somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই বিমলের কীর্তি!!!

০৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলা সাহিত্যে যাদের একটু আধটু পদচারনা আছে তারা নিশ্চিতভাবে সাহিত্যক বিমল করের নাম শুনে থাকবেন।
কিন্তু আপনি কি বিমল মুখার্জীকে চিনেন? উঁনি নাহয় অনেক পুরনো মানুষ তাঁকে সবাই চিনতে না ও পারেন তবে আপনি বিমল দে-কে চিনেন? না চিনলেতো কথাই নেই চিনলেও বেশ -এ পাঠ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন না আগে এই বিশ্বখ্যাত বাঙ্গালীদ্বয়ের অন্য এক রকমের গল্প শুনি।
( লেখাটা যোগাড় করতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে আমাকে। যদি সবার ভাল লাগেতো আমার কষ্ট সার্থক হবে)
বিমল দে মোট নয়খানা ভ্রমন কাহিনী লিখেছেন! বাঙ্গালীর ভ্রমন মানে ঘোরার থেকে খাবারের গল্প বেশী, প্রকৃতির থেকে নারী প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা বেশী! ভেতো বাঙ্গালী নাকি কুঁড়ের হদ্দ!!
তবে এই বিমল দে অন্য ধাতুর বাঙ্গালী! সেই ১৯৬৭ সালে সাধারণ একটি দ্বিচক্রযানে চড়ে তিনি ২ লাখ ৩০ হাজার কিলোমিটারেরও অধিক পথ পরিব্রাজন করে সারা বিশ্ব চষে বেড়িয়েছেন!!!
আর সেই সঙ্গে যে একটিমাত্র বই লিখলেও তিনি অমর হয়ে যেতেন, যে বইটির কয়েকটি কাহিনী পড়লেই আপনি বুঝবেন যে এমন বই বাংলাতে তো দূরে থাক পৃথিবীর কোন ভাষাতে লেখা হয়নি কারণ এমন অভিজ্ঞতা অর্জন সাধারণত শত কোটিতেও একজনের হয় না। গ্রীনল্যান্ডের কোনমতে জাহাজ থেকে নেমে অথবা হেলিকপ্টারে কোন এস্কিমো গ্রামে গেলেই মানুষ বিখ্যাত হয়ে যায় সেখানে বিমল দে এস্কিমোদের সঙ্গে বরফের ইগলু এবং তাবুতে টানা ছয়টি ( আসলে তিন মাস হবে) মাস ছিলেন, অংশ নিয়েছেন সকল ধরনের লোকাচার এবং শিকারে।


-সস্ত্রীক বিমল দে। বিমল দের জন্ম: ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৪০ সাল এখনো তিনি সুস্থ দেহে বেঁচে বর্তে আছেন।

এই বর্তমানকালের ইউরোপ গেলে যে রোমা বা জিপসিদের কাছ থেকে সবাই দূরে থাকতে বলে তিনি তাদের সাথেই আস্তানা গেড়ে,তাদেরকে জাদু ভেলকি দেখিয়ে ব্যবসা শিখিয়ে, তাদের কাছে ব্যবসা শিখে পাশাপাশি ছিলেন মাসের পর মাস। প্রশান্ত মহাসাগরের সেই রহস্যময় ইষ্টার দ্বীপ নিয়ে তাঁর যে অভিজ্ঞতা, স্থানীয়দের নিয়ে এমন বাস্তব অভিজ্ঞতা আর কেউ লিখেছেন বলে এখন পর্যন্ত পড়ি‌ নাই। সেই সঙ্গে আছে দূরের তাহিতি দ্বীপে বাঙালি যুবকের দীপ্ত পদচারণার অসামান্য গল্প।
উহু এখানে গল্প শেষ নয়; গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী ‘গথসহাব’-এর মেয়র মহোদয় গ্রিনল্যান্ডের মাটিতে পা রাখা প্রথম ভারতীয় হিসেবে( তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে)তার জুতো-জোড়া সেখানকার জাতীয় জাদুঘরে রেখে দিয়েছিলেন। আপনি যদি কখনো গথহাবস এর যান তবে সেই যাদুঘরে রক্ষিত বিশ্বখ্যাত এক বাঙ্গালীর জুতোজোড়া দেখে গর্বের বুকখানা দু ইঞ্চি ফুলিয়ে আনতে পারেন!!


মাত্র ৭ ডলার সম্বল করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নামার দেড় মাস পরে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকার করেছিলেন তিনি। ১৯৬৭ সালে ১৮ টাকা সম্বল করে কলকাতা থেকে শুরু করেছিলেন সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ এবং দীর্ঘ পাঁচ বছরে সমস্ত পৃথিবী ঘুরে ফিরেছিলেন ১৯৭২ সালে।
—১৯৫৬ সালে বিদেশিদের জন্য তিব্বতের দরজা তখন প্রায় বন্ধ। রাজনৈতিক কারণে ভারতের সঙ্গে তিব্বতের সম্পর্ক বেশ খারাপ ছিল, সেই সময় কোনো রকম প্রস্তুতি না নিয়েই একদল নেপালি তীর্থযাত্রীর সাথে বিমল দে চলে গিয়েছিলেন সুদূর লাসায়। সেখান থেকে সেই দল ছেড়ে সম্পূর্ণ একা চলে যান মানস সরোবর ও কৈলাসে। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। পরবর্তী কালে তাঁর সেই কৈলাস যাত্রার কাহিনী প্রকাশিত হয়। 'মহাতীর্থের শেষ যাত্রী' নামক ভ্রমণ গ্রন্থে। বইটি ভ্রমণ সাহিত্যে একটি অমূল্য দান। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা 'মহাতীর্থের শেষ যাত্রী'র সমকক্ষ কোন তিব্বত বিষয়ক বই আজ পর্যন্ত হাতে আসেনি, কোন শ্বেতাঙ্গ সাহেব বিমল দে'র মতো খাঁটি পথের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন নি তিব্বতে।
দুঃখজনক হলেও সত্য এই যে বিমল দে শুধু যদি একজন সাদা চামড়ার মানুষ হতেন তাহলে তাঁর এই অসামান্য অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে লেখা চমৎকার বইগুলো স্থান পেত পৃথিবীর প্রতিটা বাড়িতে।
তার বইগুলো কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে; তার মধ্য অন্যতম- ইংরেজী, ফরাসী, হিন্দি ভাষা।

ছোটবেলা থেকেই বাঁধনমুক্ত। বহুবার বাড়ি থেকে পালিয়ে ছুটে গেছেন সুদূর হিমালয়ের ডাকে, ঘুরে বেড়িয়েছেন ভারতের জানা অজানা ভীর্থে তীর্থে। বহু সাধু ও যোগীদের সংস্পর্শে তার জীবন হয়েছে ধন্য।
- ১৯৬৭ সালে তিনি কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু করেন সাইকেলে বিশ্বভ্রমণের উদ্দেশ্যে। পকেটে মাত্র ১৮টি টাকা, মনে ছিল অদম্য সাহস। দীর্ঘ পাঁচ বছরে তিনি পৃথিবী পরিক্রমা করে দেশে ফিরে এলেন ১৯৭২ সালে। একটি সাংবাদিক সাক্ষাতে তিনি বলেন- 'বিশ্বই আমার বিদ্যালয়, জগতের মানুষ মাত্রেই আমার শিক্ষক, আমি ভারতীয়, ভারতের দর্শন রয়েছে ভারত দর্শনে। এই বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে সুখ দুঃখ আনন্দ বৈরাগ্য চারদিকে ছড়িয়ে আছে, কুড়িয়ে নাও যার যেমন রুচি ও ক্ষমতা অনুসারে। ভূ-পর্যটক বিমল দে'র ডায়েরি থেকে দেশ বিদেশের অভিজ্ঞতার কিছু অংশ 'সুদূরের পিয়াসী' নামক ভ্রমণকাহিনীতে স্থান পেয়েছে।
——'বিমল দে একজন সত্যিকারের পর্যটক, মানব দরদি এবং নিজগুণে দার্শনিক তো বটেই। তিনি বিশ্ব নাগরিক, মানবধর্মই তার ধর্ম। ১৯৭২ সাল থেকে বেশির ভাগ সময়ই ইউরোপে থাকেন এবং পর্যটন তাঁর নেশা ও পেশা। বিচিত্র অভিজ্ঞতায় তিনি পরিপূর্ণ। পৃথিবীর চারদিক থেকে তাঁর ডাক আসে উপদেশ ও পরামর্শ পাবার জন্য। | বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে জড়িত থেকে তিনি প্রায়ই পৃথিবীর দেশে দেশে ঘুরে বেড়ান। তিনি বহুগুণীর একাধারে পর্যটক, লেখক, দার্শনিক ও কর্মী। তিনি বার বার বলেন, 'এই পৃথিবীতে আমার জন্ম, এই পৃথিবীই আমার দেশ। দেশ দেখার ইচ্ছাশক্তি যখন প্রবল হয়ে ওঠে তখন টাকা পয়সা ও অন্যান্য জাগতিক বাধা কিছুই তাকে বাধা দিতে পারে না।


-প্রথম এভারেষ্ট জয়ী এডমন্ড হিলারির সাথে বিমল দে।

বিমল দে, চাকার উপর রহস্যবাদী। গ্লোব-প্রদক্ষিণকারী সাইকেল আরোহী বিমল ২০ ডিসেম্বর ১৯৬৭ সালে কলকাতায় তার যাত্রা শুরু করেন এবং ২০ ডিসেম্বর ১৯৭২ তারিখে শেষ হন।
বিমল দে ব্যক্তিগত শান্তি এবং আত্মবিশ্বাসের উপর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি ভারতীয় সংস্কৃতির একজন প্রকৃত দূত।
বিমল দের বিখ্যাত উক্তি,
"আমার কখনও খারাপ মানুষের সাথে সাক্ষাত হয়নি। সত্যিকারের শিক্ষা মানে মানুষকে বোঝা কিংবা মানুষকে জানা। একজন মানুষ কেন খারাপ কিছু করে তার পেছনে কোন কারণ সবসময়ই থাকে। সঠিক কাজটি হল সেই কারণ খুঁজে বের করা। তাহলে আপনি তার নিন্দা না করে তাঁকে বুঝতে পারবেন।"
বিমল- দে-র জীবনদর্শন তাকে দিয়েছে আজকের সমাজে বিরল প্রশান্তি।

আজকের গল্পটা হবে তার ভ্রমণ গল্প –‘এস্কিমোদের দেশে’র দুর্দান্ত কিছু রোমাঞ্চকর ঘটনা ও তাদের জীবনাচরণ নিয়ে এমন কিছু আলোচনা যার আপনি নেট দুনিয়ায় মাথা কুঁটেও পাবেন না গ্যারান্টি!

একটুখানি অপেক্ষা করুন!লেখার শুরুতে আরেকজন বাঙ্গালী লেখকের কথা বলেছিলাম না যার নাম এই ‘বিমল দে;র সাথে মিলে যায়? তিনি হলেন বিমল মুখার্জী- মনে পড়েছে? ‘এস্কিমোদের দেশে’র গল্প শোনার আগে আরেক ভেঁতো ও ভিতু বাঙ্গালীর কৃর্তিগাঁথা একটু শুনে আসি;

বিমল মুখার্জি ও তার ‘দুচাকায় দুনিয়া’

এক জীবনে একজন মানুষের কি চাওয়া থাকতে পারে? যদি সে হয় একটু অভিযান প্রিয়, যদি সে হয় পুরো পৃথিবী ঘুরে দেখার ইচ্ছাসহ কোন মানুষ? কি চাইতে পারে সে?
বিমল মুখার্জি নামক এক বাঙালি নিজের মনের ভিতরের দুনিয়া ঘুরে দেখার ইচ্ছাটা বাস্তবে রূপান্তর করতে পেরেছিলেন। সাথে পেয়েছিলেন একজন মানুষ এক জীবনে যা চাইতে পারে তার সব। তিনি ডেনমার্কের এক ধনাঢ্য পরিবারের সর্বোচ্চ স্নেহ ভালবাসা পেয়েছিলেন। তারা তাকে তাদের সম্পত্তির অংশীদার করে রেখে দিতে চেয়েছিলেন। জন্মদিনে বাড়ি, গাড়ি এমন কি বিমান পর্যন্ত উপহার দিয়েছিলেন।

বিমল মুখার্জি ১৯২৬ সনে কলকাতা থেকে সাথে আরও তিন বন্ধু (মাসতুতো খুড়তুতো ভাই-দের) কে নিয়ে পৃথিবী ভ্রমণে বের হয়েছিলেন। বাহন হচ্ছে তাদের সাইকেল। ভারতের বিভিন্ন শহরে ঘুরে ঘুরে করাচী থেকে জাহাজের কাজ নিয়ে সাগর পার হলেন। শুরু হল তাদের অবিশ্বাস্য অভিযান।
আরবের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তখনো কোন ডেরায় থিতু হয়নি-যাযাবর বর্বর রয়ে গিয়েছিল তখনো, সেই যাযাবরদের ডেরায় দিনের পর দন শঙ্কা ভয় আতঙ্ক বিচিত্র অনুভূতি আর অদ্ভুত সব খাদ্য ও জীবনযাত্রার সাথে মানিয়ে নিয়ে দিনের পর দিন শুষ্ক মরুভূমি দিয়ে সাইকেলে করে ছুটে চলা যেন রূপকথাকেও হার মানায়। মরুঝড়, পানিশূন্যতা, ধুলোবালিতে গায়ে পোকা হয়ে গিয়েছিল তাদের। সেই পোকা নিয়েই চলেছেন তারা। মরুভুমির বুকে ফরাসীয় সৈন্যদের আতিথিয়েতার আতিশয্যে শরীরের রোম দাঁড়িয়ে যায়। প্রথম-বিশ্বযুদ্ধে টালমাটাল হয়ে গেছে ইউরোপ- সবাই ক্ষত সারাতে ব্যস্ত আর তার মাঝেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হাতছানি। তুর্কির রাজতন্ত্র আর স্বর্ণযুগ শেষ হয়ে গেছে- তারা আরব বিশ্ব হাতছাড়া করে নিজেদের টিকে থাকার অস্তিত্বের সংগ্রামে ব্যস্ত! ফরাসী এজেন্ট মনে করে বিমলদের সাথে ভয়ানক বিমাতৃসুলভ আচরণ।
গ্রীস বুলগেরিয়া অস্ট্রিয়া হাঙ্গেরি আর চেক বিধ্বস্ত ও অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু দেশগুলোর কাছে ভারত যেন ঈর্ষা করার মত বিশাল সম্পদশালী তখন! অর্থনৈতিকভাবে তারা এতটাই ভেঙ্গে পড়েছিল যে, দু-চারজন অতিথিকে এক বেলা গ্রাসাচ্ছাদন করা অনেক গৃহস্থের জন্য কষ্টকর ছিল!! গ্রীস হয়ে বুলগেরিয়া, সেখান থেকে রুমানিয়া অস্ট্রিয়া হয়ে জার্মানি। এই পুরো পথ তারা এসেছেন সাইকেল চালিয়ে, যেখানে চালানো সম্ভব না সেখানে সাইকেল ঠেলে। কখন মরুভূমির উত্তাপে সাইকেলের হ্যান্ডল ধরা যাচ্ছিল না আবার কখন বরফের মাঝে তীব্র ঠাণ্ডায় জমে যেতে হচ্ছিল তাদের। যাদের বিন্দুমাত্র অভিজ্ঞতা ছিল না বরফের তারা যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন বরফের অনুপাতের শীতের পোশাক না পরেই।
তার ভ্রমনকথা কখনোবা রূপকথাকেও হার মানায়! পড়তে গিয়ে বার বার মনে হবে~ অসম্ভব এমনটা হতেই পারে না!
কি দুর্দান্ত সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তারা- বিশ্বব্যাপী এত সম্মান আর আলোড়ন আর কোন বাঙ্গালীরা পেয়েছেন কিনা কিংবা হয়েছে কি-না তা আমার জানা নেই। কি এশিয়া, আরবভুমি,ইউরোপ,আমেরিকা লাতিন আমেরিকা কিংবা আফ্রিকা- সর্বত্র তাদের নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়েছে। সাধারণ মানুষ দূর থেকে বা কাছে এসে সুদূর ভারতীয় কয়েকজন অদ্ভুত পাগলাটে মানুষকে বিস্ময়ভরে দেখেছে, সাধ্যমত সমাদর করেছে কিংবা অতি আগ্রহে তাদের দুঃসাহসিক ভ্রমণ গল্প শুনেছে।
যেখানেই তারা গিয়েছে সে শহর বা দেশের সব গণ্যমান্য ব্যক্তিরা দেখা করতে এসেছে কিংবা আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সারা বিশ্বের সব নামীদামী পত্রিকায় তাদের নিয়ে আর্টিকেল ছেপেছে- তাদের ভ্রমণ গল্পের বয়ান করেছে।শত শত স্কুল কলেজ আর ভার্সিটি তাদের স্পিচ দেবার জন্য দর্শনীর বিনিময়ে নিমন্ত্রণ করেছে। ইউরোপে একটাও রেডিও চ্যানেল সম্ভবত ছিল না তখন যারা তাদের নিয়ে সংবাদ ও সাক্ষাৎকার প্রচার করেনি। সারাবিশ্বের মানুষদের এত সমাদর এত ভালবাসার গল্প শুনে বাঙ্গালী হিসেবে আপনি দারুণভাবে গর্ববোধ করতে পারেন।
জার্মানির মিউনিখে পৌছাতেই চারজনের মধ্যে বিমল মুখার্জির হয়ে গেল এক ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা। যদিও তখন তিনি জানতেন না উনার আসলে কোন মাপের অভিজ্ঞতা আসলে হল। মিউনিখের মানুষজন তার বেশভূষা আর তাদের কথা শুনে ঠেলেঠুলে এক বিয়ার হাউজের সামনে বিয়ার গার্ডেনের মধ্যে নিয়ে গেল। তিনি গিয়ে দেখলেন এক অস্ট্রিয়া-বাসি বক্তব্য দিচ্ছেন। বক্তব্য বেশ কড়া লাগে তার কাছে। যিনি বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি বলছেন, ভেরসাই সন্ধিপত্র ছিঁড়ে ফেলে দিতে হবে, মিত্রপক্ষ তাদের কে শেষ করে ফেলেছে, জার্মানদের এখনই এসবের প্রতিবাদ করতে হবে….
বিমল মুখার্জি শুনলেন যিনি বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি একজন ইন্টেরিয়র ডেকারেটর, রঙের মিস্ত্রি, তার নাম হিটলার। বিমল মুখার্জি বলছেন তাকে সবাই মিলে হিটলারের সামনে নিয়ে গেল। হিটলার আমি ভারতবাসী জেনে প্রথম প্রশ্ন করল আমাদের দেশে কত ইংরেজ আছে? আমি বললাম, কত শত জানি না তবু এক লক্ষ নাগাদ হবে। তখনই দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, এই মুষ্টিমেয় ইংরেজকে কেন আমরা অর্থাৎ ৩৫০ মিলিয়ন ভারতবাসী তাদেরকে দাবড়ে নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে আসি না?
তৃতীয় প্রশ্ন হলো; আমাদের নেতা কে? গান্ধীজীর নাম শুনে বলল সে একজন ভিতু লোক তাই নন ভায়োলেন্স পন্থায় স্বাধীনতা আনতে চায়। আমি বোঝাতে চেষ্টা করলাম করলাম যে প্যাসিভ রেজিস্ট্যান্স অভ্যাস করতে হলে বরং অতিমাত্রায় সাহসের প্রয়োজন। হিটলার তখন খেদের সুরে বলল যে ভারতবর্ষ যদি জার্মানির হাতে থাকত তাহলে জার্মানরা হিমালয়ে আলু চাষ করত।
প্রচণ্ড ঘৃণা মনের মধ্যে নিয়ে যে এই লোকটা বসে আছে তা তার আচরণেই বুঝা যাচ্ছিল। ক্ষুদ্র একটা দেশ ইংল্যান্ড পুরো পৃথিবী শাসন করছে তা হিটলার কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না।

নিজের পকেটের অবস্থা খুব খারাপ থাকায় বেশ কিছুদিন জার্মানিতে কাটিয়ে দিতে বাধ্য হলেন। প্রেম ঘটিত কারণ অর্থাভাব আর আগ্রহে ভাটা সাথী বাকি তিনজন পৃথিবী ভ্রমণের ইচ্ছা মুলতবী দিল। ভারতের যে কমিটির ভরসা করে তারা দুনিয়া ঘুরতে বেড়িয়েছেন সেই কমিটি থেকে তারা রওনা দেওয়ার পর আর কোন সাহায্য পাননি। তাই অন্যদের ইচ্ছা আর এভাবে ঘোরা সম্ভব না। একজন জার্মানিতেই থেকে গেলেন।বাকি দুইজনের ইচ্ছা হল ইংল্যান্ডে গিয়েও যদি কোন ব্যবস্থা না হয় তাহলে তারা আর ভ্রমণ চালিয়ে যাবেন না। হল্যান্ড হয়ে ইংল্যান্ডে পৌঁছে গেলেন তারা। আর এরপর থেকেই শুরু হল বিমল মুখার্জির একক ভ্রমণ। যিনি মোটামুটি আগে থেকেই জানতেন যে ভারতের ওই কমিটি থেকে সাহায্য আসার সম্ভাবনা কম। আর তাই তিনি যখন যা পেরেছেন সেই কাজই করে নিজেরর লক্ষ্য স্থির রেখেছেন। একজন মানুষের মনোবল কত শক্ত হলে একা একা একটা সাইকেল নিয়ে বের হয়ে যায় বিশ্ব ঘুরতে?

ইংল্যান্ড ছাড়ার আগে বিমল মুখার্জির আরেক অনন্য অভিজ্ঞতা হল। উনি যে সাইকেল চালিয়ে এত দূর এসেছেন তা ছিল বার্মিংহাম স্মল আর্মস কোম্পানির সাইকেল। সেই সাইকেল কোম্পানি থেকে আমন্ত্রণ পেলেন। কারখানায় শ্রমিকদের সাথে খাবার খেলেন মালিক পক্ষকে সাথে নিয়ে। এরমধ্যে তারা সাইকেলের সিরিয়াল নাম্বার দেখে খুঁজে পেয়ে গেলেন কোন শ্রমিক সাইকেলটা কবে অ্যাসম্বল করেছে। তাকে সামনে আনা হল। শ্রমিকরা চিয়ার্স করল বিমল মুখার্জির নামে, পিটার নামের ওই শ্রমিকের নামে, বিএসএ সাইকেল কোম্পানির নামে। এরপরে তিনি বিশ্বখ্যাত সাইকেল সিট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ব্রুক্স ,ক্যাডবেরি আর ডানলপের মালিক-পক্ষের নিমন্ত্রণও পেয়ে তাদের ফ্যাক্টরির কর্মীদের কাছে ভ্রমনগাঁথা বয়ান করেছেন।


- বিমল মুখার্জী। অনেক খুঁজে তার বই এর পাতা থেকে একটা মাত্র ছবি মিলেছে তার। অথচ এই কীর্তিমানের ফটোগ্রাফি সারা বিশ্বব্যাপি প্রদর্শিত হয়েছে এক সময়।

কি করেননি তিনি ; ভয়ঙ্কর শীতে মাছ ধরার জাহাজে করে আইসল্যান্ডে ভয়ঙ্কর উত্তাল শীতল সমুদ্রে মাছ ধরেছেন- যেখানে প্রতি পদে পদে ছিল মৃত্যুর হাতছানি। তেমন কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই ইউরোপের কঠিন-তম পর্বত চুড়ায় আরোহণ করেছেন। আফ্রিকার ভয়ঙ্কর সাভানা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে একা একা ঘুরে বেড়িয়েছেন। রাস্তায় বরফ পরিষ্কার থেকে শুরু করে ওদিকে আবার ইংল্যান্ডে তার পড়াশুনা সমাপ্ত করে অর্থের জন্য ব্যাঙ্কে চাকুরী করেছেন। লন্ডনের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটি থেকে ফটোগ্রাফির আধুনিক কলাকৌশল শিখে সারা বিশ্ব জুড়ে ছবি তুলে এগজিবিশন করেছেন। উদয়শংকর আর ছোট রবিশঙ্করের সাথে বিদেশ বিভূঁইয়ে ছিল তার দারুণ সখ্যতা। ইংল্যান্ড আর জার্মানিতে রবীন্দ্রনাথ আর গান্ধীজীর ছিল তার অন্যরকম কিছু স্মৃতি।
সদ্য গড়া কম্যুনিস্ট দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ভুল প্রমাণিত করার জন্য বহু গুণী মানুষের সাথে তাকেও বিশেষভাবে আমন্ত্রণ করেছে; সারা দেশ স্বাধীনভাবে ঘুরে ইচ্ছে মত ছবি তুলে গল্প করে যেন বিশ্বকে জানায় তাদের উন্নয়নের কথা। শুধু সোভিয়েত ভ্রমণ নিয়েই তিনি প্রমাণ সাইজ একখানা বই লিখতে পারতেন অনায়াসে কিন্তু তার বিরল এই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন মাত্র দু’চার পাতায়। আমার ধারনা তার মত করে বাঙ্গালী-তো বটেই বিশ্বের অন্য কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়নি অবরুদ্ধ সোভিয়েতকে জানার।

বিমল মুখার্জির অভিজ্ঞতা লিখে শেষ কড়া সম্ভব না বোধহয়।এরপর তিনি ঘুরেছেন আইসল্যান্ড,নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, রাশিয়া, গ্রীস,ইজিপ্ট, সুদান,ইতালি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স,ডেনমার্ক, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু,হাওয়াই দ্বীপ, জাপান, চীন, হংকং, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া সহ আরও নানা দেশ।দেখা করেছেন নানা রথী মহারথীর সাথে। ১৯২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর যে যাত্রা শুরু করে ছিলেন তা শেষ করেন ২৩ মার্চ ১৯৩৭ সালে ভারতের মাটিতে পা দিয়ে তা শেষ করেন। তাকে জানানো হয় তিনিই প্রথম ভারতীয় ভূ-পর্যটক।

যে কাজ পেয়েছেন সেই কাজই করেছেন। কখন গরুর খামারে কাজ করেছেন, কখন স্কুলের শিক্ষকতা করেছে, বিমান চালিয়েছেন, রাস্তার বরফ পরিষ্কারে কাজ, জাহাজের খালাসির কাজ করেছে। সিংহের পালের সামনে পরে পিছু হটেছেন, আন্দিজ পার হয়েছেন একা একা, গহিন বনে রাত কাটিয়েছেন, যখন যা পেয়েছেন তাই খেয়েছেন। উত্তাল আটলান্টিকে ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করেছেন।
পেরুতে হয়েছেন অদ্ভুত অভিজ্ঞতার শিকার, ( পেরুতে প্রবেশের আগে দিতে হয় পাগলের সার্টিফিকেট, বংশে কোন পাগল থাকলে পেরুতে তখনকার সময়ে প্রবেশ নিষেধ ছিল, হয়ত ভেবেছে পাগল ছাড়া সাইকেল নিয়ে এই পথে আর কে আসবে। দুই দুইবার পাবে ইংরেজ মেরে হাতের সুখ মিটিয়েছেন, শুধুমাত্র কালা আদমি এখানে এত বেশি পাত্তা পাচ্ছে কেন ধরনের কুৎসিত আচরণের জন্য। করেছেন আল্পস পর্বতমালা অতিক্রম। ঠেকায় পরে শিখেছেন আরবি, জার্মান, রুশ, ফ্রেঞ্চ, ড্যানিশ ভাষা। এমন বিচিত্র অভিজ্ঞতা অন্য কোন বাঙ্গালির ভাগ্যে জুটেছে কিনা আমার জানা নাই।
এ বইয়ের বহু পৃষ্ঠা জুড়ে ছড়িয়ে আছে বিশ্বব্যাপী কিছু মহান বাঙ্গালীদের কৃত্তি-গাথা! যাদের কথা আমরা জানিনা কিংবা স্মরণ করিনা কিংবা ইতিহাসের অন্ধকারে যারা হারিয়ে গেছেন! এদের কথা জানলে ভীষণ কষ্টে মুষড়ে পড়বেন নিশ্চিত আজকের দিনে ভীষণ পশ্চাৎপদ বাঙ্গালীর শোচনীয় অবস্থার কথা ভেবে।

উনার নিজের লেখা অদ্ভুত সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী দুচাকায় পৃথিবীর পাতায় পাতায় উত্তেজনায় ঠাঁসা, রোমাঞ্চ যেন প্রতি পদে পদে। এই বইয়ের খুঁত বলতে যা আমার কাছে মনে হয়েছে তা হচ্ছে তৃষ্ণা না মেটার হাহাকার। আমার বারবার মনে হয়েছে এত অল্প কেন বইয়ের পাতা। এত দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য ৩১৯ পৃষ্ঠা কোনমতেই মনের চাহিদা মেটাবার মত না। তৃষ্ণা তো মিটবেই না, ঘরকুনো বাঙ্গালির তকমা গায়ে নিয়ে উনার প্রতি হিংসা করা ছাড়া আর কিই বা করতে পারি আমরা?
ঘর থেকে বেরোবার সময়ে মা তাকে ছুঁয়ে দিব্যি দিয়েছিল সে যেন অবশ্যই ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে বই লেখে। কিন্তু তিনি ভ্রমণ শেষে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে, তার দুর্দান্ত চমৎকার বিশাল ব্যাপক এই অভিজ্ঞতার গল্প আর লিখে উঠতে পারেননি! সম্ভবত ভ্রমণের সময়ে তিনি কোন ডায়েরি মেইনটেইন করেননি! যে কারণে আমাদের সহ সারা বিশ্বের ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ও ইতিহাসবিদদের জন্য এটা একটা চরম দুঃসংবাদ যে, পৃথিবীর ব্যতিক্রমী কিছু ইতিহাসের গল্প আমরা চিরতরে হারিয়ে ফেললাম।
মায়ের মৃত্যুর বহু বছর বাদে বিমল মুখার্জি তাঁর ট্রাঙ্কে সযত্নে রক্ষিত কিছু চিঠি খুঁজে পান। মায়ের স্নেহের দাবি মেটাতে চলতি পথের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো বর্ণনা করে প্রতি সপ্তাহে চিঠি লিখতে হোত। মা জানতেন তার বোহিমিয়ান ছেলে লেখালেখিতে মন দিবে না কোনদিন, তাই তিনি অতি যত্নে রেখে দিয়েছিলেন সেই চিঠিগুলো। বিমল তার ভ্রমণের ৫০ বছর বাদে সেই চিঠিগুলো থেকে স্মৃতি উদ্ধার করে সমসাময়িক ঘটনা মিলিয়ে অবশেষে বই প্রকাশ করে। এটা ত্রিশ হাজার পৃষ্ঠার বই হবার দরকার ছিল- আফসোস হয় ভীষণ আফসোস!!! -শেরজা তপন


(এর পাশাপাশি আরেকটুখানি জেনে রাখুন; ২০১৬ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বরের খবর
ইউরোপে প্রথম ভারতীয় মহিলা সাইক্লিস্ট- লিপি

লিপি বিশ্বাস দারুন একটা অভিযান শেষ করে আজ কলকাতা ফিরল। লিপি ইউরোপের ছ‘ছটা দেশ সাইকেলে কভার করল। জার্মানি, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে এবং আইসল্যান্ড। সময় লাগল প্রায় দুমাস। সব মিলিয়ে ২,৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি। লিপি ভারতের প্রথম মহিলা সাইক্লিস্ট হিসেবে ইউরোপের উপর দিয়ে সোলো সাইক্লিং করল।)

উফফ বাঙালীদের এত এত কৃর্তীগাথা শুনেইতো হাঁসফাঁস অবস্থা! ভাত আর মাছের ঝোলের গল্প কই?

অবশেষে এবার আসুন ‘এস্কিমোদের দেশে’র কাহিনীটা শুনি বিশ্বখ্যাত ভূ-পর্যটক বিমল-দের জবানিতে। এখানে আরো অনেক অনেক মজাদার খাবারের গল্প আছে;
নাহ-হ থাক এক দমে এত বড় লিখা পড়তে কষ্ট হয়ে যাবে! পরের পর্বে হাজির হচ্ছি সেই গল্প- আর সাথে আর কিছু জানা- অজানা তথ্য নিয়ে!

মুল তথ্যঃ সুদুরের পিয়াসী, দুচাকায় দুনিয়া, গুরুচন্ডালী, উইকি, বইয়ের হাট(অনু তারিক) সহ অন্যান্য মিডিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:৪০
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×