শাহবাগ নিয়ে আমার রাজনৈতিক বিশ্লেষন পড়ুন: Click This Link
চেষ্টা করছিলাম কমেন্ট করার জন্যে বিভিন্ন জনের লিখায়, ঠিকভাবে আসছিলনা, যা লিখতে চাচ্ছি তা হচ্ছে না। মনটা কেমন জানি বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। গত কয়েকদিন ফেবুতেই ফাইট করছিলাম তাই ব্লগে ঢুকার সময় পাইনি, পেলেও লগইন না করেই ভিজিট করেছি। আজ আর পারিনি। থাবার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করার জন্যে ব্লগে আসলাম, কিন্তু ব্লগে এসে থাবা সম্পর্কে যা জানলাম এবং তার লিখা দেখলাম তাতে মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। যাই হোক থাবার জন্যে দুঃখ প্রকাশ করছি। যারা শোক প্রকাশ করতে চান করতে পারেন। একজন ব্লগারের জন্য শোক প্রকাশ করার কথা আমার, কিন্তু কোথায় যেন আমার লাগে। তার জন্যে আমার শোক না এসে দুঃখ হচ্ছে তার লিখার কারণে। তবে হত্যাকারী যেই হোক তার ফাঁসি চাই।
থাবাকে কে হত্যা করল - এটা খুবই জটিল হিসাব। কয়েকটি কারণে। আমি চেষ্টা করব সম্ভাব্য সবগুলি কারণ ব্যখ্যা করার জন্যে। ব্লগ থেকেই জানতে পারলাম, মৃত্যুর ঘন্টা খানেক আগে তার মোবাইলে একটি কল আসে। এই কলের কারণে সে শাহবাগ থেকে চলে যায়। এটা হচ্ছে আগানোর একটি সুত্র। আরেকটি সুত্র হচ্ছে যেহেতু সে নেতৃস্হানীয় ব্লগার রাজাকার বা তাদের দোসররা তাকে হত্যা করতে পারে।
বিভিন্ন মাধ্যমে বিশেষ করে শাহবাগের মন্ছে তার হত্যার জন্যে রাজাকার বা তার দোষরদের নাম উল্লেখ করায় এটি সামনে চলে আসে। সমস্যা হচ্ছে তাকে টেলিফোন করে ডেকে নিয়ে যাওয়া। রাজনীতির বিশ্লেষন যতটুকু বুঝি বর্তমান সময়ে রাজাকার বা তাদের দোসররা থাবাকে টার্গেট করার যুক্তি সংগত কারণকি, বিশেষ করে যেদিন সমাবেশকে সংকুচিত করার ঘোষনা দেয়া হয়েছে। তাই আমার বিবেচনায় এটি একটি বিকল্প কারণ হলেও একমাত্র কারণ নয়। হাঁ এ ক্ষেত্রে পরবর্তী সন্দেহটা হয়ত সরকারী গোয়েন্দা বাহিনী বা সরকারী ছাত্র সংগঠনের উপর। যদিও বিষয়টা নিয়ে লিখতে কিছুটা অসস্হি বোধ করছি, তারপরও একজন সহব্লগারের মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসাবে এটা লিখতেই হচ্ছে। বাম ছাত্রসংগঠন বা বামব্লগাররা চায়নি এই আন্দোলন এখনি বন্ধহোক বা সীমিত হোক কারণ এ আন্দলন চালিয়ে যাওয়ায় তাদের পাপ্তি অনেক। তারা এ আন্দোলনকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে: ১) জয়বাংলা দলীয় স্লোগান হলেও তারা এটাকে মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান হিসাবে আন্দোলনকে জমিতে তুলতে ব্যবহার করতে মেনে নিয়েছে।
২) লাকীর উপর ছাত্রলীগের সম্পাদকের আঘাত তাও হজম করেছে। উল্লেখ্য লাকী ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদিকা।
ত) ছাত্রলীগকে আন্দোলনের নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়া।
৪) সর্বোপরি আন্দলনকে জমানোর জন্য মিডিয়া রিলেসন, স্লোগানের নেতৃত্ব দেয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় অর্গানাইজিংয়ের জন্য কষ্ট করা।
এত কিছুর পরও তারা চাচ্ছিল যে কোন ভাবে আন্দোলনকে সার্বক্ষনিক চালিয়ে যাওয়া। কিন্তু সরকারের জন্য এটা অনেক বড় চ্যলেন্জ। বিশেষ করে আন্দোলন চলাকালীন অবস্হায় সাঈদীর মামলার রায় দেয়া সরকারের জন্য অনেক বড় চ্যালেন্জ। সরকার তাই সাঈদীর মামলার রায় পিছিয়ে ১৭ তারিখ করেছে। আর একই সাথে সরকার চাচ্ছিল আন্দোলনকে ধীরে ধীরে স্তিমিত করতে। বিশেষ করে ছাত্রদলের মিছিলের পর সরকারের হিসাব নিকেশ কিছুটা পরিবর্তিত হয়। বিএনপি যদি এখন তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিয়ে সামনে আগায় তাহলে তা আরেকটা শাহবাগের সম্ভাবনা তৈরি করবে। সরকার যেভাবে জামাত শিবিরকে হ্যান্ডেল করছে পরিবর্তিত পরিস্তিতিতে বিএনপি কে একই ভাবে হ্যান্ডেল করতে পারবেনা। যা বড় কোন দিকে মোড় নিতে পারে। তাই সরকারের সামনে একটিই বিকল্প এটা বন্ধ করা। আন্দোলন বন্ধ করা বা না করার দ্বন্ধ নিয়েও এটা হতে পারে। তবে সরকার এ ক্ষেত্রে এত বড় রিস্ক নিবে কিনা তা ভাবার বিষয়। নাকি এটা কোন মাথা মোটার কাজ। তবে হত্যার ধরন বলে দেয় এটা অনেক বড় দক্ষ হাতের কাজ।
আর সর্বশেষ বিকল্প হচ্ছে বাহিরের কোন গোয়েন্দা সংস্হা, হতে পারে তা ভারতের 'র' বা পাকিস্তানের আই এস আই।
যদি উপরের গুলো কোন সম্ভাবনা না হয় তাহলে পারিবারিক কলহ বা প্রেম ঘটিত। সেটা তার পরিবারই ভাল বলতে পারবে।
ঘটনা যাই হোক সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে খুনীর ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম। কারণ তার সর্বশেষ মোবাইল কল রিসিভিং তদন্তের একটি বড় টার্নিং পয়েন্ট। খুনি বা তার খুনির সহযোগী কোন না কোন ভাবে তার পরিচিত। কারণ তাদের কাছে তার মোবাইল নাম্বার ছিল এবং সে তাদের কল পেয়ে শাহবাগ থেকে চলে গেছে।
সর্বশেষে বলতে চাই এই খুনের বিষয়টিকে যথাযথ ভাবে হ্যান্ডেল না করলে দেশের ভবিষ্যতে অনেক বড় কালো মেঘ জমা হতে পারে।
আর হাঁ আরেকটি বিষয় বলতে চাই, আমি যে কোন খুনেরই বিরোধী। একজন বাবা হিসাবে বলছি, পুলিশের গুলিতে যারা মারা যায়, হতে পারে তারা রাজাকারের দোষর, কিন্ত হতে পারে সে এমন এক মা বা বাবার সন্তান যাকে দেখলেই শুধু শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছে করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:০৮