ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন ধর্মের অন্যতম; হিন্দু ধর্ম। আর্য ব্রাহ্মনবাদীরা যাকে বলে 'বেদান্ত বা বৈদিক ধর্ম'। আমি এই ধর্মীয় পুস্তকগুলো সন্মন্ধে নেহায়েত কম জানি- ইদানিং কিছু জানার চেষ্টা করছি।এ বিষয়ে লেখার যোগ্যতা আমার নেই, ওই একখানা ধর্মের বাইরে কেউ আলোচনা করে না দেখে তাই এই পরিক্ষামূলক চেষ্টা। এখানে যেই নিবন্ধটা দিচ্ছি তাঁর প্রায় পুরোটাই ধার করা। গত শতাব্দীতে ভারতীয় একজন সন্ন্যাসীর দ্বারা পৃথিবীর সর্বকালের শ্রেষ্ঠ একজন বিজ্ঞানী প্রভাবিত হয়েছিলেন একথা নিশ্চিতভাবে সত্য- কিন্তু এর পরের ঘটনা যা ঘটেছিল এবং যেভাবে ঘটেছিল বলে বলা হয় সেটা কি আপনি বিশ্বাস করেন?
***
স্বামী বিবেকানন্দের সাথে সাক্ষাত নিকোলা টেসলার প্রাচ্য বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহকে ব্যাপকভাবে উদ্দীপিত করেছিল। স্বামী পরে ভারতে একটি বক্তৃতায় মন্তব্য করেছিলেন, "সেকালের সেরা কিছু বৈজ্ঞানিক মন আমাকে নিজেই বলেছিল যে বেদান্তের উপসংহারগুলি কতটা আশ্চর্যজনকভাবে যুক্তিযুক্ত। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের একজনকে চিনি, যার খাবার খাওয়ার বা তার ল্যাব থেকে বের হওয়ার সময় নেই, কিন্তু বেদান্তের উপর আমার লেকচারে যোগ দিতে যে সময়মত উপস্থিত হবে; কারণ, তিনি যেমন বলেছেন, সেগুলো এতটাই বৈজ্ঞানিক, তারা সেই সময়ের আকাঙ্ক্ষার সাথে এবং আধুনিক বিজ্ঞান এখন যে উপসংহারে পৌঁছেছে তার সাথে ঠিক সামঞ্জস্যপূর্ণ।"
ব্রহ্মকে সংজ্ঞায়িত করা হয় একমাত্র স্ব-বিদ্যমান নৈর্ব্যক্তিক আত্মা হিসেবে; ঐশ্বরিক সারমর্ম, যেখান থেকে সব কিছু নির্গত হয়, যার দ্বারা তারা টিকে থাকে এবং যার দিকে তারা ফিরে আসে। মনে রাখবেন যে এটি নেটিভ আমেরিকান সংস্কৃতি দ্বারা বোঝার মতো মহান আত্মার ধারণার সাথে খুব মিল। ঈশ্বর হলেন সর্বোচ্চ শাসক; পরম এর সর্বোচ্চ সম্ভাব্য ধারণা, যা সমস্ত চিন্তার বাইরে। মাহাত আক্ষরিক অর্থে মহান, এবং সর্বজনীন মন বা মহাজাগতিক বুদ্ধিমত্তাকেও ব্যাখ্যা করা হয়। প্রাণ মানে শক্তি (সাধারণত জীবন শক্তি হিসাবে অনুবাদ করা হয়) এবং আকাশ মানে বস্তু (সাধারণত ইথার হিসাবে অনুবাদ করা)। ডবসন উল্লেখ করেছেন যে আকাশ এবং প্রাণের জন্য সবচেয়ে সাধারণ অনুবাদগুলি সম্পূর্ণ সঠিক নয়, তবে টেসলা তাদের প্রকৃত অর্থ বুঝতে পেরেছিল। নিকোলা টেসলা, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ মহান বিজ্ঞানী, স্বামীর কাছ থেকে সাংখ্য বিশ্ববিদ্যার ব্যাখ্যা এবং হিন্দুদের দ্বারা প্রদত্ত চক্র তত্ত্বের কথা শুনে খুব মুগ্ধ হয়েছিলেন। পদার্থ ও শক্তির সাংখ্য তত্ত্ব এবং আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের মধ্যে সাদৃশ্য দেখে তিনি বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। স্বামী নিউইয়র্কে স্যার উইলিয়াম থম্পসন, পরে লর্ড কেলভিন এবং পশ্চিমা বিজ্ঞানের দুই নেতৃস্থানীয় প্রফেসর হেলমহোল্টজের সাথেও দেখা করেছিলেন। সারাহ বার্নহার্ড, বিখ্যাত ফরাসি অভিনেত্রী স্বামীর সাথে একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছিলেন এবং তাঁর শিক্ষার ব্যাপক প্রশংসা করেছিলেন।
বৈদিক বিজ্ঞান এবং স্বামী বিবেকানন্দ
বেদ হল স্তোত্র, প্রার্থনা, পৌরাণিক কাহিনী, ঐতিহাসিক বিবরণ, বিজ্ঞান এবং বাস্তবতার প্রকৃতি সম্পর্কিত গবেষণামূলক রচনাগুলির একটি সংগ্রহ যা কমপক্ষে ৫০০০ বছর আগের। পদার্থের প্রকৃতি, প্রতিপদার্থ এবং পারমাণবিক গঠনের গঠন বেদে বর্ণিত হয়েছে। বেদের ভাষা সংস্কৃত নামে পরিচিত। সংস্কৃতের উৎপত্তি সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায় না। পশ্চিমা পণ্ডিতরা পরামর্শ দেন যে এটি হিমালয় এবং সেখান থেকে দক্ষিণে ভারতে আর্য সংস্কৃতির দক্ষিণমুখী অভিবাসনের মাধ্যমে প্রবর্তিত হয়েছিল। পরমহংস যোগানন্দ এবং অন্যান্য ঐতিহাসিকরা অবশ্য এই তত্ত্বের সাথে একমত নন, উল্লেখ করেছেন যে ভারতে এই ধরনের দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ নেই।
নিকোলা টেসলা প্রাকৃতিক ঘটনার বর্ণনায় প্রাচীন সংস্কৃত পরিভাষা ব্যবহার করেছেন। ১৮৯১ সালের প্রথম দিকে, টেসলা মহাবিশ্বকে শক্তিতে ভরা একটি গতি ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন যা যে কোনও জায়গায় ব্যবহার করা যেতে পারে। পরবর্তী কয়েক বছরে তাঁর ধারণাগুলি স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষা দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন প্রাচ্যের যোগীদের উত্তরসূরিদের মধ্যে প্রথম যিনি বৈদিক দর্শন এবং ধর্মকে পশ্চিমে নিয়ে এসেছিলেন। স্বামীর সাথে সাক্ষাতের পর এবং বস্তুগত জগতকে পরিচালনা করে এমন প্রক্রিয়াগুলির পূর্বের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অব্যাহত অধ্যয়নের পর, টেসলা পদার্থের উত্স, অস্তিত্ব এবং নির্মাণকে বর্ণনা করার জন্য সংস্কৃত শব্দ আকাশ, প্রাণ এবং আলোকিত ইথারের ধারণা ব্যবহার করতে শুরু করেন। এই নিবন্ধটি বৈদিক বিজ্ঞান সম্পর্কে টেসলার বোঝার বিকাশ, এই বিষয়ে লর্ড কেলভিনের সাথে তার চিঠিপত্র আদানপ্রদান এবং পদার্থবিজ্ঞানের সর্বোচ্চ বিষয়ে বোঝার জন্য টেসলা এবং ওয়াল্টার রাসেল এবং শতাব্দীর অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মধ্যে সম্পর্ককে চিহ্নিত করবে। ( তথ্যসুত্রঃ নিউ ইয়র্কের টেসলা মেমোরিয়াল সোসাইটি।)
***বিজ্ঞান আর আধ্যাত্বিকতা একই কয়েনের দুটি দিক, স্বামীজীর এই তত্ত্বে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন স্বয়ং ‘টেসলা’***
ধর্মীয় গুরু নয় স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বে পরিচিতি পান একজন বিজ্ঞানের প্রবক্তা এবং একজন ‘ইয়ুথ আইকন’ হিসাবে। আর তাই তো তাঁর তত্ত্বে অনুপ্রাণিত হতেন স্বয়ং নিকোলা টেসলা এবং জামশেদজি টাটার মতো ব্যক্তিত্বরা। তাঁর বক্তৃতায় সবসময় বিজ্ঞান এবং আধ্যাত্বিকতার সূত্র পাওয়া যেত। জাতপাতের রেষারেষি ছেড়ে তিনি ভরসা রাখতেন সমাজকে বিজ্ঞানের পথে নিয়ে যেতে। তাঁর মত, আমাদের উৎস ভিন্ন হতে পারে কিন্তু লক্ষ্য এক হওয়া উচিত।
সময়টা উনিশ শতকের গোড়ার দিক, তখন বিশ্বের কাছের ভারতের পরিচিত একটি ব্রিটিশ কলোনি হিসাবে। দরিদ্রতা আর দাসত্বের দেশ হিসাবেই ভারত পরিচয় পেত বাইরের দেশগুলির কাছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি যে কোনো ভাবেই ভারতকে স্বাধীন বা অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে না তা ভালো মতোই জানতেন স্বামীজী।
কিছু বছর বাদ ১৮৯৩ সালে, আমেরিকার শিকাগোয় ‘পার্লামেন্ট অফ দ্য ওয়ার্ল্ড রিলিজিওনস’ সভায় স্বামীজিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অনুষ্ঠানে সবাই যে যার ধর্মের জ্ঞান এবং নীতির প্রশংসা করতে শুরু করেন। কিন্তু স্বামীজী ওই পন্থা অবলম্বন করলেন না। ধর্মনীতির সঙ্গে তিনি শিকাগোবাসী তথা সারা বিশ্বকে জানালেন, যেমন প্রত্যেক নদী ভিন্ন স্রোতে বয়ে সেই সাগরে গিয়ে মেশে তেমনি আমাদের রাস্তা আলাদা হতে পারে কিন্তু লক্ষ্য এক হওয়া উচিত।
দেশাত্ববোধ আর অফুরন্ত জ্ঞানের ডেডলি কম্বিনেশন তৈরি করেছিলেন স্বামীজী। ‘Rational Thinker’ অর্থাৎ যুক্তিবাদী চিন্তাবিদের সর্বোত্তম উদাহরণ ছিলেন তিনি। তাঁর এই তত্ত্ব এবং মানসিকতায় পূর্ণ আস্থা রেখেছিলেন বিজ্ঞানের আরেক দিশারী নিকোলা টেসলা। যখন স্বামীজী টেসলার দেখা করতে যান তখন টেসলা বয়সে অনেক বড় ছিলেন তাঁর থেকে। কিন্তু বিজ্ঞানের আলোচনায় দুজনের মধ্যে কোনো অন্তর ছিল না। নিকোলা টেসলা মিউজিয়ামে সোনালী অক্ষরে লেখা, তাঁর আবিষ্কারের অধিকাংশ কনসেপ্ট Vedic আদর্শে তৈরি এমনকি সংস্কৃতের একাধিক শব্দর খোঁজও পাওয়া যায় তাঁর আবিষ্কারে।
১৮৯৫ সালে দুজনের আলাপ-আলোচনার সময় স্বামীজী টেসলাকে বলেন, ম্যাটার অ্যান্ড এনার্জি আর দ্য সেম। বিবেকানন্দের এই যুক্তির ওপর গবেষণা করা শুরু করেন টেসলা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত সেই গবেষণা পুরণ করতে পারেননি তিনি। পরবর্তীকালে ওই তত্ত্বের ওপরই গবেষণা করেন আরেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন। গবেষণার ফলাফল হিসাবে বেরোয় বিশ্বখ্যাত সমীকরণ E=MC²।
মূলত স্বামী বিবেকানন্দ জানতেন যে ভবিষ্যতে বিজ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতা শত্রু হিসাবে নয় দুই পথকে একে অপরের সাথে হাত মিলিয়ে চলতে হবে। আধুনিকতার তারিখে শুধু ধর্মশাস্ত্রের পাঠ পড়ালে চলবেনা জানাতে হবে বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা আর সেটাই আজীবন প্রচার করে গেছেন স্বামী বিবেকানন্দ।~ প্রথম কলকাতা ( শুভ্রদীপ চক্রবর্তী)
০২।
***ঈশ্বর কণা ও বেদান্ত***
অনিন্দ্য মণ্ডল
ঈশ্বর কণা বা God Particle বর্তমান পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে বহুচর্চিত একটি বিষয় । বিষয়টির সাথে সরাসরি প্রচলিত ঈশ্বরের ধারণার কোনও মিল না থাকলেও অধ্যাত্মবাদী ঈশ্বরবিশ্বাসী , বিশেষতঃ বেদান্ত দর্শনে বিশ্বাসী মানুষ God Particle এর ধারণার মধ্যে খুঁজে পেতে পারেন ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কিত ভারতীয় আধ্যাত্মিক দর্শনের তত্ত্বগত সমর্থন । আমেরিকায় বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ যখন ভারতীয় আধ্যাত্মিক দর্শনের বিজয়পতাকা ওড়াচ্ছেন তখন তাঁর ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে এসেছিলেন বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী টেসলা (Sir Nikola Tesla)।
টেসলার সাথে স্বামীজির আলোচনা হয় ভারতীয় আধ্যাত্মিক দর্শনের ‘আকাশ ’ ও ‘প্রাণ ’তত্ত্ব সম্পর্কে । সাংখ্য দর্শনের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ একজায়গায় বলেছিলেন , ‘‘ আমরা যাহাদিগকে জড় ও শক্তি বলি ... ইহাদের অতি সূক্ষ্ম অবস্থাকেই প্রচীন দার্শনিকগণ ‘প্রাণ’ ও ‘আকাশ’ নামে অভিহিত করিয়াছেন। .....আজকাল ‘ইথার’ বলিতে যাহা বুঝায়, ইহা কতকটা তাহারই মতো, যদিও সম্পূর্ণ এক নয়। আকাশই আদিভূত- উহা হইতেই সমুদয় স্থূল বস্তু উৎপন্ন হইয়াছে আর উহার সঙ্গে ‘প্রাণ’ নামে আর একটি বস্তু থাকে-ক্রমশ আমরা দেখিব, উহা কি। ... এই প্রাণ ও আকাশ ... নানা রূপে মিলিত হইয়া এই-সমুদয় স্থূল প্রপঞ্চ গঠন করিয়াছে, অবশেষে কল্পান্তে ঐগুলি লয়প্রাপ্ত হইয়া আকাশ ও প্রাণের অব্যক্তরূপে প্রত্যাবর্তন করে। জগতের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থ ঋগ্বেদে সৃষ্টিবর্ণনাত্মক একটি সূক্ত আছে (ঋগ্বেদ, ১০। ১২৯ /নাসদীয় সূক্ত)
অর্থাৎ প্রাচীন ভারতীয় ঋষিরা ‘ আকাশ ’ বলতে একটি unified field ( ক্ষেত্র ) বুঝিয়েছেন যা সকল জড় পদার্থের উৎস । ‘ আকাশের ’উপর প্রাণ নামক আদি শক্তির ক্রিয়ায় এই বিচিত্র ব্রহ্মাণ্ডের উদ্ভব । পরবর্তীকালে নিশ্চল মহাকালের শরীরের উপর নৃত্যরতা কালীর প্রতীকী ধারণার উদ্ভবের পিছনেও সম্ভবতঃ প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের এই আধ্যাত্মিক সৃষ্টিতত্ত্বের প্রভাব ছিল । যাইহোক , এই প্রাণ ও আকাশ অব্যক্ত অবস্থায় একীভূত , অর্থাৎ এরা স্বরূপতঃ অভিন্ন । সকল জড় পদার্থ ও শক্তির উৎস এই আকাশ ও প্রাণের স্বরূপতঃ অভিন্নতার তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতীয় আধ্যাত্মিকতা দাবী করে জড় জাগতিক সবকিছুই সকল পদার্থ ও শক্তিই স্বরূপতঃ অভিন্ন । এরা একেরই ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ ।
বিজ্ঞানী টেসলাকে স্বামীজি বলেন জাগতিক পদার্থ ও শক্তিসমূহের এই অভিন্নতার তত্ত্বটি বিজ্ঞানের সাহায্যে প্রমাণ করা যায় কিনা তা দেখতে । অবশেষে ১৯০৫ সালে অর্থাৎ স্বামীজির দেহত্যাগের তিন বছরের মাথায় বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আবিষ্কার প্রমাণ করে দিল এই অভিন্নতার তত্ত্বকে। পদার্থ বিজ্ঞানে যুক্ত হল একটি নতুন সমীকরণ – E=mc2 এই সমীকরণ অনুযায়ী জড় ও শক্তি পরস্পর রূপান্তরযোগ্য, অর্থাৎ জড়পদার্থ এবং শক্তি স্বরূপতঃ অভিন্ন। জড়কে শক্তিতে এবং শক্তিকে ভরযুক্ত কণা বা জড়ে রূপান্তরিত করা সম্ভব – একথা তাত্ত্বিক ভাবে পদার্থ বিজ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত হল। আইনস্টাইন বললেন, ‘‘Matter is nothing but frozen energy.’’।
এরপর চলল শক্তিকণা ( energy packet) কিভাবে ভরযুক্ত হয়ে জড়কণায় পরিণত হয় – এ নিয়ে অনুসন্ধান। ১৯৬৪ - ৬৫ সালে বিজ্ঞানী পিটার হিগস বললেন হিগস ক্ষেত্রের (Higgs field) কথা , যে ক্ষেত্রে কোনও শক্তিকণা ( energy packet) প্রবেশ করলে সেটি বস্তুকণায় পরিণত হবে । এই হিগস ক্ষেত্র আমাদের মনে করিয়ে দেয় ভারতীয় আধ্যাত্মিক দর্শনের ‘আকাশ’ নামক সেই আদি ক্ষেত্রের (field) কথা যার উপর ‘প্রাণ’ নামক আদি শক্তির ক্রিয়ায় জড়ের উৎপত্তি । এ বিষয়ে আমরা আগেই আলোচনা করেছি । যাইহোক এই হিগস ক্ষেত্র (Higgs field) সৃষ্টির জন্যে দায়ী হল হিগস-বোসন কণা , যার পোশাকি নাম ঈশ্বরকণা (God Particle) ।
***(অসম্পুর্ন নিবন্ধ)***
এখানে উল্লেখ্যঃ
১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে তার দ্বিতীয় ইংল্যান্ড ভ্রমণের সময় পিমলিকোতে এক গৃহে অবস্থানকালে বিবেকানন্দ দেখা পান অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিখ্যাত ভারততত্ত্ববিদ ম্যাক্স মুলারের, যিনি পাশ্চাত্যে রামকৃষ্ণের প্রথম আত্মজীবনী লেখেন। ইংল্যান্ড থেকে তিনি অন্যান্য ইউরোপীয় দেশেও ভ্রমণ করেছেন। জার্মানিতে তিনি আরেক ভারততত্ত্ববিদ পল-ডিউসেনের সঙ্গ সাক্ষাৎ করেন। তিনি দুটি একাডেমিক প্রস্তাবও পান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচ্য দর্শনের চেয়ার এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ধরনের প্রস্তাব। তিনি উভয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এই বলে যে, পরিভ্রমণকারী সন্ন্যাসী হিসেবে তিনি এই ধরনের কাজে স্থিত হতে পারবেন না।