আরাফাত স্যার --- আমাদের প্রিয় বুয়েট শিক্ষকদের একজন
২১ শে মে, ২০১০ রাত ৮:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
২০০৯ সালের অক্টোবর মাস।লেভেল-২,টার্ম-২ এর ক্লাস শুরু হতে আর ৩-৪ দিন বাকি।ডিপার্টমেন্টের নোটিশ বোর্ডে নতুন টার্মের ক্লাস রুটিন দেখতে পাই।রুটিনে চোখ বোলাতে গিয়ে দেখি যে EEE 205 কোর্সের এক কোনে ছোট করে লেখা MAA।এই নামটা একটু অপরিচিত লাগে।বাসায় এসে বুয়েটের সাইটে লেকচারারদের তালিকায় একটি নাম দেখতে পাই Muhammad Abdullah Arafat।মনে মনে বিরক্ত হই কারণ আগের ৩ টার্মে জুনিয়র স্যারদের সাথে ক্লাসের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর ছিল না।তার উপরে স্যারের প্রথম থিওরি ক্লাস আমাদের সাথেই।কি রকম পড়ায় কে জানে!প্রথম ক্লাসেও স্যারকে খুব বিভ্রান্ত দেখায়।আমরা যা বলি তাতেই স্যার দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন।আমাদের সব ক্ষোভ গিয়ে পড়ে ডিপার্টমেন্টের উপর।পরেরদিন Numerical Technique Lab এ গিয়েও স্যারকে পাই।মনে মনে আরেকবার কর্তৃপক্ষকে অভিশাপ দিতে থাকি। বুয়েটে তখন EUProW চলছিল।ব্যস্ততার কারণে প্রথম দুই সপ্তাহ স্যার ঠিকমতো ক্লাসে আসতে পারেন না আর আসলেও দেরি করে আসেন।কিন্তু তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই স্যার স্বরূপে ফিরতে শুরু করেন।স্যারের পড়ানো দেখে মনে হয় দুনিয়াতে DC Motor/Generator, Synchronous Motor/Generator এর মতো সহজ আর কিছু নাই।স্যারের মনোভাবও ছিল বুয়েটের অনেক স্যারের থেকে বেশি সহযোগীতাপূর্ণ।আমাদের সুবিধার জন্য স্যার ৪টির স্থলে ৬টি ক্লাস টেস্ট নেন।ক্লাসে আমাদের বোঝানোর জন্য একটা টপিক তিনবার পড়ান।যে কোন সমস্যা নিয়ে স্যারের কাছে গেলে স্যার কখনো বিরক্তি প্রকাশ করেন না।আর রাস্তায় দেখা হলে কুশল বিনিময় তো আছেই।ল্যাবেও থিওরী এতোটা ভাল করে আর কোন গ্রুপকে পড়ানো হয় না।স্যারকে কখনো দেখিনি কাউকে একটা জোরে কথা বলতে।টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার মাঝে বিভিন্ন সমস্যায় স্যারকে ফোন করলে স্যার কখনো বিরক্তি প্রকাশ করেননি যেখানে বুয়েটের ২-১ জন শিক্ষক ফোন করলে ধমকা-ধমকি পর্যন্ত করেন।কোন কারণে ক্লাসে আসতে না পারলেও সেটা আগের দিন ২-৩ জনকে ফোনে জানিয়ে রাখেন।ল্যাব টেস্ট,কুইজ,ক্লাস টেস্ট হোক আর টার্ম ফাইনাল – কোন পরীক্ষাতেই স্যারের দেওয়া গাইডলাইনের বাইরে থেকে একটা প্রশ্ন আসেনি।টার্ম ফাইনাল যেদিন শুরু হয় সেদিন স্যার নিজে থেকে আমাদের পরীক্ষা কেমন হইল সে খবর নেন।টার্মের রেজাল্ট দেয়ার পরে গ্রেডিং করার সময় স্যারের উদার মানসিকতা টের পাই।মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি থিওরী আর ল্যাব --- দুই জায়গাতেই এইরকম একটা Course teacher পাওয়ার জন্য।আগামীকাল থেকে লেভেল -৩,টার্ম-১ এর ক্লাস শুরু।এই টার্মেও Digital Electronics ল্যাবে স্যারের ক্লাস পেয়েছি।এইবার আর ডিপার্টমেন্টকে অভিশাপ না, ধন্যবাদ দিই আবারো স্যারকে পাওয়ায়।স্যার যেখানেই থাকুন,স্যারের সুখী ও
সমৃদ্ধ জীবন কামনা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১০ রাত ৮:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
লিখেছেন
ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।...
...বাকিটুকু পড়ুন
মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন...
...বাকিটুকু পড়ুনবড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল...
...বাকিটুকু পড়ুন

জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি...
...বাকিটুকু পড়ুন