somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"দুইজন নাস্তিক ও আস্ততি এর মধ্যে কথোপকথ"

২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দয়াকরে কেউ নিজের গায়ে মেখে নিবেন না। কাল্পনিক............
মোঃ সানোয়ার হোসেন

আস্তিকঃ তোমার কাছে কি মনে হয় যে মানুষের সৃষ্টি কিভাবে??

নাস্তিকঃ তুমি যদি বই পড় তাহলেই অনেক কিছু জানতে পারবে। বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে মানুষ বানর থেকে এসেছে। ডারউইনের সুত্র তাই বলে!!

আস্তিকঃ তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছ পৃথিবীতে সব মানুষ বানর থেকে এসেছে?? আচ্ছা ঠিক আছে... তাহলে বানর এসেছে কি ভাবে??

নাস্তিকঃ আসলে যখন ডাইনোসরের যুগ ছিলো তখন ডায়নো সরের বিবর্তনে বানর থেকে শুরু করে সব প্রানীর কাঠামো এসেছে। এটা বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে বা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আস্তিকঃ বুঝলাম! ডায়ানোসরের উৎপত্তি কিভাবে? তারা কার থেকে এসেছে?

নাস্তিকঃ আসলে !(একটু চিন্তায় পড়ে গেছে) কোটি কোটি বছর বিবর্তনের মাধ্যমেই তাদের উদ্ভব আরকি।। হেহেহে!

আস্তিকঃ আমার প্রশন সেটা ছিলো না। যেমন মানুষ কাঠামোগত দিক থেকে যদি বানর থেকে আসে তবে ডায়ানোসরের কাঠামোগত দিক থেকে কার থেকে এসেছে??

নাস্তিকঃ আসলে দেখো প্রথমে এই পৃথিবী কিছুই ছিলো না। বিগ ব্যাং নামক মহা বিস্ফোরনের মাধ্যমে শক্তির বিকিরন ঘটে। চার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। শক্তি বিকিরিত হতে হতে গ্রহের সৃষ্টি ও গ্রহে ঠান্ডা হয়ে পানির সৃষ্টি। সেই পানি থেকে অ্যামিবা নামক অণুজীবের সৃষ্টি। সেখান থেকেই বিবর্তনের মাধ্যমে সকল জীবের সৃষ্টি। এইসব জ্ঞানের কথা।

আস্তিকঃ তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছ যে বিশাল বিশাল ডায়ানোসরের জন্ম অতী ক্ষুদ্র একটা অণুজীবের থেকে?? আমার প্রশ্ন এটা কিভাবে সম্ভব??

নাস্তিকঃ আসলে এটাই বিবর্তন...
আস্তিকঃ কিন্তু তোমার যুক্তি কি তাই বলে??
আস্তিকঃ ঠিক আছে । তোমার আগের প্রশ্নটার থেকে আসা যাক। তুমি বলেছ মানে বিজ্ঞান বলছে বিগ ব্যাং থেকে মহা বিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের উৎপত্তি। ঠিক আছে আমিও এটা বিশ্বাস করি। আমার প্রশ্ন হলো বিগ ব্যাংরের আগে কিছিল??
নাস্তিকঃ বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, ইস্টিফেন হকিঞ্চ হিসাব কষে প্রমাণ করেছেন যে , মহা বিস্ফোরণের আগে এই মহাবিশ্বে কিছুই ছিল না। এমনকি সময় পর্যন্ত ছিলো না। সকল শক্তি একটা ক্ষুদ্রতম বিন্দুতে পুঞ্জিভুত ছিলো। বিন্দুটি অনেক ভারী ও গরম ছিলো। তার পর বিস্ফোরণের ফলে শক্তির বিকিরনের মাধ্যমে সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে।
আস্তিকঃ এসব একজন বিজ্ঞানীর মতভেদ। তাহলে আমাকে বলো ঐ বিন্দুর আগে কী ছিলো??
নাস্তিকঃ কিছুই ছিলো না।
আস্তিকঃ তার মানে তুমি বলছ জীবনের উৎপত্তি হলো শূন্য থেকে??
নাস্তিকঃ বিজ্ঞান তো তাই বলে। !
আস্তিকঃ এবার ইসলাম কী বলে শোন। মহান আল্লাহ্‌ মহা বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন মাত্র ছয় দিনে। আল্লাহ্‌ কোরআনে বলছেন,
“তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনি সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন। (১০ : ০৩)”
“আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (৫৯ : ২৪)”
“ যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে অনস্তিত্ব হতে অস্তিত্বে আনায়ন করেন এবং যখন তিনি কিছু করবার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন শুধু বলেন হও, আর তা হয়ে যায়। (২: ১১৭)”
“যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখে না যে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে, তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না? (২১ : ৩০)”
নাস্তিকঃ এসব তো জাদু মনে হচ্ছে। হাহাহা যুক্তি কোথায়??
আস্তিকঃ(নাউযুবিল্লাহ) আসলে এটাই আল্লাহর প্রতি আমাদের বিশ্বাস। তমার একটা কথায় প্রতিয়মান হয় যে তুমি বলেছ পানি থেকেই সব সৃষ্টি, বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে সেটা ১৭ ১৮ শ দশকে এসে। অথচ এই একই কথা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন বলেছেন ১৪ শ বছর আগে। জ্ঞানী কে??
নাস্তিকঃ তুমি মৌলবাদী…
আস্তিকঃ মৌলবাদী অর্থ কী??
আস্তিকঃ আমার ও বলছি মৌলবাদী এর অর্থ কি?
নাস্তিকঃ ইসলামিক সন্ত্রাসী ক্ষেত্রেই ব্যাবহার করা হয়।
আস্তিকঃ না কথাটা ঠিক না। মৌলবাদী অর্থ হলো… মৌল শব্দের অর্থ মূল বা শীকড় আর বাদী শব্দের অর্থ পক্ষে বা সমর্থন করা। সে ক্ষেত্রে দুটা শব্দের একত্রে অর্থ দারায় মূল ধারার পক্ষে। তার মানে হল আমরা ইসলামের মূল ধারার পক্ষে। সে ক্ষেত্রে এই শব্দকে সন্ত্রাসের পক্ষে ব্যাবহার করা একেবারেই উচিৎ নয়।
নাস্তিকঃ তুমি বললেই হল। আমরা তাহলে ভূল জানি??
আস্তিকঃ বাংলা অভিধান দেখে নিতে পারো তাহলে।
নাস্তিকঃ তাহলে ইসলাম কি হত্যা সমর্থন করে? জঙ্গী সংগঠন গুলো বিনা বিচারে মানুষের গলা কর্তন করে কেন??
আস্তিকঃ ভালো প্রশ্ন। আমি বলব না ইসলাম বিনাবিচারে হত্যা সমর্থন করে না। ইসলামে এটা কঠোরভাবে নিষেধ আছে। আল্লাহ্‌ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন, “ যে ব্যাক্তি অন্যায় ভাবে একজন মানুষ হত্যা করল সে যেন সমস্ত মানব জাতীকেই হত্যা করল।”
নাস্তিকঃ তাহলে জঙ্গী সংগঠন গুলো হত্যা করছে কেন?? ওরা কি তাহলে তোমার আল্লাহ্‌র কথার অবাধ্যতা করছে না??
আস্তিকঃ হ্যাঁ! যদি সেটা বিনাবিচারে বা অন্যায় ভাবে হয়ে থাকে তবে অবশ্যই অবাধ্যতা করছে। তবে তোমার পূর্ন ইতিহাস জানা দরকার।
নাস্তিকঃ কী সেই ইতিহাস?
আস্তিকঃ অবশ্যই আমি যুক্তি দিয়েই তা প্রমাণ করব।

নাস্তিকঃ তুমি যে বলেছিলে কি যেন ইতিহাস বলবে? বল দেখি তোমার ইতিহাস শুনি!
আস্তিকঃ ধন্যবাদ। শোন তাহলে…। এটা ১৯৪৭ এর পরবর্তি ঘটনা। প্রায় আটশ বছরের মোঘল সমরাজ্যের পতনের পর ব্রিটিশরা ভারত উপমহাদেদশ নিজেদের দখলে নেয়। কিন্তু মাত্র দুশবছর শাসন করার পর ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা এ উপমহাদেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। ওরা ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মায়ানমারের কিছু অংশ দখল করতে পেরেছিলো মাত্র। কিন্তু ভারত পাকিস্তান সীমান্তবর্তি আফগানিস্তান ও ইরাক দখল করতে পারেনি। তার কারন আফগানিস্তান তখনো সোভিয়েত ইউনিয়েনের অন্তর্ভূক্ত ছিলো। অর্থাৎ রাশীয়া বরাবরই মুসলিমদের প্রতি নমনীয় ছিলো, এমনকি এখনো রাশিয়ানরা মুসলিমদের সম্মান করে চলেছে। এবং রাশীয়ার যে মদদপুষ্ট আফগানিস্তান ছিলো সেটা ইউরোপীয় বা আমেরিকার সহ্য হচ্ছিলো না। তাই ব্রীটিশরা এ উপমহাদেশে থাকা কালীনি তৎকালীন আফগানিস্তানের বাদশা আমানুল্লাহর পতন ঘটানোর জন্য গুপ্তচর কর্নেল লরেঞ্চের নেত্রিত্তে শুরু হয় আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। (সূত্রঃ হতভাগ্য বাদশা আমানুল্লাহ- আনিস সিদ্দিকি , প্রকাশ কাল ১৯৭২ সাল।) ইউরোপ বা অ্যামেরিকার মূল উদ্দেশ্য ছিলো যেহেতু ভারত উপমহাদেশ ছাড়তেই হবে সেহেতু মুসলিমদের বিভাজন সৃষ্টি করে সোভিয়েত ইউনিয়নকে দূর্বল করাই ছিলো ওদের মূল উদ্দেশ্য। তাই ৪৭ পর্বতিতে কিছু তরুণ মুক্তিকামী সংগ্রামী তৈরি করল আফগানিস্তানের অভ্যান্তরে সু কৌশলে। যার বীজ বপন করেছিল বাদশা আমানুল্লাহর আমলেই। ঐ মুক্তিকামীদের নাম দেয়া হলো তালেবান। তালেবান শব্দের অর্থ মুক্তিকামী বা স্বাধীনতা কামী সংগ্রামী। যেমন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়েছিলো, তেমনি ঐ তালেবানরাও রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ করে আফগানিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে। কিন্তু এই তরুণ তালেবান সংগঠন এতো অস্ত্র পেলো কোথায়? তার উত্তর… অ্যামেরিকা ও এর মিত্র দেশরাই তালেবানদের অস্ত্র সর্বরাহ করেছিল রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের সময়, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আফগানিস্তান আলাদা হলো। ওদের উদ্দেশ্য ছিলো রাশিয়াকে দুর্বল করা ও আফগানিস্তানকে নিজেদের কুক্ষিগত করা।।
নাস্তিকঃ এসব গাঁজাখুরি গল্পই মনে হচ্ছে।
আস্তিকঃ না এসব গাঁজাখুরি নয়… তুমি নিয়মিত বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকীয় বিদেশি কলাম পড়লেই জানতে পারবে।
নাস্তিকঃ তার পর কি হল?…
আস্তিকঃ হা বলব… নামাজের সময় হয়ে এলো। আমি নামাজটা পড়ে আসি।
_____________________________________________________________চলব_________

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬
১১টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×