পশ্চাৎদেশ নিয়া একটা কথা বলবো, তবে এর আগে -
লজ্জা বিষয়টা বাঙ্গালীর কাছে বড় মজার। আশৈশব শিক্ষা দেয়, লজ্জা নারীর ভুষণ। অথচ শিখানো উচিৎ ছিলো আইন ভাঙ্গলে, অন্যায় কিছু করলে লজ্জিত হতে হয়। এইটা নারী পুরুষ সবারই।
রোগ বিমারি নিয়ে আমরা কাছের মানুষদের সাথে কথা বলি। কিন্তু পায়খানার রাস্তা নিয়ে যখন কোন সমস্যায় ভুগি, তখন আলোচনা করি না। পায়খানার রাস্তার যতগুলা প্রতিশব্দ আছে, সবগুলারে আমরা গালিতে রুপান্তর করে বসে আছি, আলোচনাটা করবো কিভাবে? লজ্জা বলে একটা বিষয় আছে না!
আমার এক মেন্টর পড়লো একবার পায়খানার রাস্তা রিলেটেট একটা সমস্যায়। এত ভালোবাসার মানুষটা কী যে যন্ত্রনার মধ্য দিয়ে গেলেন! তখন কিছুদিন পড়াশোনা করলাম এই নিয়ে। ভাবলাম, বন্ধুদের সাথে শেয়ার করি। কিন্তু ঐ যে, লজ্জা! এইজন্য আর লেখা হয়ে উঠে নাই।
আমরা যারা শহরে থাকি, ঝর্ণা বা মগে ঢেলে গোসল করলে পায়খানার রাস্তায় পানি লাগে না বললেই হয়। নিয়ম করে প্রতিদিন যারা বাথরুমে যান, তাদের ক্ষেত্রে হয়ত একবার পানি লাগে সেখানে। বিষয়টা ঠিক না। বড় বাথরুম না করলেও দিনে অন্তত দুই তিনবার জায়গাটা ধুতে হবে। পরিস্কারের পাশাপাশি জায়গাটা নরম থাকবে। শুষ্ক হয়ে হয়ে ইল্যাস্ট্রিসিটিটা নস্ট হবে না।
ফাস্টফুড অন্য আর কী কী ক্ষতি করে তা পরে জানলেও হবে, পায়খানার রাস্তার বিরাট ক্ষতি করে। তাই ফাস্টফুড বিপদে না পড়লে বাদ দিন। গুগল করে দেখেন ফাইবারযুক্ত কী কী খাবার আছে, এইগুলা খান। বেশী করে শব্জি খান। মোট কথা বাথরুমটা যেন প্রতিদিন হয়। এবং অবশ্যই শক্ত না হয়।
বাথরুম শক্ত হলে পায়খানার রাস্তা ছিড়ে যায়। বিষয়টাকে আমলে না নিলে ছিড়া জায়গাটা ফুলে পঁচন ধরে। আর পায়খানার রাস্তা হলো ড্রেনেজ সিস্টেমের মত। দুনিয়ার রোগ জীবানু, ব্যাকটেরিয়ায় ভরা। সেখানে নরম্যাল কোন এন্টিবায়োটিক কাজও করতে চায় না। মানুষ শেষ পর্যায়ে যকন ডাক্তারের কাছে যায়, তখন আসলে করার কিছু থাকেও না। এরপরেও ধরলাম পঁচন ঠেকানো গেলো, কিন্তু আগের মত ইল্যাস্ট্রিসিটি কি ফেরত আসবে?
লঙ্গু সার্জারি নামের একটা অপারেশন করতে হয় ফাইনালি। এর চাইতে যন্ত্রনার আর কোন সার্জারি নাই। কাছের কয়েকজন মানুষকে এর মধ্য দিয়ে যেতে দেখেছি।
আমি ডাক্তার না। যা বলেছি এর মধ্যে হয়ত অনেক ভুলও বলেছি। তবে নির্ভুল ভাবে যা বলবো, তা হলো - পায়খানার রাস্তায় কোন সমস্যা হয়েছে মনে হওয়ার সাথে সাথে আলোচনা করুন, ডাক্তারের কাছে যান। আর প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিরক্ষা ভালো। তাই
- বেশী করে পানি, শব্জি খান।
- ফাস্টফুড বাদ দিন
- পায়খানার রাস্তা পরিষ্কার করার মত সুযোগ পেলে দিনে অন্তত দুই, তিনবার ভালো করে পানি লাগিয়ে পরিষ্কার করুন।
- লজ্জা পুটকির ফুটায় না, লজ্জা আইন ভাঙ্গায়, অন্যায় করায়; এইটা নিজে শিখে অন্যকে শিখান।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫