উৎসর্গঃ বাংলাদেশের সকল ভুক্তোভুগী জনগণ।
২০১৩ সাল। বাংলাদেশ নামে ছোট্ট সাধারণ অতি গরিব একটা দেশ 'ডিজিটাল বাংলাদেশে' রূপান্তরিত হবার পথে অনেকখানি এগিয়ে গেছে ততদিনে।
আমার ড্রাইভিং লাইসেন্সখানা রিনিউয়ালের জন্য জমা দিয়েছিলাম- এর আগের বার রিনিউয়ের জন্য সাতবার বি আর টি এ থেকে সময় বাড়িয়ে দুইবছর পরে লাইসেন্স পেয়েছিলাম তাও পাঁচ বছর মেয়াদি। তবে এবার স্মার্টকার্ড দিবে আর এক ধক্কায় দশ বছরের জন্য লাইসেন্স পাব।
অথছ ড্রাইভিং লাইসেন্স কেন পাঁচ বছর পর পর নবায়নের দরকার হয় সেটা মার সল্প বুদ্ধির এন্টেনাতে এ যাবত ধরা পড়েনি।
কোন ড্রাইভার গাড়ি চালাতে চালাটে ফিটনেস হারিয়ে ফেলে? লক্কর ঝক্কর বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায় নাকি ড্রাইভিং ভুলে যায় যে তাঁকে তাঁর লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে?
যাই হোক, ২০১৩ তে এমন একটা তেলেসমাতি ঘটনা ঘটল যার ফলে আওয়ামী সরকারের প্রতি আমার একটা শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হল। আচমকা আমার মোবাইলে একটা টেক্সট আসল বি আর টি এ থেকে। আগামী অমুখ তারিখে বি আরটি এ তে আমার ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তুলে আসতে বলা হয়েছে।
তমুক দিন আমি বেশ সময় নিয়ে ভয়ে ভয়ে বি আর টি এ তে গেলাম- শঙ্কায় আছি না জানি কত সময় লাগে।
ও মা গিয়ে টোকেন নিয়ে বসার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ডাক পড়ল। দশ মিনিটেই আমার কম্মো সাবাড়।!!
মনে মনে ভাবলাম 'সাবাস বাংলাদেশ- বিশ্ব অবাক নয় শুধু হাঁ করে তাকিয়ে রয় ( দুই চারটা মাছি গেলেও তাতে 'রা' নেই)!!'
***
তখন দশ বছর বিশাল সময় মনে হলেও ক্যমনে যেন ফুরুত করে উড়ে গেল!!
ফের আসল নবায়নের সময়। আমার কোন টেনশন ছিল না- ডিজিটাল বাংলাদেশে এই দশ বছরে যে গতিতে এগিয়েছে- বলা যায় না একহাতে এই লাইসেন্স দিতে দিতে অন্য হাতে হয়তো নতুন ঝকঝকে স্মার্ট লাইসেন্সখানা পেয়ে যাব।
কিন্তু গোল বাঁধাল আমার ড্রাইভার! তাঁর লাইসেন্স নবায়য়নের জন্য এক মাসে তিন চারবার ছুটি চাইল;
স্যার আজকে ডাক্তারি, আজকে ডোপ টেস্ট, আজকে হ্যান ত্যান এই সব বুজরুকি। কাল লাইন বেশী লম্বা ছিল; সরকারী কাম আড়াইটায় বন্ধ ( একটায় হাতা গুটায়, সোয়া একটায় ওজু, দেড়টায় নামাজে দাঁড়ায়, দুইটায় নামাজ শেষে ভুরিভোজ আর গল্প, এরপরে পান চিবানো চা বিড়ি খাওয়া সহ ব্যাপক কাজের ফিরিস্তি; আহারে ওরা কেউই আড়াইটার মধ্যে বেরুতে পারে না) আজ ফের যেতে হবে।
মাস শেষে তাঁর সব কাম শেষ। বাকি শুধু ফিঙ্গার (আঙ্গুলের ছাপ) আর ছবি। আমি ভাবি যাক ওর ঝামেল শেষ আর একদিন বড়জোর ঘন্টা খানেকের কাজ।
ওমা সেদিন সে পুরা দিনের ছুটি চায়। আমি তো রেগে টং; ব্যাডা মোরে বলদ পাইছো। হেইয়্যা মুই করি নাই মনে লয়?
আধাঘন্টার কাজে সারাদিন ফাঁকি মারার ধান্দা!! ওসব চলবে না -কাম শেষ হইলেই আমারে ফোন দিবা।
ঘন্টার পর ঘন্টা যায় সে আর ফোন দেয় না। শেষ মেষ আমিই দিলাম। রেগে মেগে বললাম, কই তুমি?
-ছার আমিতো ফিঙ্গারের লাইনে।
-কি কও কতবড় লাইন?
-তা ছার আমার সামনে ৪/৫ শ লোক আছে এখনো।
-কি কও ক্যামনে কি?
রাতে সে আবার ফোন দিল, ছার কালকেও ছুটি লাগবে?
-মানে? ব্যাপক খাপ্পা আমি।
-মানে ছার লাইনের মাথায় যাইতে যাইতে অফিস বন্ধ হয়ে গেছে।
-কাল ভোর ছয়টায় লাইনে দাড়াতে হবে।
-কাহিনী কি কও তো?
- আগে ঢাকা জেলার সব বি আর টি এ অফিসে তে ফিঙ্গার নিত ছবি তুলত। এখন সেই সিস্টেম বাদ হয়ে গেছে। এখন সারা ঢাকা জেলার লোক একখানে এসে ফিঙ্গার আর ছবি তুলতে হয়।
ওর টাতো শেষ হইল- এইবার আমার পালা। আর সব বাঙ্গালোর মত আমিও ফাঁক ফোঁকর খোজা শুরু করলাম! লাইসেন্সের টাইম অলরেডি আউট। গাড়ি চালাব কি চালাব না সেই নিয়ে দ্বীধাদন্দে থাকি। একদিন এক খানদানী ট্রাফিক সার্জেন্টকে ডেকে বলালাম ভাই, আমি যদি মেয়াদোত্তির্ণ লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ধরা খাই তাইলে ফাইন কি?
তিনি কইলেন, বিনা লাইসেন্সে যিনি গাড়ি চালায় তাঁর যা ফাইন আপনারও তাই হবে!
আমি তখন আমারে গালি দেব, দেশ কে গালি দেব, নাকি সিস্টেমরে সেইটা বুঝে আসছিল না।
***
যাহোক অনেক ভেবে চিনতে ফোন দিলাম কালা রানাকে। সে জবরদস্ত ঝানু লোক। বি আর টি এ তে আছে দুই যুগের উপরে। মুল পেশা দালালি- তবে হেন কাজ নাই যে চাপার জোরে সে না পারে। সে শুনে বলল, নো প্রবলেম বস, কাইল সকালে সব জেনে আপনাকে ফোন দিব।
পরদিন সকালে সে ফোন দিয়ে বলল, সরকারী জমা পাঁচ, অন্যান্য কাজে হাজার খানেক আর উপরি খরচ তিন।
ঠিক আছে দিব, আগে আপনি আমাকে বলেন,আঙ্গুলের ছাপ আর ছবি তুলতে হবে কিনা।
আরে না না বস, তাইলে আমি রানা আছি ক্যান। কিচ্ছু লাগবে না। আপনি আগের লাইসেন্সের ফটোকপি, এন আই ডির কপি আর দু চাইরখান সিগ্নেচার দিলেই হবে। আগের ছবি আর ফিঙ্গার প্রিন্টেই কাম তামাম হবে।
-তাই নাকি!! তথাস্তু।
প্রাথমিক কাজ শেষ করে সে একখান কাগজ আমারে ধরিয়ে দিয়ে মাথা চুলকে বলল, একখান সমস্যা হয়ে গেছে।
-কি সমস্যা?
-ফিঙ্গার আর ছবির জন্য যাইতেই হবে। তবে বস চিন্তা কইরেন না। শুধু রুটিন। আপনি খালি উপস্থিত থাকলেই হবে।
নির্দিষ্ট দিনের কদিন আগে আমি ফোন দিলাম, ক্যামনে কি?
-বস আপনার ড্রাইভাররে দিয়ে কাগজটা বি আর টি এ তেপাঠায় দেন। এখানকার বড় বস একটা সিগনেচার করে দিলে, সব পানির মত সহজ হয়ে যাবে। ওইখানে গেলেই কাম ফতে। আর একটা কথা আপনি কিন্তু তিনটার পরে যাবেন।
আমি দিলাম কাগজ সিগ্নেচার আসল। আমি ভাবলাম তিনটার সময় মনে হয় অফিস বন্ধ হয়ে যায় তাঁরপরে আমাদের মত বিশেষ অতিথিদের কাজকর্ম শুরু হয়।
***
নির্ধারিত দিনে ঘর থেকে বের হয়ে কালা রানাকে ফোন দিলাম। ওর ফোন বন্ধ। কুছ পরোয়া নেহি- কামেল লোকের সিগ্নেচারতো আছে।
ঢাকা জেলার এই বিশেষ কার্যক্রম চলে। মিরপুর ১২তে অবস্থিত এখনকার দারুণ রমরমা মার্কেটপ্লেস মোল্লা মার্কেটে। সোজা রাস্তার পাশের মুখের লিফটের কাছে দাঁড়িয়ে আছি ৬ তলায় যাব বলে। লিফটের পাশেই নজরে এল একটা নোটিস; যাহারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য এসেছেন তারা যেন দয়া করে পেছনের লিফট ব্যাবহার করেন। আমি ঘাওড়ার মত দাঁড়ায় রইলাম।
লিফটে প্রবেশ করে জানলাম; এটা পাঁচে না হয় সাতে যাবে ছয় এ যাবে না। অগত্যা সাতে নেমে একতলা সিড়ি ভাঙলাম।
ভিতরে ঢুকে দেখি গজব অবস্থা! কোত্থেকে আল্লা মালুম বিশাল এক লাইন একে বেঁকে এসে এখানে এক টেবিলের সামনে গোত্তা খেয়েছে। আমি এখন কই যাই? লাইনের লেজ তো দেখি না। পাশেই দেখি একটা বড় দরজা সেই দরজা দিয়ে ঢুকতেই দেখি বিশাল হল রুম। ভিতরে কি জানি কি কর্মযজ্ঞ চলছে আর এদিকে চেয়ার পেতে শ খানেক লোক অপেক্ষা করছে। গেটের পাশেই দেখি এক গেটকিপার যার হাতে একতোড়া আমার হাতে থাকা অনুরূপ কাগজ। দুয়েকজন দেখি তাঁর হাতে কাগজ দিচ্ছে আর সে সিরিয়ালে গুছিয়ে রাখছে।
পাইছি.. আমি ব্যাপক খুশি মনে তাঁর হাতে আমার কাগজখানা ধরিয়ে দিয়ে কৌশোলে উল্টো দিকের সিগনেচারটা দেখিয়ে দিলাম।
সে কাগজ উলটে বলল, টোকেন নাম্বার কই?
-মানে? টোকেন কই দেয়?
সে লম্বা লাইনের শেষ মাথার টেবিলটা দেখিয়ে বলল, ওখানে।
বেশ- আমি সেই একে-বেঁকে যাওয়া লাইনের মাথার দিকে একজনকে বললাম, ভাই একটু দেখি-ভেতরে যাব।
তিনি মুখে কোন বিরিক্তি ভাব না এনে খুব সহজেই সরে গিয়ে আমাকে পথ করে দিলেন।
ওখানে সিরিয়াল দেবার জন্য টেবিল দুটো। আমি খুব ক্যাজুয়ালি এক টেবিলের সামনে গিয়ে কাগজ রেখে বললাম, ভাই টোকেন দেন?
পেছনের সিগ্নেচার দেখানোর আগেই তিনি কাগজটা টেনে নিয়ে একটা টোকেন নাম্বার দিয়ে আমার হাতে অত্যাধুনিক ডিজিটালাইজড একটা টোকেন ধরিয়ে দিলেন।
আমি সেই টোকেনখানা এখনো ফেলিনি। ওয়ালেটের ভাজে রেখে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা মনে পড়লেই আমি সেই টোকেনখানা দেখি আর গর্বে বুক ফুলে যায়। এমন একটা দেশে জন্মাতে পেরেছি বলে নিজেকেই নিজে হিংসে করি।
আমি সেই টোকেনের ছবিটা শেয়ার করছি। দেখে আপনারা চিত্ত ও মনকে বিমল আনন্দ দান করুণ(ন)
~এই সেই টোকেন!
***
অবশেষে আমার টোকেনের নম্বর লেখা সেই কাগজখানা আমি গেট কিপারের হাতে তুলে দিলাম।
তাঁর হাতে তখন তাঁর হাতে থাকা অন্য সিরিয়ালের বিশাল কাগজের স্তুপের একেবারে নীচে বেশ অযত্নে রেখে দিল।
কি মনে করে তাঁকে আমি জিজ্ঞেস করলাম, ভাই ওই লাইনটা কিসের?
সে বেশ বিরক্ত মুখে উত্তর দিল, ক্যান টোকেনের। আপনি তাইলে নম্বর পাইলেন ক্যামনে?
হেঃ আমার হয়ে অন্য লোক দাঁড়িয়ে ছিল। বলেই তাঁকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে টুক করে কেটে পড়লাম।
এবার অপেক্ষার পালা! বসে বসে চারদিকে অবলোকন করছি। ভিতরে বেশ কর্মযজ্ঞ চলছে বোঝা যায়। চেয়ারে বসা অপেক্ষারত মানুষগুলোর ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে অনেক আগেই। কেউ কেউ বিড় বিড় করে গালিগালাজ করছে। কেউবা ক্লান্ত হয়ে ঝিমোচ্ছে।
নজর ঘরতে ঘরতে চলে গেল বিশাল সেই হলরুমের শেষ মাথায়; বুক সমান উঁচু একটা দেয়ালের তাঁর ওপাশেই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত শত নারী পুরুষ। আমি সামনে যেই লাইন দেখেছি সেটাই এটা -এই লাইন আবার পেছন দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে কোন অজানার পানে চলে গেছে আল্লা মালুম! লাইনে দাঁড়ানো প্রতিটা মানুষই ক্লান্ত বিদ্ধস্ত।
~ ওয়েটিং রুমের একাংশ। এখানে ছবি তোলা নিষেধ- সেটা অমান্য করে অপরাধ করেছি। ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে রুমের শেষ মাথায় বুক সমান দেয়ালের ওপাশে লাইনে লোক দাঁড়িয়ে আছে।
এর মাঝে লক্ষ্য করলাম, কিছু কেউকেটা লোক সাথে আমার মত আদমদের নিয়ে গটগট করে ভেতরে ঢুকছে আর মিনিট দশেকের মধ্যেই বেরিয়ে আসছে।
আমি বুঝলাম; ইঁনারা আমাদের গ্রহে থাকেন না। এদের জন্যই এদেশে জন্ম ধন্য হয়েছে।
একবারে ত্রিশজন লোক করে ডাকে। সেখান থেকে আবার যাচাই বাছাই করে কয়েকজন বাদ পড়ে ভীষণ কান্না মুখ নিয়ে প্রস্থান করে- ফের এই দোজখে আসতে হবে বলে তারা নিজের ভাগ্যকে অভিসম্পাত করে বিদেয় হয়। খোঁয়াড়ের লাইনের মত দাঁড় করিয়ে পাঁচজন করে ভাগ করে একেক টেবিলে দেয়। ঘন্টা খানেক বাদে আমার ডাক আসল।
আমার পেছনে যেই ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে ছিল। তিনি দেখি বিড় বিড় করে কাকে যেন গালিগালাজ করছেন।
আমি তাঁকে মোলায়েম কন্ঠে জিজ্ঞেস করলাম, -ভাই কখন আসছেন?
সে চোখে মুখে চরম বিরক্তি নিয়ে বলল, -সাড়ে আটটায়। আপনি কখন আসছেন?
আমি তাঁর কথা আর না শোনার ভান করে সামনের দিকে তাকিয়ে রইলাম। এরমধ্যে কোন এক কেউকেটার সরাসরি ভিতরে প্রবেশ নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের সাথে এক কর্মকর্তার সাথে লেগে গেল তুমুল হট্টগোল। ওমা সে দেখি হুমকি দিচ্ছে, -ঠিক আছে দাঁড়ায় থাকেন কাউরেই ঢুকতে দিব না।
অবশ্য খানিক বাদে অন্য একজন এসে আমাদের উদ্ধার করে ভেতরে ঢুকিয়ে নিল।
ভেতরে দেখি চল্লিশটার মত বুথ! এতগুলো লোক যদি ঠিক ঠাক কাজ করে তাহলে লাইন-ই থাকার কথা নয়!!!
আমি আমার নির্দিষ্ট বুথে কাগজখানা পেশ করতেই বলল, আপনি ওদিকটায় গিয়ে দাড়ান। আপনাকে ডাকব।
তিনি যেখানে দাড়াতে বললেন, সেখানে বড়জোড় দশ-বারোজন লোক দাড়াতে পারে। আমি যাবার আগেই জনা বিশেক লোক অলরেডি ঠেলেঠূলে দাঁড়িয়ে আছে।
***
কোনমতে সেখানটা দাড়াতেই, নাকে এসে ধাক্কা দিল বাথরুমের কটু গন্ধ! আমি নাক কুঁচকে পেছনে তাকাতেই- আরেক ভদ্রলোকের সাথে চোখাচোখি। তিনি ক্লিষ্ট হেসে বললেন, সারাটা দিন লাইনে দাড়ায়ে এই বাথরুমের গন্ধে গা গুলাইছে।
একেক জনের অভিজ্ঞতার কথা শুনি আর আমি ভয়ে আতঙ্কে শিঊড়ে উঠি!
অবশেষে আমার ডাক পড়ল। কর্মকর্তার টেবিলের সামনে দাড়াতেই, তিনি বললেন, আপনি একটু বসেন আমি ওয়াশ রুম থেকে আসি।
আমি বিগলিত হেসে বললাম, অবশ্যই, আমি বসে আছি সমস্যা নেই। আপনি ধীরে সুস্থে আসেন।
আমার অপ্রত্যাশিত অমায়িক ব্যাবহারে তিনি সম্ভবত খুশী হলে।
এ মুহুর্তে তাঁকে তাঁকে খুশী করা একান্ত প্রয়োজন- কেননা এরা একেকজন দুর্ধর্ষ ফটোগ্রাফার!!! আমার ন্যাশনাল আইডির ছবি আমার নিজের মেয়ে দেখে বলেছিল, বাবা এই পাগল লোকটা কে?
আর পাসপোর্টের ছবি দেখে অন্য দেশের ইমিগ্রেশন অফিসার কমপক্ষে বিশবার আমার দিকে আর পাসপোর্টের ছবির দিকে তাকিয়ে কোন একটা মিল খোঁজার চেষ্টা করে।
এবার চাচ্ছিনা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ছবি দেখে ট্রাফিক সার্জেন্ট অন্য কেউ মনে করে কেস ঠুকে দেয়।