সবাই বলে, ভবিষ্যৎ দেখা যায় না। কিন্তু আমি বলি, ভবিষ্যৎ বর্তমানের চেয়েও স্পষ্ট দেখা যায়। তোমার দৃঢ় সত্য আত্মবিশ্বাস, কর্মনিষ্ঠতা, একাগ্র চিত্ততা যা স্বপ্নের অভিমুখে বেগবান, তা অবশ্যই তোমার অর্জিত হবে। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। যদি তুমি নিজেই আত্মস্থ না হতে পার, তাহলে তুমি অনেক আগেই হেড়ে গেছো। এ আত্মবিশ্বাস অর্জনের জন্য অবশ্যই তোমার সংস্কার আবশ্যক। যা পারিবারিক ভাবে সবাই পেয়ে থাকে। আর পারিবারিক সংস্কারই তোমার সমগ্র জীবনের বেঁচে থাকার উন্নত নিদর্শন সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেবে।
আসল কথা হচ্ছে সংষ্কার কি? সংষ্কার এরূপ জিনিস যা তোমাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দেবে। যেটা থেকে তুমি সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়, জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, জীবন দর্শন, প্রভৃতি সম্পর্কে তত্ত্বগত আত্মস্থ হবে। এ বিষয়ে ধর্ম জ্ঞানই বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যে পরিবারে বাবা-মা যেমন সংষ্কারে গঠিত, তাদের সন্তান-সন্তান্তী সে ভাবেই গড়ে ওঠে। সন্তানদের আত্মবিশ্বাসও সে ভাবেই গঠিত হয়। সন্তানদের জীবনের প্রায়োগিক বিষয় ও লক্ষ্যগুলো সে ভাবেই প্রকাশিত হয়।
আজ কালকের বাবা-মা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিজে হাতে এনে দিতে চায়। প্রত্যেক বাবা-মা'ই চায় তাদের সন্তান যেন সবচেয়ে সুখী হয়। এটা যেন হয়,সেটা যেন হয়, ওটা যেন হয়। এটা তাকে হতে হবে। এরূপ চিন্তা করাই বাবা-মা'র ভুল। বরং সন্তানদের মানসিক বিকাশ ও আত্মবিশ্বাসে নজর দেওয়া উচিৎ। সন্তানদের আত্মবিশ্বাসী করে তুললে তারা নিজে থেকেই নিজের লক্ষ্যে দৃঢ় হবে। এর জন্য চাই বাবা-মা'র সংষ্কার ভিত্তিক কিছু অনুসাশন।
যদি বাবা-মা এরূপ হয় যে, তারা সন্তানদের পরিশ্রমের মাধ্যমে কিছু অর্জনের চেয়ে সেটা বরং বিনা পরিশ্রমে হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাহলে সন্তানরা কি শিখবে। তারা অর্জনের গুরুত্বই বুঝবে না। তাদের কাছে উত্তম ও শ্রেষ্ঠত্বের পার্থক্যই থাকবে না। কঠর সংগ্রাম ও পরিশ্রমের অর্জন কত যে গর্বের হয়! কত যে আনন্দের হয়! তা তারা বুঝতেই পারবে না। ঠিক পরবর্তী প্রজন্মে এটা আরো বেশি করে ঘটতে থাকবে। এরাই পরবর্তীতে দূর্নীতিতে জড়িয়ে পরবে।
যেমন- আজকের শিক্ষা ব্যবস্থা। বাবা-মা ধর্না দেয় বড় বড় কোচিং সেন্টার, কোন দায়িত্বরত উচ্চতর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দ্বারে। অসদ উপায় অবলম্বন কর। এক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষও অনেকটাই দায়ী। যদি এভাবে ছেলে-মেয়েরা তাদের আত্মবিশ্বাস অর্জনে বাঁধাগ্রস্থ হয়, তবে ভবিষ্যৎ তাদের কি হবে? মেধার অবক্ষয় ও অবমূল্যায়ন হবে। ফলে সমাজ তথা সমগ্র জাতি এর অবস্থার শিকার হবে।
শ্রমলব্ধ দিনান্তে আহার্য একটা রুটি আপন শৌর্য, বিনাশ্রমে প্রাপ্ত রাজভোগ অত্যন্ত অনার্য। আপন শৌর্য বা বীর্যে কোন কিছু অর্জনই বীরত্ব ও পরাক্রম। এতে যেমন নিজ পৌরষত্বের গর্ব, তেমনি আপন আত্মবিজয়ের রঙিন আভার পরিষ্ফুটনও বটে। এ অর্জনে খ্যাতি, বিত্ত ও আত্মবিশবাস আরো দৃঢ় হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩২