জাপানে এক চারুকলার ক্লাসে এক ছাত্র মনের ভুলে রং-পেন্সিল আর ছবি আকাঁর কাগজ ছাড়াই উপস্থিত হয়ে লজ্জা পাচ্ছিল যে, শিক্ষক কি যে বলবেন তার ভুলোমনের জন্য। যথারীতি শিক্ষক এলেন ক্লাসে। ঐ ছাত্রের কাছে রং-পেন্সিল আর ছবি আঁকার কাগজ না থাকায় শিক্ষক খুব বিনীতভাবে বললেন যে-" শিক্ষক হিসাবে আমারই ব্যর্থতা যে এই ক্লাসের গুরুত্ব তোমাকে আমি বোঝাতে পারিনি। তাই তুমি রং-পেন্সিলগুলো আনতে ভুলে গেছ। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে আমি আরো সচেতন হবো।"
এবার বাংলাদেশের রাজশাহী ভার্সিটির আইন বিভাগের ১৯৯৯ সালের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার খাতা দেখা প্রসঙ্গে বলি। পরীক্ষা কমিটির কয়েকটা শিক্ষক নামধারী জানোয়ার রা ৪৫ জনেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে "এডমিন ল"তে ১০০ এর মধ্যে ২৫এর আশপাশের নাম্বার দিলো। আমার মতন ১৫-১৬ জন মহাভাগ্যবানদেরকে ১০০ এর মধ্যে ১০-১২ করে দেয়া হলো; ক্র্যাশ যাকে বলে আর কি!!! সেলুকাস-- অবাক!! বর্ণনামূলক লেখে যাবার মতন একটা সাবজেক্টে ১০০ এর মধ্যে ১০-১২ পাওয়া? তাও চতুর্থ বর্ষের মতন ফাইনাল ইয়ারে, যে রেজাল্টের উপর ভবিষ্যত নির্ভর করছে? এটা যতটা না বিস্ময়ের; ততটাই ঐ খাতা দেখা শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহের। জীবনে কখনো মদগাঁজা খাইলাম না; শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করলাম না; পলিটিক্স করলাম না; ক্যাম্পাসে কোন ক্রিমিনাল অফেন্স করলাম না; তয় কেন ১০০ এর মধ্যে ১০-১২ পাবো..!! ঐ বেজন্মা শিক্ষকদের জন্য আমাদের ভবিষ্যত জীবনটাও ঝুলে গেল। আমার খুব 'মানুষ' হতে শখ হয়। তা হয়ত আর সম্ভব না ইহজীবনে; কারণ ঐ শিক্ষকরা যথারীতি 'মানুষ' হবার কোটা নিজেদের জন্য পূরণ করে ফেলেছে...!!
ঐ শিক্ষকদের এই সর্বনাশা যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য কোন তদন্ত কমিটি হয়নি। এতগুলো ছাত্রের ভবিষ্যত নষ্ট করে দেবার জন্য কর্তৃপক্ষও কোন প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয়নি। কোনদিন ক্ষমা প্রার্থনাও করেনি।
তবে একজন সহপাঠী মান্নান Abdul Mannan Bhuyean একা একাই মামলা করেছিল; ৮ বছর মামলা চালিয়ে যাবার পর জিতেছিলোও রাজশাহী ভার্সিটির বিপক্ষে। আমরা জানতে পারিনি ঐসময়; তাই মামলায় পক্ষভুক্তও হতে পারিনি। আমার দুর্ভাগ্যটাই খারাপ...!!!
কেন, কেন আমি জাপানে জন্ম নিলাম না...!!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:২৪