somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাছ মাংসের বাজার করবেন কিভাবে ? নব্য বিবাহিত কিংবা বাজার করায় অজ্ঞ মানুষদের জন্য বিশেষ টিপস :)

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরিবারের বড় ছেলে হবার কারনে হোক কিংবা প্রবাসী পিতা হবার দরুন হোক। ছোটবেলা থেকেই বাসার বাজার সদাই থেকে যাবতীয় কাজের দায়িত্ব আমার উপরেই বর্তায়। আমিও সেসব দায়িত্ব সানন্দে পালন করে আসছি।

আমার কিছু বন্ধুবান্ধব সম্প্রতি বিয়ে শাদী করে সংসার পেতেছে। ছোট বেলায় তারা আলালের ঘরের দুলাল থাকুক কিংবা ফাঁকিবাজ হোক কোন এক কারনে তারা বাজার করার বেসিক আইডিয়া গুলো আয়ত্ব করতে পারেনাই।

আর তাই অনেকে বাধ্য হয়ে আগোরা কিংবা মিনা বাজারের দশদিনের বাসি পচা মাছ কিনে তৃপ্তির ঢেঁকুর গেলে। সেই সকল বন্ধু প্লাস অভিজ্ঞ মানুষদের জন্য আজকের ষ্ট্যাটাসে বাজার করার কিছু পদ্ধতি বর্ননা করলাম। আশাকরি সবার উপকারে আসবে।

প্রথমে দেশী মুরগীঃ ইন্ডিয়ান শাড়ি,পাকিস্তানী লেহেঙ্গা কিংবা ফ্রান্সের কসমেটিকস আমাদের পছন্দ তালিকায় থাকলেও মুরগী কেনার ক্ষেত্রে বরাবরই আমাদের পছন্দ দেশী মুরগী। কিন্তু সমস্যা হলো বাজারে পাকিস্তানী মুরগী সয়লাব,দেশী পাই কই? আসলে দেশী মুরগীর বৈশিষ্টগুলো লক্ষ্য করলেই আমরা দেশি মুরগী কেনায় ঠকবোনা নিশ্চিত।

দেশী মুরগীর পা অবশ্যই অনেক নোংরা হবে অন্যদিকে পাকিস্তানী মুরগীর পা হবে হলুদ ও পরিষ্কার, দেশী মুরগীর গলায় চাপ দিলে জোরে শব্দ করে কান ঝালাফালা করে দেবে, অন্যদিকে পাকিস্তানী মুরগী কিসকিস শব্দ করবে, দেশী মোরগ হলে তার লেজের পাখা হবে অনেক লম্বা ও আকর্ষনীয় এব চকচকে। এছাড়া দেশী মুরগীর ঝুটি হবে অবশ্যই বড় এবং আকর্ষনীয় অন্যদিকে পাকিস্তানী মোরগের ঝুটি ছোট এবং গোলাপী।



চিত্রঃ দেশী মুরগী

এবার গরুর মাংসের পালা। ঢাকা শহরের সব জায়গায় গরুর মাংসের সাথে মহিষের মাংস মিক্সড থাকে। বেশীর ভাগ কসাইরা গরু জবাই না করে ঠাটারী বাজার থেকে পাইকারী মাংস কিনে এনে বিক্রি করে। সেখানে নানা জাতের দেশী বিদেশী মরা জেতা গরু মহিষের মাংস বিক্রি হয়। তাহলে দেশী অরিজিনাল জীবিত গরুর গোস্ত চিনবো কি করে?
ঢাকা শহরের মোটামুটি অল্প কয়েকটি জায়গায় সরাসরি গরু জবাই করে গোস্ত বিক্রি করে। এরমধ্যে অন্যতম হলো উত্তর শাহজাহানপুরের খলিল মাংস বিতান,উত্তর বাড্ডার শরীফ মাংস বিতান এবং পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারের কিছু দোকান।

আর গরুর মাংস ও মহিষের মাংসে কিছু ব্যসিক পার্থক্য আছে। গরুর মাংস তুলনামূলক গোলাপী থেকে লাল, অন্যদিকে মহিষের মাংস শুধুই টকটকে লাল। গরুর মাংসের ফাইবারগুলো হলো চিকন চিকন অন্যদিকে মহিষের মাংসের ফাইবার হবে মোটা মোটা। আবার ঠকে মহিষের মাংস কিনে আনলে দেখবেন সেদ্ধ করতে গরূর মাংসের দ্বিগুন সময় লাগবে। তবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হলো সময় থাকলে উপরে উল্লেখিত দোকান থেকে মাংস সংগ্রহ করা,বিশেষ করে উত্তর শাহজানপুরের খলিল মাংস বিতান।



এবার মাছের পালা। পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে প্রথমে ইলিশের গল্প করি। বাজারে বর্তমানে সাধারনত যেসব মাছ দেখছেন গুণে-মানে 'মাছের রাজার' ধারে কাছে না থাকলেও 'সার্ডিন', 'চাকোরি', কলোম্বো এবং 'ডটেড গিজার্ড শাড'র মতো বিদেশি মাছগুলো শুধুমাত্র চেহারাগত মিলের কারণে ইলিশের নামেই বিক্রি হচ্ছে। আমাদের দেশে এগুলার নাম চন্দনা ইলিশ, ফুইট্যা ইলিশ। রান্না করলে দেখবেন সামান্য ইলিশের গন্ধ পর্যন্ত নাই। তবে বাজার থেকে আসল ইলিশ কি করে বাছাই করবো? মনে রাখবেন ইলিশ রুপালী বলা হলেও সেটি কিন্তু মোটেও সম্পূর্ন রুপালী না। উপরের দিকে অবশ্যই হালকা সবুজ হবে। অন্যদিকে চন্দনা ইলিশ আকারে ছোট এবং কানের দিকে একটি বাচ্চাদের কপালে কাজলের ফোঁটা দেওয়ার মতো দাগ আছে। এ জন্যই হয়তো চট্টগ্রামে এ মাছকে ফুইট্টা ইলিশ বলা হয়। তাই ইলিশ কিনবেন দেখে শুনে।



চিত্রঃ চন্দনা ইলিশ

এবার আসি দেশী রুই কাতল জীবিত ও মৃত মাছ নিয়ে কিছু কথা বলি। আমরা ইদানিং বাজারে গেলে দেখতে পাই অনেক দোকানে পানিতে রুই কাতল মাছ জীবিত পালন করে বিক্রি করছে।
এখন পর্যন্ত মাসের সংরক্ষন নিয়ে কোন ঝামেলা আমার চোখে পড়ে নাই, তবে ওজনের বিশাল পুকুর চুরি ধরে ফেলেছি। সেটি হলো মনে করুন আপনি একটা রুই মাছ কিনলেন ৩০০ টাকা কেজী। দোকানদার একটি ব্যগে ভরে সেই মাছ ওজন করলেন ডিজিটাল মেশিনে ২.৫ কেজী হলো এবং দাম ৭৫০। আপনি দাম দিয়ে মাছ কাটিয়ে নিয়ে চলে আসলেন। মনে করবেন না আপনি জিতেছেন, আসলে আপনাকে ঠকানো হয়েছে মিনিমান ২০০ টাকা। কিন্তু কিভাবে? উওর হলো আপনি যখন ওজন করার জন্য তাদের একটি নির্দিষ্ট ব্যগে ঢুকালেন,সেই ব্যগটি আসলে ভিনিগারে চুবানো ছিলো সারারাত। ওই ব্যগের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম। এ প্রতারনা থেকে বাঁচতে প্রথমে আপনি তাদের পদ্ধতিতেই মাপাবেন, তারপর বলবেন মাছের মাথায় আঘাত করে মাছটা মারো, মারা শেষ হলে এবার আবার ওজন করতে বলবেন। দেখবেন আগের চেয়ে ২০০-১০০ টাকা কম এসেছে। জীবিত মাছের ব্যবসায় এই ওজন চুরি বহুদিন ধরেই চলে আসছে, কিছুদিন আগে এটি আমার দৃষ্টিগোচর হলো।

মরা রুই কাতল কিনতে গেলে অবশ্যই কানকো দেখে কিনবেন না, কিনবেন কানকো এবং নাভী দেখে। প্রায় পচা মাছের নাভী থাকে নীল,চোখগুলো ভেতরে ঢুকে যায় এবং প্রায় মরা থাকে। তাজা মাছের নাভী থাকবে লাল এবং চোখ হবে সতেজ ও চকচকে। মাছের গায়ে পিছলা ভাব দেখে ভাববেন না তাজা মাছের মধ্যে পানির শেওলা, কারন কিছু আগেই এটিতে ঢেরস ডলে পিচ্ছিল করা হয়েছে।

আজ এতোটুকুই, সামনে একদিন আরো কিছু বিষয় নিয়ে বলার ইচ্ছে রইলো। হ্যাপি শপিং
১৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×