মাথায় কিছু জিনিস ঘুরপাক খাচ্ছে, সেটা ক্লিয়ার করে বলি।
অর্থমন্ত্রির মন্তব্য, ‘যে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করা হবে না। আমাদের রাজস্ব সংগ্রহের উৎস কোথায়? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ভ্যাট রাজস্ব সংগ্রহের একটি ভালো উৎস হতে পারে। একজন ছাত্র যে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তার এভারেজ খরচ হলো দৈনিক এক হাজার টাকা। এবং তার বিরাট অংশ হলো বেতন। দৈনিক এক হাজার টাকা...আমি অনেকগুলো, ২৮টা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য কাগজপত্র নিয়ে নিজে হিসাব করেছি যে তার দৈনিক খরচ এক হাজার টাকা। সেখানে আমি ৭.৫ পারসেন্ট দাবি করেছি।’
১. আমি এই মন্তব্য মোটেই সাপোর্ট করিনা। শিক্ষার ওপর ভ্যাট মানিনা। তবে উনার মন্তব্য থেকে এটা ক্লিয়ার, যে ১০০০ টাকার কথা উনি বলেছেন সেটা একজন শিক্ষার্থীর দৈনিক হাত খরচ নয়। হাত খরচ, টিউশন ফি সহ সব মিলিয়ে দৈনিক এভারেজ খরচ ১০০০ টাকা। সব ভার্সিটির শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে এটা সঠিক নয়। তবে ঢাকার কয়েকটা হাতে গুনা ভার্সিটির ক্ষেত্রে এই খরচ অমূলক কিছুও নয়। চার মাসের সেমিস্টার ফি + ল্যাব ফি + এই সেই আগর বাগর ফি মিলিয়ে যদি ১ লক্ষ টাকা আর দৈনিক হাত খরচ যদি ১০০ টাকাও হয় তাহলে দৈনিক মোট খরচ কিন্তু ১০০০ টাকারও বেশি পড়ে (নর্থ সাউথ বা এরকম কিছু ভার্সিটি)। ১০০০ টাকার ভেতরে অর্থমন্ত্রি ৭৫ টাকা ভ্যাট এর কথা বলেছেন, কারো হাত খরচ এর উপরতো আর উনি ভ্যাট চাইবেন না। সুতরাং উনি টিউশন ফি এর কথাই বলেছেন। আমরা অনেকে না বুঝেই ফান উড়াচ্ছি। তবে হ্যা, এই কয়েকটি ভার্সিটির কিছু পোলাপান ছাড়া বেশিরভাগ ভার্সিটিতেই মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা পড়ে। অনেকে টিউশনি করে নিজের ফি দেয়। আমি কি পারতাম না নর্থ সাউথ বা AIUB তে এডমিশন নিতে? আমার সে যোগ্যতা ছিল। কিন্তু ছিলনা এত টাকার বোঝা কাধে চেপে নেওয়ার শক্তি। সবাইকে এক পাল্লায় মাপাতো অন্যায়। আমরা ঠিক মত নিজের টিউশন ফি-ই দিতে পারছিনা। তার ওপর বাড়তি ভ্যাট! মঘের মুল্লুক?
২. "ভ্যাট দেওয়ার দায়ীত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের, শিক্ষার্থীদের নয়" - এতে লাফানোর কিছু নাই। এটা একটা ভিত্তিহীন কথা। এই নিয়ম চালু থাকলে সামনের সেমিস্টার থেকেই ফি বাড়িয়ে দেবে। পুরনোরা অতটা ক্ষতির সম্মুখীন না হলেও নতুন যারা ভর্তি হবে তাদেরকে ভ্যাটম্যান এর ফাদে পড়তে হবে। টিউশন ফি এর সাথে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত। তার মানে শিক্ষার্থী ভ্যাট দিবেনা বলা হলেও সেটি কিন্তু শিক্ষার্থীকেই দিতে হবে। অনেকেই হয়তো জানেন না, অলরেডি আমরা ৪.৫% ভ্যাট দিচ্ছি! সেটা কোথাও উল্লেখ নেই, অথচ আমাদের কাছ থেকেই আদায় করা হচ্ছে কৌশলে। ৩% বাড়িয়ে ৭.৫% করা হয়েছে। অথচ ভার্সিটি আমাদের কাছ থেকে পুরো ৭.৫% আদায় করছে। আমরা যদি এই ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে পারি তাহলে আমাদের টিউশন ফি উল্টো ৪.৫% কমে যাওয়ার কথা। এরা বাটপার, এরা এটা করবেনা। তাও, এই ভ্যাট যদি প্রত্যাহার করতে পারি তাহলে বলতে পারব আমাদের কষ্ট সার্থক। তাই ভ্যাট প্রত্যাহার না করার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
#NoVat_On_Education
#I_am_not_a_child_of_an_ATM_Booth