আজ বোধ হয় রাশ পূর্ণিমার পরের রাত । এরকম রাত গুলো পৌরাণিক কাহিনীর মত রহস্যময় হয় । তেপায়ার উপরে রাখা সলতে বাতির তেল শেষ হয়ে এসেছে । লাবণ্যর খাটে জাজিম নেই । একটা শীতল পাটি । মাথার নীচে টুকরো কাপড়ে ঠাসা পাথরের মত শক্ত বালিশ । মাসীমার হেঁসেলে চচ্চড়ে শব্দে রাতের আয়োজনের ঘোষণা দিচ্ছে । হয়ত লইট্টা বা চ্যাপার মেনু । বহুদিন থেকেই লাবণ্যের শরিরী বাজারে সেই ঢল নেই । মাসির কাল শেষ হয়েছে আরও অনেক আগে । আগামী রাতে হয়ত পেট পূর্তির কোন আয়োজনই থাকবে না।
কোন এক রাশ পূর্ণিমার রাতে শুভেন্দু নামের ছেলেটি ঘর পালানো লাবণ্যের কপালে সিঁদুর পরিয়েছিল । পরের ঠিক এই রাতটিতে এই ঠিকানায় রেখে বলেছিল, আসছি । সেই যে গেল আর এল না । যাবার বেলায় সিঁদুর মুছে যায়নি । তাই এখনো সিঁথিতে রক্ত রঙটা জ্বলছে ।
ঘর চিতুইটি আজো দেওয়ালে ছায়া ফেলে সড়সড় করে চলে গেল । লাবণ্য সেদিকে চেয়ে হাত জোড় করে,
প্রভু, একজন খদ্দের পাঠাও ।
দরোজায় টুকটুক শব্দ হচ্ছে । লাবণ্যের মুখে শেষ বিকেলের রোদ্র । দুজনেরই উদ্দেশ্য ক্ষুধা মেটানো । তবে লাবণ্যের ক্ষুধার সাথে দরোজার ওপাশে যে পুরুষটি দাঁড়িয়ে আছে তার ক্ষুধার ব্যবধান যোজন যোজন ।