somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বরের ইচ্ছা - নাসরেদ্দিন হোদজা #৩

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মি নাসরেদ্দিন হোদজা- অনেকেই আমাকে মোল্লা নাসরেদ্দিন বলে ডাকে। ইদানিং এই গ্রামে এত বেশী মোল্লা বেড়ে গেছে যে,আমার কদর ভীষণভাবে কমে গেছে। আগের মত আর তেমন শ্রদ্ধা সম্মানও করে না। বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব বা কাজে কেউ আর ডাকে না। বড়ই মর্মপীড়া ও অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে আছি।
একদিন অতি প্রত্যূষে আমি সামান্য কিছু পরিধেয় বস্ত্র ( আসলে আমার ছিলই দুটো কুর্তা আর পাতলুন) আর অতি দরকারি জিনিস নিয়ে আমার প্রিয় বুড়ো গাধার পিঠে চড়ে দূর দেশে ভ্রমণ ও অন্ন সংস্থানের উত্তম একটা ব্যবস্থা কর জন্য বের হলাম।
আমি এখন গাধার পিঠে সোজা হয়েই বসি। উল্টো দিকে বসলে বিচ্ছু পোলাপানেরা ঢিল ছোড়ে আর বড়রা পাগলা মোল্লা,পাগলা মোল্লা বলে ক্ষ্যাপায়। ওরা ভুলে গেছে আমাকে একসময় তারা এজন্যই সম্মান বা সমীহ করত। আহা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম রে!
আমার গাধাটাও হয়েছে তেমন। ইদানীং চোখে কম দেখে কানেও কম শোনে। দু’দুবার বিক্রি করার চেষ্টা করেছিলাম,কেন যেন দাম করাতো দুরের কথা কেউ এই গাধাটার দিকে ফিরেও তাকায়নি।
-তোমরা একটা শত সহস্র তালি আর তাপ্পি দেয়া জুতার গল্প জাননা? আরে ওই যে, নর্দমায় ফেলে দিলে নর্দমা আটকে গিয়ে বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা, জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেললে কেউ ভয়ঙ্কর আহত হয়ে কাজীর কাছে বিচার দেয়। সবাই জানে এটা মোল্লা নাসরেদ্দিনের জুতা। যেভাবেই হোক না কেন আমি ধরা পড়ি। ... এখন মনে পড়েছে? এইতো- এটা ছিল তখনকার আমার দুরবস্থার চিত্র!

যাহোক, আমি গাধাকে ডাইনে বায়ে বা সোজা যাবার কোন নির্দেশ দেইনি। ও যাচ্ছে ওর ইচ্ছে মত। আমি অশ্রু সজল চোখে শেষবার আমার প্রিয় শহরটাকে দেখে নিলাম।
হায়রে কি দিন গেছে! প্রাচ্যের অতি এলেমদার দরবেশ সালতুক( যাকে নিয়ে অটোমান সাম্রাজ্যের সময়ে রচিত হয়েছিল সালতুকনামা), সেলজুকের সুলতান, আর মহাপরাক্রমশীল খোঁড়া তৈমুর( টেমেরলিন/ তৈমুর লং) আমার সাথে গল্প গুজব করতে আসতেন আর আজ সে আমি ... আমার চোখ ভিজে উঠল জলে।
গাধাটা হেটেই যাচ্ছে,কোন দিকে যাচ্ছে সেও জানে না আমিও জানিনা। প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত আমি। একবার এই পথ যাবার সময়ে আমি একটা তরমুজ চুরি করে খেয়েছিলাম। এ গল্পটাও তোমরা অনেকেই জানো- তারপরে ও বলি;
[চমকা আমার নজরে এল বিশাল এক তরমুজের বাগান। তরমুজ আমার ভীষণ প্রিয়! ক্ষুধার্ত অবস্থায় হারাম হালালের বিষয় নিয়ে আমি ভাবতে পারছিলাম না। আশে পাশে কেউ না থাকায় আমি পাগড়িটা গাধার মাথায় দিয়ে বেশ বড়সড় একটা তরমুজ আমি চুরি করে ফেললাম! পথে একটা গাছের ছায়ায় থেমে তরমুজটা দুই ভাগ করলাম।
অর্ধেকটা খেয়েই পেট ভরে গেল- বাকি অর্ধেকটা সেই গাছের নীচে রেখে দিলাম। অনেকেই ভাববে; বেশ ধনবান একজন বনিক এই রাস্তা দিয়ে গেছে। সে খেতে পারেনি বলে অর্ধেক তরমুজ ফেলে রেখে গেছে।
কাজটা করে ভীষণ মজা পেলাম! মনে মনে কিট কিট করে আমি হাসছি। কিন্তু এই গরমে কয়েক ফার্লং যাবার পরেই আমার অনুশুচোনা হল- খিধেও লাগল খানিকটা। ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমি ফের সেখানে ফিরে গেলাম। বাকি অর্ধেকটা পেট-পুরে খেয়ে খোসাগুলো ফেলে দিয়ে ফের রওনা হলাম।
আমি আবার দুলে দুলে মনে মনে হাসছি। লোকে ভাববে , সেই বণিকটার একটা চাকর ও ছিল। যে বাকি অর্ধেক তরমুজ খেয়েছে।
কিন্তু আমার সেই হাসি বেশীক্ষণ স্থায়ী হোলনা। রাস্তায় যেতে যেতে দুশ্চিন্তায় ঘিরে ধরল আমাকে। সামনে যদি আর খাবার না জোটে?
ভাবতে ভাবতে আবার আমি ফিরে আসলাম সেখানটায়। তরমুজের খোসাগুলো সযতনে আমার পোটলায় ভরে নিলাম। খুব বেশী ক্ষুধা লাগলে এগুলোতেই চলবে।
এবার আমার আরো হাসি পেল। গাধার পিঠে বসে দুলে দুলে ফুলে ফুলে হাসছিলাম! লোকেরা এখন ভাববে, সেই ধনী বণিকটার একটা উট ও ছিল যে, তরমুজের খোসাগুলো খেয়ে ফেলেছে!]
--------------------------------------
দু’দিন দু-রাত ক্লান্তি-হীনভাবে পথ চলার পরে চারিদিকে পাহাড় ঘেরা অপরিচিত মফস্বলে গিয়ে পৌছুলাম! অনেক খুঁজে একটি ছোট্ট শহরের বাইরে একটি পাহাড়ের উপরে একটি সুবিধাজনক জায়গা পেয়েছি। দৃশ্যটি ভাল ছিল এবং পাহাড়টি কাঁটাঝোপ ঘন জংগলে ঘেরা ছিল যেমন আমার শান্তি-প্রেমী আত্মা চায়।
আমি কিছুদিন এখানে একা থাকতে চাই- এছাড়া মনের মধ্যে নতুন একটা প্রজেক্ট ঘুরপাক খাচ্ছে। সেটা ভেবে আমি ফের দুলে দুলে ফুলে ফুলে হাসছি।
কাঁটাঝোপ থাকায় খুব খুশি হয়েছিলাম, এ কারণে এখানে কেউ সহজে চাষাবাদ করতে আসবে না। প্রথম প্রথম কেউ আমাকে বিরক্ত করেনি। আমি জংগলের ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ করছিলাম।
-----------------------------------------
হু বছর আগে তেরশত শতাব্দীর মাঝামাঝি! তুর্কির সিভেরসিরে পণ্ডিত ও পীর হিসেবে আমার বেশ সুনাম ছিল। আমার প্রচুর মুরিদান আর ভক্ত জুটে গেল। আমি প্রায়শই শো-ডাউন করার জন্য সে বিশাল দল অনুগামীদের নিয়ে বাজারে হাঁটতাম। আমি যা-ই করতাম না কেন, আমার অনুসারীরা তৎক্ষণাৎ তার অনুকরণ করেন!
আমিও আমার কেরামতি দেখানোর জন্য; মাঝে মধ্যেই বাতাস ধরে শুঁকতাম। হাতে শুকনো মাটি নিয়ে বাতাসে উড়িয়ে দিয়ে হু হু করে চেঁচিয়ে উঠতাম। আমি অশরীরী আত্মার সাথে কথা কইতাম।
আমার অনুসারীরাও থামত এবং তারাও ঠিক একই কাজ করত।
যারা আমার ঘনিষ্ঠ ও বন্ধু স্থানীয় ছিল তারা অনেক সময় চুপিসারে আমাকে ডেকে নিয়ে প্রশ্ন করত; আপনি কেন এমন করছেন- আর আপনার লোকেরাই কেন আপনাকে এমন অনুকরণ করছে?
‘আমি একজন সুফি শেখ হয়েছি’-তাদেরকে বলতাম।‘এগুলি আমার মুরিদ (আধ্যাত্মিক সন্ধানকারী);আমি তাদের আলোর পথে যেতে সাহায্য করছি’!
-তারা আলোর পথে পৌঁছলে কীভাবে জানবেন?
-সহজ ব্যাপার! প্রতিদিন সকালে আমি তাদের গণনা করি। যাঁরা চলে গেছেন, তাঁরা আলোর পথে গেছেন!
একদিন সবাই সেই আলোর পথে চলে গেল- শুধু পড়ে রইলাম আমি।
-------------------------------------------------
শেষ পর্যন্ত, আমার প্রিয় বন্ধুরা, দারুণ এক পরিবর্তন। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে, শহরবাসীরা আমার ব্যাপারে কৌতূহলী হয়ে ওঠে। তারা অবাক হয়ে ভাবছিল যে আমি সেই পাহাড়ের উপর একাকী কি করছিলাম? বহুদিন মাংসের স্বাদ পাইনা – তাই একবার ভেবেছিলাম সুবিধা-মত একটা কুক্কুটি সংহার করিয়া জঙ্গলের কাঠ দিয়ে উত্তমরূপে রাঁধিয়া ভক্ষণ করিব। কুক্কুটি-তো মিলিল কিন্তু অগ্নি পাইব কোথায়। সেই অগ্নি খুঁজিতে গিয়ে চরম হুজ্জোতি হোল। অনেকের জেরার মুখে পড়িলাম।
আমি খাঁটি মোল্লা নাসরেদ্দিন। আমার চতুরতার সাথে টেক্কা দিবে এমন আদম আছে কোথায়? শেষমেশ সবাই আমার কদমবুসি করিল। আমার মনোবাসনা কিছুটা সিদ্ধ হইল।
যাইহোক,এর পর থেকে লোকেরা কাঁটাঝোপ দিয়ে পাহাড়ের উপরে আসতে শুরু করেছিল, তাদের আসা-যাওয়ার জন্য কাঁটাঝোপ কেটে একটি পথ তৈরি করে নিল। এটি আমার পক্ষে শহরে নামা সহজতর করেছিল এবং সুবিধাজনক ছিল। তাদের পক্ষে আমার কাছে আসা সহজতর হয়েছিল।
সেই নগরের বাসিন্দারা আমার নীরবতা ও নির্জনতা জ্ঞানের চিহ্ন হিসাবে দেখেছিল। তারা ভাবল আমার মধ্যে কিছু অলৌকিকতা নিশ্চিতভাবে বিদ্যমান।
যখনই আমরা কোনও সুন্দর কিছুর প্রশংসা করি,আমরা সেটা অধিকার করতে চাই।এখানে ছোট একটা ঝর্ণা ছিল তার দুই পাশে বন্য ব্লু-বেরির বেশ ঘন ঝোপ ছিল। গাছে ফল আসলে অপার্থিব একটা দৃশ্যের সূচনা হোত। এই সৌন্দর্য কেউ কেউ নিজেদের অধিকারে নিতে চাইল। অর্থবান মানুষেরা সেই ঝোপঝাড় কেটে সুদৃশ্য বাড়ি নির্মাণ করল। তাদের বাড়ি সুদৃশ্য হইলেও আশে পাশের সব সৌন্দর্য হারিয়ে গেল! দু'দিনেই তাদের মোহ কেটে গেল অবশেষে সেখানে পড়ে রইলাম আমি আর কিছু পরিত্যক্ত বাড়ি।
আমার চারিদিকের সৌন্দর্য,পাখিদের কঞ্জন সবই হারাইলাম।
তবে সৌন্দর্য ও নীরবতা হারাইলেও আমার গোপন কামনা সিদ্ধ হইল। আমার মাথার উপরে একটা ছাদ পাইলাম। নিকটতম শহর বাসি হইতে দুরবর্তীতম লোকেরা নিয়মিত আমার আশ্রম দর্শনে আসিতে লাগিল। আসবার সময়ে তারা তাদের ফল মুল মুর্গি সহ উত্তম খাদ্য সামগ্রী আমাকে অতি শ্রদ্ধাভরে ভেট বা উপহার দেয়। অতএব খাবার নিয়ে আমার সমুদয় দুঃচিন্তা দূর হইল।
সমস্যা হইল তারা সময়ে অসময়ে তাদের বিভিন্ন পারিবারিক, অর্থনৈতিক, রোগ শোক স্বাস্থ্য মায় যে কোন এক্ট অব গড নিয়ে আমার কাছে আসে। সমস্যা সমাধান চাহিয়া আমার মুখপানে চেয়ে থাকে?
আমি সবসময় তাদের বলি ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করিবেন- ঈশ্বর যা করেন মঙ্গলের জন্য করেন। ঈশ্বরের আদেশ ছাড়া একটা গাছের পাতা নড়ে না।
আমার কথা শুনে বেশীরভাগ সময়ে তারা আনন্দ-চিত্তে ফিরিয়া যাইত।
একবার একসঙ্গে বেশ কিছু গ্রামবাসী শোরগোল করিতে করিতে আমার কাছে উপস্থিত হইল। তাদের চেহারায় স্পষ্ট দুশ্চিন্তার ছাপ দেখা আমি খানিকটা ভড়কে গেলাম!
গত রাত্রে নাকি তাদের সমুদয় মুরগি মারা গেছে! এখন তাদের ডিম ও মাংসের যোগান কোত্থেকে আসিবে? আর মোরগ না ডাকলে সকালে ঘুম ভাঙবে কিভাবে? আমরা বাঁচব কিভাবে?
পুরানো এই উক্তিটি জান যে, ঈশ্বরের ইচ্ছা ব্যতীত একটি পাতাও নড়ছে না।আমি তাদের দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। অবশেষে কোন কুল কিনারা না পেয়ে তাদের বললাম, সব ঈশ্বরের ইচ্ছা- তিনি যা করেন ভালোর জন্য করেন।
তারা আমার কথা শুনে সন্তুষ্ট হোল না। তারা বলাবলি করতে লাগল, সবগুলো মুরগী মরে গিয়ে আমাদের কি লাভ হবে এইটাই বুঝতে পারছি না!!
তারা অত্যন্ত অসন্তুষ্ট চিত্তে তাদের গ্রামে ফিরে গেল। তবে আমার শান্তি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। তারা আবার একটি নতুন বিপর্যয় নিয়ে এসেছিল।
'আমাদের সমস্ত আগুন নিভে গেছে!' তারা কাঁদতে থাকল,'আমরা কি করবো?' প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে তাদের সব কয়লা ও কাঠ ভিজে গেছে ও তাদের সংরক্ষিত আগুন নিভে গেছে। তারা রান্না, ঘরের আল জালানো, রাতে হিংস্র পশুদের থেকে রক্ষা করবে কিভাবে? এই বৃষ্টি কাদায় বহুদূরের অন্য গ্রাম থেকে আগুন নিয়ে আসাও সম্ভব নয়।
আমি তাদের বললাম, ঈশ্বর যা করেন ভালোর জন্য করেন, সব ঈশ্বরের ইচ্ছা।
তারা প্রচণ্ড বিরক্ত হয়ে বলল, আমরা ভেবেছিলাম যে, আপনি এইটাই বলবেন। তারা চরম বিচলিত হয়ে খুব বিরক্ত হয়ে গ্রামের পথে চলে যায়। তবে আমি যা ভেবেছিলাম তার চেয়েও কম সময়ে তারা আবার ফিরে এসেছিল।
'আমাদের সমস্ত কুকুর মারা গেছে!' তারা সবাই মিলে হাউমাউ করে কাঁদল. "আমাদের চেয়ে আরও দুর্ভাগা আর কোন শহরের লোক নেই? প্রথমে আমাদের মুর্গী,তারপরে আমাদের আগুন, এখন আমাদের কুকুর! কে বন্য পশুদের দূরে রাখবে,কে আমাদের চোরদের থেকে সতর্ক করবে?"
'সত্যিই কি এত চোর আছে?' আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তারা স্বীকার করেছে যে তাদের শহরে কখনও চুরি হয়নি।
‘আমার বলার একটি মাত্র কথা আছে এবং আমি জানি আপনারা সেই কথাটা আর শুনতে চান না, সবই ঈশ্বরের ইচ্ছা। তিনি যা করেন ভালোর জন্য করে’।
তারা বলেছিল,আমরা আপনাকে কখনও পরামর্শ চাইব না,এবং খুব বিরক্ত ও হতাশ হয়ে তারা তাদের গ্রামে ফিরে গেল।
কিন্তু সেই রাতে,মধ্যরাতের দিকে,যখন চারিদিকের সবকিছু নিশ্চুপ-শান্ত ছিল; তখন আমি প্রচুর সংখ্যক সশস্ত্র লোকের কাছে আসার শব্দ শুনতে পেলাম। আরও ভাল দেখার জন্য আমি পাশের পাহাড়ের চূড়ায় উঠে পড়লাম। বেশ কিছু ঘোড়ায় চড়ে বর্শা, ধনুক, তীর আর তলোয়ার নিয়ে একদল লোক একখানে জটলা করে শলা পরামর্শ করছে। এত রাতে অস্ত্রশস্ত্র সহ গোপন বৈঠক করার কারণ বুঝতে আমার দেরি হোল না। তাদের যে সর্দার সে পাহাড়ের নিচে অন্ধকার নিস্তব্ধ গ্রামটার দিকে বেশ কিছুক্ষণ নিরীক্ষণ করে বললেন,
-কি ব্যাপার কোথাও কোন আলো নেই কেন? একটা কুকুরও-তো চিৎকার করছে না!!’
তারা আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল।পুব আকাশে প্রত্যুষের আলো দেখা পর্যন্ত। সেই সময়ে গ্রামের সব মোরগ একে একে ডেকে ওঠে। কিন্তু সেদিন কোন মোরগের কুক্কুর-কু ডাক শোনা গেল না।
তারা ভাবল যে, এটা একটা মৃত গ্রাম। অগত্যা ঘোড়া ছুটিয়ে তারা অন্য কোন গ্রাম লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে ছুটে গেল।
‘আপনি কি আমাদের সমস্যার সমাধানের কথা ভেবে দেখেছেন?না আপনি বার বার একই কথা বলবেন’ পরদিন ফের এসে আমায় জিজ্ঞেস করেছিল।
আমি গতরাতের কথা বিস্তারিত তাদের বয়ান করার পরে- তারা হাসাহাসি করল। তারা বিশ্বাস করেনি যে, ঈশ্বর যা করেন না কেন ভালোর জন্য করেন। তোমার সাথে যেটা ঘটেছে তার থেকে খারাপ কিছুও ঘটতে পারত।
কিন্তু এই মূর্খদের বোঝাবে কে? আজ অবধি,তারা আমাকে বিশ্বাস করে না।

*ফার্লং অর্থ এক মাইলের আটের একভাগ,৬৬০ ফিট বা ২২০ গজ

প্রথম পর্বের জন্য-পৃথিবীর সবচেয়ে মজাদার স্ট্রবেরিঃ Click This Link
আগের পর্বের জন্য-কোথায় ঈশ্বর নেইঃ Click This Link

ফুটনোটঃ সকালে ব্লগে পোষ্টটা দিয়ে বিশেষ একটা কারনে দ্রুত সরিয়ে নিয়েছিলাম। ব্লগার ইসিয়াক 'লাইক' দিয়েছিলেন। সম্ভবত কেউ একজন মন্তব্য করেছিলেন- আমি আর দেখতে পাইনি। যিনি মন্তব্য করেছেন ( পরে জেনেছি সুপ্রিয় ব্লগার আহমেদ জী এস ভাই সেই মন্তব্যটা করেছেন) তাঁর কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী আচমকা পোষ্টটি ড্রাফটে নেবার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৫৪
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×