা। আর এতে মানবাতাবিরোধী অপরাধের বিচার ট্রাইব্যুনালের এত সময় সাথে পাহাড় সমতুল্য বাধা পেরুতে হচ্ছে তথ্য প্রমানাদী খুজে বের করতে। আর সাথে থাকছে বিএনপি-জামাতের নানা মুখী চাপ। জনগনকে নিজ স্বার্থে কষ্ট দিচ্ছে এই বিএনপি হরতাল ডেকে যেটা এমন এক ধ্বংসাত্বক বিষ যা দেশের অর্থনৈতিক অচলাবস্থা ডেকে আনছে। ম্যাডাম আর কত। স্বামী-সন্তান এবার একটু খ্যান্ত হন। কিছুটা গনতন্ত্র চর্চা করুন। আর সাকা সহ সব পাকিস্তানের দালালদের বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা ও এ থেকে মুক্ত রাখার জন্য জনগনকে আর কষ্ট দিবেন না।

কবি, লেখক ও সাংবাদিক: খালেদুর রহমান শাকিল
[email protected]
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×