প্রথমেই ক্ষোভ প্রকাশ করছি এত জীবনের বিনিময়েও চালাকির রায়,নির্বাহী আদেশ এবং সেনা ব্যবহার করে কারফিউ জারি করায়। বিদেহী সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ঘৃণা প্রকাশ করছি যারা এখনো হাসিনা বলে চিল্লায়, তাদের অন্ধ মোহ শীগ্রই কেটে যাবে।
ঘৃণা প্রকাশ করছি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি,প্রক্টর এবং লেজুড়বৃত্তিক শিক্ষকদের প্রতি। ঘৃণা প্রকাশ করছি হাসিনা মিডিয়ার প্রতি। ঘৃণা প্রকাশ করছি যারা এ আন্দোলনে বিএনপি এবং জামাত খোঁজেন। কালের গহ্বরে এই লোকগুলো এক সময় হারিয়ে যাবে। ঘৃণা প্রকাশ করছি প্রতিটি লেজুড়বৃত্তিক প্রশাসনের উপর যারা সুস্পষ্ট স্বৈরাচার হাসিনার পক্ষের লোক, ঘৃণা প্রকাশ করছি এখনো যারা হাসিনা কারিশমা বলে প্রকাশ করছেন এ দমন-পীড়নকে, তাদেরও স্বপ্ন খুবই দ্রুত ভেঙ্গে পড়বে।
বিশেষভাবে ঘৃণা প্রকাশ করছি, ভাত খাওয়া নতুন বাহিনী বাহিনী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর। আপনারা দুপুরে ভাত খেয়ে ফুপিয়ে ঘুমান। এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে তেমন কেউ বলতেই নাই। তবুও লড়ে যেতে হবে এবং এটাই উত্তরণের পথ। আছে যত নির্লজ্জ ধ্বংস হোক, ভেঙ্গে পড়ুক।
প্রশ্ন ফাঁসের অন্তরালে মেধাবী শেষ, অন্যদিকে কোটা। বাংলাদেশে ভাগ্য পরিবর্তন খুবই কঠিন একটি ধারা। যদিও মানুষ প্রাণে-পণে চেষ্টা করে ভাগ্য পরিবর্তনের। কোটা একটি গলার ফাঁস। সাথে প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ আর মাদকাসক্তদের আখড়া। নির্যাতনের একেকটি মিনি ক্যান্টেনমেন্ট হলো বিশ্ববিদ্যালয়। হলোকাস্ট তৈরির চূড়ান্ত রূপ বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার। প্রতিটি থানা একেকটি গ্যাসচেম্বার। অতীতের সরকারের ভুল-ত্রুটি কাজে লাগিয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে একটি সিন্ডিকেট। দ্রব্য মূল্য, চাকরিতে দূর্নীতি, কিছু দালাল তৈরি,মিডিয়াবাজি এবং স্তুতিগায়ক সম্প্রদায় হাসিনার মূল হাতিয়ার।
এসবের বিরুদ্ধে হঠাৎ বিস্ফোরিত হওয়া জনসম্প্রদায়ের নাম সাধারণ শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণ। যে যে দল এ আন্দোলনকে সমর্থন দিয়েছেন প্রত্যেককেই ধন্যবাদ জানাই।
যারা এ সকল দলকে নানা ছলেবলে দোষ দিতে চাচ্ছেন তারা মূলতই গণহত্যাকারী বাহিনী, এসব গণহত্যাকারীদের ঘৃণা।
এদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। গণবয়কট করার এখনই সময়।
ছাত্র-আন্দোলনের পুরো কৃতিত্ব ছাত্রদের এবং এদের প্রতি বিএনপি যে সমর্থন দিয়েছে তা শুধুই নৈতিক সমর্থন। সাথে যারা ছিলেন সকলেই সাধারণ শিক্ষার্থীরূপেই অংশ নিয়েছেন, কেউ দলীয় পরিচয় নিয়ে যায়নি এবং যাওয়াও নিষেধ ছিলো। সুতরাং এ আন্দোলনকে কোন দলীয় রূপ দেবার সুযোগ নেই। তারেক রহমানও সুস্পষ্ট ভাবে বলেছেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবিকে রাজনৈতিক রূপ দেবেন না। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে নোংরা রাজনৈতিক খেলা খেলবেন না।
সুতরাং সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়, এখানে কোন রাজনৈতিক রূপ দেবার যা ইচ্ছে তা সরকারের।
জ্বালাও-পোড়াওয়ের নেপথ্যে, যখন প্রহসনের নির্বাচন শেষ হলো ডামি, উপডামি এবং হেরে যাওয়া আওয়ামী লীগ গণ বিএনপি-কে প্রস্তাব দেয়, আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যান, আমরা পুরো আন্দোলন সফল করে দেবো, যা যা করা লাগে করবো। কিন্তু বিএনপি এসব নোংরা খেলায় রাজি না হয়ে সরাসরি আন্দোলন বন্ধ করে দেন। আমরা অনেকেই তখন একটু ক্ষুদ্ধ ছিলাম, কিন্তু এখন তা হাড়ে হাড়ে বুঝেছি।
এবার আসি, মিরপুর দুটি মেট্রোরেল স্টেশন পোড়ানোর নেপথ্যে কারা। জ্বী, বিএনপি নয় আওয়ামী বাস-মালিক সিন্ডিকেট এবং চাঁদাবাজ যুবলীগ ও কিছু ছাত্রলীগ। কারণ তাদের ব্যবসায় লালবাতি জ্বলতেছিলো। যারা মোটামুটি রাজনৈতিক সম্পর্কে জানেন, তারা অবগত যে নিখিলের মিরপুরে কোন বিএনপি নেই, তারা দীর্ঘ ১৬/১৭ বছরে রাখেনি। নিখিলের মনোনয়ন নেয়া পছন্দ করেনি মিরপুর স্থানীয় যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ। এবং তাদের ব্যবসায় মন্দা। তারাই ঝাঁপিয়ে পড়ে ধ্বংসলীলায়।
ঠিক একই ঘটনা, গাজীপুরে। জাহাঙ্গীর বিরোধীরা হত্যা করেছে তার পিএসকে, মেরেছে জাহাঙ্গীরকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদ্দাম-ইনান-কে মানে না কোন ছাত্রলীগ। আন্দোলনের আন্তরারালে তারাই সুযোগ নিয়েছে। এ আন্দোলনের সবচেয়ে বীভৎস রূপ বেরিয়ে এসেছে এ সুযোগ বাহিনী। এবার বহিরাগত ছাত্রলীগ এনে যে নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তার খুব কমই সামনে আসবে।
শুধু নির্যাতনের কথাই আসবে। যে নেশাখোর, ধর্ষক ও হত্যাকারী বহিরাগত ছাত্রলীগ ও পুলিশ দিয়ে যা করানো হয়েছে তার অল্পই সামনে আসবে। জাহাঙ্গীরনগরেও একই চিত্র, রাজশাহীতে কেমন কল্পনা করুন।
হত্যার চিত্র যা এসেছে তা তো কল্পনার বাইরে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভেতরে দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছাত্রলীগের ধ্বংসলীলা বলার বাইরে। সুবিধাজনক জায়গায় হলো যুবলীগ সিন্ডিকেট। সেতু ভবন পুড়িয়ে যারা দীর্ঘদিন ওবায়দুল কাদেরের বাইরে টেন্ডার পায় না। এ সকল ঘটনা জানে বলেই আওয়ামী লীগ খুব আগেভাগেই বলে বেড়াচ্ছে আন্দোলন থেমে যাবে।
সবকিছুর ঊর্ধ্বে তিনটি সত্য, এক হলো যৌক্তিক কোটা নির্যাতন দুই গণহত্যা তিন দীর্ঘদিনের নির্যাতন।
বিএনপি-সহ অন্য সরকার বিরোধী জোটকে বলবো এ তিনটি টার্মে চেপে ধরতে। মূলতই হাসিনা সমর্থনকারীদের কোন নৈতিক অবস্থান নেই। তাই বলি আছেন যত নির্লজ্জ কিছু বলে যান, আর স্বৈরাচার ছাড়েন না হলে গণপ্রতিরোধের অপেক্ষা করুন। সময় বেশি নেই, এরপর গণপ্রতিরোধ হবে আরো সুসংগঠিত এবং কার্যকর।
বিশ্বাস না হলে লিখে রাখুন। আমাকেও সিন্ডিকেট ছাত্রলীগ ও যুবলীগ প্রস্তাব দিয়েছিলো ক্যাম্পাসে মিছিল করতে, যাতে আমাদের আড়ালে একটা বড় ধ্বংসলীলা চালাতে পারে। এরা নতুন গড়ে উঠা সাদেকা হালিম বিরোধী সিন্ডিকেট।
সময় থাকতে বুঝে নিন, আওয়ামী লীগ এখন পক্ষ-বিপক্ষ একটি লুটেরা বাহিনী। আপনি তাকে না বলবেন নাকি সমর্থন দিবেন, আপনার ব্যাপার। সকল বিরোধী শেষ হলে মানে ছোট ছোট মাছ খাওয়া শেষ হলে, বড় বড় মাছ খাওয়া ধরে বড় মাছে, সেই বড় মাছের লড়াইয়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ শত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ চলে গেলো।
সত্যটা এ রকম। সত্যের আড়ালের সত্যকে জানতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:২৩