somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগ আড্ডা - বৃষ্টি ভেজা চমৎকার একটি সন্ধ্যা

০৩ রা অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিন বছর প্রবাশে থেকে ফেরা বন্ধুর দেখা করার আমন্ত্রন উপেক্ষা করার শক্তি আমার ছিলনা। বারবার তার ফোন, এদিকে আকাশের অবস্হা "আজ আমার মন ভালো নেই টাইপ ", তার উপর দেখা করার টাইম সাড়ে তিনটা থেকে সে পাঁচটা করে দিল। বুঝলাম ব্লগ আড্ডায় আজ আর যাওয়া হচ্ছেনা। মনটা একটু খারাপ হয়ে গেলেও অনেক দিন পর বন্ধুর সাথে দেখা হবে, এটা বিশাল ব্যাপার।

দেরি করে যাওয়া বা লেট হওয়া আমার নিয়তি। আজও তাই হল। কোন সিএনজি যাবেনা এলিফ্যান্ট রোড। অবশেষে এক ক্যাব ওয়ালা রাজি হল। কলাবাগান গিয়ে তারও গ্যাস শেষ :( । এক ঘন্টা তারে বসাইয়া আমি ছয়টায় পৌঁছালাম। গিয়ে দেখি আরও দুই বন্ধু আছে। জমাইয়া আড্ডা শুরু হল পুরোনো বন্ধুদের।

পাথুরেকে বিকালেই জানাইছিলাম আমি মনে হয় যাচ্ছিনা। সাতটায় ওরে ফোন দিলাম। আড্ডা কেমন চলছে। এ বলল আপনি এখনই আসেন সবাই আছে। পল্লীবাউল বলেছেন আপনি না আসা পর্যন্ত যাবেন না। বন্ধুর কাজ থাকায় সে ও চলে যাবে, আমিও দেরি না করে একটা রিক্সা নিয়ে নিলাম। ফোন দিলাম অন্ধ দাঁড়কাকরে, সেও নাকি হাজির, আমারে কইছিল নাও যাইতে পারে /:)

একগাদা লোকের সমাগম দেখেই বুঝলাম এটা ব্লগারদের আড্ডা। পাথুরে বলেছিল খাওয়া দাওয়া এখনো আসেনাই, বুঝলাম তাই লোক সমাগম এই আঁধারেও কমে নাই।

দেখতেই বাউল দা ডাক দিলেন। ভাবীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন ।ব্লগার ফ্যামিলি , ভাবির নিক মনপুরা। আমরে শহীদি জীবন দানের জন্য সবার যে উৎসাহ তাতে পল্লীবাউল ভাবীরেও যোগ করে দিলেন একটা গুরু দায়িত্ব দিয়ে। আমি আশাই বুক বাঁধলাম আরেকবার B-)

একটু সামনে আগাতেই মেজবাহ ভাই , কথার আগেই সিগারেট আগাইয়া দিলেন :)

শামীম ভাই আর খাওয়া দাওয়া প্রায় সমার্থক হয়ে গেছে ব্লগীয় আড্ডায়। কিছু বিঝার আগেই একটা প্যাকেট ধরাইয়া দিলেন, হায়রে আজকে আমার পেটে যে যাইগা নাই , তাই খাওয়া হলনা :((

সদা হাস্যোজ্জ্বল পারভেজ ভাইয়ের সাথে দেখা হল। তার পরেই ক্যামেরাম্যানের সাথে। তিনি পরিচয় করিয়ে দিলেন আরিয়ানা আপুর সাথে। বিদায় নিচ্ছেন তখন ব্লগার ভোরের তারা ফ্যামিলি । পরিচয় হল ফয়সাল রকস ভাই এর সাথে, অনেক কথা ও হল। মনসুর ভাইর দেখা পেলাম। তার সেই ব্যানানা পিকস নিয়া আরেক দফা হাস্যরস হল।

সাইকেল ভাই দেখলাম স্বভাব সুলভ জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। নিকট প্রতিবেশী স্পর্শহীন কিছুদিন কে পেলাম। তিনি আমারে না নিয়া আড্ডাই গেছেন, বললাম পরেরবার খবর আছে X(

প্রফাইল পিক কার্টুনের হলেও ফারা তন্বী মোটেও কার্টুন নন :) ।গোয়েবলস
নিকটা আমি ভেবেছিলাম ছেলে হবে, কিন্তু না :-*

আইরিন আপুর সাথেও পরিচয় হল। হঠাৎ করে একজনের ডাকে ফিরে দেখি কাক ভুষন্ডি , ঈদ কোলাকুলি করে নিলাম :D ।রামুদারেও পাইলাম।
অন্ধ দাঁড়কাক ফোন দিয়া কয় তুমি কই, কইলাম খুইজা লও এদিকে আছি। রোহানের সাথে ও দেখা হল। আমারে খোচাইয়া ওর যে কি আনন্দ , কারও পৌষমাস কারও সর্বনাশ। নিজের লেজ কাটা যাবার পরে ও এখন অন্যেরটা নিয়া লাগছে।

চাচা মিঞা মিষ্টি হাসি নিয়া আগাইয়া আইলেন , ঈদ কোলাকুলিও সারলাম।জামাল ভাস্কর ভাইর সাথে পরিচয় হল, গল্প হল আগের আমলের ব্লগীং নিয়া যখন আমি শুধু দর্শক ছিলাম।

শ্রাবনসন্ধ্যা আপু ডাকে পিছন ফিরে দেখি জাফনা মামনিও আজ যোগ দিয়েছেন আমাদের সাথে ।স্বাগতম ক্ষুদে ব্লগার :D

আমাবস্যার চাঁদ, কালপুরুষ, আবু সালেহ, টোনা ,আলঝেইমার্স, সোনালীডানা, জানপরী,ব্যতিক্রমী- এদের সাথে ও পরিচয় হল।
গলায় দড়ি দেয়া দন্ডিত পুরুষ কেও খুজে পেলাম। সৌম্যর সাথে অনেক কথা হল, কই ঘুরতে যাওয়া যায় এই নিয়ে, জটিল ভাইরে আমি চিনতে পারিনাই। ইচ্ছা ছিল চেনার /:)

অন্যমনস্ক শরৎ দা ক্ষনেক্ষনে সার্টার ক্লিক করে চলেছেন। চাচা, সাইকেল তারা ও মেমোরি কার্ড ভরে তুলছেন, সাথে রাত ও গভীর হচ্ছে। অনেকেই ফিরতি পথ ধরেছেন।

বাউল দম্পতি জেল খানায় দাওয়াত দিলেন ;) । অনেক দিনের শখ একরাত জেলে কাটানোর তবে কোন মার খেতে আমি রাজি না। B-)

কাব্য বাবু জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন সাথে আছে আরও কয়েকজন। ঘাসফুল ভাইর সাথে অনেক ক্ষন আড্ডা দিলাম।

যায়যায় করেও শেষে দেখি আমরা পনের জনের মত রয়ে গেছি। মেজবাহ ভাই চায়ের প্রস্তাব দেয়ায় সবাই মিলে টং দোকানের দিকে পা বাড়ালাম। পরিচয় হল প্রত্যুদার সাথে। টং এ এতগুলি কাপ না থাকায় মামা কোথা থেকে যেন ওয়ানটাইম যোগাড় করে আনলেন। পরিচয় হল ভার্সিটির ছোট ভাই রথে চেপে এলাম এর সাথে।

সাইকেল ভাই হাঁক দিলেন ব্লগাররা সবাই লাইন ধরে রাস্তার উপারে দাঁড়ান। বললাম ভাই আস্তে বলেন, ব্লগার এটা আবার নতুন কোন দল ভেবে পরে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। সবাইরে আইটেম বানিয়ে চলল সে এক বিশাল ফটোসেশন।

জানপরী, কাব্য, জামাল ভাই আর আমি ঠিক হল চাচার সাথে ফিরব পথ এক হওয়ায়। দরজার পাশে পানি থাকায় আমি আর কাব্যা উঠতে পারলামনা। গাড়ি সামনে টানলে উঠব এই ভেবে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু একি চাচাতো থামছেননা। আমরা আগাই গাড়িও আগাই:-*

হঠাৎ চাচা টার্ন নিলেন। আমরা ভাবলাম উপারে দাঁড়াবে, কিন্তু একি উনিতো ছুটে চলেছেন, পিছনে আমি আর কাব্য ছুটছি। থামার কোন লক্ষন নাই। ফোন দেয়ার সাথে সাথে চাচা বললেন ভাই সামনে দাঁড়াইছি , আসেন। উনি নাকি ভাবছেন আমরাও গাড়িতে আছি :-*

গাড়িতে জমে উঠল আবারও ধুম আড্ডা। মহাখালীতে নামার সময় বলেই ফেললাম ভাই আমারত নামতে ইচ্ছা করছেনা। আপনাদের আড্ডাতো চলছেই /:)

না গেলে আজকে আসলেই বরসর মিস করতাম, চমৎকার এক আড্ডা। মন ভাল করা মুডে রুমে ফিরে আসলাম।

স্মৃতির পাতায় ঢুকে যাওয়া একটা দিন- হ্যাপ্পী ব্লগীং ।
৪৭টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×