আমাদের দেশে প্রায়ই শোনা যায় মেধাপাচার এর গল্প ।
বলা হয় এক স্টেট্স-এই নাকি যত দেশী প্রকৌশলী আছেন দেশে তা নেই । ওশেনিয়া-ইউরোপ হিসাবে আনলে হিসাবটা নাকি আরো ভয়াবহ । ডাক্তার-ভার্সিটি শিক্ষক সবাই বহির্মুখী ।
বর্তমান সরকারও নাকি বিষয়টা নিয়ে বেশ বিচলিত ।
আমি ভাবি একটু আলাদা ।
আমাদের দেশে কতজন ছেলেমেয়ে এবার এইস.এস.সি তে জিপিএ ৫ পেলো? ১০ হাজার এর বেশী নাকি ! এদের কজন বুয়েটে ভর্তি হতে পারবে? ৫০০? মেডিকেলে কজন? ১০০০-১৫০০? কতজন ভর্তি হতে পারলনা বুয়েটে-মেডিকেলে? ৮০০০? ধরুন এদের ২০০০ ঢাবি, রাবি, জাবি-র কিছু চাহিদাসম্পন্ন বিষয়ে ভর্তি হল । বাকীরা? কোথায় যাবে এরা ? নন-টেকনিকেল সাধারন শিক্ষায় । এদের মেধার বিকাশ নাকি বিনাশ হল এতে ?
জিপিএ ৫ এর পর আসুন ৪.৯ থেকে ৪.৫ এ । আরও ১০,০০০ পাচ্ছেন? কি ভাবছেন এদের নিয়ে?
প্রতি বছর এভাবে আমাদের হাজার হাজার মেধার জায়গা দিতে পারিনা আমরা । ষাটের দশকের সেই একটি বুয়েট, আজও একটি ।
আজ আমাদের দশটি বুয়েট থাকতে পারতনা? এক বুয়েট চালাতে সরকারের তো ১০ কোটি টাকাও খরচ হয়না, ১০ বুয়েটে ১০০ কোটি, খুব কি বেশী? এতই গরীব আমরা?
দেশে পাস করা ডাক্তার-প্রকৌশলী অসংখ্য বেকার । এরা বাইরে যাওয়ায় কখনো সরকারী পদ অপুর্ন থেকে গেছে এমনটি শোনা যায়নি, যাবেনা । তাহলে শুধু শুধু মেধাপাচার বলে প্রবাসী পেশাজীবিদের দেশপ্রেম নিয়ে কটাক্ষ করা কতটা সমীচিন ?
এমন যদি হত দেশে আজ একটা নয় দশটা বুয়েট, দশটা ডি.এম.সি । এখান থেকে প্রতিবছর ২০,০০০ ওয়ার্ল্ড ক্লাস গ্রাজুয়েটস বের হচ্ছে । চাহিদার ২ হাজার থাকল দেশে, ১৮ হাজার বাইরে যাচ্ছে। ১০ বছরে প্রায় ২ লাখ, ২০ বছরে ৪ লাখ ।
আধা-ধনী মধ্যপ্রাচ্যে আধাশিক্ষিত প্রবাসীরা আজ আমাদের রেমিটেন্স ভরসা । অথচ চাইলে আমরা উচ্চ শিক্ষিত এমন জনসম্পদ তৈরী ও রপ্তানী করতে পারি । ১৫ কোটি মানুষের দেশে জনসংখ্যা কমানোর কাজটাও হ্য় একই সাথে । আপনি কি বলেন ?