বাসায় গিয়া শোনলাম, পুলিশ আমার খোঁজে আসছিলো।
প্রায় এক যুগ আগের ঘটনা। আমার নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হয় হয় অবস্থা। ছোটখাটো সব অন্যায় কর্ম মনে করা শুরু করলাম। হয়ত কোন দিন জানালা দিয়া টুপ কইরা পলিথিন ফেলছিলাম। ভাবলাম প্রতিবেশী কেউ কি এই জন্য কমপ্লেইন করলো! তখন এয়ারপোর্টে রাস্তার ধারে মেগাজিনের দোকানে খুব দঁড়ায়ে থাকতাম। সব ধরণের মেগাজিনই একটু আধটু পড়তাম। ভাবলাম, এই জন্য না তো!
যাই হোক, যেহেতু থানায় যাইতে বলছে। ভয়ে ভয়ে থানায় গেলাম, দক্ষিনখান থানা। গিয়া পরিচয় দিলাম। ডিউটি অফিসার খুবই ভালো ব্যবহার করলেন। বল্লেন, ভাই এস আই মোজাম্মেল সাহেবের কাছে যান। উনি আপনার বিষয়টা দেখতেছেন। ভয় কিছুটা কাটলো। কিন্তু আমার আবার কী বিষয়!
গেলাম মোজাম্মেল সাহেবের কাছে। একেবারে কম বয়সের একজন অফিসার। একেবারে হাত ঝাকায়ে হেন্ডশেক করলেন। পরিচয় পেয়ে বল্লেন
- ও রে ভাইজান আপনি? আপনার ভাই কি একজন আমেরিকায় থাকেন?
বল্লাম, হুম। তখন একটা ফরম পূরণ করতে বল্লেন। বিষয় হইলো, পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় থেকে একটা ডাটাবেজ করবে। কে কোন দেশে থাকে। এবং কে আনুমানিক কত ডলার দেশে পাঠায়। বিপদ নাই দেখে, ভানু বন্ধোপাধ্যায়ের মত আনন্দে বলতে ইচ্ছা করলো - উইঠ্যা বসি, উইঠ্যা বসি।
ভদ্রলোক খুবই আদর করলেন! থানার নীচে নিজে নামলেন। চা খাওয়ালেন। এখন আমার অনেক সাহস। মজা করে বল্লাম
- ভাই সারা জীবন শুনছি, পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়। এখন দেখি উল্টা পুলিশের কাছ থেকে খেয়ে গেলাম।
তখন আমার মোবাইল ফোন নাই। মোজাম্মেল ভাইয়ের মোবাইল নম্বর নিয়ে আসলাম। অনেক দিন পরে ফোন দিয়ে দেখি নম্বর বন্ধ। তারপর থেকে উনার কথা মনে হলেই ফোন দেই। কিন্তু নম্বর বন্ধ থাকে। কোন দিন মোজাম্মেল ভাইয়ের সাথে দেখা হইলে একটা কথা বলবো্। কথাটা হইলো
- ভাই, আপনি আমার কপালে লক্ষী দিয়ে গেছেন। কারন এতটা বছর পর্যন্ত পুলিশ বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে শুধু খেয়েই গেলাম
-০-
পুলিশ নিয়ে সবারই কমপ্লেইন কম বেশী আছে। কিন্তু ষোল কোটি মানুষের দেশে তুলনামূলক কত কম পুলিশ তা জানেন? একটা বার ভেবে দেখেন তো, পরিবারের সুন্দর মুখ গুলো দেখে মানুষগুলো অফিসে আসেন। অফিসে এসেই সারাটা দিন চোর বাটপারদের নিয়া ব্যস্ত থাকতে হয়। গাঁ শিউরে উঠার মত অপরাধের তদন্ত করতে হয়।
চলতে চলতে কোন পুলিশের সাথে পরিচয় হলে, বন্ধু বানিয়ে নিন। পুলিশের কষ্টটাও বুঝবেন। বিপদের দিনে কাজেও লাগবে। সো সিম্পল
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬