
সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা "রানার" কবিতা নিয়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া "রানার চলেছে তাই ঝুম ঝুম ঘন্টা বাজছে হাতে"- ডাকপিয়নদের জীবন নিয়ে অনন্য এক সৃষ্টি !! তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের লেখা "ডাক হরকরা"- ডাকপিয়ন নিয়ে অনবদ্য এক লেখা !!
হালফিল ওসব গান-গল্প শোনার মত মন মানসিকতা কারও নেই। তবে ওই সে 'রানার' বা 'ডাকপিয়ন'- উভয়ের সাথে বর্তমান বাংলাদেশের "পাঠাও বাইকারদের" যেন অদ্ভুত এক মিল রয়েছে !! আমি বলি, এরাই সোনার বাংলার প্রকৃত "সোনার মানুষ"। ডাকপিয়নেরা চিঠি পৌছায় আর এ বাইকার'রা এদেশেরই বহু বহু মানুষকে তাদের গন্তব্যে পৌছে দিচ্ছে। অনলাইনের যুগে, এ পদ্ধতিতে দ্রত মানুষ আনা-নেয়ার এ কৃতিত্ব; কেবলই ঐ সব "সোনার ছেলেদের" "সোনার মানুষদের"!! এদেশের বুড়া, পেটমোটা, দূর্নীতিবাজ সরকারী দায়িত্বশীলেরা আর চান্দাবাজ রাজনীতিবিদেরা যখন বিশাল বেকারত্বের বিপরীতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যর্থ, তখন এরা নিজেরাই খুঁজে নিয়েছে উপার্জনের পথ। আজ কত কত পরিবার-পরিজন এ আয়ের উপর নির্ভরশীল !! তাদের খাওয়া, পড়া, চিকিৎসা এতে চলে।
রোদ-বৃষ্টিতে রাস্তায় যখন এসব বাইকারদের চলাচল দেখি, বুকের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ জন্মে। এদের বেশীরভাগই উচ্চ শিক্ষিত, উচ্চ বংশীয়। অথচ কতই না নীরবে, রাস্তাঘাটে কত শত রকমের জবাবদিহি আর যন্ত্রণা সয়ে টাকা উপার্জন করে স্ত্রী-সন্তান-মা-বাবার মুখে অন্ন যোগাচ্ছে !! অথচ এসব নির্লোভ শ্রমজীবী মানুষদের আমরা ধনিক-বনিক শ্রেণী কোন ভাবেই মেনে নিতে পারিনা। সিএনজি, বাসওয়ালাদের পক্ষ নেই।
সবচেয়ে দূঃখজনক বিষয় হলো- আমরা নিজেরা মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে পারিনা, কিন্তু কেউ ভালো কিছু করলে বা করতে চাইলে মুখ বাকাই; ওতে নিজের কৃতিত্ব জাহির করি, তারপর ও থেকে ইনকামের ধান্ধা খুঁজি। তারপর চান্দাবাজ ও চাটুকারদের প্ররোচনায় এমন কিছু প্রতিবন্ধক আইন বানাই, যাতে খেটে খাওয়া এ রকম মানুষদের বেচে থাকা দায় হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



