somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাদুকর

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

...আমাদের এই শহরে একবার দুই জাদুকর এসেছিল...

সত্যি বলতে কি; তাদের দেখেই বুঝতে পারা যাচ্ছিল যে তারা জাদুকর। বইতে পড়া

জাদুকর-দের মতই তাদের হাতে ছিল বাকাঁ জাদু-লাঠি। তাদের লম্বা চুল ছিল অবিন্যস্ত;নেমে

এসেছিল ঘাড় পর্যন্ত। লম্বা-সাদা আলখেল্লা ছিল তাদের পরনে; সে পোশাকে তাদের দেখাচ্ছিল

অনেকটা রবি ঠাকুরের মত...অথচ তারা কিন্ত রবি ঠাকুর ছিল না,তারা ছিল জাদুকর......

দুই জাদুকর হাঁটতে হাটঁতে এসে পরেছিলো শহরের মাঝের গোল চত্তরটায়। তাদের পিছনে ছিল

এ শহরের নতুন প্রান তরুন-দের মিছিল, দীর্ঘ সে মিছিল তাদের অনুসরন করছিল নীরবে। সে

মিছিলে আমিও সামিল ছিলাম। দুই জাদুকর যখন চত্তরের উচুঁ জায়গাটাতে উঠে দাঁড়ালো- তখন

অধীর আগ্রহে আমরা শুনতে চাইলাম তাদের বক্তব্য।

...প্রথম জাদুকর ছিল মধ্য বয়স্ক। তার মাঝে ছিল আত্ববিশ্বাসের ছাপ। গমগমে আওয়াজে সে

বলে উঠলো,"আমার জাদু জীবনের জাদু,আমার জাদু এ সময়ের দাবি, আমার জাদু তাই দেবে যা

সবাই চায়।"
ভীড়ের মাঝ থেকে কেউ একজন জানতে চাইল,তার জাদু কী দেবে আমাদের। জাদুকর আবার

বললো, "আমার জাদু তোমাদের দেবে যা তোমরা নিয়ত খুজেঁ মরছো। তোমরা তরুনেরা চাও

অগাধ সম্পদ, তোমরা চাও জনপ্রিয়তা, তোমরা চাও সৌখীন্‌তা। আমার জাদু তোমাদের দেবে প্রচুর

বিত্ত- তোমরা পাবে প্রয়োজন অনুসারে রূপসী বান্ধবী- তোমরা পাবে অন্তঃসারহীন জনপ্রিয়তা- তোমরা

পাবে যা কিছু তোমাদের প্রয়োজন। তোমাদের অজানা পথে প্রান-পাত করতে হবে না; সাধনা

প্রয়োজন নেই; প্রয়োজন কেবল আমার মন্ত্র। "
সমবেত তরুনেরা নীরব রইল,তারা যাচাই করতে চায় দ্বিতীয় জাদুকরের খমতা।


...দ্বিতীয় জাদুকর উঠে দাড়াঁলো। তার শরীরটা ব্রীদ্ধের, কিন্ত কোন এক অলৌকিক খমতা-বলে

তার মুখ ছিলো বছর তেরো বয়সের বালকের। দুস্ট হাসি দিয়ে জাদুকর বল্‌লো,"আমার জাদু কিন্ত

সব সময়ের। আমার জাদু প্রচলিত পথের কিছু তোমাদের দেবে না, আমার জাদু সাধনার। এ জাদু

তোমাদের দেবে সেই অমরত্ত্ব- যা কেবল মহাকাল ধারন করেছে। বিত্ত, রুপ্‌সী নারী ,কিংবা

জনপ্রিয়তা এ পথে নেই- আছে স্রিস্টীর আনন্দ। এ পথে আত্ত্বনিয়োগ-ই প্রয়োজন। আমার মন্ত্র সেটাই।"


প্রথম জাদুকর বল্‌লো-"আমি তোমাদের দেব নিশ্চিত স্বল্পায়ু জীবন"।
দ্বীতিয় জাদুকর বল্‌লো-"আমি তোমাদের দেব অনিশ্চিত অমরত্ত।"
-আমি দেব কেবল আনন্দ।
-আমি কিন্তু তোমাদের দুঃখ ও চেনাবো।
-আমি দেবো অখন্ড অবসর।
-আমি দেবো নিরন্তর স্রীস্টীশীলতা।

...দুই জাদুকরের বক্তব্য শেস হতে তরুন দল ভাগ হয়ে গেল ছোটো ছোটো দলে। নিমিশ পরেই

সবাই ছুতে গেলো প্রথম জাদুকরের দিকে।

চশ্‌মা পড়া,উস্কু-খুস্কু চুলের ছেলের দল চ্যাঁচালো,"আমাদের পরীক্ষায় ফারস্ট করে দাও।"

সুন্দর চেহারার মিচকে ছেলেগুলো "আমার সূন্দরী গার্‌লফ্রেন্ড চাই" বলে আবদার জুড়ে দিলো।

শহরের উঠতি মাস্তানরা -"ওই হালা, আমগোরে কইলাম দুইডি কইরা রাইফেল দেওন ই লাগবো"

বলে চ্যাঁচালো বেশ জোরেই।
শহরের ন্যাঁকা ন্যাঁকা মেয়েগুলো বল্‌লো-"আমাদের প্লীজ ক্লোজ-আপ টু চ্যাম্প্‌ করে দাও।" কয়েকজন

আরেক ধাপ এগিয়ে মিহি গলায় জানালো - "আমাকে প্লীজ প্লীজ কেইরা নাইটলী বানিয়ে দাও।"

... প্রথম জাদুকর কাউকেই ফেরালো না। ব্যস্ত হয়ে পরলো সবার দাবী মেটাতে। ...

...দ্বিতীয় জাদুকর কে ঘিরে দাঁড়িয়েছিলাম আমরা অল্প ক'জন। দ্বিতীয় জাদুকর বল্‌লো-"কি চাও

তোমরা আমার কাছে ??"
উত্তরে জানালাম যে আমরা লিখতে চাই, ছবি আকঁতে চাই, সুর তুলতে চাই। আমরা চাই স্রিস্টী

করতে...
দ্বিতীয় জাদুকর বল্‌লো,"স্রিস্টীর মন্ত্র চাও ?? কিন্তু আমি তো এতো সহজে ধরা দেই না ।" এই

বলে, কী আশ্চরয- উধাও হয়ে গেলো...



... তারপর কত দিন কেটে গেছে, সে জাদুকরকে খুঁজতে খুজঁতে আমি এখন ও পুরো প্রিথিবী

ঘুরে বেরাচ্ছি। প্রতিটী নগরে ঢোকার মুখে আমি দ্বার-রক্ষককে জিগাসা করি,"তুমি কি কোণো

জাদুকরকে দেখেছো ??"
একঘেয়ে কন্ঠে এক-ই উত্তর পাই-"এই শহরে একবার দুজন জাদুকর এসেছিলো্‌..." একঘেয়ে

গলায় সে শুনিয়ে যায় উপরের গল্পটাই।

তোমরা কেউ দেখেছো দ্বিতীয় জাদুকরকে ???
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৩৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×