somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার হারিয়ে যাওয়া তুমি

০১ লা অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তোমার মনে আছে, তুমি বলেছিলে “আজ থেকে অনেক অনেক বছর পর, যখন আমরা দুজনে বুড়ো- বুড়ি হয়ে যাবো, আমাদের মাথার সব চুল সাদা হয়ে যাবে তখনও আমরা দুজন দুজনের হাতে হাত রেখে চাঁদ দেখবো। আর পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় আমাদের মাথার সাদা চুল চকচক করবে!”
আজ অনেক বড় একটা চাঁদ উঠেছে, এতো আলো এখন আমার অসহ্য লাগে। কোথায় তুমি আজ? তুমি কি তোমার দেয়া কথা ভুলে গেছ?
আমাকে সাথে নিয়ে কতো কতো স্বপ্ন দেখেছিলে তুমি। সেই স্বপ্ন গুলো ফেলে, আমাকে একা ফেলে তুমি এভাবে চলে যেতে পারলে!

আমি জানি তুমি আমার কোন প্রশ্নের উত্তর দেবেনা। আমাকে একা একাই আমার সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। একা একা সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে আমি খুব বেশি ক্লান্ত হয়ে গেছি। তুমি কি জানো আমি কতটা একা???

পাঁচটা বছর.............................।
তোমার কি মনে আছে সেই দিনগুলোর কথা! আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সেই দিনগুলো, তোমাকে ঘিরে থাকা সেই দিনগুলো, আমাদের দুজনের সেই দিনগুলো ।
প্রতিটা মুহূর্ত যেন আমার চোখের সামনে ভাসছে! তোমাকে ঘিরে থাকা কতো কতো স্মৃতি, স্বপ্নের মতো মনে হয় সব কিছু। আর আমার বর্তমানটাকে মনে হয় একটা দুঃস্বপ্ন।

প্রতিটা দিন তুমি না ডেকে দিলে আমি ঘুম থেকে উঠতে পারতামনা। অথচ এখন তো তুমি আমাকে ডেকে দাওনা। প্রতিটা মুহূর্তে আমার মনে হয় আমি বোধহয় একটা দুঃস্বপ্ন দেখছি আর এক্ষুনি তোমার ডাকে আমি জেগে উঠে দেখবো সবকিছু আগের মতই আছে! কিন্তু আমার আর জেগে ওঠা হয়না। হয়তো এখন থেকে আমাকে এই দুঃস্বপ্নের মাঝেই বাস করতে হবে।

প্রায় এক বছর হতে চলেছে তোমার চলে যাবার। অথচ আমি আজো ভাবি সব মিথ্যা। তুমি খুব ভালো করেই জানো আমি এটা কোনদিনও মেনে নিতে পারবোনা, তাহলে কেন তুমি এমনটা করলে???

তুমি মাঝে মাঝেই আমাকে জিজ্ঞেস করতে আমি তোমাকে এতো বেশি ভালবাসি কেন, কিন্তু আমি কখনো তোমাকে বলতে পারতামনা। কিভাবে বলতে পারবো, তখন তো আমি নিজেই জানতাম না। এখন আমি জানি, আমি জানি তোমাকে এতো ভালবেসেছি কেন। কারন আমি খুব স্বার্থপর, আমি তোমাকে ভালবেসেছি শুধুমাত্র তোমার কাছ থেকে ভালোবাসা পাবার আশায়! এবং আমি সেটা পেয়েছি, অনেক বেশি পেয়েছি। আর অনেক বেশি পেয়েছি বলেই হয়তো তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি।

আমার খুব ইচ্ছে করে সেই দিনগুলোতে ফিরে যেতে। তোমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিকশায় ঘুরতে, শুধু তোমার হাতটা ধরে চুপচাপ সারা রাত বসে থাকতে। উফ প্রতিটা মুহূর্ত কি যে অসহ্য।।
তোমার কি ইচ্ছে করেনা আমার কাছে আসতে??? কোথায় তুমি.............................................
আমার হাতে এখন তোমার দেয়া একটাও চিমটির দাগ নেই। সব দাগ সেই কবেই মুছে গেছে! অথচ তুমি বলতে সবসময় আমার হাতে তোমার চিমটির দাগ থাকবে, যেন সেই দাগ দেখলেই তোমার কথা আমার মনে পড়ে যায়। প্লিজ তুমি ফিরে এসো, আমার হাতে, আমার সারা শরীরে তোমার যেখানে ইচ্ছে তুমি চিমটি দিয়ে, আঁচড় দিয়ে দাগ করে দিয়ে যাও।

তুমি কি জানো, তোমার প্রিয় সব গান গুলো এখন আমি আর সহ্য করতে পারিনা! তুমি সারাটা দিন গান শুনতে আর আমাকেও গেয়ে শোনাতে। কিন্তু এখন আর আমাকে গান শোনাও না কেন?
আমার প্রতিটা দিন, প্রতিটা মুহূর্ত ছিল তোমাকে ঘিরে। অথচ সেই তুমিই আমাকে শূন্য করে চলে গেলে।

"সেই মাঘের নীল আকাশে
(আমি তাকে নিয়ে) একবার ধবলাটের সমুদ্রের দিকে চলতাম
গাঙশালিখের মতো আমরা দু’টিতে
আমি কোন এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছি
তুমি কোন এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছো
হয়তো হাজার হাজার বছর পরে
মাঘের নীল আকাশে
সমুদ্রের দিকে যখন উড়ে যাবো
আমাদের মনে হবে
হাজার হাজার বছর আগে আমরা এমন উড়ে যেতে চেয়েছিলাম।"

জীবনানন্দ দাসের এই লাইন কটা তোমার খুব প্রিয় ছিল। আর তাই হয়তো তুমি সেই পাখির জীবন পেয়ে আমাকে একা রেখেই উড়ে চলে গেছ !
কিন্তু তোমার তো একা যাবার কথা ছিলনা। আমরা তো একসাথেই উড়ে যেতে চেয়েছিলাম। তুমি তোমার কথা রাখোনি, আর তাই আমাকে একাই অপেক্ষা করতে হচ্ছে সেই পাখির জীবনের জন্যে। আমি জানি একদিন আমি সেই জীবন পাবোই পাবো। আর তখন তোমাকে খুজে বের করে আমার সব প্রশ্নের উত্তর তোমার কাছ থেকে আদায় করে নেবো।

তুমি জানো আমি এখন রোজ সন্ধায় একা একা রাস্তায় হাঁটি। ভালই লাগে । যতক্ষণ না খুব বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ি, হাঁটতেই থাকি। তখন কেন জানি মনে হয় তুমি আমার পাশেই আছো।
আমি জানি তুমি এখনও আমার পাশেই আছো। ছুয়ে দিচ্ছ আমাকে, হয়তো আমিই সেটা বুঝতে পারছিনা।

গাছ, পাতা, ফুল এসব তোমার খুব প্রিয়।সবচেয়ে প্রিয় ফুল বেলি। আর তাই তোমার মাথার কাছে একটা বেলি ফুলের গাছ আমি নিজ হাতে লাগিয়েছি । বেলি গাছটায় অনেক ফুল ফুটেছে।
তুমি কি দেখেছো ফুলগুলো ???????????
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:৩৮
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×