somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গাদীর একটি ঐতিহাসিক স্থান ও একটি ঐতিহাসিক ঈদ দিবস[/sb(পূর্ব প্রকাশের পর)

২৩ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত খলিফা বা প্রতিনিধিঃ
শিয়া মাযহাবের বিশ্বাস অনুযায়ী, রাসূলের (সাঃ) খলিফা বা প্রতিনিধির দু'ধরণের দায়িত্ব বা কর্তব্য রয়েছে; যথা- (ক) বাহ্যিক শাসন ও (খ) আধ্যাত্মিক শাসন।
(ক) বাহ্যিক শাসন
অর্থাৎ শাসন পরিচালনা, আইনের বাস্তবায়ন অধিকার সংরক্ষণ, ইসলামের সংরক্ষণ ইত্যাদি। এক্ষেত্রে খলিফা বা প্রতিনিধি অন্যান্য শাসকদের মতই শুধু এতটুকু পার্থক্য যে, সামাজিক ন্যায়পরায়ণতা রক্ষা করা ইসলামী শাসন ব্যবস্থার একটি বৈশিষ্ট্য ও আবশ্যক কাজ।
(খ) আধ্যাত্মিক শাসন
আধ্যাত্মিক শাসন এই অর্থে যে, খলিফা বা প্রতিনিধির কর্তব্য হচ্ছে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয়গুলি (যা কোন কারণে বলা হয়নি) মুসলমানদের নিকট তুলে ধরা।
খলিফা বা প্রতিনিধি একজন শাসকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অবশ্যই ইসলামী বিধি-বিধান ও কোরআনের তাফসীর বা ব্যাখ্যাও জনগণের সামনে বর্ণনা করবে যাতে রাষ্ট্রকে যে কোন পথভ্রষ্টতা থেকে রক্ষা করে বিভিন্ন ধরণের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব হতে মুক্ত করতে পারে। সুতরাং খলিফাকে অবশ্যই রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে সর্বজ্ঞ হতে হবে। অর্থাৎ সবার চেয়ে বেশি নবীর প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের ঝর্ণা ধারা হতে পানি পান করে জ্ঞান ও মহান রাসূলের (সাঃ) বিদ্যমান থাকাকালীন সময়ে যথেষ্ট পরিমাণ তাঁর থেকে লাভবান হওয়ার সৌভাগ্যের অধিকারী হতে হবে। অনূরূপভাবে এটাও জরুরী যে, সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে, নিজের স্বার্থের উপর মুসলমানের ও ইসলামের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দ্বীনকে রক্ষার জন্য আত্মোৎসর্গ করার দৃষ্টান্ত থাকতে হবে।
খলিফার শাসনকার্যের ক্ষেত্রে মুসলমানের সমস্ত সম্পদের উপর তার শাসন কর্তৃত্বের অধিকার থাকবে বিশেষ করে খুম্‌স, যাকাত, ট্যাক্স বা রাজস্ব, যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বা গণিমত, খনিজ ও অন্যান্য সাধারণ সম্পদ ইত্যাদি যা খলিফার অধীনে থাকবে এবং খলিফার দায়িত্ব হচ্ছে এগুলোকে কোন প্রকার অনিয়ম ছাড়াই জনগণের মাঝে বিতরণ করা; অথবা ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণকর কোন কাজে লাগানো। সুতরাং তাকে অবশ্যই দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত হতে হবে যাতে সহিসংসতার সময় যেন হোঁচট না খায়। ঠিক এই দলিলের ভিত্তিতেই খেলাফত হচ্ছে আল্লাহর পক্ষে থেকে নির্ধারিত যা তাঁর পক্ষ হতে উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বজ্ঞানী ব্যক্তিকেই প্রদান করা হয়। তাই ঐ পবিত্র পদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কিছুই নাই।
অন্যভাবে বলা যায়, খেলাফত নিয়োগকৃত এমনই একটি পদ যা মানুষের ভোটের কোন প্রভাব তাতে নেই। এরই ভিত্তিতে রাসূলের (সাঃ) স্থলাভিষিক্ত নির্ধারণের জন্য অবশ্যই দলিল ও নির্দেশের উপর নির্ভর করবো এবং রাসূলের (সাঃ) বাণীসমূহ যা এই সম্বন্ধে বর্ণিত হয়েছে সেগুলো ন্যায়-ইনসাফের সাথে পর্যালোচনা করে তার ফলাফলের উপর সিদ্ধান্ত নিব।
ইতিপূর্বেই জেনেছি যে, গাদীরের ঘটনা একটি প্রামাণিক ঘটনা যা ইসলামের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়েছে এবং বেলায়াতের (কর্তৃত্বের) হাদিসও একটি তর্কাতীত বাণী যা রাসূল (সাঃ) কর্তৃক ব্যক্ত হয়েছে। আর অর্থ ও ভাবধারার ক্ষেত্রেও কোন প্রকার অস্পষ্টতার চিহ্ন তাতে নেই; যারাই একটু আরবি ব্যকরণের গন্ধ শুকেঁছে ও আরবির মীযান বা মাপকাঠি সম্পর্কে পরিচিত তারা যদি ন্যায়সঙ্গত দৃষ্টিতে পক্ষপাতহীনভাবে এই হাদিসটির প্রতি তাকায় তাহলে অবশ্যই স্বীকার করবে যে এই হাদিসটি আলী ইবনে আবী তালিবের (আঃ) ইমামত, নেতৃত্ব ও প্রাধান্যতার কথাই প্রমাণিত করে।
এমন কি এই হাদিসটিকে যদি না দেখার ভান করি তারপরেও আলীর (আঃ) ইমামত ও নেতৃত্ব সম্পর্কে শিয়া এবং সুন্নীদের মাঝে যথেষ্ট পরিমাণ হাদিস বর্ণিত হয়েছে যা আমাদের নিকট বিদ্যমান।
রাসূল (সাঃ) হতে এই সম্পর্কে যে সমস্ত হাদিস বর্ণিত হয়েছে তার আংশিক অংশ এখানে দু'টি ভিন্ন অধ্যায়ে তুলে ধরবোঃ
যে সব হাদিস গাদীরের হাদিসের মত সরাসরি আমিরুল মোমিনীন আলীর (আঃ) খেলাফতের দিকে ইঙ্গিত করে, সে সকল হাদিস প্রথম অধ্যায়ে আলোচনা করবো।
আর দ্বিতীয় অধ্যায়ে ঐ সমস্ত হাদিস যেগুলোতে আমিরুল মোমিনীন আলীর (আঃ) ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে যা গাদীরের হাদিসের ও খেলাফতের ক্ষেত্রে তাঁর সঠিকত্বের প্রমাণ বহন করে।
তারপরে বিদ্যমান হাদিসের ও কথ্য দলিলাদির ও তাঁর সত্ত্বাগত যোগ্যতা ও মর্যাদার পর্যালোচনা করবো এবং সবশেষে অতীতে গাদীরের ঈদ ও এই ঈদের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে কিছু কথা আলোকপাত করবো।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:৩৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×