somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটা সিরিয়াস উপন্যাসের প্রোমো কিংবা খসড়া

০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১.
ঘুম থেকে উঠার পর পরই গোসলের অভ্যাস জালালুদ্দিনের। কিন্তু কয়দিন ধইরা সেই অভ্যাস মত চলা যাইতেছে না। কয়দিন? এই ধরেন এক সপ্তাহ। সপ্তাহখানেক আগে কোন এক শুক্রবার সন্ধার পর পর বাংলাদেশের খেলা দেখতে দেখতে এক পর্যায়ে সে খুব উত্তেজিত বোধ করে। উত্তেজনার এক পর্যায়ে, যখন কিনা ছয় বলে আর মাত্র তিন রানের দরকার, সেই সময়ে শেষের আগের উইকেট বোল্ড হইয়া গেলে জালাউদ্দিনের মাইনর হার্ট এটাকের মত কিছু একটা ঘটে। ফলে, সে টের পায়, যে তেমন কিছু না, শুধু তার বাম হাতটা ঠিক মত কাজ করতেছে না। এই ঘটনার পর থেকা ঘুম থেকা উইঠা তার আর গোসলে যাওয়া হইতেছে না। সে বিছানায় ঝিম মাইরা বইসা থাকে। এরে তারে খামাখাই ডাকাডাকি করতে করতে কিছুক্ষন সময় সে ব্যয় করে। তারপর আস্তে ধীরে উইঠা গিয়া সবার খোজ খবর করতে থাকে সে। এই সময়, চোখের সামনে যারে সে পায়, তারে শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেশ পরামর্শ দেওয়া তার নতুন অভ্যাসে পরিনত হয়। অতপর, এইভাবেই কাটতে থাকবে সৈয়দ জালালুদ্দিন বখশীর অলস সময়।
২.
গলির মোড়ে দেখা গেলো জীবন পাগলা বইসা বইসা গভীর মনোযোগের সাথে কি জানি কি করতেছে। এই জীবন পাগলারে যারা চিনে, তারা ঠিকই জানে সে কি করতেছে। সে আসলে একটা তালা খুলনের চেষ্টা করতেছে। প্রায় দেড় যুগ আগে সে পাগল হইছে না জানি পাগলামীর ভাব ধরছে; ফলে সে তখন থেকা হাতে কইরা একটা কাল্পনিক তালা আর তার চাবি নিয়া ঘুইড়া বেড়ায়। কিন্তু, তালা তো আর খুলে না! পেটে খিদা লাগলে মহল্লার হোটেলে গিয়া সে বলে, ভাইরে, তালা তো খুলে না। হোটেলওলা তখন তারে আদর কইরা খাইতে দেয়। মহল্লার বদ পোলাপাইন আছে যারা যারা, জীবন পাগলার সামনে দিয়া হাইটা যাওনের সময় তারাও তালা খুলনের ভঙ্গি কইরা থাকে। এলাকার মুরুব্বীরা মাঝে সাঝে তার খোজ খবর করে, তারে জিগায়, কিরে জীবন, তর তালা কি খুলছে? সে বিষন্ন মুখে কোন দিকে না তাকাইয়া মাথা এদিক ওদিক দুলাইতে থাকে। তার তালা তো আর খুলেই না!
৩.
তো, সেই জালালুদ্দিনের হাত তো আর নড়ে না। এই কথা শুইনা তার শ্বশুর তারে দেখতে আসার সময় দুই হাতে কইরা নাশপাতি আর মালটা কিনা নিয়া আসে। তারপর তারে বলে, এইসব ডাক্তার হাসপাতালে কোনো ফায়দা নাই। বেশী কইরা আমলকী খাও। আমলকী, হরিতকী আর বহেরা- এই তিনটা হইছে মহৌষধ। সব রোগের শত্র“। ফলে, জালালুদ্দিন ভার ভগ্নিপতির মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমান মহৌষদ যোগার কইরা সকাল বিকাল খাইতে থাকে। তো, দেখা যায়, মহৌষধে ফল দিছে। তার হাত তো এখন নড়ে।
কিন্তু বিপদ হইছে অন্যখানে। জালালুদ্দিন দেখে যে, মানে টের পায় আর কি, যে, তার হাত তো আর তার কথায় নড়ে না! সে যদি ভাবে উত্তর, তো তার হাত চলে দক্ষিনে! সে ডাইনে গেলে তার হাত যায় বায়ে। ফলে, যেইদিন, তার শ্বশুর যখন আবার দুই হাত ভইরা নাশপাতি আর মালটা নিয়া তারে দেখতে আসে, তখন ডাইন হাতে তারে সালাম দিতে গিয়া বাম হাতে সে প্রচন্ড চড় দিয়া বসে। তো, এই ঘটনার জন্য তাদের কারো কোন পুর্বপ্রস্তুতি না থাকায় তারা দুইজন দুইদিকে ছিটকায় পড়ে।
৪.
তো, এই খবর পাইলো টিভি চ্যানেল, এই ঘটনা দেখতে আসলো মুছা ইব্রাহীম। এই ঘটনা মানে জীবন পাগলার তালাচাবির ঘটনা। ফলে, জীবন পাগলা দিনে দিনে জনপ্রিয় হইতে থাকে বেশী মানুষের কাছে, দেশী মানুষের কাছে। ফলে, তারা একদিন টক শো চালায়া দেয় জীবন পাগলারে নিয়া। উপস্থাপনায় উপস্থাপিকা। সঞ্চালনায় মূছা ইব্রাহীম। লগে থাকবে জালালুদ্দিন। সে হাত হাত বিষয়ক কারনে লোকজনের নজরে আসছে। সাথে আরো থাকতে পারে ব্লগ কইরা নাম কামাইছে এমন এক সুন্দরী যার নিক নেম 'নারী নই আমিও মানুষ'। আলোচনার বিষয়- চলতি বাজেটে ঢাকা চিড়িয়াখানায় সরকারী বরাদ্দ এবং শেয়ার মার্কেট। তো, জীবন পাগলা তার তালার চাবিটা হারায়া ফেলছে; তো, অনুষ্ঠান শুরু করতে সামান্য দেরী হবে বইলা উপস্থাপক তখন দুঃখ প্রকাশ করতে থাকবে।
৫.
তো, তথাকথিত দ্বিতীয় দশকের এক কবিরে দেখি টিএসসিতে বইসা বইসা তার জালালুদ্দিনের ছোট মেয়ের কামিজের পাসওয়ার্ড হ্যাক করার ধান্দায় ব্যাস্ত। সেইখানে আমি, কাছেই তো, অথচ যেন আমারে সে চিনেই না!
-শোয়েব সর্বনাম
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×