বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড় করাতে যে কয়েকটি ফ্যাক্টর কাজ করেছে তার মধ্যে ক্ষুদ্রের ব্যাংক ব্যবস্থা, নারীর অর্থনীতি এবং ক্ষুদ্র পরিবার ব্যবস্থাপনা। একটি দেশের অতলে, অতীতে, বর্তমান এবং ভবিষ্যত বিনির্মানের মূলে সব সময় কাজ করে অর্থনীতি এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা। অর্থনীতির কাঠামো এমনই আপনি রাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে অনেক সিদ্ধান্ত এবং সেবামূলক ভিত্তি দাঁড় করাতে পারবেন না। রাষ্ট্র কাঠামো অল্প অল্প ছুঁয়ে কিভাবে অর্থনীতি দাঁড় করানো যায় এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা যায় সে মডেলটি দেখিয়েছেন ড. ইউনূস। সাথে নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছিলো ব্রাকসহ অন্য কিছু সেবামূলক ক্ষুদ্র অর্থনীতির প্রতিষ্ঠান।
একটা রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সুসংগঠিত বিকাশ। যে সরকার ও রাষ্ট্র কাঠামো সেই অংশটুকুকে পরিকল্পিতভাবে অথবা অজ্ঞতাবশত ভেঙ্গে দেয় বা দিতে চায় তাকে সন্দেহ করা জরুরী। এটুকু চিন্তায় খুঁচা দিয়ে প্রসঙ্গের কথায় যাই।
স্বাধীনতা পরবর্তী দেশে এই হয়নি ঐ হয়নি, বহু আফসোস ও হাহাকার আছে। কিন্তু এর ভেতর যা যা হয়ে গেছে সরকারের বাইরে তা হলো হতদরিদ্র শ্রেণিকে অর্থনৈতিক ধারায় তুলে এনে একটা জায়গায় দাঁড় করানো গেছে বাংলাদেশকে। সরকার করছে না আমরা হয়ে যাচ্ছি; বিষয়টা এ রকম। বাংলাদেশকে এখনো ধ্বসের কিনারায় ধরে রাখা খাতের বড় নাম হলো বৈদেশিক রেমিট্যান্স। একজন প্রবাসীর অর্থনীতি হয়ে উঠার গল্পটি খুবই জটিল প্রক্রিয়া এবং দীর্ঘ এক সংগ্রামের পথের নাম। সুশাসনের অর্থনীতির ছিটেফোঁটাও খোঁজে পাবেন না এখানে। সরকার পরিচালনায় কে কতটুকু অদক্ষ আপনি শুধু এই খাতের পরিচালনায় কার কতটুকু দক্ষতা এটুকু বুঝলেই হবে।
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র অর্থনীতির ধারাটি অব্যাহত রাখা গেছে মূলতই স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে যৌথ পরিবারের দ্রুত ভাঙ্গনের কারণে। যা ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বহুদেশে করা যায়নি। এর কারণেই তৈরি পোশাকখাত দাঁড়িয়েছে, দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। সামাজিক রক্ষণশীলতার বহু স্তর উপস্তর পরম্পরায় ধরে থাকে শুধু যৌথ পরিবারের টিকে থাকায়। ভারত নামক রাষ্ট্রটি তার আদর্শ উদাহরণ।
বাংলাদেশে দলে দলে প্রবাসে ও গার্মেন্টসে মানুষ যোগদান করেছে এবং অর্থনৈতিক ধারায় অংশ নিয়েছে পরিবার কাঠামোর তাড়না থেকেই। যৌথ পরিবারের দোষ ধরা আমার কাজ নয়, কিন্তু যৌথ পরিবারের মাথায় চড়ে হানাহানি ও অপজীবনের ভাগাড় তৈরি হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া তার ভালো উদাহরণ। ঘুরে আসতে পারেন অভিজ্ঞতার জন্যে। পাড়া পাড়ায় লাঠিয়াল বাহিনী। চেয়ারম্যান হলো মাথা, তার নিচের মাথা হলো বড় বড় পরিবারের কর্তা ও মেম্বারবৃন্দ। শুধু মনে হবে একটা আদিম যুদ্ধ হলে কেমন হয়, আর হয়ে গেল।
একটা প্রসঙ্গের ভেতর ঢুকতে গেলে অনেকগুলো সম্পর্কযুক্ত ব্যাপার চলে আসে আর শেষে মূল প্রসঙ্গেই থাকা যায় না। তবুও কিছু বিষয় ছুঁয়ে যাওয়া লাগে।
আসি ক্ষুদ্র ঋণ থেকে ছোটখাটো পরিবারের বিকাশে এবং তা যেন ভেঙ্গে না পড়ে এবং শক্ত মধ্যবিত্ত পরিবারে রূপ নেয় তার পেছনের কারিগরের স্বপ্নে। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই ধরেছেন তিনি ড. ইউনূস। উপরের প্রসঙ্গগুলো টানার একটিই কারণ তিনি আসলে কি করতে চান; তা বুঝা ও চিন্তা করা এবং
তা তুলে ধরার জন্যে আজকের লিখা। সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো দ্বারা যে মানুষ কতটা প্রভাবিত হয়, ব্যাক্তি আমিও তার একটি উদাহরণ। অর্নাস, মাস্টার্স শেষ করে এমফিল নিয়ে চলায়ও কোনদিন মনে হয়নি অর্থনীতি পড়াশোনা একটা রাষ্ট্রের কত বড় খেলা।
একজন অর্থনীতিবিদ আসলেও কি করতে পারেন। আমার অর্থনীতি নিয়ে আগ্রহটি তৈরি হয়েছে ড. ইউনূসকে নিয়ে সরকারের অতিমাত্রায় নাড়াচাড়া করায়।
মনে হয়েছে মূল কারণটি খোঁজে বের করতে হবে। অর্থনীতি নিয়ে টুকিটাকি জানা শুরু হয় কোভিটকালীন সময়ের পরিক্রমায়। যদি বলেন ড. ইউনূস কতটা মেধাবী ও চিন্তাশীল? তার সবচেয়ে ভালো উত্তর হলো তিনি পৃথিবীর ৭০০শ কোটি মানুষের অর্থনীতি বুঝেন এবং অনাগত আগামীর।
তাহলে আপনি বলতে পারেন হাসিনা কেন ড. ইউনূসের পেছনে লাগলো? এই প্রশ্ন আমারও। আর তা হলো উনাকে যারা চালান তাদের ভয় ড. ইউনূসকে। জ্বী সামাজিক ব্যবসা।
ঐ যে কেউ চাচ্ছে না বাংলাদেশে একটি শক্ত মধ্যবিত্ত তৈরি হোক। বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক যে মধ্যবিত্ত শিক্ষিত শ্রেণী বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছে, সেই ঘটনাটিই ড. ইউনূস আবার করতে যাচ্ছেন সামাজিক ব্যবসায়। এর নাম পরের জন্যে অর্থনীতি, পরের জন্যে ব্যবসা।
ঐ যে ক্ষুদ্র ঋণে পরিবার গড়ে উঠলো, এখন কি করা যায়? করা যায় সামাজিক ব্যবসায় নিয়ে এসে যে যে পণ্য উৎপাদন করতে পারে তাকে একটি চেইন ব্যবসায় পরিণত করে এতদিনের কষ্টে গড়া সম্প্রদায়কে শক্ত ভীতে বসিয়ে দেয়া। কি চমৎকার না? না চমৎকার নয় কারো জারো জন্যে! একটা দেশের অর্থনীতিবিদ ও বুদ্ধিবৃত্তিক শয়তানগুলো জানে তাকে ঠেকাতে হবে। তিস্তায় বাঁধ দিতে হবে। যেন নদী ও নারী মরে যায়! যেন ড. ইউনূসে বাঁধ দেয়া যায়।
সামাজিক ব্যবসায় ড. ইউনূস আবারো নোবেল পাবে। এবার পাবে অর্থনীতিতে। তাবৎ পৃথিবী চিন্তাশীল মানুষকে ধারণ করে। আপনি করছেন তো! (একটানে লিখা, কষ্ট করে পড়বেন, পরিমার্জন করার সময় নাই)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ২:৫৬