somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাহরিয়ার খান শিহাব
সাগর সীমানা ভেঙে এঁকে গেল এক কোটি প্রবাহ যা পৃথিবীকে শোনাল বৈচিত্র্যময় আবহ, সেই পৃথিবী আর তার সাগরে যেতে নদী অপরিসীম, যে মানুষের জীবনে ঢেউ নেই, সে জীবনে নদীও নেই।

ছোটগল্প - নগর নির্বাক ডায়েরী

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার এই ছোটগল্পটি ইতিমধ্যে lalbati.com এ প্রকাশিত। কিছুদিন পর ইনশাল্লাহ কলকাতার একটি সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশ পাবে। আশা করি আপনাদেরও ভাল লাগবে।


নগর নির্বাক ডায়েরী
শাহরিয়ার খান শিহাব

গত আধাঘণ্টা ধরে নিজের ঘরে হাটাহাটি করছে ইফতেখার। কখনও দেখা যাচ্ছে মাথা চুলকাচ্ছে, কখনও রুমের মাঝখানে এমনি কোন কারণ ছাড়া দাঁড়িয়ে আছে, কখনও বা নিজে কি করছে নিজেই তার কোন তাল খুঁজে পাচ্ছে না। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। কারণ বিরোধীদলের ডাকা হরতাল। যখন যে দল বিরোধী দলে থাকে সেই হরতাল ডাকে আর যে থাকেনা সে হরতালের বিরোধীতা করে, ক্ষমতায় গেলে হরতালের নিন্দা করে। অতি সাধারণ দৃশ্যে পরিণত হয়েছে এখন এটা।
হরতালে ক্লাস হবার কোন সুযোগ নাই। হরতালে জনগণের কোন লাভ না হলেও এতে করে ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের। বন্ধের দিন মানে শুক্রবারে মেক আপ ক্লাস করতে হয়। ইদানিং ঘন ঘন হরতাল হবার দরুন মাঝে মাঝে শুক্রবার ক্লাস করতে হচ্ছে তিনটা করে। জুমা নামাজের আগে একটা, পরে দুইটা।
আজকে মঙ্গলবার। গত রবিবার একটা হরতাল গেল। আজকেও হরতাল। হরতাল মানেই ক্লাস নাই। কিন্তু ইফতেখারের আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া দরকার। গত বৃহস্পতিবার অসমাপ্ত ভাবে পড়ে আসা একটা বইয়ের জন্য যাওয়া দরকার। ইফতেখার পায়চারী করছে আর ভাবছে যাবে কি যাবে না। মাথার মধ্যে যা ভর করে আছে সেটা পরে শেষ করা দরকার। বাসায় ইন্টারনেটের সংযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সাপোর্টও আছে, পড়তে পড়তে নেট থেকেও অনেক কিছুর সাহায্য নেয়া যায়। তো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেই হবে। ইফতেখারের যদিও টেক্সট বইয়ের থেকে আউট বইয়ের দিকে মনোযোগ বেশী। তবে সবচেয়ে ভাল গুন যেটা তা হল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঘাটাঘাটি করা আর অজানা বিষয় গুলো জানার ইচ্ছা। যেটা মাথায় ঢোকে সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্ষান্ত নাই।
ইফতেখার আর বেশীক্ষণ বাসায় থাকতে পারলো না। শার্ট প্যান্ট পাল্টে ব্যাগ কাঁধে বেড়িয়ে গেল। রাস্তায় নেমে প্রথমে ইচ্ছে ছিল রিক্সা নিয়ে যাবে। হরতালের এই একটাই আনন্দ, রিক্সায় যাওয়া যায় যেকোন রাস্তায়। ইফতেখার হেটেই রওনা দিল ধানমন্ডির উদ্দেশ্যে, বিশ্ববিদ্যালয় ধানমন্ডিতে। ঢাকার রাস্তা ফাঁকা পাওয়া যায় না এই হরতাল ছাড়া যে সুন্দর মত হাটা যাবে। হরতালে হাটা যায়। হাটাহাটি করলে ইফতেখারের চিন্তা করতে সুবিধা হয়। ও ওর মত হেটে যায়, মাথা চিন্তার কাজ চালিয়ে যায়। ইফতেখারের মাথায় এখন যা ঘুরছে তা হল “নির্বাণ”। যেটাকে বৌদ্ধ ধর্মে বলা হয় সাধনার চরম প্রাপ্তি। যেখানে সকল ধর্মসমূহের মূল লক্ষ্য থাকে “স্বর্গ” লাভ করা সেখানে বৌদ্ধ ধর্মের মূল লক্ষ্য হল “নির্বাণ” লাভ করা।
অব্যক্ত, অনির্বচনীয়, তৃষ্ণার বিনাশই নির্বাণ। নির্বাণ সেই অবস্থা যেখানে জন্ম নেই, জরা নেই, ব্যাধি নেই, মৃত্যু নেই, শোক নেই, মনস্তাপ নেই, হতাশা নেই, এমনকি যেখানে পৃথিবী, জল, তেজ, বায়ু নেই। চন্দ্র-সূর্য গ্রহ নক্ষত্র এর সংস্থান নেই, অথচ অন্ধকারও নেই। যেখানে সংসার স্রোতের গতি রুদ্ধ হয়েছে, সেই পরম অবস্থাকে নির্বাণ বলে।
ইফতেখার বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ মেলে নি। বাবা মা’র সাথে মোটামোটি জোরাজুরি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে ভর্তি হয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভর্তির এক-দেড় বছর পর ইফতেখার বুঝে যায় এই জায়গা ওর জন্য নয়। ঠিক পোষায় না। মিল হয় না। খোরাক থাকে অপূর্ণ, থাকবেও। মনের সাথে মিল না হলে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছুই করার নেই এখন আর। ঘটে যাওয়া ঘটনা পাল্টানো যায় না। ইফতেখার সাত মসজিদ রোড দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ধানমন্ডির দিকে।
বৌদ্বধর্মে নির্বাণের বিষয়টি খুব একটা সুস্পষ্ট নয়। মহামতি গৌতম বুদ্ধ বিভিন্ন ধরনের আলোচনার মাধ্যমে নির্বাণ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ধারনা প্রদান করেছিলেন। বৌদ্বধর্মে চারটি আর্যসত্য আছে যা হল দুঃখ আছে। দুঃখের কারণ আছে, দুঃখ থেকে মুক্তির উপায় আছে এবং দুঃখ থেকে মুক্তি আছে। আর এই দুঃখ থেকে মুক্তির উপায় হল অষ্টাঙ্গিক মার্গ। যা হল সম্যক জ্ঞান, সম্যক সংকল্প, সম্যক বাক্য, সম্যক জীবিকা, সম্যক প্রচেষ্টা, সম্যক স্মৃতি ও সম্যক সমাধি। কেমন জটিল সব ব্যাপার স্যাপার। ইফতেখারের মাথা এখনও ব্যাপারগুলো আয়ত্ত করতে পারেনি। এই সম্যক বিষয়গুলো অনুশীলনের মাধ্যমে চূড়ান্ত মুক্তি বা নির্বাণ লাভ করা সম্ভব হয়। নির্বাণের অন্য অর্থ হল লোভ, দ্বেষ, মোহ বা তৃষ্ণাকে সমূলে ধ্বংস করা সেই সাথে জন্ম, মৃত্যু, প্রিয়, বিয়োগ, পঞ্চান্দ্রীয়া থেকে সকল প্রকার দুঃখ ঘোচন করে চিরমুক্তি লাভ করে যে বিমুক্ত লাভ করে তাই নির্বাণ। অন্যরকম এক জীবনবিধান মনে হয় ইফতেখারের। বেশ কঠিন হবে আয়ত্ত করতে।
ইফতেখারের ভাল লাগে সাধারণ জীবন যাপণ। যেমন জীবন যাপণ করতেন নবীজী। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) নিজেই ছাগল দোহন করতেন। তিনি নিজের কাপড় নিজের সেলাই করতেন। নিজের জুতা নিজেই মেরামত করতেন। এমনকি তিনি বহুবার ঘরের কাজও করেছিলেন। তিনি ছিলেন সারল্য এবং নম্রতার এক আদর্শ প্রতীক। তিনি মেঝেতে বসতেন, কোন দেহরক্ষী ছাড়াই বাজারে যেতেন। এমনকি যখন গরীব লোকেরা তাকে বাড়ীতে দাওয়াত করত, তিনি তাদের সঙ্গে বসে আহার করতেন এবং তারা যে খাবারই দিত তিনি খুব আনন্দের সাথে খেতেন। যদিও এসব কঠিন কিন্তু অসম্ভব না। আমরা কয়জন আছি যারা এভাবে জীবন ধারণের চিন্তা করি। সাধারণ কোন কিছুই আমাদের ভাল লাগে না। আমরা সবাই চাই অসাধারণ হতে। তা আমরা পারি বা না পারি। আমাদের সমাজে স্ট্যাটাস আগে, মানুষ পরে। ভাল পোষাক আগে, মানুষ পরে। অর্থসম্পদ গাড়ী বাড়ী আগে, মানুষ পরে। আর এসব যারা ভাবছে, অলিখিত নিয়ম বানিয়ে ফেলছে তারাও মানুষ। ইফতেখার নিজে এভাবে এক একটা হিসেব কষে, আর নিজেই বলে “ইন্টারেস্টিং”।
ইফতেখার হাটতে হাটতে চলে এলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬০-৭০ ফুট দূরে একটা মোটামোটি আকারের জটলা দেখা গেল। তাদের মুখে কোন শ্লোগান নেই। তাই বোঝা গেল না ওরা হরতাল সমর্থক না হরতাল বিরোধী। ওদিকে আর নজর না দিয়ে ইফতেখার বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পর্যন্ত চলে গেল, এগুলো চলতেই আছে, চলতেই থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের কাছে গিয়ে দেখলো গেটে ভাল মানের দুইটি তালা ঝুলছে। আশেপাশে কোন দারোয়ানকেও দেখা গেল না। ইফতেখার মুখে বিরক্তি সূচক শব্দ তুলে ঘুরে দাঁড়ালো। কাজ হল না। কিন্তু আজকে বাকিটুকু পড়তে পারলে বেশ ভাল হত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে জটলাটা আগের মতই দাঁড়িয়ে আছে। ভিতরের গুঞ্জন যে বাড়ছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। দুইজন চারজন করে এসে নতুন করে জটলাটার সাথে মিশে যাচ্ছে। তার থেকে বেশী দেখা যাচ্ছে আসে পাশের উৎসুক জনতার অভাব নেই। সবাই একটা আশংকা নিয়ে আছে যে কিছু একটা হতে পারে কিন্তু তাও দাঁড়িয়ে দেখছে যে কি হতে যাচ্ছে। রাস্তায় দুই চারটা সিএনজি চলছে। বেশ কিছু রিক্সা তো আছে সবসময়ের মত। মাঝে মাঝে দুই একটা গাড়ী আসছে যাচ্ছে। অনেক গাড়ীর চালক এই জটলাটার কাছে এলেই সাই করে জোরে টেনে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। গাড়ীর জীবন যেন হুমকির মুখে না পড়ে সেই চেষ্টা তাদের মধ্যে খুব সহজেই দেখা যাচ্ছে।
ইফতেখার এসব তাকিয়ে তাকিয়ে মাথা ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখে যাচ্ছে। জটলাটার ঠিক উল্টা পাশে বেশ কিছু টং দোকান। ইফতেখার ঐখানের একটি দোকানে চা টা খায়। টা খাওয়া শুরু করেছে বছর তিনেক। ধোঁয়ায় আলাদা কোন স্বাধ নেই বিষাদ ছাড়া। আর কোন বদঅভ্যাস নেই তাই এই অভ্যাস ছাড়ছে না। একটা বাজে অভ্যাস থাকা ভাল। ইফতেখার নির্দিষ্ট দোকানটার দিকে এগিয়ে গেল। “মামা, একটা চা দেন, আর একটা বেনসন দেন লালটা।” দোকানদার একটা চা আর সিগারেট এগিয়ে দিয়ে বলল “মামা আজকে কি আপনাগো ক্লাস আছে?”
ইফতেখার তাকিয়ে আছে সামনের রাস্তার দিকে। দোকানদারকে উত্তর দেয়ার আগেই রাস্তার উল্টা পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ৩০-৪০ জনের জটলাটা রাস্তার অনেকখানি জুড়ে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ করে শুরু হল তাদের কার্যকলাপ। তারা “হরতাল হরতাল” বলে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে শুরু করল। এর মধ্যে ৫-৬ জন মিলে তাদের হাতের বাঁশ দিয়ে দুই তিনটা রিক্সা পিটিয়ে ভাঙতে চেষ্টা করল। কয়েকজন মিলে একটা রিক্সা টেনে রাস্তায় ফেলে দিল। একজন কোথা থেকে যেন একটি বড় টায়ার এনে রাস্তার মধ্যে জ্বালিয়ে দিল পেট্রোল দিয়ে। ধাউধাউ করে আগুন জ্বলে উঠল সাথে ভাড়ী কালো ধোঁয়া। ২০-২৫ হাত দূরে আরও একজন আরও একটি টায়ার জ্বেলে দিল। আসে পাশের মানুষ দৌড়াঝাঁপ দিয়ে যে যার মত করে সরে যেতে থাকলো। আসে পাশের অসংখ্য দোকানপাটের শার্টার পড়তে থাকলো। অনেক মানুষ আবার নিরাপদে দাঁড়িয়ে থেকে সব দেখায় মগ্ন। কোথা থেকে যেন একটি টয়োটা গাড়ী এসে আটকা পড়ে গেল এই ঝামেলার মধ্যে। জটলার সাত আট জন চরম উৎসাহে লেগে গেল গাড়ী ভাংচুর করতে। প্রথমে বড় বড় ইট ছুড়ল, পরে লাঠি বাঁশ দিয়ে গাড়ীর গ্লাস ভাঙতে লাগলো। গাড়ীর চালককে দুইজন টেনে বের করে দিল। চালক বেচারা মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। ওর আর কিছুই করার থাকলো না।
সবাই যখন এসব দেখায় ব্যাস্ত ইফতেখারের চোখ তখন আটকে আছে হাফ প্যান্ট পড়া গায়ে ছেড়া গেঞ্জি জড়ানো একটি বার তের বছর বয়সের ছেলের দিকে। যে পিকেটারদের সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে হরতাল হরতাল বলে শ্লোগান দিয়ে যাচ্ছে আর রাস্তা থেকে কুড়িয়ে কুড়িয়ে ইট তুলে গাড়ীতে ছুড়ে মারছে। মাঝে মাঝে দৌড়ে গিয়ে গাড়ীতে লাথি মারছে।
কিছুক্ষণ এমনভাবে চলতে থাকার পর সাইরেন বাজিয়ে দুইটি পুলিশের গাড়ী এসে দাঁড়ালো। ধরতেই যদি আসে তবে সাইরেন বাজিয়ে কেন আসে ইফতেখার এখনও তা জানেনা। পুলিশের গাড়ী থামার সাথে সাথে পিকেটারদের যে যেদিক দিয়ে পারে পালাতে শুরু করে। পুলিশও তাদের পিছনে পিছনে এক হাতে লাঠি উঠিয়ে দৌড়াতে থাকে। এটা অনেক পুরান একটি দৃশ্য জন জীবনের। কমবেশী সবাই এর সাথে পরিচিত। এখানেও তাই ঘটলো। এসব দেখলেই ইফতেখারের বাংলা সিনেমার কথা মনে পড়ে। নায়ক ভিলেন মারামারি করতে থাকবে। আধা ঘণ্টা ধরে মারামারি চলবে। একসময় নায়ক ভিলেনকে মেরে ফেলতে উদ্যত হবে হাতে বন্দুক বা ছুরি নিয়ে। এমন সময় পুলিশ এসে একটি ফাঁকা গুলি করবে এবং সাথে তাদের সংলাপ হবে “আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।”
ইফতেখার আবারো সেই বাচ্চা ছেলেটার দিকে চোখ ফেরালো। সবার সাথে সাথে সে দৌড় দিল না। এমন ভাবে হেটে গেল যেন সে কিছু করেনি। যারা করেছে তারা দৌড়াবে। যারা কিছু করেনি তারা থাকবে সাধারণ আর দশটা দিনের মত। এবার ইফতেখার উৎসাহ বোধ করল। ঘটনা কি। ইফতেখার উঠে দাঁড়িয়ে ছেলেটাকে লক্ষ করতে থাকলো। ছেলেটা ধীরে হেটে রাস্তার পাশে গেল। সেখান থেকে সে একটি চটের বস্তা উঠিয়ে কাঁধে নিল। কাঁধে নিয়ে পাশে পড়ে থাকা দুইটি খালি কোল্ড ড্রিংসের বোতল তার চটের বস্তায় ঢুকিয়ে আসে পাশে আরো কিছু পাওয়া যায় কিনা খুঁজে দেখলো। কিছু না পেয়ে রাস্তা পাড় হল। কিন্তু একবারও আর সেই গাড়ীটার দিকে যেটা সে এতক্ষন ভাঙ্গার চেষ্টায় ছিল সেটার দিকে তাকালো না। এমনকি কোন মানুষের দিকেও তাকালো না। পুলিশের পাশ দিয়ে রাস্তায় কিছু খুঁজতে খুঁজতে রাস্তা পাড় হয়ে ইফতেখারের পাশ দিয়ে ভিতরের রাস্তার দিকে চলে যেতে থাকলো। ইফতেখারের বেশ মজা লাগলো এবার। ইফতেখার চায়ের কাপ আর দাম মিটিয়ে ছেলেটার পিছনে পিছনে হাটা শুরু করল।
ইফতেখার ছেলেরটার পিছনে পিছনে যাচ্ছে আর ওর কান্ডকারখানা দেখে মজা পাচ্ছে। এই ছেলে রাস্তা থেকে যা যা পারে উঠিয়ে তার বস্তায় ঢুকাচ্ছে। কোন বাড়ী থেকে একটা গামছা এসে রাস্তায় পড়েছে সেটাও ছেলেটা বস্তায় নিয়ে নিল। রাস্তার নিরিবিলি জায়গায় কোন গাড়ী পেলে আসে পাশে কেউ আছে কিনা দেখে নিয়ে গাড়ীর দরজা টেনে দেখছে। কোন গাড়ীতে যখন এলার্ম বেজে উঠছে গাড়ীর টায়ারে একটা লাথি মেরে দৌড়ে পালাচ্ছে। রাস্তার অলি গলির ভিতরে যে অর্ডার নিয়ে জুতা বানায় এমন এক দোকানের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে এক পায়ে একটা স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে হেটে কিছুদূর চলে গেল তারপর সেটা বস্তায় ঢুকিয়ে ফেলল। ইফতেখার যত দেখছে তত অবাক হচ্ছে। ছেলেটের কোন কিছুতে কোন ক্লান্তি নেই। একটার পর একটা করেই যাচ্ছে। পথচলাতেও কোন বিরতি নেই। প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা হাটার পর বস্তির এক ছোট চিপা দিয়ে হঠাৎ করে হারিয়ে গেল, সেখান দিয়ে যাওয়া আর ইফতেখারের সম্ভব হল না। কিন্তু যে কারণে ইফতেখার এতক্ষন ছেলেটার পেছনে পেছনে এলো সেটা আর জানা হল না। ইফতেখার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে যখন আর কোন সম্ভাবনা উপলব্ধি করতে পারলো না তখন সে বাড়ীর পথে হাটা শুরু করল।

তিনদিন পরের ঘটনা। ইফতেখার বাড়ি থেকে বের হয়েছে মাথায় কিছু এলোমেলো চিন্তা ভাবনা নিয়ে। গতকাল সন্ধ্যার পড়ে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা খুব পীড়াদায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে গলার কাছে। একবার ভাবছে প্রতিবাদ করা উচিত ছিল, একবার নিজেকে বকছে প্রতিবাদ কেন করলাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে একটি রিক্সা নিয়ে নিজের ভাবনার মধ্যে বুঁদ হয়ে রইলো।
আমাদের মানে আমাদের ছোট বেলা থেকে ইতিহাস জানানো নিয়া তো বিশাল ঘাপলা আছে। আমার কাছে ঘাপলা লাগে। পুরো স্কুল জীবনে পাঠ্য পুস্কক পড়ে মানে ১০ বছর লেখা পড়া শেষ করার পর আমরা জানতে পারি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান আমাদের জাতির পিতা, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে, ধর্ষণ হয়েছে। কিন্তু এই কি শুধু আমাদের ইতিহাস? বাস হয়ে গেল? আমরা এখন স্বাধীন। শেষ? আর কোন মানুষ সেই সময় হিসেবে ছিল না? আমাদের ইতিহাস এখানে শেষ?
স্কুল কলেজে এখন চলছে সৃজনশীল লেখালেখি পদ্ধতি। কি আছে এটার মধ্যে আল্লাহ মালুম। একটা একটা আইন্সটাইনের বাচ্চা হয়ে স্কুল থেকে পাস দিবে। অতটুকু বাচ্চা জানে কি? ও সৃজনশীলের কি বোঝে? সৃজনশীলতার জ্ঞান কি ঐসব ছেলেমেয়েদের মধ্যে আছে? সেটাকি আমরা ভেবে দেখেছি?
এখন প্রতি বছর গোল্ডেন এ প্লাস পায় প্রায় দেড় লক্ষ ছেলেমেয়ে। বর্তমান এই গ্রেডিং সিস্টেমের সাথে একমত হতে পারছি না। এই সিস্টেমের কোথায় জানি ঘাপলা আছে। একটা বিশাল ঘাপলা আছে। জাতিটারে বলদ বানানোর একটা বিশাল পদক্ষেপও বলা যেতে পাড়ে। এই দেড় লক্ষ ছেলেমেয়ে সর্বোচ্চ গ্রেডের অধিকারী। এদের জন্য পর্যাপ্ত কলেজ কই? পর্যাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় কই? ঢাকা শহরে হাজার খানেক কলেজ আছে একটা বিল্ডিং এর দুইটা ফ্লোর ভাড়া নিয়ে গড়ে উঠছে। প্রচুর বিশ্বাবিদ্যালয় একই পদ্ধতিতে গড়ে উঠেছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিষ্টারে বা দুই সেমিষ্টারে বা এক বছরে বিবিএ শেষ করে দিচ্ছে। টাকা দিয়েই সার্টিফিকেট পাওয়া যাচ্ছে। বাস এইটাই কলেজ? এইটাই বিশ্ববিদ্যালয়? এইখানে ছেলেমেয়ে গুলো কি পড়বে? শিখবেটা কি? এদের মানসিক বিকাশের জায়গা কই? মানসিক বিকাশ কি খুব জরুরী বিষয় না যে কোন দেশের জন্য? দেড় লক্ষ ছাড়া বাকি ছাত্রছাত্রী কই? পরীক্ষা তো দিচ্ছে আট দশ লক্ষ করে। মানুষের লিস্টে আছে তো? ওদের ভবিষ্যত কোথায়?
স্কুল কলেজে প্রচুর স্যার ম্যাডাম আছে, তারা ছাত্রছাত্রীদের তাদের কাছে এখন প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে। না পড়লেও উপায় নাই। ফেল করিয়ে দেবে। ছাত্রছাত্রীরা মোটামোটি বাধ্য হয়ে ভেড়ার পালের মত স্কুলে যায়, সেখান থেকে ভেড়ার পাল যায় প্রাইভেট পড়তে। এক, দুই, তিন জায়গায়। বাসায় ফিরলে বাপ মা দেখা যায় একটা পাইভেট টিউটর রেখে দিয়েছে। ছেলেমেয়ে গুলো এই বছরই প্রধানমন্ত্রী হয়ে স্কুল পাশ করবে। স্মার্ট বাবা মা। কিন্তু কি শিখে স্কুল কলেজ শেষ করছে এই সব ছেলে মেয়ে সেগুলো কি আমাদের ভেবে দেখা উচিত নয়?
ম্যানারিজম বা আদব কায়দা দেখা যায় খুব কম এখন। বাবার বয়সী লোকের সামনে সিগারেট টানে। দাদার বয়সী যারা ওদেরকে দেখে আবর্জনার মত। এসএসসি পাশ করলে এইসব ছেলেমেয়ে বাসায় ঢোকে রাত ৭-৮ টায়। এইচএসসি পাশ করলে ১০-১১ টায়। পকেটে এক একজনের গোল্ডেন এ প্লাস। কোন জায়গায় চান্স পায় না হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী। খেলার মাঠে বসে গোল হয়ে গাঁজা খায় অনেকে। ম্যানার বলে কোন কিছু এদের মধ্যে নাই। রিক্সাওয়ালারা ওদের কাছে অন্য কিছু, মানুষ না। ৫০ বছরের বেশি বয়সী একজনকে মারতে দেখেছি নিজের চোখে। ছেলের বয়স ২৫ ও হবে কি না কে জানে! এই হলো এদের শিক্ষা। সেভেন-এইটে পড়ে একটা বাচ্চা মেয়ের বয়ফ্রেন্ড না থাকলে বান্ধবীর সংখ্যা দিন কে দিন কমতে থাকে। এইটাও তাদের শিক্ষা। এটাও নিজের চোখে দেখা। সঠিক শিক্ষার সঠিক ছাপ তো সব জায়গাতেই পরার কথা। কিন্তু এমন সব ঘটনা কি এটা বলে দেয় না যে ওরা সবাই পাশ করেছে কিন্তু শিক্ষিত হয়নি! নাকি শুধু পরীক্ষা পাশেই সবাই শিক্ষিত হয়ে যায়? আমাদের কি এগুলো আসলেই ভাবা উচিত নয়?
সবাই আধুনিক হতে চায় এখন। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে? আমাদের সংস্কৃতিও কি আমাদের শিক্ষা হওয়া উচিত নয়? আমরা কেন ধার করা সব কিছু নিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি ভরিয়ে তুলবো? এর কারণ একটাই, আমাদের মধ্যে আমাদের সঠিক ইতিহাস নেই। আমরা যদি আমাদের গোড়াপত্তন আমাদের মাথায় রাখতাম, আমরা আমাদের অতীত সন্মান করতাম, অতীত থেকে শিক্ষা নিতাম, আমাদের রুট জানতাম, আমাদের জাতীয়তাবোধ তৈরি হত, নিজেদের মানুষকে ভালবাসতে শিখতাম, তবেই মানুষ হতাম। শিক্ষিত হতাম। অতীতের প্রতি আমাদের সন্মান নেই বিধায় বর্তমানে আমাদের কোন সন্মান নেই। ইন্টারেস্টিং।
এসব ভাবতে ভাবতে ইফতেখার রিক্সা থেকে নেমে একটা আইসক্রিম কিনে বসে বসে খাচ্ছে। আসলে নির্বাণ লাভ করা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব না। লোভ লালসা কামনা বাসনা আকাঙ্ক্ষা ইচ্ছা স্বপ্ন আশা ভরসা প্রেম ভালবাসা চাহিদা এগুলো ছাড়া মানুষ কই। একজনও তো বোধ হয় পাওয়া যাবেনা। তবে নির্বাণ লাভ করতে পারলে অশান্তিতে থাকার প্রশ্নটা হয়ত আর পৃথিবীতে থাকবে না।
ক্লাস শুরু হতে আরও কিছু সময় বাকি আছে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ইফতেখার সেই দিনের সেই ছেলেটাকে দেখতে পেল। ওর সামনে দিয়েই গেল। পড়নে সেই দিনের সেই প্যান্ট আর ছেড়া গেঞ্জি। তাকিয়ে রইলো ইফতেখার। ছেলেটি অল্প একটু দূরে ফেলে রাখা ময়লা থেকে নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজছে।
ইফতেখার ছেলেটিকে ডাকল। ইতিমধ্যে ইফতেখারের হাতের আইসক্রীমের জন্যই বোধ হয় ছেলেটি ইফতেখারের দিকে তাকিয়েছে। একবার আইসক্রিমের দিকে একবার ইফতেখারের মুখের দিকে। ইফতেখার কিছুক্ষণ এভাবে চলতে থাকার পর ডাকল “এই ছেলে শোন”। ছেলেটি এগিয়ে গেল। ইফতেখার কিছু না বলে আইসক্রিম খেয়ে যাচ্ছে। ছেলেটি সেদিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, “কিছু কইবেন?”
ইফতেখারঃ তোমার নাম কি?
ছেলেঃ আপনের দরকার কি?
ইফতেখারঃ এমনি জানতে চাইলাম, বলো, কি নাম তোমার?
ছেলেঃ আজাদ।
ইফতেখারঃ বাহ। অনেক ভাল নাম। আজাদ নামের অর্থ জানো? আমি তোমাকে অনেকদিন ধরে খুঁজছি।
আজাদঃ ক্যান?
ইফতেখারঃ কথা বলার জন্য।
আজাদঃ কন।
ইফতেখারঃ তুমি হরতালের দিন গাড়ীটা ভাঙলে কেন?
আজাদঃ আমি একলা ভাঙছি নাকি।
ইফতেখারঃ না, তা ভঙ্গোনি। তুমি কি হরতাল কর?
আজাদঃ না, আমি হরতাল করমু ক্যান? আমারে টেহা দেয় না।
ইফতেখারঃ টাকা দিবে কেন?
আজাদঃ ওমা হরতাল করলে টেহা দেয় তো, জানেন না? মাগনা যাইবো নি মানু হরতাল করতে? টেহা দেয় হেই লাইগাই তো যায়।
ইফতেখারঃ তাহলে তোমাকে দেয় না কেন?
আজাদঃ আমি ছোড। ছোড গো কেউ টেহা না, খালি ঠগায়।
ইফতেখারঃ তাহলে তুমি গাড়ী ভাঙলে কেন? হরতালও কর না তাহলে গাড়ী ভাঙতে গেলে কেন?
আজাদঃ গাড়ী কি আপণের?
ইফতেখারঃ না আমার না।
আজাদঃ তাইলে এত কতায় লাব কি? যাইগা।
ইফতেখারঃ আরে শোন, এমনেই বল। আমি কাউকে বলবো না।
আজাদঃ আপণে কইলেই কি? আমি কাউরে ডরাই না। ভাঙছি আরো ভাংমু।
ইফতেখারঃ কেন?
আজাদঃ ওরা আমার মায়রে মারছে।
ইফতেখারঃ কে?
আজাদঃ ঐ গাড়ী আলারা।
ইফতেখারঃ তুমি ওদের চেন? যাদের গাড়ী ভাঙলে?
আজাদঃ না এইডারে চিনি না। যেইডা মারছে হেইডারে চিনি।
ইফতেখারঃ তাহলে ঐ গাড়ী ভাঙলে কেন?
আজাদঃ যারা মারছে ওগো তো গাড়ী আছে। হালার সব গাড়ী আলা এক রহম। ওগো বাড়ী মায় কাম করে নাই তাই মারতে পারে নাই। কাম করলেই মারতো।
ইফতেখারঃ এই জন্যে তুমি এই কাজ করলে? শোন কাজটা তো ঠিক না। এই রকম আর কইরো না।
আজাদঃ ভাল করছি। আরো ভাংমু। মায় রে গরম কি দিয়া জানি ছ্যাক দিসে এহনও দাগ আছে গায়। আমি একদিন খাইতে চাইছিলাম দেইখা আমার প্যাডে লাতি মারছে। আরো ভাংমু। পাইলেই ভাংমু। মোরা খাইতে পারি না আর হেরা গাড়ী চইরা বেড়ায়, ফুডানি ছুডায় দিমু।
ইফতেখারঃ শোন, তুমি আর ভেঙ্গো না। তোমার বাবাকে বল। তোমাকে তো একদিন ধরবে, ধরলে তো অনেক মারবে। তুমি তোমার বাবাকে বল, উনি ওদের যা করার করবেন। কিন্তু তুমি আর এই কাজ কইরো না।
আজাদঃ আমার বাপ নাই।
ইফতেখারঃ কোথায় উনি?
আজাদঃ আমাগো থুইয়া গেসেগা। বিয়া করছে আরেকটা। রিক্সা চালায়। একদিন অরেও ...
ইফতেখারঃ শোন আজাদ এগুলা কোরো না। এগুলো করা ঠিক না। অন্যায় মানে খারাপ কাজ এগুলো। এখন বুঝবে না। বড় হলে বুঝবে। তুমি এক কাজ করো বড় হওয়া পর্যন্ত আর ওসব কাজ কোরো না। বড় হওয়ার পর যদি তোমার মনে হয় এগুলো করা ঠিক কাজ তখন না হয় আবার গাড়ী ভেঙ্গো। ঠিক আছে?
আজাদঃ আমারে একটা আইসক্রিম কিইন্না দেন, আমি বাড়িত যামু।
ইফতেখার বুঝলো এই ছেলেকে আপাতত আর বোঝানো সম্ভব না। বক্র ছেলে বোধ হয় একেই বলে। ইফতেখার দোকানে ঢুকলো আইসক্রিম কিনে আনতে। আইসক্রিম কিনে এনে আজাদের হাতে দিল। ইফতেখারে ক্লাসের সময় হয়ে যাচ্ছে। এখন যাওয়া দরকার। ইফতেখার আজাদকে কাছে টেনে এনে বলল, “আজাদ আসলেই এই সব কোনটাই ঠিক না। এগুলো আর কোর না কেমন? আর শোন মাঝে মাঝে এখানে এলে আমাকে পাবে। ঐ যে বিল্ডিংটা ওইটাতে আমি পড়ি। তোমার সাথে আবার দেখা হবে। তুমি মাঝে মাঝে এসে আমার সাথে দেখা করবে। আমি তোমাকে আইসক্রিম খাওয়াবো। কিন্তু শর্ত একটাই তোমাকে যা যা করতে মানা করলাম তা করবে না।”
আজাদের মনোযোগ এখন শুধু আইসক্রিমের দিকে। সে খুব যত্ন সহকারে আইসক্রিমের কাগজ ছিড়ছে। “খালি হরতালের দিন ভাংমু, হরতালের দিন ভাঙলে কেউ আমারে ধরতে পারবো না” বলে সব গুলো দাঁত বের করে একটা হাসি দিয়ে “আইজকা যাই” বলে উল্টা পথে হাটা দিল।
ইফতেখারও হাসি মুখে বিশ্ববিদ্যালয় নামক বিন্ডিংয়ে যাওয়ার জন্য হাটা শুরু করল।
৩টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×