নীলা আর মিহির । দুজনে খুব ভালো বন্ধু । যদিও দুজন দুই মেরুর মানুষ । নীলা এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে । আর মিহির পার্ট টাইম করে কোনোমতে তার পড়ালেখা আর তার ঘরের খরচ চালিয়ে নেয় যেখানে মিহির আর তার মা ছাড়া কেউ নেই । মিহিরের একটি পুরোনো বাইসাইকেল আছে । নীলা প্রতিদিনই ঐটা নিয়ে মজা করতো । "কি রে তোর লেজহীন হেলিকাপ্টারের কি অবস্থা ঠিক মত চলছে তো" ??? লেজহীন হেলিকাপ্টার বলার কারন হল মিহিরের বাইসাইকেলের পেছনের কেরিয়ার ছিল না । মিহির শুধু হাসতো আর কিছু বলতো না । এমনকি নীলাকে যে সে অনেক অনেক ভালবাসতো সেটাও বলতে পারতো না আর কোনোদিন বলবেও না বলে ঠিক করেছে কারন কলেজ শেষ হবার পর নীলা তার হবু স্বামী সোহেলের গাড়িতে করেই বাসায় যেতো আর মিহির তার বাইসাইকেলে বসে একহাতে ছাতাটা নিয়ে নিজের গন্তব্যে যেতো । সোহেল হল নীলার বাবার বন্ধুর ছেলে । সোহেলের সাথে প্রথমে প্রেম ও পরে পারিবারিক ভাবেই বাগদান ।
প্রায় মাসখানেক পর নীলার সাথে মিহিরের দেখা । এতদিন পর দেখা হওয়ার কারনে মিহির নীলাকে সভাবতই অনেক প্রশ্ন করছিল । কিন্তু চঞ্চল মনের নীলা আজ একদম চুপ হয়ে আছে । তবুও প্রশ্ন করে যাচ্ছিলো মিহির । হটাৎ মূখে হাত দিয়ে কেঁদে উঠলো নীলা । আঙ্গুলে নীলার সেই বাগদানের আংটি নেই । সবকিছু বুঝতে পারলো মিহির ।
কলেজ শেষ হবার পর বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে রিক্সা খুজছিলো নীলা । মিহির তার পুরোনো সেই বাইসাইকেলটা নিয়ে আসলো । নীলাকে বললো "সাইকেলটা আমার বাবার ছিলো । তাই এটা আমার খুব প্রিয় । পেছনে বসার কেরিয়ারটা নেই । সামনে বসতে পারবে তো ?" এই বলে নীলার হাতে তার ছাতাটা ধরিয়ে দিলো । নীলা ছাতাটা ফেলে দিয়ে বসে পড়লো মিহিরের সাইকেলে ।
দুজন বেড়িয়ে পড়লো এক অনন্ত প্রেমের সফরে...