somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি সিদ্বান্ত এবং...... (ছোটগল্প)

২২ শে আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনের মধ্যে সবসময়ই বর্ণার একটা শঙ্কা কাজ করে। সবকিছুতেই তার মনে হয় যেন তার ভুল হচ্ছে। বারবার জিজ্ঞেস করে সবাইকে এটা কি ঠিক, ওটা কি করা ঠিক হচ্ছে? অন্যদের কাছ থেকে সাজেশান ছাড়া কোন কাজ করেছে বর্ণার মনে পড়ে না। ছোটবেলা থেকেই বাবার কাছে জিজ্ঞেস করতো বাবা এটা কি ওটা কি, বাবা আমি কি ভুল করছি। বাবার খুবই ভরসার সাথে জবাব থাকতো আমার মেয়ে কখনও ভুল করবে না। শুধু একটা ব্যাপারেই বর্ণা তার বাবার কাছে জিজ্ঞেস করে নি, আদনানের ব্যাপারটায়। ফ্রেন্ডরা বলেছে, আদনান ভাল ছেলে কাজেই ওকে না করার কোন মানে নেই। বর্ণার কয়েকবার মনেও হয়েছে বাবাকে বলি। কিন্তু আদনান বলেছে না এখন না। সময় আসুক তোমার-আমার বাসায় জানানো যাবে। এভাবেই দেখতে দেখতে কেটে গেছে তাদের ভার্সিটি লাইফ।


এরই মাঝে বর্ণার বাবা মারা গেলেন হঠাৎ করেই, বর্ণার মা মেয়ের বিয়ে দেবার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। বর্ণা একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ঢুকেছে সবেমাত্র। আদনান একটা প্রাইভেট ব্যাংকে তাও খুব আহামারী কিছু না। কোনমতে নিজের চলে তবে বিয়ে করার মত অবস্থা আদনানের না। বর্ণা তারপরও আদনান কে বলল, বাসা থেকে লোক পাঠাতে বিয়ের ব্যাপারটা ঠিক করা থাক বিয়ে না হয় কিছুদিন পরেই হবে।


‌বর্ণাদের সাথে আদনানদের সামাজিক বা আর্থিক অবস্থানের বিশাল পার্থক্য। আদনানের বাবা একজন গ্রামের স্কুলের শিক্ষক। ওদিকে আদনানের চাকরিটাও ভাল না। বর্ণার মায়ের রাজী হবার কোন কারণ নেই। তিনি সরাসরি না বলে দিলেন আদনানের বাবাকে।


আদনানের প্রচন্ড আত্নসন্মানে লাগল। সে বর্ণাকে বলল, তাকে বিয়ে করলে কালই করতে হবে নয় তো সে যেন তার মায়ের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করে ফেলে। বর্ণা কোনকিছু না ভেবেই বলল, ঠিকাছে। কালকে আমি বাসা থেকে চলে আসবো।


ফোন রাখার পর থেকে প্রতিটা মুহূর্ত বর্ণার বারবার মনে হচ্ছে বাবা তুমি কোথায়। আমি কি ভুল করছি? আমাকে একটি বার বলে যাও তোমার মেয়ে ভুল করতে পারে না। সারাটা সন্ধ্যা বর্ণা অন্ধকারে বারান্দায় বসে থাকল সেদিন। মা বাসায় নেই, মামার বাসায় গেছে কোন ছেলে জার্মানী থাকে তার পারেন্টসের সাথে কথা বলতে।


রাতে প্রতিটা সেকেন্ড তার কেবলই মনে হতে লাগল, আদনান যদি কালকে না আসে। আদনান কি মায়ের সাথে সহজ হতে পারবে....... মা কি কখনো আমাকে ক্ষমা করতে পারবে......... আমি কি মায়ের থেকে চিরদিনের মত দূরে চলে যাচ্ছি........আমি কি ভুল করছি.....আদনান যদি কাল না আসে......এক ফোঁটা ঘুমাতে পারল না বর্ণা রাতে।


সকাল ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হবার সময় মায়ের বিছানার উপর একটা চিঠি রেখে বাসা থেকে বের হয় গেল বর্ণা। পথে যেতে যেতে বারবার মনে হতে লাগল....ফিরে যাই...মা কি আমাকে ক্ষমা করবে.....



...........৫বছর পর....বিভিন্ন কারণে বর্ণাদের গত ৫বছরে দেশে আসা হয় নি।.... ওরা দেশে ফিরেছে ১সপ্তাহ। মায়ের বাসায় এসেছে ২দিন এরই মাঝে বর্ণার ছেলের সাথে মায়ের বেশ খাতির হয়ে গেছে। নানী আর নাতনী সারা দুনিয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে। নাহ বর্ণা ভুল করে নি।

( কি ভাবছেন? বর্ণা কি তবে আদনানকে বিয়ে করেনি? তাই না?? বর্ণা বিয়ে আদনানকেই করেছিল। বর্ণার মাও ব্যাপারটাকে মেনে নিয়েছিলো মাসখানেকের মধ্যে..... এরই মাঝে আদনান অস্ট্রেলিয়াতে একটা ভাল সুযোগ পায়....তারপর ওরা ওখানেই চলে যায়। )
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×