somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নজরুলের চিন্তার কাবা প্রাচ্য নাকি পাশ্চাত্য?

২৬ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কাজী নজরুলের বড় বিপত্তি তিনি, না গোঁড়া ধর্মীয় লোকের কবি আর অতিমাত্রায় বামের কবি, না হোদাই প্রগতিশীলের কবি। তিনি সরাসরি মধ্যপন্থীর। অনেককেই দেখি নজরুলের কিছু কথা উল্লেখ করে বলেন কাফের। ভাসানীর ভাষায় বলতে হয় খামোশ, তুই আধ্যাত্বের কি বুঝিস!
নজরুলের স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোঁয়া নেই কিন্তু উনার যা পড়াশোনা এবং চর্চা-অনুশীলন ছিলো তা কয়েকটা পিএইচডি ডিগ্রিতেও শেষ হবে না।

"তোর জান যায় যাক, পৌরুষ তোর মান যেন নাহি যায়"

নজরুলের এমন কথা কেউ বলতে পারেনি,ধারণ করা তো দূরে থাক। ভেতরে আমার নজরুল খেলা করে অসাধারণ ভাবে কিন্তু একটা জায়গায় বহু ভয় আমার, নজরুল রাজনীতিতে সফল ছিলেন না। যার জন্যে পুরোদস্তুর কবি হওয়ার খায়েশ আমার নেই। পৃথিবীতে একাধারে চিন্তক ও বাস্তবায়ক একজনই তিনি রাসূল(সাঃ)। মহান আল্লাহ এ অসাধারণ রহমত রাসূল(সাঃ) কে দিয়েছেন। বা কোন নবী পেয়েছেন, কোন মুহাদ্দিসগণও পাননি, যাদের আগমন প্রতি একশো বছরে একজনের হয়।

চিন্তক আমার কথা সবাই পড়বে এমনটি কখনোই আশা করি না। আমাকে খুব ভালো জানবে এমন আশাও করি না, বরং অনেককে নিজের সম্পর্কে খারাপই জানাই। ফেরেস্তা হওয়ার শখ নাই, পুরোদস্তুর মানুষ হতে চাই। চিন্তা সবাই নেয় না, নিতে পারে না। নেয়া সম্ভবও না।

যাই হোক, কাজী নজরুল এবং রবীন্দ্রনাথের পক্ষপাতে অনেকেই কাজী নজরুলকে বড় করেন। আবার অনেকেই রবীন্দ্রনাথকে বড় করেন। অনেকেই রবীন্দ্রনাথকে বেশি বড় করেন, বাড়াবাড়ি করেন।

সত্যিকার অর্থে আমার একটা মানদণ্ড আছে, সেখানে কাজী নজরুল ইসলাম বড় কি না জানি না, তবে কাজী নজরুল হীনমন্য নয় কিন্তু রবীন্দ্রনাথ কিছুদিনের জন্যে হলেও হীনমন্য। সেখানে নজরুল এক মুহূর্তের জন্যেও হীনমন্য নয়। এ বিচারটি অনেকেই করতে চান না, কারণ এ সমস্যা অনেকেই আছে। মোটামুটি সবারই আছে। জ্ঞান অনুসন্ধান এবং আহরনের কাবা পৃথিবীতে দুটো ১. প্রাচ্য ২. পাশ্চাত্য
প্রাচ্যের কাবাটি হলো পারস্য। আর পাশ্চাত্যের কাবাটি হলো গ্রীক হয়ে বর্তমানে প্যারিস।
আধুনিক ও উত্তরাধুনিক শিল্পবোধ এবং বোদ্ধার যত অহংবোধ আছে তা প্যারিস, গ্রীক এবং রোমকে কেন্দ্র করে। মানে পাশ্চাত্য চিন্তা ও দর্শন। এ্যারিস্টটল,প্লেটো,
পীথাগোরাস, হোরেস,লাঙ্গিনাস, দারিদা, ডারউইন, কার্ল মার্কস ইত্যাদিসহ যতচিন্তক আছেন এসব পাশ্চাত্য চিন্তাকে কেন্দ্রীভূত করে এমন একটি ধারণা দেয়া হয় যে, চিন্তার জন্ম ও বিকাশ শুধু পাশ্চাত্যে।

এমন কি নবীদের আগমনকেও ভাববাদী ধারায় ফেলে বলা হয় এগুলো এশিয়া তথা প্রাচ্যের কাজ। পাশ্চাত্যে কোন ধর্মবাদের জন্ম দেয় না, এরা আধুনিকতা এবং বস্তুবাদের জন্ম দেয়। ঐসব সেকেলে ধারার জন্ম প্রাচ্যে। খ্রিস্টদের ঈসা(আঃ), তাও জন্ম পাশ্চাত্যে নয়, প্রাচ্যে। বিজ্ঞান মনস্ক এবং এসবকে কেন্দ্র করে ধারাগুলো তাই দ্বান্দ্বিকভাবে তাদের। মহাপুরুষ বলতে তাদের কিছু নাই। এটি অস্বীকার করলে অনেকেই এন্টি সেমিটিক হয়েও যায়। মারাত্মক ব্যাপার এটি৷

আসলে সহজ করে বলতে বলতেও অনেক জটিল হয়ে যায় আলোচনা। কাজী নজরুলের জ্ঞানের কাবা কিন্তু পুরোপুরি প্রাচ্য। এবং সেটি পারসিক এবং পারস্য। সেটি ওমর খৈয়াম, শেখ সাদী,খুলদুন, তাওদর্শন,লাউৎসু, ইবনে সিনা, রুশদ,সূফীবাদ, জরস্থ্রীয়বাদ বা একেশ্বরবাদী এবং ভারতীয় দর্শনবাদ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সকল কবি ও দার্শনিকের ব্যাপক মূল্যায়ন হতে পারে। এটিও সম্ভব কিন্তু নজরুলের মূল্যায়ন সম্ভব নয়। অতটুকু উদার পাশ্চাত্য হয়নি।
কারণ তখন চিন্তার কেবলা ঘুরে যাবে। এলিটিজমের ধারা ঘুরে যাবে। ইরাকের যুদ্ধে সবার আগে প্রাচ্য দর্শনের ভিত্তি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে বাগদাদ নগরীর গ্রন্থাগারগুলো ধ্বংস করে। এটিই তাদের প্রয়োজন ছিলো,করেছেও তাই।

রবীন্দ্রনাথ চিন্তায় প্রাচ্যবাদী নয়, তিনি ঘরের সন্তান আপাদমস্তক নয়। তিনি নিজে মারাত্মকভাবে ওরিয়েন্টালিজমে আক্রান্ত। অপরদিকে কাজী নজরুল পুরোপুরি ঘরের সন্তানই শুধু নয়, পুরোপুরি আমাদের রক্তের সন্তান, চিন্তায় ও ডিএনএতে সাপাহার।

এখানে মূল্যায়ন কারো তেমন ভালো লাগার নয়। আবার কারো কারো আনন্দের। জাতে বাঙালি গালিটিও একটি ওরিয়েন্টালিজমে আক্রান্ত।
---- রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি" পুরোদস্তুর ওরিয়েন্টালিজমে আক্রান্ত। নজরুলের এ পাপ নেই। তিনি পুরোপুরি বাবার সন্তান এবং পূর্বপুরুষের উত্তরাধিকার। তাহলে কি রবীন্দ্রনাথ মহান মহাপুরুষ নয়? অবশ্যই, তবে তিনি পাশ্চাত্যে বিভোর। হঠাৎ উনার ঘুম ভাঙ্গে যদিও, কিন্তু তিনি তো করেছেন অন্নপাপ। দায় তো বয়ে বেড়াতেই হবে।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:০৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ওহাবী-সালাফি-মওদুদীবাদ থেকে বাঁচতে আরেকজন নিজাম উদ্দীন আউলিয়া দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৩৩

১.০
ঐতিহাসিক জিয়া উদ্দীন বারানী তার তারিখ-ই-ফিরোজশাহী বইতে শায়েখ নিজাম উদ্দীনের প্রভাবে এই উপমহাদেশে জনজীবনে যে পরিবর্তন এসেছিল তা বর্ণনা করেছেন। তার আকর্ষণে মানুষ দলে দলে পাপ থেকে পূণ্যের পথে যোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই ৩০ জন ব্লগারের ভাবনার জগত ও লেখা নিয়ে মোটামুটি ধারণা হয়ে গেছে?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৬ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৯



গড়ে ৩০ জনের মতো ব্লগার এখন ব্লগে আসেন, এঁদের মাঝে কার পোষ্ট নিয়ে আপনার ধারণা নেই, কার কমেন্টের সুর, নম্রতা, রুক্ষতা, ভাবনা, গঠন ও আকার ইত্যাদি আপনার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আর্তনাদ

লিখেছেন বিষাদ সময়, ১৬ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২১

গতকাল রাত থেকে চোখে ঘুম নাই। মাথার ব্যাথায় মনে হচ্ছে মাথার রগগুলো ছিঁড়ে যাবে। এমনিতেই ভাল ঘুম হয়না। তার উপর গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে উচ্চস্বরে এক ছাগলের আর্তনাদ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন তার আকাশের বলাকা || নিজের গলায় পুরোনো গান || সেই সাথে শায়মা আপুর আবদারে এ-আই আপুর কণ্ঠেও গানটি শুনতে পাবেন :)

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:০০

ব্লগার নিবর্হণ নির্ঘোষ একটা অসাধারণ গল্প লিখেছিলেন - সোনাবীজের গান এবং একটি অকেজো ম্যান্ডোলিন - এই শিরোনামে। গল্পে তিনি আমার 'মন তার আকাশের বলাকা' গানটির কথা উল্লেখ করেছেন। এবং এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×