somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বান্দরবানঃ যাবার আগে জেনে নিন দরকারী কিছু তথ্য : পর্ব ২

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বান্দরবানঃ যাবার আগে জেনে নিন দরকারী কিছু তথ্যঃপর্ব ১



এক সময় ছিল, বাংলাদেশের মানুষ আত্মীয় বাড়ি ছাড়া বেড়ানোর কথা কল্পনাও করত না। নতুন জায়গার অনিশ্চয়তা, তথ্যের অপর্যাপ্ততা, সর্বোপরি মানসিকতাও একটা বড় বাধা হয়ে থাকত। বর্তমানে অবশ্য সেই ধারা অনেকটাই পাল্টেছে। মানুষ এখন দেশের আনাচে কানাচে অদেখা জায়গাগুলো নতুন করে দেখছে।
তথ্যের ঘাটতি এখনও পুরাপুরি কাটিয়ে ওঠা যায়নি। বিশেষতঃ যাদের উপর এই দায়িত্ব ন্যস্ত সেই পর্যটন কর্পোরেশন কতটুকু সফল, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। স্থানীয় প্রশাসনের উপরও হয়তোবা এই দায়িত্ব কিছুটা বর্তায়। তবু সব মিলিয়ে দিনে দিনে চালচিত্র অনেকটাই পাল্টেছে। বেসরকারী উদ্যোগও ( অন্যান্য সব ক্ষেত্রের মত) এগিয়ে আসাতে পেশাদারীত্বের ছোঁয়া লাগছে।

নতুন জায়গা দেখে ফেলার একটা ভাল ব্যবস্থা হোল প্যাকেজ ট্যুর । সৌভাগ্যবশতঃ অনেকগুলো ট্যুর অপারেটর এখন বাংলাদেশে কাজ করছে। তবে খরচ ছাড়াও প্যাকেজের আরেকটা সমস্যা এখানে স্বাধীনতা কম। দিন তারিখ, ঘন্টা, মিনিট বেঁধে চলতে হয়। এর একটা বিকল্প ব্যবস্থা হোল নিজের একটা প্যাকেজ। অর্থাৎ, নিজেই একটা ট্যুর প্লান বানিয়ে ফেলা। আগে ভাগেই স্টাডি করে গেলে এটা মোটেও কঠিন কিছু নয়।

আগের লেখাটায় শুধু থাকার জায়গা নিয়েই লিখেছিলাম। থাকার জায়গা ঠিক হয়ে গেলে নিশ্চিন্ত মনে ঘুরে বেরানো যায়। তবে কবে এবং কখন ফিরবেন সেটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে আগে থেকেই হোটেল চেক-আউট করে ফেলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে একদিনের বাড়তি ভাড়া না গুনলেও চলবে। এর জন্যই দরকার একটা উপযুক্ত ট্যুর প্ল্যান।

বান্দরবানে যে কয়েকটা জায়গা দেখার মত আছে, তা হোল-
১. মেঘলা
২.নীলাচল
৩.স্বর্ণজাদি বৌদ্ধ মন্দির
৪.প্রান্তিক লেক
৫. শৈলপ্রপাত
৬.চিম্বুক
৭.নীলগিরি
৮. সাঙ্গু নদীতে নৌবিহার
৯.বগালেক
১০. ঋজুক ঝর্ণা
১১.রাইংক্ষ্যং পুকুর
১২. এছাড়াও বার্মিজ মার্কেট, রাজবাড়ি ও অনেকে যেয়ে থাকে।

এর মধ্যে ১-৫ শহরের কাছাকাছি। এমনকি ৮ ও শহরের পাশেই পাবেন। ৬,৭ ----- সারাদিনের প্রোগ্যাম করেই যাওয়া লাগবে। ৯-১১ একটু দুর্গম জায়গা, ব্যাচেলরদের জন্যই উপযুক্ত।

সুতরাং প্রথম দিন ভোরে নেমে আগে থেকে হোটেলে উঠে একটু ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়তে পারেন প্রথম গুলো দর্শনে।

মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সঃ



আপনি যদি পর্যটন মোটেলে কিম্বা হলিডে ইন রিসোর্টে থাকেন তবে মেঘলা যেতে পারবেন পায়ে হেটেই। মাত্র ৫-৭ মিনিট পাহাড়ে হাটতে ভালই লাগবে। ১০ টাকার টিকিট কেটে দেখতে পারবেন লেক, ঝুলন্ত ব্রিজ, একটা মিনি চিড়িয়াখানা। পাহাড়ের চড়াইয়ে উঠতে উঠতে যখন ক্লান্ত হয়ে জিরোনোর কথা ভাববেন তখনই সামনে দেখবেন উপজাতীয়দের ফলের দোকান। পেঁপে আর কলা পাহাড়েই চাষ হয়। ঢাকার পানসে পেঁপে খেয়ে যদি পেঁপের স্বাদ ভুলে গিয়ে থাকেন তবে এখানে আবার চিনে নেবেন পেঁপে কি জিনিষ !




নীলাচলঃ

মেঘলায় আপনি কম খরচে, কম ঝামেলায় লেক, পাহাড় সবই পেয়ে যাবেন সত্য কিন্তু বান্দরবানের আসল সৌন্দর্য পাবেন না। এর জন্য নীলাচল বেস্ট জায়গা। শহর থেকে মাত্র ৪ কি.মি. দূরে এই অদ্ভুত সুন্দর জায়গাটি বাংলার দার্জিলিং বলা চলে। এখানে অবশ্য যাওয়ার জন্য আমি বেঁছে নিয়েছিলাম নিশান জীপ। এবং সেটাও চিম্বুক যাবার পথেই সেরে নিয়েছিলাম। আপনাদেরও তাই suggest করছি, এটা দ্বিতীয় দিনের জন্য তুলে রাখাই ভাল।



স্বর্ণজাদি বৌদ্ধ মন্দিরঃ [/su



বান্দরবান শহর থেকে ৪ কি.মি. দূরে রাঙামাটি বান্দরবান সড়কের বালাঘাটা পুলপাড়ায় অবস্থিত এই মন্দির পর্যটকদের কাছে অন্যতম দর্শনীয় স্থান। ঝলমলে সোনালী রংয়ের এই বৌদ্ধ মন্দিরে উঠতে আপনাকে অনেকগুলো সিড়ি পাড়ি দিতে হবে। সবসময় এটা দেখার জন্য উন্মুক্ত নাও থাকতে পারে। তবে বিকাল ৪টা-৫টার দিকে এটা দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয় এটা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি।


সাঙ্গু নদীতে নৌবিহারঃ




স্বর্ণজাদি বৌদ্ধ মন্দির থেকে ফেরার সময় আপনাকে সাঙ্গু নদীর উপর দিয়ে ব্রিজ পেরিয়ে আসতে হবে। এই সময় আপনি বেবীট্যাক্সি বা জীপ দাড় করিয়ে নেমে পড়তে পারেন সাঙ্গু ( বা শঙ্খ) নদীর তীরে। নৌকা বা ইঞ্জিন চালিত দেশী বোটে ঘন্টা প্রতি ভাড়া নিয়ে যতদূর খুশী চলে যান, আপনার পাশে পাহাড় আর নীচে নদীও চলতে থাকবে।

শৈলপ্রপাতঃ

আপনার যদি চিম্বুক যাবারও ইচ্ছা থাকে থাকে, তবে এটা ঐ দিনের জন্যই তুলে রাখতে পারেন। চিম্বুক যাবার রাস্তায়ই এটা পড়বে। আর নইলে শর্টকাট ট্রিপ হলে এটা দেখতে যেতে আপনাকে মাত্র ৮ কি.মি. পথ পাড়ি দিলেই হবে। এটা নিয়ে আগামী পর্বেই বলার ইচ্ছা রইল।

ডে- টুর জন্য বাকী থাকল শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, নীলগিরি।


সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১২:২৬
১৫টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×