আন্দোলন চলেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে। সাধারণ মানুষই যুক্ত হয়েছে। যাদের জীবনের প্রচন্ড মায়া, হওয়াও স্বাভাবিক; তারা যুক্ত হয়নি। আপনাকে ভাবতে হবে কোথায় বেশিরভাগ জনগণের সমর্থন সেটাই বৈধ এবং স্বাভাবিক।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে এত যে জ্বলে-পোড়ে গেলো? আমি দ্ব্যার্থহীনভাবে বলতে পারি সবই সাধারণ শিক্ষার্থীদের করা নয়, এখানে আওয়ামী এবং আওয়ামী লীগে পরাজিত, স্থান না পাওয়া ও সিন্ডিকেট স্বার্থান্বেষী মহলেরও তৎপরতা ছিলো।
ইতিপূর্বে আমি লেখেছি মেট্রোরেলের উপর বাস মালিক সমিতির বদনজর ছিলো, তাদের ব্যবসায় মন্দা ছিলো। আগামী ১ বছর আবার আরামে ব্যবসা করবে। সার্ভার ডাউন, বৈদ্যুতিক গোলযোগ নানা কৌশলে মেট্রোরেল সেবা জনগণ থেকে দূরে নিতে পারেনি, মোক্ষম সময়ে তাদের শয়তানী ব্যবহার করলো। এরা কারা? প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ -যুবলীগ ; যারা টাকা কামায় আর পাচার করে। যারা প্রশ্ন ফাঁস করে, কোটি কোটি টাকা পকেটে ভরে আর বিদেশে পাচার করে।
সেতু ভবনের আক্রমণ হয়েছে টেন্ডারবাজির আরেক মাফিয়াদের আক্রোশে যারা ওবায়দুল কাদেরের বাইরে, এবং কোন ওয়ার্ক অর্ডার পায় না। সুযোগে মনের খায়েস দিয়েছে মিটিয়ে। বেশিরভাগ বড় বড় অগ্নিসংযোগ গুলো এমনই চিত্র।
তবে কি কিছু আগুন সাধারণের হাতে লাগেনি? লেগেছে টিয়ারগ্যাস থেকে বাঁচতে। কোন বড় পরিসরে আগুন নয়। এ দেশে আওয়ামী মাফিয়া এমন সিন্ডিকেট তৈরি করেছে যারা লুটেপুটে খাওয়া ছাড়া কোন স্বপ্নই দেখে না। নির্লজ্জ ধ্বংসবাজদের পক্ষগুলো বিএনপি পক্ষ ছাড়া কোন কিছু চোখে দেখলেও মুখে স্বীকার করে না। এবার আওয়ামী কায়েমী স্বার্থবাজগুলো মাঠে ছিলো না। হাসিনা-কে বুঝালো তাদের লাগে, নইলে মাঠ অন্যরা দখল করে। এখন আবার দর কষাকষি হবে।
কিছু বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করে হয়রানি করবে। গত ১৬/১৭ বছরে হত্যা করতে করতে বিএনপির প্রায় সকল পর্যায়ের শক্তিই দূর্বল করেছে, না হলে বিদেশে পাঠিয়েছে ; এখন যারা আছে তারা দলটি ধরে রেখেছে বহু সংগ্রাম করে। এ দলটিকে বিলুপ্তি করার বহু চেষ্টা হয়েছে। জনগণ ভালোবাসা ও আকন্ঠ সমর্থন দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে। এটাই দলটির বড় স্বার্থকতা। তবুও জনগণ থেকে দূরে রাখতে দলটির উপর নানামুখী ষড়যন্ত্র সাজানো হয়। তার ভেতর দিয়ে দলটি দাঁড়িয়ে যায়, টিকে যায়। অতিসম্প্রতি নির্বাচনে দেশি-ভারতীয় চক্রান্তে পা না দিয়ে যখন একটি লক্ষ্যে চলছে, তখনই তাদের আন্তঃকোন্দলের বিষবাষ্প দেয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু জনগণ এগুলো খায় না।
সুস্পষ্ট বিষয় হলো কোটা বিরোধী আন্দোলনটি পুরোপুরি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন। যার পুরোপুরি নেতৃত্ব সাধারণ শিক্ষার্থীদের। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্বিচারে হত্যা এবং নির্যাতনকে বৈধ করতে যে একটি বিএনপি ন্যারেটিভ প্রয়োজন, যা দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন চালিয়ে যাওয়া যায় সেই একটি পদ্ধতি হলো বিএনপি করেছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয় দেখিয়ে, মেরে মুখ বন্ধ করে দেয়ার মারাত্মক অস্ত্র বিএনপির নাম ব্যবহার। রাজাকার, স্বাধীনতা বিরোধী এবং পাকিস্তানপন্থী সবই সাজানো শব্দ। এসব সাজানো শব্দের মারাত্মক অবসান হবে। দেশে এখন দুইটা পক্ষ স্বৈরাচার পক্ষ ও দেশ বিরোধী লুটেরা এবং অন্যটি বাংলাদেশপন্থী সাধারণ নির্যাতন জনতা।
যারা জনতার বিপক্ষে তারা নানা ন্যারেটিভে বাংলাদেশ বিরোধী এবং স্বৈরাচারের পেইড ভার্সন।
দ্রুতই এ দমবন্ধ পরিস্থিতির অবসান হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১২