জীবনের নির্দিষ্ট একটি সময়ে পৌঁছানোর পর, মানুষ যখন পরিপক্ক হয়ে ওঠে, তখন প্রেমের মাপকাঠি বদলে যায়। তখন আর কেউ প্রেমে পড়ার জন্য শুধু সৌন্দর্য, উচ্ছ্বলতা, কিংবা সুগঠিত দেহ খোঁজে না। বরং খোঁজে এমন একজনকে, যার উপস্থিতি তাকে শান্তি দিতে পারে। এমন একজন, যার সঙ্গে থাকলে জীবনের সমস্ত কষ্ট ভুলে যাওয়া যায়, যে তাকে মানসিক প্রশান্তি এনে দিতে পারে।
পরিপক্ক মানুষ এমন একজন সঙ্গী খোঁজে, যার সঙ্গে কথা বললে মনে হবে যেন নিজেকেই বুঝতে পারছে। যার বুকে মাথা রাখলে মনে হবে, জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জনটি পেয়েছে—কাউকে, যে তাকে নিঃস্বার্থভাবে বুঝতে পারে। এই ভালোবাসা মানসিক শান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যেখানে শরীরী প্রেমের কোনো স্থান নেই। কিন্তু মনের প্রেম থাকে অফুরন্ত।
আমরা মানুষগুলো সারাজীবন কখনও টাকার মোহে, কখনও ক্ষমতার মোহে, আবার কখনও বাজে কোনো অভ্যাসের মোহে ডুবে থাকি। একটি বয়স পার হলে আমরা বুঝতে পারি, আমাদের চারপাশে অনেক লোক থাকলেও আমাদের বোঝার মতো একজনও নেই। এই সময়ে আমরা চাই শুধুমাত্র মানসিক শান্তি।
যখন আপনি বুঝতে পারবেন কারো মাঝে আপনি নিজেকে খুঁজে পান, কোনো চাওয়া-পাওয়া ছাড়াই, তখনই বুঝতে হবে এটাই প্রেম। এই ভালোবাসা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ধরে রাখতে হয়। এটি এমন একটি পরিপক্ক প্রেম, যা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আপনাকে আপনার সঙ্গীর কাছ থেকে এটাই অনুভব করাবে—"আমি আছি তোমার পাশে, সুখে কিংবা দুঃখে।"
এই পরিপক্ক প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলা সহজ নয়। এটি একে অপরকে বোঝা, সম্মান করা এবং নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসার মাধ্যমে গড়ে ওঠে। এই ধরনের সম্পর্ক মানসিক শান্তির প্রধান উৎস হয়ে ওঠে এবং জীবনকে সুন্দর করে তোলে। একজন পরিপক্ক সঙ্গীর সঙ্গে এই প্রেম আপনার জীবনে আনন্দ, শান্তি এবং সন্তুষ্টি এনে দিতে সক্ষম।
তাই, জীবনের এই পরিপক্ক প্রেমের সন্ধানে থাকুন এবং একে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ধরে রাখতে শিখুন। কারণ, এটাই প্রকৃত ভালোবাসা, যা আপনাকে সবসময় মনে করিয়ে দেবে—আপনি কখনো একা নন।
-------------------- সেলিনা জাহান প্রিয়া
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০২৪ রাত ২:৩০