মৃত্যু উপত্যকাঃ চ্যাপ্টার ওয়ান
ঐ তো ঐ যে আমার লাশটা পরে আছে
দেখতে পাচ্ছেন না?ওই যে ওই বাবলা গাছটার নিচে।
আর তার পাশেই একটা নরখাদক আমার কলিজা কত মজা করে খাচ্ছে,দেখে আমার প্রান জুড়িয়ে যাচ্ছে,ইস!কতদিন না জানি বেচারা খেতে পায় নাই,খাক,খেতে থাকুক,ক্ষুধার্তদের খেতে দেখতে আমার সর্বদা ভাল লাগে।
দ্য বেস্ট সিন ইন দ্য আর্থ।
আমার রক্তে ভিজে লাল হয়ে গেছে সবুজ নরম ঘাসগুলো,অসাধারন একটা দৃশ্য।সবুজের বুকে লাল।একটা গান আছে সবুজের বুকে লাল সেতো উড়বেই চিরকাল।শুনেছেন গানটা?
কি বললেন?আপনি বাংলা ভাষা জানেন না?তাহলে আমার সাথে কথা বলছেন কি করে?আরে আজব তো আপনিতো বাংলায় কথাই বলছেন না কিন্তু আমি সব বুজতে পারছি।
আচ্ছা আপনার কাছে ক্যামেরা হবে?
এই অসাধারন ছবিটা তুলে রাখতাম,ক্যাপশন হবে ওরা আমাকে চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে।সুন্দর না ক্যাপশনটা? জানেন আমি ছবি তুলতে খুব পছন্দ করি?ক্যামেরাটা থাকলে আমাকে দিন।আমার ক্যামেরা আর গাড়ি নিয়ে ওরা পালিয়ে গেছে।ভাল করেছে অবশ্য।আমার মৃত্যুর খবর কে পৌছে দিবে নাহলে?
কি বললেন নেই?
উফফ,সো স্যাড। আর থাকবেই বা কেন?থাকাটাই এখানে অস্বাভাবিক।
দেখেন দেখেন কি চমতকার!নরখাদকটা আমার মগজ খাচ্ছে,মগজ সাধারনত অনেক নরম,ওর ভাল লাগবে।আমি আগে গরু আর ছাগলের মগজ ভুনা করে খেতে বড্ড ভালবাসতাম।ওর কাছে কাঁচা খেতেই ভাল লাগবে।
এই যাহ!ওর তো দেখি সঙ্গীও জুটে গেছে,অদ্ভুততো!ওরা ঝগরা করছে না,কি সুন্দর ভাবে মিলে মিশে আমাকে খাচ্ছে,একজন আমার মগজ,আরেকজন আমার কিডনী।ওরা আগে সুস্বাদু অঙ্গগুলো ভক্ষন করছে,এরপর খাবে আমার পা,হাত,চামড়া,পাকস্থলি,হার ইত্যাদি হা হা হা।
সত্যিই অসাধারন একটা বিষয়,লাল রক্ত,হলুদে মগজ,সবুজ ঘাস,লাল মাংস,হাড্ডি,মজ্জা।এসব কিছুই অসাধারন ব্যাপার স্যাপার।
আচ্ছা আপনি কথা বলছেন না কেন?নরখাদকটা কি আপনাকেও চিবিয়ে খেয়েছ আমার মত?
যাই বলেন না কেন আমি শতভাগ নিশ্চিত আপনিও ওর খাবারে পরিনত হয়েছিলেন।
একটা জিনিশ খেয়াল করেছেন ওদের চেহাড়ার সাথে আমাদের অনেক মিল তাই না?সবকিছুতেই মিল হবে হয়ত?
না?কেন?
মানে আপনি বুঝাতে চাচ্ছেন ওদের বিবেক নেই?
হতে পারে।কিন্তু আমাদের ভিতরে মনুষ্যত্ব নেই।যদিও এখন মনুষ্যত্ব না থাকলেও চলবে।
ওরা আমার হার বাদে সব খেয়ে ফেলল,চলেন যাই নতুন জায়গাটা ঘুরে দেখি।মানে আমাকে দেখান।এখানেইতো বাকী জিবনটা থাকতে হবে।
আমার আগের ব্লগ আবীর ফেরদৌসে এইটা লিখেছিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১:০৮