somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টিপাইমুখ ড্যাম নিয়ে বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ ড.আইনুন নিশাতের অভিমত

৩১ শে মে, ২০০৯ বিকাল ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতের আসাম রাজ্যে টিপাইমুখ ড্যাম নির্মিত হলে বাংলাদেশ ক্ষতির শিকার হবে। ভারত যদি শুধু ড্যাম এবং রিজার্ভার নির্মাণ করে তাহলে ক্ষয়ক্ষতি হবে জলাবদ্ধতার কারণে। আর ড্যাম এবং রিজার্ভারের সঙ্গে যদি ভারত ব্যারাজ তৈরি করে তবে ক্ষয়ক্ষতি হবে শুকিয়ে যাওয়ার কারণে।

বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ ড.আইনুন নিশাত বলেন, শব্দটা আমি ড্যাম ব্যবহার করছি, বাঁধ নয়। বাঁধের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Enbankment। বাঁধ হচ্ছে নদীর সমান্তরাল একটা স্ট্রাকচার, আর ড্যাম হচ্ছে একটা নদীর আড়াআড়ি স্ট্রাকচার। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ক্ষতির ধরনটা বুঝতে পারবো তখন, যখন ভারত প্রকৃত অর্থে কী করছে তার তথ্য উপাত্ত পাবো। সেটার জন্য দুদেশের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে বসে তথ্যের আদান প্রদান হওয়া উচিৎ। এই ড্যাম ভারত তাদের পরিবেশের প্রভাব সংক্রান্ত সমীক্ষা চালিয়েই নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করি। আমার ধারণা তা সম্পূর্ণভাবে হয়নি। কারণ যে কোনো ধরনের পরিবেশের প্রভাব বিষয়ক সমীক্ষা করতে গেলে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া কতদুর গিয়ে পড়বে সে হিসাবটাও করতে হবে। সে হিসাব যদি সীমান্তে এসে থেমে যায় তাহলে তো হবে না। তাই পরিবেশের প্রভাব সংক্রান্ত সমীক্ষা আন্তর্জান্তিক মান সম্পন্ন হওয়া উচিৎ। আমরা যে ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছি, সরকারের উচিৎ হবে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে বসে তা নিরূপন করা।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটা ড্যামের সঙ্গে একটা করে স্পিলওয়ে থাকে যেমন আছে আমাদের কাপ্তাইয়ে। এটি হলো বর্ষায় যদি বেশি পানি আসে তা ছেড়ে দেয়ার পদ্ধতি। আমাদের কাপ্তাইতে ড্যাম আছে- কর্ণফুলীর পানি ধরে রাখে। একইভাবে টিপাইমুখ ড্যাম কাপ্তাই থেকে বড় আকৃতির হলেও মূলত দেখতে একই রকম হবে, সামনে বিরাট একটা জলাধার থাকবে। এটি হলে তিনটা ঘটনা ঘটবে।

প্রথমত, বর্ষার প্রথম দিকে পানির পরিমান কিছুটা কমে যাবে। দ্বিতীয়ত, বর্ষার শেষের দিকে যখন জলাধারটা কানায় কানায় পূর্ণ, তখন যদি কোনো কারণে স্পিলওয়ে খুলতে হয়, তাহলে বর্ষার শেষে ভারি বন্যার প্রকোপটা বাড়বে। তৃতীয়ত, শীতকালে পানির পরিমানটা বেড়ে যাবে। এখন শীতের মৌসুমে যে পরিমান পানি আছে, তার থেকে পানি বেশি হবে। কারণ বর্ষার অতিরিক্ত পানি সারাবছর সমানভাবে ছাড়তে গেলে দেখা যাবে শীতকালে পানির স্তরটা বেড়ে গেছে। জলাধারে পানির স্তরটা বাড়লে নদীতেও পানির স্তরটা বাড়বে। যেমন কাপ্তাইতে যেখানে হালদা নদী এসে পড়েছে সেখানে উজানে ৬২ সনের আগে হাটুতো দুরের কথা গোড়ালি পরিমান পানি ছিল। এখন একটা লঞ্চ নিয়ে কাপ্তাই পর্যন্ত যাওয়া যায়। টিপাইমুখেও সেই ঘটনা ঘটবে, পানির উচ্চতাটা অনেক বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশের জন্য এটা একটা ভয়ের কারণ, ক্ষতির কারণ। কারণ প্রথমত, ওই পাহাড়ি নদীটা এসে যখন আমাদের সুরমা কুশিয়ারা ভ্যালিতে প্রবেশ করবে তখন হাওর অঞ্চলের পানি নেমে যাওয়া কমে যাবে, বোরো ধান উৎপাদন কমে যাবে, কমে যাবে ধানী জমির পরিমান, খাদ্য সংকট দেখা দেবে। এটা যদি শুধুমাত্র ড্যাম, রিজার্ভার, জলাধার এবং স্পিলওয়ে অর্থাৎ জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজটা করে তবেই এ ধরনের প্রতিক্রিয়া ঘটবে আমাদের দেশের।

এগুলো সম্পন্ন হলে দ্বিতীয় যেটি হতে পারে তা হলো ব্যারাজ। ব্যারাজে জলাধার নির্মাণ হয় না, ব্যারাজের কাজ হচ্ছে শীতকালে যখন নদীর পানি নিচে নেমে যাচ্ছে সেটাকে উপরে তোলা। নদীর সেই পানি একটা ক্যানেলের মাধ্যমে ডাইভার্ট করা হয়। ওই ক্যানেলের ক্যাপাসিটির উপরে নির্ভর করে কতোটা পানি ডাইভার্ট হচ্ছে।

টিপাইমুখের এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমি জানি না। বাংলাদেশ সরকারকেই এ তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। যদি ভারতের প্রকৌশলী এমন ক্যাপাসিটির ক্যানেল তৈরি করলেন যেখানে বরাকের পুরো পানিই তারা নিয়ে নিলেন, তাহলে তখন আমাদের সুরমা কুশিয়ারা শুকিয়ে যাবে। এটি না করে যদি অর্ধেক পানি নেয়, তখন আমরা সমীক্ষা চালিয়ে দেখে বুঝতে পারবো।

সূত্রঃ Click This Link

পঞ্চগড় তেঁতুলিয়ার ছবি ব্লগ (ভবিষ্যতের টিপাইমুখ বাঁধ এর পরিণতি কী হবে তার সামান্য চিত্র) : ( সৌজন্যেঃ শামসীরের ব্লগ)
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০০৯ বিকাল ৪:০৮
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×